"মা'র অবস্থা ভালো না! তুই এখনই ধুনট হাসপাতালে চলে আয়।" গত পরশু মোবাইল ফোনে বড় আপার এমন কাতর কণ্ঠের মাত্রাগত হিসাব বুঝে চমকে উঠেছিলাম। প্রায় ছুটে বেরুতে গিয়ে দেখি, পকেট শূণ্য! কারো মায়ের আয়েশের জন্য পাঁচ হাজার থেকে পাঁচ কোটি খরচ হয়, একই রাষ্ট্রে চিকিৎসার অভাবে শত মায়ের করুণ মৃত্যুর স্থিরচিত্র চোখে নিয়ে যখন পৌঁছলাম, তখন আকাশ কালো করে রাত নেমেছে। বিদ্যুত-আলোয় হাসপাতালের কালো পিচের উঠোনজুড়ে বোশেখের লাল কৃষ্ণচূড়ারা বৃন্ত ছেঁড়ার বেদনা আঁকছে যেন!
ফুড পয়জনিং! কিন্তু এতটা জটিলতার কারণ হলো, সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলেছে ঝাঁড়-ফুঁকের চিকিৎসা! আর এই অবৈজ্ঞানিক অপকর্মের অসাড়তা প্রমান করতে মাকে চেতনা হারাতে হয়েছে। অবশেষে হাসপাতাল।
এমন অসংখ্য মায়ের অজ্ঞতাজনিত অসহায়ত্ব দূর করার মহৎ লড়াইয়ে নেমেছিলেন অভিজিত আর অনন্ত বিজয়ের মতো প্রত্যয়ী, দৃঢ়চেতা সৈনিকগণ। তাঁদেরকে হত্যা করা মানে তাই পরোক্ষে আমার মাকে তথা বাংলার অসংখ্য অসহায় মায়েদের খুনের আয়োজন সম্পন্ন করা।
আমার আপনার মায়ের বেঁচে থাকা তথা মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার সাথে প্রগতিশীল আন্দোলনের সম্পর্ক অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত।
তাই রিলে রেসের ঐ কাঠিটা হাতে তুলে নিই চলুন। মানুষের মতো বাঁচতে গেলে লড়াই এড়ানো যায় কি? বরং আসুন প্রস্তুত হই। আর মনে রাখা দরকার, প্রচলিত সিস্টেম হলো সমগ্র সর্বনাশের স্রষ্টা। আঘাত করতে হবে ওখানেই।