somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিভ্রান্তিভ্রমণ

২২ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সে বেরিয়ে এসেছিল অঝোর বর্ষণের ভেতর থেকে।
সমস্ত আকাশ জুড়ে ঝুমঝুম শ্রাবণধারা নামছে তখন টানা মেঘের করতাল বাজিয়ে।
মেঘের চিঠি - গায়ে মেখে মেখে ধীরে ধীরে হাঁটছে সে।
তার আনত চোখের পাপড়িতে ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিকণা জমে আছে মুক্তোসদৃশ। চোখের মণিতে মেঘের ছায়া.........আর এক রাজ্য কুয়াশার বাস। অদ্ভুত সব খন্ড খন্ড কুয়াশামেঘ তার চোখের ভেতর ত্রস্তপদে হেঁটে বেড়াচ্ছে ইতিউতি। ঝড় কবলিত প্রশান্ত মহাসমুদ্রের মত গভীর আর অশান্ত তার চোখ।
তার সাধ ছিল পাল তোলা নৌকো হবার। তাই সে চোখের ভেতর সমুদ্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল আপনমনে। তাকে কেউ বলে দেয়নি নীল নীল জলদানবদের জলদখলের ইতিবৃত্ত, শেখায়নি টিয়েপাখির বিদীর্ণ বক্ষে রাক্ষসরাজের প্রাণভোমরার বিনাশ-সাধন মন্ত্র অথবা আকাশ ক্যানভাসে দৃষ্টিপাতের কলাকৌশল। তার স্বপ্নদ্বারের চারপ্রান্তে সন্তর্পনে কেউ বৃত্তের মত ধীরে ধীরে এঁকে দিয়ে গেছে অভেদ্য লক্ষণরেখা। বৃক্ষ হয়ে মাথা তুলবার আগেই তাই সে লতাগুল্মের মত নুইয়ে পড়েছিল বাতাস দেবতার অভিশাপে। চন্দ্রবলয়ে ঘুরতে ঘুরতে এক রাতে যখন সে জ্যোত্স্নাচ্যুত হলো - তখন চিরল পাতারা গোপনে দীর্ঘশ্বাস ঝরালো না, আকাশ থেকে ঘটল না কোনো আত্মবিনাশী তারকার পতন।
পাহাড়িয়া মেঘেরা একে একে তার ছবি আঁকার খাতায় আঁকিবুকি করে ঢেকে দিয়ে গেল সব কল্পিত দৃশ্যখন্ড - যেখানে সে আকাশের ত্রিপলে লন্ঠন জ্বেলেছিল অজস্র তারাবাতি দিয়ে। শঙ্খচিলের ঠোঁটে ঢুকে পড়া বন্ধ্যা দুপুরগুলি তাকে নখদন্তহীন সিংহশাবকের জপমন্ত্র শুনিয়ে শুনিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিল আলতো করে। বাস্তুহীন ধূলিকণার মত নিদ্রাঘোরে সে উদ্ভ্রান্ত হয়ে ঘুরপাক খেতে লাগলো আকাশ বাতাস পাহাড়ের গায়ে, তার দিকভ্রান্ত চোখে বাতি জ্বাললো না কোনো আলোক অভিসারী নক্ষত্র।
তার নিদ্রাচ্ছন্ন চোখ অন্ধ হয়ে যাবার আগে শেষবারের মতন সে স্বপ্ন দেখেছিল- কোনো এক কাকভেজা ভোরে বৃষ্টির জল এসে ধুইয়ে দিয়ে যাবে তার চোখের ভেতর জমে ওঠা ঘন কুয়াশার স্তূপ। সেখানে কেউ সযত্নে এঁকে দিয়ে যাবে স্বপ্নবিলাসী ফ্লেমিঙ্গদের আকাশ বিহারের তৈলচিত্র আর তার জড়ভরত হাতের হাড়গুলো সহসা হয়ে উঠবে ঘাসফড়িঙ্গের ডানা।
তার পূর্বেই দৃশ্যখাদকের দল এসে চুরি করে নিয়ে গেল তার রংতুলি ও ক্যানভাস আর তার বদ্ধ চোখের আলোকে চিরদিনের মত বন্দী করে ঢুকিয়ে দিয়ে গেল প্যাট্রিফায়েড শামুকের খোলে........
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০১০ ভোর ৪:২৮
৭১টি মন্তব্য ৭১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×