নাহ, আজ আর কোন অভিযোগ নয়, আজ আমি খুব খুশি

। কারণটা খুব সহজ; আমার আগের পোস্টটা অনেকেই পড়েছেন এবং মন্তব্যও করেছেন । ভেবেছিলাম, কেউ বুঝি পড়েও দেখবে না

। যাক, আমার সেই ভুল ভাঙলো ।
আজ আমি লিখতে চলেছি এক ভ্রমণ-কাহিনী

। নাহ, এটাকে বোধ হয় ভ্রমণ-কাহিনী বলা ঠিক হচ্ছে না। মাত্র ৮-১০ ঘন্টার ভ্রমণকে কি আর ভ্রমণ-কাহিনী বলা উচিত! মোটেই না । তবুও ব্যক্তিটি যখন আমি ( যার কাছে ঘর থেকে বের হওয়া মানেই এক একটা জার্নি

), তখন আর বলতে দোষ কি

! যাই হোক, শুরু করছি । যাত্রা শুরুর স্থান ঢাকার পলাশী আর গন্তব্য খুলনা ।
তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর । সময় সকাল সাড়ে সাতটা । আকাশটা ছিল বেশ মেঘলা । যদিও আবহাওয়া নিয়ে খুব বেশি পরোয়া করার পাত্র আমরা নই

। দিনক্ষণ যখন ঠিক করাই তখন পিছুটান দিয়ে কি লাভ ! আমার এক হাতে বড় একটা ট্রলি-ব্যাগ, আর অন্যহাতে একটা কাপড়ের ব্যাগ । সফর-সঙ্গী আমার বন্ধু মি (প্রকৃত নাম নয়, আদ্যক্ষর ব্যবহার করেছি মাত্র)। ওর সাথে অবশ্য তেমন ভারি কিছু নেই । শুধু কাঁধে ঝোলানো একটা ব্যাগ । এখানে মি এর একটু পরিচয় দিয়ে রাখি । ও বরাবরই একটু অন্তরমুখী স্বভাবের । যদিও এই সাড়ে তিন বছরে আমাদের সংস্পর্শে এসে একটু সামাজিক হয়েছে আর কি

!
সপ্তাহখানেক আগে থেকেই আমাদের প্ল্যান ছিল । ঢাকা থেকে খুলনা যাবো, তবে মাওয়া পথে । কিন্তু এটা যে একটা ব্রেক জার্নি হবে, কে তা জানতো

! বরাবরই আমি ট্রেনে যাওয়া-আসা করি ( সেফ জার্নি, তাছাড়া ট্রেনের ঝাঁকুনিটা বেশ মজার

, তাই কষ্ট কম, শুধু সময়টা একটু বেশি লাগে

এই আর কি, বাঙালীর আর সময়ের অভাব কোথায়!

)। আমি ভেবেছিলাম মি এর বুঝি পূর্ব-অভিজ্ঞতা আছে ঢাকা-মাওয়া-খুলনা যাওয়ার । কিন্তু পলাশী হতে গুলিস্তান আসার পথে আমার সে ধারণা ভাঙলো

। বেচারা মি-ও ঠিকমত চেনে না এই পথ

।
রিক্সাযোগে গুলিস্তান পৌঁছালাম আমরা । এসেই যথারীতি লোকাল বাসের খপ্পরে পড়লাম

। বাসের গায়ে লেখা ছিল ঢাকা-মাওয়া ।আর যিনি টিকেট বিক্রি করছিলেন শুধু চেঁচাচ্ছিলেন "এইদিকে আসেন তাড়াতাড়ি, ডাইরেক্ট গাড়ি...ডাইরেক্ট গাড়ি..অক্ষনি ছাড়বো ...ডাইরেক্ট গাড়ি..

" । আমরা যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেলাম

। বোকার মত আমরা ঝটপট দুটো টিকেট কাঁটলাম

, বলা তো যায় না আবার যদি সিট না পাই

। তারপর বাসে উঠে চোখ ছানাবড়া

। মাত্র ৬-৭ জন যাত্রী । তবুও আমাদের অবাক করে এই কয়জন মাত্র যাত্রী নিয়ে মিনিট দশেকের মধ্যেই বাস ছাড়লো । ভাগ্গিস বুদ্ধি করে সঠিক বাসেই উঠেছি আমরা । আমি আর মি দুজনে দুজনের বুদ্ধির খুব তারিফ করতে লাগলাম

।
কিন্তু পোস্তগোলা ব্রীজের কাছে আসতেই আমরা যে দুটো বড় বুদ্ধির ঢেঁকি তা প্রমাণিত হল

। বাসটা যেন ব্রীজের প্রেমে পড়ে গেল

। থামলো তো থামলোই, আর নড়াচড়া করার কোনো ইচ্ছেই যেন নেই । বাসের হেলপার, কন্ট্রাকটর, ড্রাইভার সবাই যেন শপথ করেছেন বাস একদম হাউসফুল না হওয়া পর্যন্ত একচুলও নড়ব না

। ওদিকে পিছন থেকে আসা বাসগুলো যখন একের পর এক পাশ দিয়ে চলে যেতে লাগলো তখন নিজের উপর মেজাজ খারাপ হতে লাগল

। তারপরও সাথে যেহেতু মি ছিল, তাই কিছুটা হালকা লাগছিল । আধা ঘন্টা যেতে না যেতেই বাসের উত্তেজিত যাত্রীরা ড্রাইভারের উদ্দেশ্যে মধুর বাণী(!) বর্ষণ শুরু করলেন । কিন্তু তাতেও খুব বেশি কাজ হল না

। ঠিক এক ঘন্টা বাদে বাস যখন ছাড়লো তখন একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম ।
এর মধ্যে কখন যে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছিল তা টেরই পেলাম না । সারাপথ গল্প-গুজবে এতই মগ্ন ছিলাম যে বাইরের পানে খেয়ালই করিনি

। ঘড়িতে তখন ৯ টা ৫০ মিনিট। আমরা মাওয়া ঘাটে এসে পৌঁছলাম

। এখন আমাদের নদী পার হবার পালা । তখনও বেশ বৃষ্টি হচ্ছিল । দু-দুটো ব্যাগ সামলাতে যথেষ্ট হিমশিম খাচ্ছিলাম আমি

। তার উপর বিপদের বন্ধু ছাতা নামক বস্তুটিও সঙ্গে ছিল না

। ভাগ্গিস মি সাথে ছিল, তাই কিছুটা রক্ষা । তবে বেশ ভয়ও করছিল আমার । প্রথমত, জায়গাটা বেশ অচেনা

। তার উপর বৃষ্টিতে কাপড়ের ব্যাগটা ভিজে যাওয়ার যথেষ্ট আশংকা ছিল

। আমরা কিছুদূর হেঁটে একটা ছাউনি দেওয়া জায়গায় এসে থামলাম ।
আমি একটা অদ্ভুত(!) জায়গা দেখতে পেলাম । একটা করিডোর টাইপের জায়গা । চারপাশ বাঁশ দিয়ে ঘেরা আর মাঝখানে কিছু লোক চেয়ার পেতে বসে আছে এবং যারা ওই পথ দিয়ে যাচ্ছে তারা ওই লোকগুলোকে টাকা দিচ্ছে

। জায়গাটি আসলে ছিল লঞ্চ-ঘাট

। তবে কেন জানিনা, আমার দেখা লঞ্চ-ঘাটগুলো থেকে এটাকে আলাদা মনে হচ্ছিল

। মি কে জিজ্ঞেস করলাম এটা কি আসলেই লঞ্চ-ঘাট কি-না ! বেচারাও কেমন আমতা আমতা করতে লাগল

। যাই হোক, কৌতুহলী মন মানে না কোনো বাঁধা

। অনেক সাহস নিয়ে ওখানকার একটা লোককে জিজ্ঞেস করলাম, "ভাই, এটা কি লঞ্চ-ঘাট ?

" লোকটা কি বুঝলো কে জানে

! টাকা নেওয়ার কাজে ব্যস্ত ছিলেন তিনি । অনেকটা রাগত স্বরে জবাব দিলেন, "তা আপনের কি মনে হইতাছে এইটা বাস ইস্টিশন!" পাশের লোকগুলো বোধহয় বেশ মজাই পেল । তারা খ্যাকখ্যাক করে হাসতে লাগল । গাধার মত একখানা প্রশ্ন করেছি । আমিও হাসলাম

, তবে সেটা নিশ্চয় আনন্দের ছিল না

। তবে যখন দেখলাম আমার পাশে দাঁড়িয়ে মি-ও মুচকি মুচকি হাসছে, তখন মেজাজটা সত্যিই বিগড়ে গেল

। না, এখন মেজাজ খারাপ করার সময় নয় । তাড়াতাড়ি করিডোর পেরিয়ে লঞ্চ-ঘাটে উঠলাম।ঘাটের টাকাটা অবশ্য ও-ই দিল

।
লঞ্চ-ঘাটে এসে লঞ্চ পেতে খুব বেশি বেগ পেতে হল না । আমার জীবনের প্রথম লঞ্চে চড়া

। ভাবতে বেশ রোমাঞ্চিত লাগছিল

। খুব বেশি ভিড় হল না। বসবার জায়গা পেলাম আমরা । মোটামুটি মিনিট দশেকের মধ্যেই লঞ্চ ছাড়ল । ঢেউয়ের দোলায় দোলায় আর ঠান্ডা বাতাসে মন জুড়িয়ে গেল । কিন্তু বাদ সাধল বৃষ্টি । কিছুটা ভিজে গেলাম আমরা । তারপরও লঞ্চ তার আপন গতিতে তরতরিয়ে চলতে লাগল ।
বৃষ্টির বেগ কিছুটা কমল । আমি লঞ্চের বাইরের দিকের রেলিং এর ধারে গিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম কিছুক্ষণ । ভালই লাগছিল । কিন্তু হঠাৎ মাথার মধ্যে বিদ্যুৎ গতিতে একটা চিন্তা এসে ভর করলো । যে পারে আমরা নামব, সে পারের নাম-ই তো জানিনা

। শুধু জানতাম লঞ্চে উঠে নদী পার হয়েই বাসে উঠতে হবে - এতেই কাজ শেষ

। কিন্তু বৎস, ঘাটের নাম না জানলে তো আর বাসে ওঠা হবে না - এটাতো একবারও আমাদের দুটি মস্তিষ্কে আসেনি

। সুতরাং আবারও বুদ্ধু হলাম

।
রেলিং এর পাশে দাঁড়ানো একটা লোককে জিজ্ঞেস করলাম, "আচ্ছা ভাই, আপনি কোথায় নামবেন?" এমন প্রশ্নের জন্য লোকটা মোটেই প্রস্তুত ছিল না । খানিকটা ঘুরে তিনি আমার দিকে তাকালেন । চোখে সন্দেহের চাউনি । কোন উত্তর দিলেন না

। কিন্তু আমি তো নাছোড়বান্দা

। আবার জিজ্ঞেস করলাম । এবার তিনি উত্তর দিলেন, "কেওড়াকান্দি। আপনে কই যাইবেন?" আমি বললাম , "যে পার থেকে বাসে উঠে খুলনা যাওয়া যায়, সেই পার নামব

।" আমার এই উত্তর শুনে লোকটা খুব অবাক হল । আমাকে পাগল ভাবল কি-না কে জানে

! আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, "আচ্ছা ভাই, ওপার কোথা থেকে খুলনার বাস ছাড়ে জানেন?" তিনি বিরস বদনে উত্তর দিলেন, "জানি না ।" এর মাঝে কখন যে লঞ্চটি একটা ঘাটের খুব কাছে এসে পড়েছে খেয়ালই করিনি ।
ঘাটটির নাম কাঁঠালবাড়ি । চারিদিকে কাঁঠাল গাছের চিহ্ণ মাত্র নেই

। হয়ত কোনকালে এখানকার কাঁঠালের খুব নামডাক ছিল

। নামব কি-না ইতস্তত করছিলাম । এদিকে যাত্রীদের ওঠা-নামার ভিড়ে সামনে এগিয়ে যাওয়াও বেশ মুশকিল ছিল । একা একা কিছুদূর এগোতেই মাথায় অবশেষে একটা শুভ বিচক্ষণ বুদ্ধির উদয় হল । লঞ্চের সামনের দিকের যে অংশে লঞ্চ-চালক থাকেন ওদিকটাতে গেলাম । কন্ট্রোল রুমে উঁকি দিলাম । দেখলাম এই লঞ্চের চালক একজন মুরব্বি-গোছের ভদ্রলোক । দেখে একটু ভালো লাগল । যাক, ওনার কাছে গেলে হয়ত আশাব্যঞ্জক কিছু জানা যাবে

।
যেই ভাবা সেই কাজ । ওনার খুব কাছে এসে বিনীতভাবে বললাম, "চাচা, খুব সমস্যায় পড়েছি । গোপালগঞ্জের দিকে যাবো, কিন্তু কোথায় নামব বুঝতে পারছি না

।" এখানে একটা কথা বলা দরকার । যাবো তো খুলনা, গোপালগঞ্জ বললাম কেন??? কারণ, আমি জানতাম গোপালগঞ্জ থেকে খুলনার সরাসরি বাস আছে । তাছাড়া গোপালগঞ্জ খুলনা অপেক্ষা নিকটে । সুতরাং সমস্যা হবার কথা নয়

। যাই হোক, উনি বললেন, "এইহানে নাইমো না । সামনে হইল কেওড়াকান্দি।ওইহানে নাইমা যাইও। ওইহান থেইকা বাস পাইবা ।"শুনে মনটা আনন্দে ভরে গেল

।
বেচারা মি এতক্ষণ একা একাই বসে ছিল । তাড়াতাড়ি খবরটা জানালাম ও-কে ।
অবশেষে নামলাম কেওড়াকান্দি । বৃষ্টি থেমেছে অনেকক্ষণ । ঘাট থেকে মেইন রোড অবধি দু-দুটো ব্যাগ টেনে-হিঁচড়ে আনলাম । কিন্তু ট্রলি-ব্যাগটাকে চেনাই যাচ্ছিল না । প্রায় নতুন ব্যাগটি আমার এখন কাদায় মাখামাখি

। জামা-কাপড়ের অবস্থা আর নাই বা বললাম

। বাসা পর্যন্ত একবার পৌঁছলে হয় , তারপর আমিতো খালাস

। যারা এগুলো পরিষ্কার করবেন, তারাই ভালো বুঝবেন

!
মেইন রোডের পাশের একটা দোকানে এসে দাঁড়ালাম দুজন । এখন খুলনাগামী বাসের জন্য অপেক্ষা । কিন্তু ভাগ্য এতই সুপ্রসন্ন(!) যে কোন বাসের গায়ে খুলনা শব্দটি দেখতেই পেলাম না

। সব শুধু ভাংগা, টেকেরহাট, বরিশাল ইত্যাদি লেখা

। অবস্থা এমন যে মনের মাঝে গান বাঁজছে, "বাসের দেখা নাই রে, বাসের দেখা নাই

" । এমন সময় আমরা যে দোকানটিতে বসে ছিলাম সেই দোকানেই একজন মধ্যবয়সী লোকের আগমন ঘটল । চেহারায় ভারিক্কি ভাব, মাথায় চুল নেই বললেই চলে, চোখে সানগ্লাস

। হাতে একটা বড় সুটকেস । এক নজরে দেখলে বিজনেসম্যান বলেই মনে হয় । আমাদের দিকে এগিয়ে আসলেন । আমি আর মি অবশ্য বাস পাওয়া যাচ্ছে না বলে খুব হা-হুতাশ করছিলাম

। লোকটা এসেই ফোঁড়ন কাটলেন ।
- কোথায় যাবেন?
- খুলনায় । আপনি?
- আরে ! আমিও তো খুলনায় যাব ।
আমরা হঠাৎ এই অনাকাঙ্খিত লোকটার কথা শুনে যারপরনাই খুশি হলাম, তবে মনে মনে

। যাক, খুলনায় যাবে এমন একজনকে অন্তত পাওয়া গেল

। খেয়াল করলাম, উনিও আমাদের মত বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন । সামনের বেঞ্চে বসে আছেন উনি ।
- আপনিও কি বাসে যাবেন নাকি?
- হ্যাঁ, আমি রাজীবে যাবো ।
উত্তরটা শুনে কিছুটা বুঝলাম, রাজীব বোধহয় কোন বাস কোম্পানীর নাম।
ঘড়ির কাঁটা তখন ১১ টা ছুঁইছুঁই করছে । বাসের দেখা নেই তখনও

। একটু কৌতুহলী হয়ে কথা বলতে লাগলাম আমি। মি-ও বসে আছে পাশেই ।
- রাজীবের গাড়ি কতক্ষণের মধ্যে আসতে পারে, বলতে পারেন ?
- আধ ঘন্টার মধ্যেই চলে আসবে

।
- ভাংগায় গেলে সেখান থেকে তো খুলনার গাড়ী পাওয়া অনেক সহজ । তাই না? এখনও আধা ঘন্টা অপেক্ষা করবেন ?
আমার প্রশ্নটা বোধহয় লোকটার পছন্দ হল না

।
- বসেন । অপেক্ষা করেন । আর বেশি সময় বাকি নেই । আধা ঘন্টাই তো, চলে আসবে

।
লোকটা বেশ কনফিডেন্সের সাথেই উত্তর দিল । আমরাও আশায় বুক বাঁধলাম

। আমি এর মাঝে আমার আর মি এর মোবাইলে কিছু টাকা ফ্লেক্সি করে আসলাম । আধা ঘন্টা কেটে গেল । বাস আসার কোন নাম নেই । দেখতে দেখতে দেড় ঘন্টা হয়ে গেল । রাজীব নামে আদৌ কোন বাস আছে কি-না এটাই আমার সন্দেহ হতে লাগল

। লোকটা পাশের দোকানে বসে আছে । এখনো অপেক্ষা করে যাচ্ছেন তিনি । লোকটার উপর খুব রাগ হচ্ছিল আমার

।
- নাহ, আর পারা যায় না ।
মি-ও যেন এটাই বলতে চাইছিল । ভাংগা-গামী একটা বাস দেখেই হাত উঁচু করে ইশারা করলাম আমরা । কাজ হল । বাসটায় উঠে পড়লাম আমরা । বাংলা সিনেমায় রাজীব যেমন ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করতেন, তেমনি এই রাজীব কোম্পানীর বাসের আশায় বসে থাকা লোকটি আমাদের কাছে ভিলেন হয়ে গেলেন

!
প্রায় এক ঘন্টা বাদে আমরা ভাংগা এসে পৌঁছলাম । পুরো নাম ভাংগা-বিশ্বরোড । বাসটা যেখানে থামলো সে জায়গাটাকে অনেকটা ট্রেনের জংশনের মত মনে হয়

। প্রায় চারটা বড় রাস্তা এসে মিশেছে এখানে। এখন শুধু খুলনার গাড়ীতে ওঠার পালা । ভাগ্য সুপ্রসন্ন

। পেয়েও গেলাম একটা বাস । নাম বনফুল । নাহ, আর কোন অপেক্ষা নয় । টানা প্রায় আড়াই ঘন্টার জার্নির পর অবশেষে খুলনা পৌঁছলাম আমরা । আর যখন বাসায় পৌঁছলাম তখন ঘড়িতে ৫ টা ৪৫ মিনিট । শুরুটা হয়েছিল ৭টা ৩০ মিনিটে । সারাদিন শেষে ক্লান্ত, বিধ্বস্ত আমি। অনেকবার ঢাকা-খুলনা জার্নি করেছি আমি, এবারের মত এত অভিজ্ঞতা হয়নি কখনো । তাই শিরোনামের সুরেই বলছি,
কান ধরেছি, আর ব্রেক জার্নি করব না !
[জানি, লেখাটা বেশ বড় হয়েছে

। কি আর করব, টানা ৭ ঘন্টা ধরে লিখছি যে! তাছাড়া লেখার যে কোয়ালিটি, তাতে আমি পাঠক হলে নিঃসন্দেহে ১০ এর মধ্যে ২-৩ এর বেশি দিতামই না

। যারা পুরোটা পড়লেন, যারা শুধু শিরোনামটা পড়লেন আর যারা কিছুই পড়লেন না - সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি । আর বিশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি সেই মানুষটিকে যার প্রেরণায় এই ভ্রমণ অভিজ্ঞতাটা ব্লগের পাতায় লিপিবদ্ধ করলাম । পরিশেষে প্রিয় পাঠক, লেখায় কোন ত্রুটি দেখলে তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন বলে আশা রাখছি । সবাই ভালো থাকবেন । শুভকামনায় শেষ করছি । ]