somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী কতখানি রাজাকার? ইতিহাস কি বলে?

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আওয়ামী অপশাষনে মিথ্যার বেসাতিতে কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা সেটা এক প্রকার ভুলেই গেছি। সব ঠিক ছিল কিন্তু যখন আওয়ামীলীগ স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান কে রাজাকার প্রমানে মরিয়া হয়ে ঊঠল আর বসে থাকতে পারলাম না। হাত দিলাম ইতিহাসে।

অবাক হয়ে দেখলাম কিভাবে দিনকে রাত রাতকে দিন করা হয়।

সত্যি কথা বলতে আওয়ামী অপপ্রচারে আমিও ছিলাম বিভ্রান্ত শেখ মুজিব মৃত্যু পরবর্তী প্রেসিডেন্ট খোন্দকার মোশতাক কে যে ভাবে আওয়ামীলীগ জনগনের কাছে উপস্থাপন করছে মনে হয় এর থেকে বড় রাজাকার আর বুজি বাংলাদেশে নাই। অথচ আজকের সব আওয়ামীলীগ বিখ্যাত নেতা যেমন ধরুন তোফায়েল আহাম্মদ কিন্তু তখন রক্ষীবাহিনীর রাজনৈতিক নেতা ছিল। কৈ সে তো টুটা আওয়াজ দেয় নাই সেই সময় মুজিব হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে এক মাত্র কাদের সিদ্দীকী এর প্রতিবাদে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে ভারত চলে গিয়েছিল।

এই মোশতাক যদি সেই রকম কোন মাপের বড় অন্যায় কারী হয়ে থাকে কিভাবে মজলুম জননেতা মাওলানা ভাষানী তার সরকার কে স্বাগত জানায়? নাকি মাওলানা ভাষানীও রাজাকার ছিলেন?





আচ্ছা মোশতাকের কথা বাদ চলুন দেখি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কিছু প্রশ্নের উত্তর জানা যায় কিনা। এখানে একটা ব্যাপার পরিস্কার করে যাই সালাহুদ্দীন কাদের চৌধুরীকে নিয়ে আমার কোন অবেগ কাজ করেনা উনার মাঝে মাঝে অশ্লীল মন্তব্যর জন্য।

আজকে আমি যাই লিখব ইতিহাসে নির্মোহ থেকেই লেখার চেষ্টা করব। কিন্তু সালাহ উদ্দীন কাদের চৌধুরী ব্যাপারে যে ব্যাপারগুলো আমার মনে উদয় হয়েছে সেগুলো আমি কোন ভাবেই ব্যাখ্যা করতে পারছি না। সরকার যে ভাবে উনাকে রাজাকার প্রমান করে শাস্তি দেবার চেষ্টা করছে আমার প্রশ্ন সেখানেই।

আর একটা ব্যাপার আরো ক্লিয়ার করি স্বাধীনতা বিরোধীরা আমার কাছে যিরো টলারেন্স। তাতে যেই হোক না কেন। কিন্তু এটাকে রাজনৈতিকী করন করলেই আমার দুটো কথা আছে।

চলুন সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর কয়টা ব্যাপারে জানার চেষ্টা করি। সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীকে যেসব অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হোল দ্বিজাতি তত্ত্বের জন্য। অথচ কি আশ্চর্য শেখ মুজিবের লেখা তার ২৮৮ পৃষ্টার “অসমাপ্ত আত্মজীবনী” তে দ্বিজাতি তত্ত্ব প্রতিষ্ঠায় তার অবদান কে কি ভাবে প্রশংসিত করা হয়েছে। আমার প্রশ্ন এখানেই যে দ্বিজাতি তত্ত্ব প্রতিষ্ঠাতায় শেখ মুজিব নন্দিত এক ই অভিযোগে সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী বিচারের মুখোমুখি!!!!!

সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী ১৯৭১ সালে লন্ডন ছিলেন উনি ১৯৭৪ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশে আসেন এবং তৎকালীন একজন আওয়ামীলীগের এম পির সুপারিশে উনি বাংলাদেশী পাসপোর্ট পান। হ্যা তখন বাংলাদেশী পাসপোর্ট পেতে হলে কোন সাংসদের সুপারিশ বাধ্যতামূলক ছিল। ওই সংসদ সদস্যের নাম আব্দুল কুদ্দুস মাখন। কেন আব্দুল কুদ্দুস মাখন এই ধরনের একজন প্রতিথযশা রাজাকার কে বাংলাদেশী পাসপোর্ট দেবার সুপারিশ করেছিল জানতে মন চায়?

আমরা চার নেতার জেল হত্যা কান্ড নিয়ে তুলকালাম কান্ড করে ফেলি অথচ ১৯৭৩ সালের ১৮ই জুলাই সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর পিতা ফখরুল কাদের চৌধুরীকে জেল খানায় হত্যা করা হয়েছিল এ ব্যাপারে কিছু জানতে মন চায়। হ্যা মানলাম ফখরুল কাদের চৌধুরী রাজাকার ছিল তাই বলে তাকে জেল হত্যা করতে হবে? সেক্ষেত্রে আজকে চার নেতার হত্যার মত যারা ফ কা চৌধুরীকে হত্যা করেছিল তাদের কি বিচার হবেনা?

সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীকে রাজাকার প্রমান করার প্রানপন চেষ্টা হিসাবে তাকে পাকিস্তান প্রেমী আর ভারত বিদ্বেষী হিসাবে প্রমান করার চেষ্টা চলে অথচ এই সাকা চৌধুরীর সাথে কিন্ত ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী যশোবন্ত সিং এর প্রায় পারিবারিক সম্পর্ক ছিল যেটা আমরা দেখতে পাই ৯০ এর দশকে যশোবন্ত সিং যখন অটল বিহারী বাজপেয়ীর সাথে বাংলাদেশ সফর করে তখন তাকে রাষ্ট্রীয় অথিতি ভবনে এক ঝুড়ি আম পাঠনোর মাধ্যমে প্রমানিত। যেটা সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর সাক্ষ্যপ্রমানে আদালতে নথিবদ্ধ আছে।

আওয়ামী ইতিহাসে একথা আজকে অনেকেই জানে না আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় শেখ মুজিবুর রহমানের একজন আইনজীবি ছিলেন ফকা চৌধুরী। না আমি এ তথ্য দিয়ে ফকা চৌধুরীর অন্যায় লাগব করার সুপারিশ করছি না কিন্তু সত্যিকার ইতিহাস মানুষকে জানাতে আওয়ামীলীগের এত অনীহা কেন? শেখ মুজিবের সাথে ফকা চৌধুরীর যে স্বাধীনতা উত্তর কালে যে সুসম্পর্ক ছিল যেটা শেখ মুজিবের “অসমাপ্ত আত্মজীবনী”তে খুব সুন্দর ভাবে লেখা আছে।

কুন্ডেশ্বরীর মালিক যে নতুন চন্দ্র সিংহেকে ১৯৭১ সালের ১৩ই এপ্রিল হত্যা অভিযোগে সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীকে অভিযুক্ত করা হয় কিভাবে ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনে সেই নতুন চন্দ্র কুন্ড র ছেলে সত্য রঞ্জন কুন্ড বাবার হত্যাকারী সালাউদ্দীন চৌধুর সাংসদ হবার প্রস্তাবক হয়?????????

সবচেয়ে মজার ব্যাপার এটা প্রমানিত ওই সময় মানে ১৯৭১ সালের ১৩ ই এপ্রিল সাকা চৌধুরী পাকিস্তানে ছিলেন।

আসুন এবার একটু অন্যদিকে দৃষ্টি ফেরাই সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী ফ কা চৌধুরী ধরে নেই রাজাকার যদিও আদালত কর্তৃক এখনো প্রমানিত না তাহলে এই যে দুইজন আছে যাদের একজন

ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন:

ফরিদপুর– ৩ আসনের সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। তিনি শান্তি বাহিনী গঠন করে মুক্তিযোদ্বাদের হত্যার জন্য হানাদার বাহিনীদের প্ররোচিত করেন। “ দৃশ্যপট একাত্তর: একুশ শতকের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগ” বইয়ের ৪৫ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন শান্তি কমিটির জাদরেল নেতা ছিলেন। তার পিতা নুরুল ইসলাম নুরু মিয়া ফরিদপুরের কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন।


আর একজন যার নাম মুসা বিন শমসের:



গত বছরের ২১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষোভ প্রকাশ করে ফরিদপুরের নেতাদের কাছে প্রশ্ন করেন, শেখ সেলিম যে তার ছেলেকে ফরিদপুরের রাজাকার মুসা বিন শমসেরর মেয়ে বিয়ে করিয়েছেন তার কথা কেউ বলছেন না কেন? এ খবর ২২ এপ্রিল আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখ্য, মুসা বিন শমসের গোপালগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ছেলের বেয়াই। ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্টস ফাইডিং কমিটির আহবায়ক ডা: এম এ হাসান যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ৩০৭ জনের নাম উল্লেখ করেছেন। সেখানে ফরিদপুর জেলায় গণহত্যাকারী হিসেবে মুসা বিন শমসের নাম রয়েছে। তিনি নিরীহ বাঙ্গালীদের গণহত্যায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যাসহ নির্মম নির্যাতন করেছেন বলে জানা গেছে।
দেশোদ্রোহী রাজাকার নিয়ে আমার সামান্যতম মমতা নাই এদের প্রকাশ্যে ফাসি দেয়া হোক কিন্তু আপত্তি সেই খানে যে খানে একজন প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়তার সুবাদে চোদ্দশিকের বাইরে সাংসদ সদস্য হিসাবে থাকবে আর বিরোধী দল হলে জেলখানয় বসে ফাসির দিন গুনবে। কেন?

আমার জাতীয়তাবাদীরা কোন পর্নলেখক বা মুরগী ব্যাবসায়ীর মনগড়া লিখিত ইতিহাস নিয়ে লাফালাফি করি না। যা সত্য বলে জানি তাই লিখি।

এই পোষ্টে কোন ভাবেই সাকা চৌধুরী বা ফকা চৌধুরীকে সমর্থন করে কিছু লিখা নাই। যা ইতিহাস তাই নির্মোহভাবে তুলে ধরার প্রচেষ্টা মাত্র।
৮৮টি মন্তব্য ২১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখনো নদীপারে ঝড় বয়ে যায় || নতুন গান

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২০

এ গানের লিরিক আমাকে অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে। ২৪ বা ২৫ এপ্রিল ২০২৪-এ সুর ও গানের প্রথম কয়েক লাইন তৈরি হয়ে যায়। এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়ি অন্য একটা গান নিয়ে। সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×