যাত্রা শুরুর দিনক্ষণটা যদিও একদম শোনা কথা
আমার কাছে এর বিশেষ পাক্কা দলিল নেই তেমন একটা।
দিনক্ষণ যা-ই হোক আয়োজন মোটামুটি ছিলো
এক্কেবারে যাকে বলে ঢাকঢোল পেটানো
শোর-শারাবায় রাস্তাও হয়ে গেলো সাফ
পিছু হটে অনেকে আমাকেই যেতে দিলো।
আমাকে ঘিরে হাটের ভেতর হাট, মজলিসের ভেতর মজলিস
আমাকে ঘিরেই বাগানের ভেতর ফুটলো অজস্র রক্তগোলাপ।
আমি যে কত কী!
আমি যখন 'কত কী' তখন একটু ঘুড়ি ওড়ালে কেমন হয়?
দু'হাতে তুলে নিয়ে নাটাই বাতাসের ডানায় ভাসালাম
ঝলমলে ঘুড়ি।
নির্মাণ করবো ভেবে এরপর আমি
জড়ো করতে শুরু করলাম মাটি, ঘাস, খড়কুটো
লতাপাতা, ইট, কাঠ কাঁচ ও মার্বেল।
এখানেই গড়ে উঠবে আমার
মার্বেল প্রাসাদ।
নির্মাণের কাজে হাত দিয়ে
আমার খুব আয়েশ করতে ইচ্ছে হলো
আয়েশ মানে - একটু বাঁশি বাজালে কেমন হয়?
ভেবেই দু'হাতে তুলে নিলাম
মাতাল বাঁশি।
বাঁশিতে ফু দেবার আগে লম্বা করে দম নিয়ে ভাবলাম
বাঁশির সুরে কেউ যদি না-নাচে
কারো পেলব পায়ের তালু যদি সিঁদুরলাল না-হয় মুদ্রায় মুদ্রায়
তবে এ আর কেমন বাঁশি।
যেই ভাবা সেই কাজ।
নৃত্যকলায় 'লাখে এক' নগরীর সবচেয়ে মসৃন আর ধারালো নর্তকীটিকে
আমার সামনে এনে দাঁড় করিয়ে দিলো কয়েকজন।
সবচেয়ে বড় ঘটনাটি, মানে আমি যে ঘটনাটির কথা
এতক্ষণ ধরে আপনাদের বলতে চেয়েছি
সেটি ঘটলো তখনই।
আমি বাজাই, নর্তকী নাচেনা
আমি ইশারা দেই, নর্তকী নড়ে না
কী মুশকিল! কী মুশকিল!
মেহমান উঠে গেলো, মেহফিল খতম!
হঠাৎ আমি নিজেই নাচতে শুরু করলাম।
আমি আসলে আপনাদের বলতে ভুলে গিয়েছিলাম
যাত্রা শুরুর এবং যাত্রাপথের শোর-শারাবায়
আমি একটা কথা প্রায় গিলে খেয়ে ফেলেছিলাম।
বাড়ি থেকে বেরুবার আগেই আমার বাজিকর বন্ধু
আমার কানে কানে বলেছিল:
ওড়ানো, বানানো, বাজানো এবং নাচানো তোমার কাজ নয়।
তুমি শুধু নাচবে, আমার আঙ্গুল যেদিকে ইশারা করে
সেদিকেই তুমি শুধু নাচতে থাকবে।
আমি তাই আমার বন্ধু বাজিকরের হাতের ইশারায়
সুলতানা বিবিয়ানা সাহেব বাবুর বৈঠকখানায়
নেচেই চলেছি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




