সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এই শব্দ যুগলের মতো নিরর্থক শব্দ সন্নিবেশ দ্বিতীয় টি হয় না। সম্প্রদায় ব্যাপারটাই একটা বিভেদের স্তর। জাতি গোত্র বর্ণ সম্প্রদায় সবই বিভাজনের এক একটা স্তর। এর ভেতর বিশ্বাস শ্রদ্ধাবোধ থেকে সন্দেহ ঘৃণার জায়গা বেশি। একমাত্র সহবস্থানের খাতিরে ঘুমিয়ে আছে প্রাগৈতিহাসিক দানব। পৃথিবীতে সবখানেই এ দানব নিঃশ্বাসে বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে, কখনো বা জেগে উঠছে।
ধর্ম পাপ পুণ্যের সংজ্ঞায় মানুষ কে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেছে মাত্র এবং এককথায় তা ব্যাক ফায়ার করেছে। ধর্ম ধর্মানুভূতিই উল্টো বিভাজনের নতুন স্তরের জন্ম দিয়েছে। মানুষ ধর্মকে ব্যবহার করছে নাকি ধর্ম মানুষ কে এটা একটা বড় প্রশ্ন।
যে ধর্ম অন্য সকল ধর্মকে অধর্ম আখ্যা দিয়েছে সেই ধর্মই আবার পরমতসহিষ্ণুতার কথা বলে। ধর্ম বা ধর্মীয় শিক্ষার এই স্ববিরোধী অস্পষ্টতা বা গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যার অপ্রতুলতা বা দুষ্প্রাপ্যতা মানুষের ভেতরের অসহিষ্ণুতাকে স্পষ্ট প্রশ্রয় দেয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। কিন্তু ধর্মকে যে মানুষ ব্যবহার করছে স্বীয়ক্ষমতা ও শ্রেণী শোষণের জন্য সেটা স্পষ্ট। মানুষ কি আসলেই ধর্ম বিশ্বাসে বিশ্বাসী?!
ধর্ম নেই কিন্তু ধর্মানুভূতি প্রবল এমনটাই যখন বেশি তখন তাকে ধর্মানুভূতি না বলে শ্রেণী বিদ্বেষই বলা উচিত। এই বিভাজন বা সাম্প্রদায়িক মনোভাব এতোটাই গভীর যে কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাও শ্রেণী বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক চিন্তাধারার বিকাশ ঘটাতে পারে না। মানুষ রাতারাতি পাল্টে যাবে এমন কোন জাদু মন্ত্র পৃথিবীতে আবিষ্কার হয়নি। যতক্ষণ না আমরা একজন ভিকটিম এর জায়গায় নিজেকে কল্পনা করতে পারছি ততক্ষণ পর্যন্ত প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে আমরা প্রত্যেকে সাম্প্রদায়িকতার সমর্থক।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৫:৫০