somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অজগর

২৭ শে মে, ২০২০ রাত ৮:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


‘দাদী? অ দাদী? ভাত হইছে?’ রিনরিনে গলায় রাণী ডাকে।
নূরজাহানের বাম চোখে ছানি পড়েছে মাস খানেক হচ্ছে। অন্য চোখটা দিয়ে চল্লিশ ওয়াটের টিমটিমে বাতিটার নিচে মাটির কাঁচা মেঝেতে পা ছড়িয়ে খালি গায়ে বসে থাকা চার বছরের রাণীর দিকে তাকায়। ঢোলা সুতি কাপড়ের বেগুনী হাফ প্যান্টটার কোমড়ের দিকে গোল করে পাকানো। রাবারের ভেতর কিছু গুটিয়ে রেখেছে বোঝা যাচ্ছে। হাড্ডিসার পাজরের হাড়গুলোর নিন্মদেশে সেই পাকানো জায়গাটা চোখে লাগছে খুব। শিল্পকলা চত্বর থেকে নাতনিকে নিয়ে আসার সময় আজকে প্যান্ট হাতিয়ে দেখা হয়নি। মাটির চুলায় হাড়িতে ভাত চাপিয়ে জির্ণ আঁচলে মুখের ঘাম মুছে হাত বাড়িয়ে রাণীকে ডাকলো নূরজাহান। রাণী সন্দিগ্ধ চোখে তাকায়। তারপর উঠে গিয়ে দাদীর কাছে যায়। নিজের অজান্তেই বাম হাতে প্যান্টের সেই পাকানো রাবারটা চেপে ধরে রেখেছে।
‘হাত সরাইবি নাকি লাকরির ছ্যাঁক দিমু?’ ঠাণ্ডা গলায় নূরজাহান বলে।
রাণী সঙ্গে সঙ্গে ভীতমুখে হাত সরিয়ে নেয়। বড় বোন আফিয়াকে তিন চারদিন আগেই হাটুর কাছে গরম লাকরির ছ্যাকা দিয়েছিল দাদী। তার কথা না শুনলে প্রায়শই এরকম করে। রাণী আগুন ভয় পায়।
নূরজাহান লোহার মতো শক্ত হাতে রাণীকে টেনে এনে প্যান্টের গোটানো রাবারের ভাঁজটা খুলতেই টুন টুন করে পাচ সাতটা এক টাকা আর পাঁচ টাকার পয়সা গড়িয়ে পড়ল চুলার লালচে আগুনের মাঝে রূপালি রঙ ছিটকে দিয়ে। একটা বরইয়ের বার্মিজ আচারও রয়েছে, আধখাওয়া প্যাকেট।
শান্ত মুখে রাণীকে ঝটকা দিয়ে ছেড়ে মেঝেতে ছড়িয়ে যাওয়া পয়সাগুলো গুণে গুণে তুলে নিল নূরজাহান। চৌদ্দ টাকা মোটে। রাণীর দিকে পয়সাগুলো হাতের তালুতে তুলে নূরজাহান কঠিন গলায় বলল, ‘সারাদিনে এই কয়ডা পাইছোস? নাকি আফিয়ার মতো চুরি চামারি শিখছস? পয়সা আইনা বাহিরের লেট্টিনের বাঁশের ভিতর জমায়া রাইখা আমারে দশ বারো টাকা দিতাছস নাতো? হাচা কবি।’
রাণী ভয়ার্ত মুখে মাথা নাড়ায়। সে চুরি করে আর কিছু লুকিয়ে রাখেনি। মাস খানেক আগে বড় বোন আফিয়া বাহির থেকে ভিক্ষা করে টাকা এনে দাদীকে সব না দিয়ে বাহিরের লেট্টিনের একটা বাঁশের খুঁটির মধ্যে জমিয়ে রাখার ব্যাপারটা ধরে পড়ে গিয়েছিল নূরজাহানের কাছে। নূরজাহানের এক চোখে ছানি পড়লেও অন্যচোখে শকূনের মতো দৃষ্টি। তার চোখ এড়িয়ে টাকা জমানোর ঘটনা ধরা পড়ে যাওয়ার পর আফিয়াকে চুল ধরে টানতে টানতে পলিথিনের ছাউনির ঘরটার ভেতর এনে ইচ্ছামত লাথি ঘুষি মেরেছে। এরপর রাগ সামলাতে না পেরে আফিয়ার হাটুতে জ্বলন্ত কাঠের ছ্যাকা দিয়েছে।
আফিয়া বাঁধা দেওয়ার সুযোগ পায়নি। তেরো বছর বয়স তার। দাদীর ছেচল্লিশের ওপরে। সারাদিন কনট্রাক্টরের সাথে রোডের পিচ ঢালাইয়ের আগে সুরকি বেছানো আর ইট ভাঙ্গার কাজ করে নূরজাহান। দুবলা শরীরের মধ্যে জানোয়ারের মতো অসম্ভব শক্তি। রোদের নিচে সারাদিন আগুনে তেঁতে কাজ করে করে নূরজাহানের মাথা গরম থাকে সব সময়। আগুনের ছ্যাকা দেয়াটা নতুন বিষয় না। নাতনি তাকে না জানিয়ে টাকা চুরি করে রেখে জমাবে কেন?
অবশ্য শেষ রাতে নূরজাহানের মাথা ঠাণ্ডা হয়ে আসে সব সময়। কারণ রাণী আর আফিয়া ঘুমিয়ে গেলে তাদের পলিথিনের ছাউনির বাহিরে কনট্রাক্টর সাদেক মিয়াঁ এসে দাঁড়ায়। মদের তীব্র ঘ্রাণ এখন ঘুমের মধ্যেও টের পায় রাণী আর আফিয়া। কিন্তু জেগে ওঠা বাড়ন এই সময়। নূরজাহান মিষ্টি জর্দা দেয়া পান মুখে দিয়ে বেরিয়ে যায় ঘরটা থেকে। ফযরের আযানের ঠিক আগ মুহূর্ত করে আবার ফিরে আসে। বাহিরের কলতলায় টিউবয়েল চাপা আর পানি ঢালার শব্দ পাওয়া যায়। ভেজা কাপড়ে ঘরে ঢুকে আফিয়াকে ধরে শুয়ে পড়ে নূরজাহান। তার ভেজা ঠাণ্ডা হাতের স্পর্শ পেলেই আফিয়া চমকে জেগে ওঠে প্রতিবার। সেরাতেও ফেরার পর নূরজাহানের ভেজা ঠাণ্ডা হাত গায়ে লাগতেই আফিয়া চমকে জেগে উঠেছিল। হাটুর কাছের দগ দগে ঘাঁ টা জ্বলছে তখনও। ভয়ার্ত মুখে অন্ধকারের দাদীকে দেখার চেষ্টা করে।
নূরজাহানের মুখ থেকে ভক ভক করে কড়া বাজে মদের গন্ধ আসছে। আফিয়াকে মোলায়েম গলায় জিজ্ঞেস করে, ‘টাকা চুরি করছিলি ক্যানরে খানকি?’
আফিয়া কাঁপা গলায় বলে, ‘জামা ছিঁড়ে গেছে দাদী। একটাই জামা আর কত সিলাই কইরা পরা যায়? বাইরে গেলেই বেটা ছেলেরা জামার ছিঁড়ার দিকে ক্যামুন ক্যামুন করে জানি চাইয়া থাকে......’
‘অ! জামা কিনার লাইগা টাকা জমাইতেছিলি বান্দির বেডি?’ দরদ ভরা গলায় বলে নূরজাহান। ঘুমের আভাস পাওয়া যায় গলায়। নেশাগ্রস্থের মতো ঘুমে টলছে।
ফুঁপিয়ে ওঠে আফিয়া, ‘কনট্রাক্টরের পোলা মিজাইন্না ঐদিন সন্ধ্যার পর বাড়ি আসার সময় আমারে ইলেক্ট্রিক পিলারে চাইপা ধরছিল... বুকে হাত দিছে......’
নূরজাহান চাপা ক্ষোভ জমা গলায় বলল, ‘মাগির পোলার ** গরম হইছে মনে হয়? বেলেড লয়া ঘুরবি এখন থেইকা। গায়ে হাতাইলে একেবারে কাইটা হাতে ধরায়া দিবি। মনে রাখিস, মাইয়া হইয়া জন্মানোর এইটা হইলো সব চাইতে বড় সুবিধা। তোর আর কি ক্ষতিটা করবো? তুই ওর সবচাইতে বড় ক্ষতিডা করবার পারবি। পুরুষ মাইনসের চাইতে দূর্বল চিজ দুনিয়ায় আর দ্বিতীয়টা নাই। তাবত বুদ্ধি রানের চিপায় নিয়া ঘুরে।’
আফিয়া নূরজাহানের মতো এত সাহসী নয়। এই একই লোকের অত্যাচারে থাকতে না পেরে তাদের মা জুবায়রা পালিয়ে গিয়েছিল। কনট্রাক্টরের ছেলে মিজানের বয়স ত্রিশ থেকে চল্লিশ যে কোনোটাই হতে পারে। সাদেক মিয়াঁর রোড কন্সট্রাকশনের কর্মীদের মধ্যে নারীদের সংখ্যাই বেশি। নূরজাহান, জুবায়রা কিংবা নূরজাহানের মৃত ছেলে সুলতান সবাই এখানেই কাজ করত। লোকমুখে শোনা কথা, জুবায়রার দিকে নজর পড়েছিল মিজানের। সুলতান মাঝখানে একদিন ঝামেলা করেছিল। গরম পিচের একটা বালতি ফিকে মেরেছিল মিজানের দিকে। লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছিল। এরপর প্রায় মাস খানেক মিজান চুপচাপ ছিল। জুবায়রাকে শান্ত চোখে দেখে গেছে কাজ করার সময়। সুলতানকেও দেখতো। কিছু বলেনি।
তারপর একদিন সুলতান গায়েব হয়ে গেল। অনেক খোঁজা খুঁজির পর এক সপ্তাহের মাথায় কন্সটেবল জসিম উদ্দিন সুলতানের লাশ পেল সিটি কর্পরেশনের একটা বিশাল ডাস্টবিনের ভেতর। চেনার উপায় নেই। গরম পিচ ঢেলে গোটা মানুষটাকেই পুড়িয়ে কয়লা বানিয়ে ফেলা হয়েছে। চুল, ভ্রু কিংবা আলাদা করে চেনার মতো কোনো বৈশিষ্ট্য বাকি নেই। কেবল সুলতানের দুই পায়ের কনে আঙ্গুল দুইটা করে ছিল। সেটা দেখেই চেনা গেছে যে নূরজাহানের ছেলে এটা।
নূরজাহানের বেঁচে থাকা সন্তানদের মধ্যে সুলতানই কেবল সাথে ছিল এতদিন। বাকিরা কেউ জেলে আছে, কেউ বর্ডার পার হয়ে মিয়ানমার চলে গেছে। সুলতানের পর জুবায়রা আর নাতনি দুটো বাকি ছিল। কিন্তু এর মাঝে মিজানের ভয়াবহ রকমের হুমকি ধামকিতে এক রাতে কাউকে কিছু না বলে জুবায়রা পালিয়ে গেছে। আশেপাশের অনেকেই নাকি দেখেছিল মিজান এসিড ছুড়ে অন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে জুবায়রাকে। হয় রাত কাটাবে নয় এসিড মারবে।
জুবায়রা আফিয়াদের জন্য নিজেকে বেঁধে রাখার প্রয়োজন মনে করেনি। পালিয়ে গেছে। ক্ষুধা, মাতৃত্ব আর পঙ্গুত্বে শেষ পর্যন্ত পঙ্গুত্বের ভয় জিতেছে। সভ্য পৃথিবীর মানবিকতার চর্চা এখানে নেই। আফিয়া নূরজাহানের কাছ থেকে সরে এসে ঘুমন্ত রাণীকে জাপ্টে ধরে ঘুমিয়ে গিয়েছিল ফোঁপাতে ফোঁপাতে।
আজকে রাণী আর নূরজাহান আগে আগে ফিরেছে ঘরে। শহরের এই উচ্ছিষ্ট পলিথিনের ছাউনির বস্তির জমে থাকা ময়লা পানিতে পা ফেলে অলিগলি ঘুরে আফিয়ার ফিরতে রাত হয়ে গেল। নূরজাহান আফিয়াকে কিছু বলল না। কোথায় গিয়েছিল ভিক্ষা করতে সেটাও জিজ্ঞেস করেনি। তবে অন্যান্য দিনের মতো আজকে টাকা লুকিয়ে রাখেনি। পাজামার গোছ থেকে নব্বই টাকার মতো খুচরা টাকা পয়সা বের করে দিয়ে নীরবে শুয়ে পড়েছে। ভাত খায়নি। গোসলেও যায়নি।
‘ভাত খাবি না?’ নূরজাহান চিন্তিত গলায় ডাকে।
‘ক্ষিদা নাই দাদী। পেট ব্যথা। শরীর ভালা না। জ্বর আসতেছে মনে হয়।’ আফিয়া ক্লান্ত মুখে বলে।
রাণী বিশাল একটা টিনের থালা নিয়ে বসে আছে পাশেই। গরম মাড় মাড় ভাত দেয়া হয়েছে। লবণ আর পেঁয়াজ। তরকারি নেই। ময়লা হাতেই খাবলা খাবলা করে ভাত তুলে খাচ্ছে। নূরজাহান বিরক্ত মুখে বলল, ‘পেটে ব্যথা আইবে জানা কথা। ভাত না খাওয়ার সাথে কী সম্পর্ক? উইঠা ভাত চাইট্টা খাইয়া ল। ভাত রান্ধে ফালাইছি না?’
আফিয়া কঁকিয়ে ওঠার মতো করে বলল, ‘খামু না কইলাম না? এত ত্যাজ দেখাও ক্যান বুড়ি? রাণীরে দেও খাইতে। রাক্ষস একটা সেয়।’
নূরজাহান দ্বিরুক্তি করলো না। আরেকটা থালা নিয়ে রাণী আর সে বাকি ভাতগুলো ভাগাভাগি করে খাওয়া শুরু করে দিল। চুলায় এক মগ পানি ঢেলে ধিক ধিক করে জ্বলতে থাকা লাকড়িগুলো নিভিয়ে দিল। ছ্যাঁত করে শব্দ করে মরা ধোঁয়া ওঠা শুরু করল।
শব্দ করে পেঁয়াজ দিয়ে মাড়ওয়ালা ভাত খেতে খেতে আড় চোখে নীরবে আফিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে নূরজাহান। ছানি পড়া চোখটায় অদ্ভুত লাগে সেই দৃষ্টি।


রাতে সবাই বাতি নিভিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়ার পর ধীরে ধীরে চোখ মেলে তাকায় আফিয়া। কোনো রকম শব্দ না করে সোজা হয়ে উঠে বসে অন্ধকারের মাঝে। গায়ের সাথে লেপ্টে থাকা রাণীকে সাবধানে সরিয়ে নিয়ে পাজামার গিঁট থেকে দুটো কানের বল বের করে। খাঁটি সোনার জিনিস কিনা জানে না। কান ফুটিয়েছিল বহু আগে। শলা দেয়া থাকে কানের ফুটাতে। নাকের ফুটাতেও একই। নিঃশব্দে কানের লতির শলা টেনে বের করে একটা একটা করে বলগুলো পরে। ব্যথা করে অনভ্যস্ততায়। তবু অন্যরকম একটা সুখ সুখ লাগে। চুপ চাপ দুই কানে সোনালি বলদুটো পরে অন্ধকারে বসে থাকে আফিয়া। কোনো হাসি কিংবা আনন্দ কান্না থাকে না সেই বসে থাকার মাঝে। চুরি করা একটা চাপা উচ্ছ্বাস কেবল জ্বল জ্বল করতে থাকে চোখের তারায়। অন্ধকারে যা দেখা যায় না।


শেষ রাতের দিকে কনট্রাক্টর সাদেক মিয়াঁর তীব্র মদের ঘ্রাণ আর মাতাল গলার আওয়াজ পাওয়া মাত্র দ্রুত শুয়ে পড়ে আফিয়া। পাশ থেকে নূরজাহান ঘুম ঘুম মুখে উঠে বেরিয়ে যায় এক খিলি জর্দা পান হাতে নিয়ে। নূরজাহান বেরিয়ে যাওয়া মাত্র আফিয়া উঠে বসে রাণীকে ধাক্কাতে থাকে জাগার জন্য। অন্ধকারে রাণী বড় বোনের আচমকা ধাক্কা খেয়ে ভয় পেয়ে জেগে ওঠে। আফিয়া হাতড়ে সুইট দিয়ে বাতিটা জ্বালাতেই চোখ কচলে তাকায় রাণী, ‘কী হইছে বু? সকাল ত হয় নাই অহনো!’
‘আমারে দ্যাখ?’ আনন্দিত মুখে খোলা শন পাটের মতো চুল কানের পেছনে সরিয়ে দিয়ে দুই কানের বলগুলো দেখায়।
রাণী চোখ গোল গোল করে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ। তারপর অবাক হবার গলায় বলে, ‘এইগুলা কইত্থে পাইছো বু? চুরি করছো তুমি?’
‘না! মিজান দিছে......’
রাণী কিছু বুঝতে পারে না। মিজানকে ঠিকমত নাম ধরেও চেনে না সে। তার বয়স মানুষ চেনার মতো হয়নি। বস্তু চেনার বয়স হয়েছে সবে। হাত বাড়িয়ে বোনের কানের বলদুটো ধরে দেখে অবাক হয়ে। ‘কী সোন্দর!’
আফিয়া কানের বলগুলো খুলে আবার পাজামার ভাঁজের ভেতর লুকিয়ে ফেলে, ‘দাদীরে কইস না। না কইলে তোরে শীগগির একটা নয়া জামা কিন্না দিমু।’
রাণী বোকার মতো খুশী হয়। ‘হাচা?’
‘হ। এখন শুইয়া পড়। দাদী চইলা আইলে আর জ্যান্ত রাখবো না।’ বাতি নিভিয়ে শুয়ে পড়ে দুই বোন।
অন্ধকারে নীরব কিছুক্ষণ সময় কেটে যায়।
আফিয়ার ঘুম আসছে না। রাণী কি ঘুমিয়ে গেছে? ‘রাণী?’
‘উঁ?’
‘ঘুমাইছস?’
‘ক্যান?’
‘মিজান লোকটা খারাপ না আসলে। বুঝলি? রাতে কইছি না যে আমার পেটে ব্যথা? ভাত খামু না? আসলে আমি খাইয়া আসছি। নান্নার বিরিয়ানী। এই আমার নখে এখনো বিরিয়ানীর ঘ্রাণ লাইগা আছে!’
রাণী অন্ধকারে বোনের হাতের ঘ্রাণ নেয়। আসলেই খুব দামী খাবারের ঘ্রাণ লেগে আছে। খিদায় পেট মোচর দেয় ছোট মানুষটার, ‘বু? আমারেও খাওয়াবা?’
‘ক্যান! জামা দিমু তাতে হয় না? তোর বয়স হইলে তুই খাইস কাম কইরা। এখন আমি কাম কইরা খাইতেছি।’
‘কি কাম? আমিও করমু।’ রাণী বায়না করার মতো করে বলে। বোনের হাত ধরে টানে অবুঝের মত।
অন্ধকারেই ঠাস করে চড় মারে আফিয়া। চড় খেয়ে হাত ছেড়ে দেয় রাণী। সাপের মতো হিসিয়ে উঠে আফিয়া, ‘বেশি কথা কবি না। যেমনে রাখছি তেমনে থাকিস। নাইলে চুলার মধ্যে লাকড়ি সুদ্ধা চাইপা দিমু। ধলা শরীল আর ধলা থাকবো না!’
‘তুমি খালি আমারে রঙের খোটা দেও ক্যান বু?’ রানী দুঃখ পাওয়া গলায় বলে। আফিয়া রাণী অপেক্ষা কৃষ্ণবর্ণের হওয়ার কারণে রাণীকে প্রায় সময়েই তাচ্ছিল্য করে কথা বলে। নিজের গায়ের কালো রঙ নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই আফিয়ার। মিজান নিজেই একদিন পথ আগলে বলেছি, ‘তর চেহারার কাটিং দেইখা আসলে মাথা মুথা আউলায় যায়। রঙটা আরেকটা ধলা হইলে কি এমন মসিবত হইতো? বিয়া কইরা রাজরাণীর মতো রাখতে পারতাম।’
আফিয়া মড়িয়া হয়ে বলেছিল, ‘তাইলে আমারে না ছুঁইলেই হয়? রাস্তা থামাও কিয়ের লাইগ্যা?’
মিজানের দৃষ্টির চেনার বয়স আফিয়ার বহুকাল আগেই হয়েছে। শরীরের বয়স হতে কেবল সময় লেগেছিল। এখন যেটা একবেলা বিরিয়ানীর সওদা করে সবার অজান্তে। নিজের পিতার খুনির সাথে এক বেঞ্চে বসে বিরিয়ানী খাওয়ার মতো দৈন্যতায় কবে তাকে পেয়েছে নিজেও জানে না।
উত্তরের গলির নান্নার বিরিয়ানীর টিনের দোকানের বেঞ্চে বসে আজ সন্ধ্যায় যখন তৃপ্তি করে বিরিয়ানী খাচ্ছিল আফিয়া, পাশেই মোটর সাইকেলের গায়ে হেলান দিয়ে বিড়ি ফুকাচ্ছিল মিজান। চোখে সানগ্লাস। সানগ্লাসের আড়ালের চোখ দুটো ময়লা কাপড়ে ঢাকা তেরো বছর বয়সী মেয়েটার সমস্ত শরীরে হাত বুলিয়ে যাচ্ছিল। আফিয়া সমস্ত কিছুই টের পায়। তার ইন্দ্রিয় প্রখর। ইচ্ছা করেই একপাশে ফেলে রাখা ওড়নাটা আর তুলে ঠিক করে না।
এই অসংজ্ঞায়িত ক্ষুধার ব্যবসায় ময়লা ওড়নার অন্তরাল বড় প্রকট অস্বীকৃতির প্রকাশ। আফিয়া সেই অস্বীকৃতি জানায়নি। সে জানতে শুরু করেছে ক্ষুধার ওপরে জাত সত্য বলে কিছু নাই। লোক লজ্জ্বা কিংবা দ্বিধান্বিতের আড়ম্বর যেখানে কেবল অপ্রয়োজনীয় মানবিকতা। তবে সেই অলিখিত জাত সত্যের নিচে যাবতীয় লৌকিক ধর্ম, সংস্কার আর সমাজ বিদ্যমান। যেগুলোকে গোনার মতো সময় মিজান কিংবা আফিয়ার না করলেও চলে।


শেষ রাতে যথারীতি নূরজাহানের ফিরে আসার আওয়াজ পাওয়া যায়। কলতলায় পানি ঢালার চেনা পরিচিত শব্দ, এরপর ভেজা কাপড়ে আফিয়াকে ধরে ঘুমিয়ে যাওয়া।
ঘুমানোর আগে নিজে থেকেই ডেকেছিল নূরজাহান, ‘জাগে আছস? আফিয়া?’
আফিয়ার উত্তর দিতে ইচ্ছা করে না। ঘুমানোর মতো ভান করে কেবল বলে, ‘উঁ?’
‘ভাবতেছি এরপর থেকে তোরে আমার সাথে কাজে নিমু। আমার চোখ তো একটা যাইতেছে গা। তোরে কাজ শিখায় দেওয়া লাগে। সাদেক মিয়াঁর দলে কাম করলে ফায়দা অনেক। ভিক্ষা করার বয়স গেছে গা তর।’
আফিয়া উত্তর দেয় না। দাদীর সঙ্গে রোদে পুড়ে পিচ গলিয়ে রাস্তায় ঢাকা, সুরকি বেছানোর কাজে টানে না তাকে। এর চেয়ে ভিক্ষা করা ঢের সহজ। কিন্তু উত্তর দিতে ইচ্ছা করে না। নূরজাহান জবাব না পেয়ে ঘুমিয়ে যায়।
কিন্তু আফিয়া ঘুমাতে পারে না। জেগে থাকে। নাকে ঘ্রাণ ভেসে আসতে থাকে নান্নার বিরিয়ানীর। নতুন পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ আর মুরগীর বাড়ন্ত ঝোল দিয়ে রিবিয়ানী। অনেকগুলো কালো কালো গরুর মাংসের টুকরো, সাথে লেবু। আফিয়া চোখ মুদে সেই বিরিয়ানীর প্লেটে আঙ্গুল ডুবিয়ে মজা পায়। নিজের অজান্তেই ঠোঁটের কোণে এক চিলতে বিষণ্ণ হাসি ফুটে উঠে মিলিয়ে যায়।


দিনের বেলা ঘর থেকে নূরজাহান, আফিয়া আর রাণী তিনজনে এক সাথেই বেরিয়ে যায়। আফিয়া শহরের লোকাল বাসে চলে অন্য দিকে চলে যায় ভিক্ষা করতে। নূরজাহান রাণীকে রেখে আসে শিল্পকলার দিকে। ভার্সিটির উঠতি ছেলে মেয়েরা ঐদিকে চা সিগারেট খেতে যায়। রোগা পটকা রাণীকে ক্ষুধার্ত অবস্থায় দেখলে মায়া করে টাকা পয়সা দেয়। কিংবা ওরা যখন কিছু খেতে যায়, রাণীকে শিখিয়ে দিয়েছে নূরজাহান, সামনে গিয়ে হাত পেতে যেন দাঁড়িয়ে থাকে। অনড় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলে একসময় বিরক্ত হয়েও খাবার দিয়ে দেবে। এর বাহিরে পয়সা কড়ি কিছু হাতে এলে মন্দ না। দিন শেষে নূরজাহান রাণীকে গিয়ে নিয়ে আসে। মাঝে মাঝে রাণীর হাতে ভাল মন্দ খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশও পাওয়া যায়। দাদীকে ভাগ দেয়া নিয়ে আপত্তি নেই রাণীর। নিজের উপার্জনের প্রতি তেমন একটা মমতা নেই। তবে আচার আর আইসক্রিম জাতীয় জিনিস পেলে নিজে খেয়ে ফেলার চেষ্টা করে। এ নিয়ে নূরজাহানের অভিযোগ নেই। চার বছরের উপার্জনক্ষম নাতনিকে এটুকু ছাড় দেয়াই যায়।
তবে সেদিন জ্বর এসে যাওয়াতে রাণীকে আর শিল্পকলায় দিয়ে আসেনি নূরজাহান। ঘরেই শুইয়ে রেখে কাজে বেরিয়ে গিয়েছিল সে আর আফিয়া। আফিয়াকে বলে দিয়েছিল দুপুরের আগেই যেন ফিরে আসে। সারাদিন রাণী একা থাকতে পারবে না। পাশের ঝুপড়ীর বুড়িটাকে বলে গিয়েছিল মাঝে মধ্যে এসে দেখে যেতে।
সূর্য যখন মধ্যাহ্নের দিকে গড়াচ্ছে আফিয়া সেই সময় ফিরে এসেছিল। ওদের পলিথিনের ঝুপড়ির সামনের গলিতে চেনা পরিচিত একটা মোটর সাইকেল দেখতে পেয়ে খানিকটা সন্দিহান মুখে ঘরের দিকে এগোয়।
পলিথিন আর বাঁশের বেড়ার দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই ধাক্কার মতো খায়। বাহিরের উজ্জ্বল আলো থেকে ভেতরে এসে আবছা অন্ধকারে চোখ সইয়ে নিতে সময় লাগে। পরিচিত একটা মিষ্টি ঘ্রাণ নাকে এসে বাড়ি খায়।
ঘরের মেঝের মধ্যে আধ খাওয়া নান্না বিরিয়ানীর একটা প্যাকেট পড়ে আছে। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পোলাউয়ের চাল, মাংসের টুকরা, কাঁচা পেঁয়াজ মরিচ। আফিয়ার বুকের ভেতর ভারি কিছু একটা চেপে বসে আতঙ্কের মতো। মেঝের বালু মাটির ওপর রাণীর শুকনো শরীরটা মাটি মেখে পড়ে আছে। গায়ে লেগে আছে বিরিয়ানীর ভাত। খুব ক্ষীণ ভাবে উঠছে নামছে রুগ্ন বুকটা। আধখোলা চোখে ছাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। পরনে কিছু নেই। উরুর দিকটায় ছোপ ছোপ রক্তে ভেসে যাচ্ছে।
চুলার কাছটায় দেয়ালে হেলান দিয়ে অচেতনের মতো আধ বোজা চোখে শুয়ে আছে মিজান। হাতে একটা ঘোলাটে পানির বোতল। পরনের কাপড় অবিন্যাস্ত। আফিয়ার শব্দ পেতেই চোখ খুলে ঘোলাটে দৃষ্টিতে তাকালো মিজান। তারপর নড়লো সামান্য। আফিয়ার দিকে একবার, আরেকবার রাণীর দিকে তাকিয়ে অপরাধীর গলায় বলল, ‘শ্‌শ্‌ শ্‌! কাউরে কইস না। তোর লাইগা নান্নার বিরিয়ানী নিয়া আইছিলাম। তুই যে বাড়িত নাই জানা আছিল না। রাণীরে দ্যাখলাম আছে কেবল। বাবা খাইয়া মাথায় একটু সমস্যা হইয়া গেছেরে। কড়া জিনিস! খাইবি?’
আফিয়া হাটু গেড়ে রাণীর পাশে বসে পড়ে। হাত দিয়ে মেয়েটার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে স্থাণুর মতো। মিজান টলতে টলতে উঠে দাঁড়ায়। প্যান্টের বেল্ট লাগাতে লাগাতে বলল, ‘তর লাইগা এরপর আবার বিরিয়ানী আনুম। এখন কাউরে কিছু কইস না।’ বেল্টের পেছন দিকে একটা পুরনো ধাঁচের জং ধরা পিস্তল গুজে নেয়। এই জিনিস আফিয়া আগেও দেখেছে। মিজান পিস্তল ছাড়া চলা ফেরা করে না।
পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যায় মিজান। আফিয়া মূর্তির মতো বসে থাকে রাণীর শরীরটার পাশে। দম যাচ্ছে। কেঁপে কেঁপে উঠছে ছোট শরীরটা। আফিয়া নির্জীব।


তিন মাস পরের এক বর্ষণ মুখোর রাতের কথা।
ঝুপড়ির ভেতরেও পানি এসে যাচ্ছে। ঘুমানোর উপায় নেই। কাঁথা বিছালেই পানি ধরে ফেলবে। বালিশও ভিজিয়ে দেবে। নূরজাহান এই বৃষ্টির মাঝেও সাদেক মিয়াঁর সাথে বেরিয়ে গেছে পলিথিনের ব্যাগ মাথায় দিয়ে। আফিয়া ঘুমিয়ে আছে। থেকে থেকে ঘুম ভেঙ্গে যাচ্ছে বজ্রপাতের তীব্র আওয়াজে। জ্বর আসছে কিনা বুঝতে পারছে না।
নাকে মিষ্টি একটা ঘ্রাণ আসছে। বিরিয়ানীর ঘ্রাণ। ঘুম ফিকে হয়ে আসছে। কেউ গায়ে হাত রেখেছে, বরফ ঠাণ্ডা হাত। চমকে জেগে উঠল আফিয়া।
আবছা অন্ধকারে দেখা গেল মিজানের মুখ। এক হাতে আফিয়ার কাঁধে চেপে ধরেছে। অন্য হাতে এক প্যাকেট বিরিয়ানী। ‘কিরে? খিদা লাগে নাই তর?’ কড়া মদের গন্ধ ভক ভক করে বেরিয়ে আসে মুখ থেকে তার।
আফিয়া সঙ্গে সঙ্গে খপ করে প্যাকেটটা হাতে নিয়ে গোগ্রসে খাওয়া শুরু করে দেয়। শুকনো জিনিস খেতে গিয়ে বেদম কাশি ওঠে, তাও পানি খায় না। মিজান লেলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মেয়েটার শরীরের দিকে। অন্ধকারের মাঝে আফিয়া খেয়ে যেতে থাকে নিবিড় ভঙ্গিতে। মিজানের হাত কোথায় যাচ্ছে, কি করছে কোনোদিকে খেয়াল থাকে না তার। কোনোরূপ বাঁধা না দিয়ে নিজের মতো খেতে থাকে। বুভুক্ষের মতো খেতে থাকে।
খাওয়া শেষ হতেই মিজান ঝাঁপিয়ে পড়ে আফিয়ার শরীরের ওপর......


দশ মিনিট পর চাপা পিস্তলের গুলির শব্দ শুনতে পাওয়া যায় বজ্রপাত ছাপিয়ে......
নূরজাহান ফিরে এসেছিল তখন। কলতলায় গিয়ে টিউবওয়েল চাপছিল বৃষ্টির মাঝেই। নিজের গায়ে পানি ঢালতে গিয়ে আচমকা সেই শব্দে হাতের মগ ছিটকে পড়ে যায়। অদ্ভুত চোখে ফিরে তাকায় নিজেদের ঝুপড়ির দিকে। বজ্রপাতের আলোয় অস্পষ্ট দেখা যায় কামিজ পরা, পাজামাহীন একটা মেয়ে কলের মানুষের মতো ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে কাঁদা, ময়লার মাঝ দিয়ে...... হাতে মিজানের সেই পুরনো জং ধরা পিস্তল।
বৃষ্টির মাঝ দিয়ে হেঁটে আসে দাদীর কাছে আফিয়া। কলতলায় উবু হয়ে বসে মাথা ঝুকিয়ে দেয় টিউবওয়েলের নিচে। ‘দাদী? অ দাদী? আমার ডান হাতে বিরিয়ানীর খুব সোন্দর ঘ্রাণ আছিল। রাণী প্রত্যেক দিন আইসা আমার হাতের আঙ্গুল কামড়ায় খায় ঘুমের মধ্যে...... আজকে রক্ত মাইখা সেই ঘ্রাণ নষ্ট হইয়া গেল। রাণীটা আর বুঝি আইবো না আঙ্গুল কামড়াইতে।’
ধীরে ধীরে বাকি ঝুপড়িগুলো থেকে লোকজন বেরিয়ে আসতে থাকে একে একে... আফিয়াদের ঘরটার ভেতর মিজানের লাশটা লম্বা হয়ে শুয়ে রয়েছে। ঠিক রাণীর মত, বিবস্ত্র। রক্তে মাখা। ডান চোখের কোটর শূণ্য হয়ে ছাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে... একপাশে অবহেলায় পড়ে রয়েছে বিরিয়ানীর প্যাকেটটা। দু চারটে ভাত ছড়িয়ে আছে মাটির মেঝেতে......


(সমাপ্ত)

সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০২০ রাত ৮:০৫
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×