আগষ্ট মাস । যেন লাশের মাস। এই মাসের একেকটি তারিখ থেকে যেন চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে রক্ত। ১৫, ১৭ ,২১, ২৪,২৬,.......
আজও তেমনি রক্তের দাগ লাগা দিন।
উত্তরের জেলা দিনাজপুরের ফুলের মতো জনপদ ফুলবাড়ি। এখানেই জীবন দিয়েছিলো সাত সাতটি প্রাণ!
কেন?
নিজের বাস্তুভিটা আর অস্তিত্ব ধরে রাখার প্রত্যাশায়। ব্যাপারটা হয়তো অনেকেরই জানা। তবুও অল্প করে খোলাসা করি।
ফুলবাড়িতে রয়েছে কয়লা খনি। আর কয়লা উত্তোলনের জন্য আমরা, মানে আমাদের বাংলাদেশ সরকার, ভাড়া করেছে এশিয়া এনার্জিকে। তো এই এশিয়া এনার্জি উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের পক্ষের জ্বালানী বিশেষজ্ঞ, দেশের জাতীয় সম্পদের মর্যাদা ও মূল্যরক্ষাকারী ছাত্র-শিক্ষক- বুদ্ধিজীবিরা এর বিরোধিতা করেন। আর ফুলবাড়ির জনগণ সহ দিনাজপুরের চারটি উপজেলার প্রায় সব জনগণ শরীক হন এই বিরোধিতার কাতারে।
কেন এই বিরোধিতা?
কারণ, উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলিত হলে বসবাসকারী লাখ লাখ জনগণ উদ্বাস্তু হবে। কেটে ফেলতে হবে ওই অঞ্চলের সকল গাছ। হাজার হাজার একর ভূমি খোঁড়ার পর ওই সব জমিতে আর কখনোই ফলবে না কোনো ফসল। জমি হারাবে তার উর্বরতা। পুকুরে থাকবে না কোনো পানি। এইসব জানার পরও কি কোনো সুস্থ- স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের সপক্ষে অবস্থান নেয়া সম্ভব?
বোধগম্য কারণেই মানুষ তা নেয় নি।
রাষ্ট্রের প্রতিপালকেরাও তাদের শ্রেণী অবস্থানের কারণেই এশিয়া এনার্জির পক্ষে অবস্থান নেয়। সংগ্রামী জনগণের বুকের দিকে তাক করে ট্রিগার। ঝরে পড়ে সাত সাতটি তাজা প্রাণ। আহত হয় শত শত নারী-পুরুষ-শিশু-গাছ-পাখি।
সে সময় সাহসী মানুষেরা কিন্তু ট্রিগারের কাছে নত হয় নি। তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারই নত হয়েছিলো সাময়িকভাবে । এখন আবার বর্তমান রাষ্ট্র তত্ত্বাবধানকারী (!) সরকার এশিয়া এনার্জির পক্ষে প্রকাশ্য অবস্থান নিয়েছে। আর এর নাটের গুরু হলেন সিএর বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ম. তামিম।
আচ্ছা, তামিম সাহেব কী ফুল পছন্দ করেন?
করলে, আমি তাকে ফুলবাড়ির ফুলের গন্ধ নিতে পরামর্শ দিতে চাই। দেখবেন সেখান থেকে কী সুন্দর মানুষের রক্তের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে!!!!!
ফুলবাড়ির সাত শহীদকে রেড স্যালুট।