somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রবাসের পথে ... (৯) জাপানের ইতিহাস-১

০৭ ই অক্টোবর, ২০০৯ সকাল ১১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


(আদিকথাঃ কোন পরিকল্পনা ছাড়াই শুরু হয়েছিলো প্রবাসের পথে সিরিজটি। কোন এক বৃষ্টিস্নাত সকালে প্রবাস জীবনের একাকীত্বতা ঘুচানো, কিছুটা অভিগ্গতা শেয়ার সহ নিজের জানার পরিধিটুকু বাড়ানোর ইচ্ছে থেকেই মূলতঃ শুরু হয়েছিলো এই সিরিজটি। ফলে এই সিরিজটির কোন ধারাবাহিকতার বাধ্যবাধকতা ছিলো না। কিন্তু গত ৯টি পর্ব শেষে ধারাবাহিকতার প্রয়োজনীয়তাটুকু খুব গভীর ভাবে অনুভূত হচ্ছে। কাল পরিভ্রমনের যাত্রায় পিছু ফিরে যাওয়ার উপায়টা আমাদের জানা নেই। তাই এই ব্যর্থতাটুকু স্বীকার করেই নাহয় নতুন করে প্রচেষ্টার প্রয়াস...)

আদি জাপান (খ্রীষ্টাব্দ ৭১০ সময়কাল পর্যন্ত):
খ্রীষ্টপূর্ব ১৩০০০ সাল থেকে ৩০০ সাল পর্যন্ত সময়কে জাপানের জ্যামন পিরিয়ড (Jomon Period) বলা হয়। এসময়কালীন জাপানের অধিবাসীদের জীবিকা ছিলো শিকার ও মৎস্য আহরন।

খ্রীষ্টপূর্ব ৩০০ সাল থেকে খ্রীষ্টাব্দ ৩০০ সাল পর্যন্ত সময়কে ইয়াইয়োই পিরিয়ড (Yayoi Period) বলা হয়। এই পিরিয়ডের খ্রীষ্টাব্দ ১০০ সালে জাপানে ধান চাষ শুরু হয়। কৃষিকাজের সাথে সাথে সামাজিক স্তর বিন্যাস শুরু হয় এবং দেশের বিভিন্ন অংশে ক্ষমতাশালী জোতদারদের আবির্ভার ঘটে। জনশ্রুত আছে এসময় জাপানে হিমিকো (বা পিমিকো) নামে একজন রানী ছিলেন। এই সময়কালেই তৎকালীন জাপানে কোরিয়া হতে লৌহের ব্যবহার সহ অন্যান্য আধুনিক ধ্যান ধারণার প্রচলন ঘটে।



খ্রীষ্টাব্দ ৩০০ সাল থেকে ৫৩৮ সাল পর্যন্ত সময়কে কোফুন পিরিয়ড (Kofun Period) বলা হয়। এই সময়কালে উর্বর কিনাই এলাকা (ওসাকা, কোবে, কিয়োটো এবং নারা এই চারটি প্রিফেকচার নিয়ে কিনাই এলাকা) জাপানের সকল ক্ষমতার কেন্দ্রে পরিণত হয়। খ্রীষ্টাব্দ ৪০০ সালের দিকে নারা প্রিফেকচারকে ঘিরে জাপানের রাজনৈতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন এর নাম ছিলো ইয়ামাতো জাপান। এই ইয়ামাতো জাপান তৎকালীন কিয়ুসো থেকে কিনাই এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে। কিন্তু কান্তো (বর্তমানের টোকিও, ইয়োকোহামা সহ আরো ৫টি প্রিফেকচার), তোহুকু (জাপানের উত্তরের বৃহত্তম দ্বীপ হোনসুর ৬টি প্রিফেকচার) এবং হোক্কাইডো (জাপানের দ্বিতীয় বৃহত্তম, সর্বউত্তরের তুলনামূলকভাবে স্বল্পন্নত দ্বীপ) এলাকা এর বাহিরেই থেকে যায়।



তখন সম্রাটরা ছিলেন ইয়ামাতো জাপানের শাসক। সম্রাটরা সাধারণতঃ রাজধানীতেই বসবাস করতেন, কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে এই রাজধানী প্রায়ই এক শহর থেকে অন্য শহরে স্থানান্তর করা হতো। কিন্তু অচিরেই সোগা ক্লান ইয়ামাতো জাপানের রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে ক্ষমতা গ্রহন করে। এসময় সম্রাটরা শুধুমাত্র রাজ্যের প্রতীক হিসাবে বিবেচিত হতেন এবং সিনটো ধর্মের যাজক হিসাবে দায়িত্ব পালন করতেন। মজার বিষয় হচ্ছে এই সোগা ক্লান ছিলেন অন্যতম ক্ষমতাশালী ক্লান যিনি কোরিয়া থেকে জাপানে বৌদ্ধ ধর্ম বিস্তারে অনবদ্য ভূমিকা রাখেন। এসময় কোরিয়ার কুদারা রাজ্যের সাথে সুসম্পর্কর কারণে কিনাই এলাকা ভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী হয়। বাস্তবতা হচ্ছে তখন জাপানের শাসন ব্যবস্থার এবং ধর্মের উপর কোরিয়ার খুব শক্তিশালী প্রভাব ছিলো।



৫৩৮ বা ৫৫২ সালের দিকে জাপানে বৌদ্ধধর্মের প্রসার ঘটে। এই প্রসারে জাপানের শাসকশ্রেণী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সমসাময়িক কালে প্রিন্স সোতোকু এই অন্চলে চাইনিজ ধ্যানধারণা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি সেসময় আদর্শগত এবং রাজনৈতিক ১৭টি আর্টিকেলের একটি সংবিধান প্রণয়ন করেন। এই ইয়ামাতো পিরিয়ডেই জাপানে কনফুসিয়ানিজম এবং টাওইজম ধারণাসহ চাইনিজ লিখন পদ্ধতির প্রসার ঘটে।

খ্রীষ্টাব্দ ৬৪৫, কামাতারি, ফুজিওয়ারা ক্লান যুগের সুচনা করেন। এই ক্লানের পরই আসে একাদশ শতাব্দীর মিলিটারী ক্লাস - সামুরাই। এই বছরই জাপানের তাইকা রিফর্ম শুরু হয়। এই রির্ফম অনুসারে একটি নতুন সরকার ও প্রশাসনিক কাঠামোর প্রচলন ঘটে। নতুন এই রির্ফমে সকল জমি রাষ্ট্র গ্রহন করে, এবং পরবর্তীতে তা সমান ভাগে কৃষকদের মাঝে ভাগ করে দেয়া হয়। একটি নতুন রাজস্ব আদায় পদ্ধতিও গ্রহন করা হয়। আর এসব কিছুই মূলতঃ চাইনিজ ধারণা হতে আসে।


(তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট)


====================


আগের পর্বসমুহঃ
প্রবাসের পথে... (১) ওসাকার অলিগলি...
প্রবাসের পথে... (২) জাপানের ঐতিহ্য...
প্রবাসের পথে... (৩) জাপানীজ কিমোনো...
প্রবাসের পথে... (৪) জাপানীজ সুসি...
প্রবাসের পথে... (৫) ফসলের ছবি...
প্রবাসের পথে... (৬) হকুসাই চিত্রকর্ম...
প্রবাসের পথে... (৭) ইকেবানা...
প্রবাসের পথে... (৮) জাপানীজ পুতুল-নিনগো...


সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১০ সকাল ১০:০৭
১৪টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×