somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমাধান নয়, মানুষ আসলে সহানুভূতি চায়...

০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ১২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গড কমপ্লেক্স বলে একটা মানসিক অসুখ আছে। এই রোগে আক্রান্তরা নিজেদেরকে সবসময় সবক্ষেত্রে নিরপরাধ মনে করে। জীবনের যেকোনো ঘটনায় অন্যদেরকে দায়ী করতে থাকে। বিয়ে থেকে শুরু করে ভাত পুড়ে যাওয়া সবকিছুতে তারা নিজেদেরকে ভাগ্যাহত ভাবতে ভালোবাসে। নিজেদের ব্যর্থতা সহ্য করতে পারে না। এমনকি এই রোগে আক্রান্তরা নিজেদের এতটাই মহান ভাবে যে অন্যদের মতামত খারিজ করে দিতে বিন্দুমাত্র সময় নেয় না। সবার কাছ থেকে সুবিধা আদায়ের জন্য নিজেদের ভিকটিম হিসেবে উপস্থাপন করে থাকে। তারা খুব ভালোভাবে বুঝে ফেলে সহানুভূতির মাধ্যমে অন্যের খুব কাছে আসতে পারবে। নিজের কৃতকর্মের দায়িত্ব নেয়ার সাহস কিংবা সদিচ্ছা তাদের থাকে না। নিজেদেরকে পরিস্থিতির শিকার বলে দাবী করে হাত গুটিয়ে বসে থাকে বলে জীবনেও ভুল শুধরে নতুন করে শুরু করতে পারে না। নিজেরাই নিজেদের আচরণের কারণে অন্যের চোখে ছোট হয়, নিচে নেমে যায়


আচ্ছা একসাথে দুজনকে ভালোবাসা যায় না?
এমন একটা প্রশ্ন শুনে একবার চমকে উঠেছিলাম। প্রশ্নকারীকে ধীরে সুস্থে সময় নিয়ে ভেবে উত্তরটা দিতে হয়েছিল।
>> যায়। মানুষের মন সীমাহীন একটা বিষয় কিন্তু তারও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। ভালোবাসা যাবেনা, তা নয়। হয়ত সমপরিমান ভালো দু’জনকে একসাথে বাসা যায় না। তবে এটা ভেবে দেখা যায়, দুটো কমিটমেন্ট এক সাথে করা যাবে কিনা। তাতে নিজেকে ঠকানো হতে পারে। মানুষ ঠিক-ভুলের সমীকরনে গিয়ে হিপোক্রেসি করে, নিজেকে নিজে প্রবোধ দেয়।

একসময় আমি মন দিয়ে মানুষের সমস্যা শুনতাম। সময় দিয়ে সমস্যার সম্ভাব্য সমাধানও খুঁজে বের করার চেষ্টা করতাম এবং তাদেরকে সেটা বলতাম। পরে দেখলাম পন্ডশ্রম আর কাকে বলে! মানুষ আসলে তার সমস্যার সমাধান চায় না, চায় সহানুভূতি। এমন অনেক মানুষ আমি দেখেছি, যাদের অবস্থা স্নো-বল ইফেক্ট'র মত। স্নো-বল ইফেক্ট হচ্ছে তুষার খন্ডগুলো একটা অন্যটার সাথে মিলেমিশে আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। এবং তখন একটা থেকে আরেকটা আলাদা করা যায় না। আলাদা করতে গেলে স্ট্রেইট ভেঙে যায়। তো সমস্যা প্রিয় মানুষগুলো সমস্যা সমাধান না করে বরং বাড়াতে থাকে এবং আমার মতো বেকুবদের সময় নষ্ট করতে থাকে।

মনোফোবিয়া আরেকটি মানসিক অসুখের নাম । এই রোগে আক্রান্তরা একা থাকতে ভয় পায়। ভূতের ভয় না, একাকিত্বের ভয়। তাই চলমান সম্পর্কে অসুখী থাকলেও সেটা থেকে বের হয় না। ভাবে যদি একা থাকতে হয়! বৃত্তের বাইরে দাঁড়িয়ে কেউ মুক্তির আনন্দ পায়, আর কেউ দলচ্যুত হবার বিরহ। অথচ নিসংঙ্গতার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি শুদ্ধতা। 'ঈশ্বর বিশুদ্ধ কেননা ঈশ্বর নিসঃঙ্গ'।

গ্যামোফোবিয়াও একপ্রকার মানসিক অসুখ। এই অসুখের শিকার নারী-পুরুষ বিয়ে করতে ভয় পায়। ফলে তারা সবার সাথে একটা ডিস্ট্যানস তৈরি করে নেউ অথবা এলিয়েনেশ এ অভ্যস্ত হয়ে পড়ে।

সিন্ডারিলা সিন্ড্রোম সাধারণত নারীদের মানসিক অসুখ। সিন্ডারিলা সিন্ড্রোম আক্রান্ত মেয়েরা স্বামীর কাছ থেকে নিরাপত্তা আশা করে। নিজের দায়িত্ব বা কাজ নিজে করার সাহস পায় না। তাদের আশা করে বসে থাকে। পুরাকালে স্বামীরা স্ত্রীকে স্বাতন্ত্র্য দিতেন না, দিতেন আশ্রয় ও ঐশ্বর্য। এটা নারীদের প্রতি দীর্ঘদিনের চর্চার ফলাফল যে নারী পুরুষের কাছে সার্বিক নিরাপত্তা আশা করে ফেলে। সাহিত্য-চলচ্চিত্রেও পুরুষকে যা ত্রাতার ভূমিকায় দেখানো হয় তাই হয়তো নারীদের মধ্যে বিষয়টা বদ্ধমূল হয়ে দেখা দিয়েছে।

লিটল এম্পেয়ার সিনড্রোম বলে একটা অসুখ আছে। ছোটবেলা থেকে অত্যধিক গুরুত্ব পাওয়া ছেলেমেয়েরা এই রোগে আক্রান্ত হন। এই সিনড্রোমে বাচ্চাটি ভাবতে ভালোবাসে তাকে ঘিরেই জগৎ। যা যা তার চাই সেগুলো তাকে পেতেই হবে। ক্রমশ বাড়তে থাকে বায়না। মোবাইল-ল্যাপটপ- বাইক- পকেটম্যানি। ইচ্ছে মতো না পেলেই ধ্বংসাত্বক হয়ে ওঠে তারা।

প্যাথলজিকাল লায়ার হচ্ছেন তারা যারা অপ্রয়োজনে বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যে বলতে থাকে। কারো ক্ষতি করা তাদের উদ্দেশ্য থাকে না। তারা মূলত মানসিক রোগে ভুগছেন। হোয়াইট লাই বা সাদা মিথ্যে হলেও কিছু মিথ্যে তো বিব্রতকর হয়ে যায়। আপনার আমার আশেপাশেই এইধরণের অসংখ্য মানুষ পাবেন।

ফাবিং একধরনের আচরণ যেখানে সেলফোনকে গুরুত্ব দিতে দিতে সঙ্গীর প্রতি অমনোযোগী হয়ে পড়ি। একটা অদৃশ্য দুরত্ব তৈরি হয় সম্পর্কে। দেখবেন রেস্তরাতে গিয়ে মানুষ আজকাল প্রথম যেটা করে ওয়াইফাইয়ের পাসোয়ার্ড জানতে চায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৩৮
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×