জাশির লোকদের আত্মতৃপ্তির একটা জায়গা হচ্ছে তাদের সংগঠনের লোকদের প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার হার অনেক ভালো। তারা পরহেজগার, নিয়মিত বিভিন্ন পুস্তক পাঠ করেন, এসব কথা তারা জনসাধারণের মধ্যে প্রচার করে।
মানুষের মনে তারা তাদের সংগঠনটিকে একটা মেধাবী আর বুদ্ধিমানদের সংগঠন হিসেবে সুকৌশলে প্রবেশ করিয়ে দেয়। এ কথাগুলো মিডলক্লাসের মনে আভাস দেয়, এমন একটা আস্ত পরহেজগার মেধাবীর দল যদি ক্ষমতায় চলে যায় তাহলে দেশ হয়ে যাবে বেহেস্তের এক টুকরো বাগান।
প্রচলিত আছে, কারো শক্তির জায়গাটি আদতে তার দূর্বলতার প্রধান কারণ। জাশির ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। তারা দম্ভ করে বলে তাদের সংগঠনের শতভাগ মানুষ মেধাবী, শিক্ষিত, রক্ষণশীল, নামাজি, মুসলমান, মুখে দাঁড়ি রাখেন, বাঙালি, ভালো মানুষ। কিন্তু যে মানুষের ভোটে তাদের ক্ষমতায় যেতে হবে এবং যাদের স্বার্থ রক্ষায় আইন প্রণয়ন করতে হবে - তারা সবাই মেধাবী, শিক্ষিত, রক্ষণশীল, নামাজি, মুসলমান, বাঙালি, এমনকি ধার্মীক ও নন।
জাশির রাজনীতির এখানেই সীমাবদ্ধতা। তারা সাধারণ মানুষের দল নয়। এরা একটা বিশেষ শ্রেণী আর আদর্শিক দল, এবং এর মধ্যেই গত আশি বছর ঘুরপাক খাচ্ছে। সাধারণ মানুষের দল হয়ে ওঠার চেষ্টা তারা কখনো করেনি বা করতে পারেনি। যদি চেষ্টা করে, তাহলে তাদেকে অস্তিত্ব সংকটে পড়তে হবে। কারণ সাধারণ মানুষের দল হতে হলে দলের নাম, স্লোগান সবাই পরিবর্তন করতে হবে। এসবকিছু কি উনাদের আদর্শিক কর্মিরা মেনে নেবে?
না মেনে নিবে না। নারায়েতকবির স্লোগান তাদের কাল্পনিক হিন্দু আর অধার্মিক শাখার লোকদের স্বার্থে পরিবর্তনের ঘোষণা আসলে এর প্রতিক্রিয়া কতটা ভয়াবহ হবে তা আন্দাজ করা ভার। অথবা তকবিরের রাজনীতি বাদ দিয়ে মানুষের ভাত-কাপড়ের রাজনীতিতে পা রাখুক, আদর্শচ্যুতির অভিযোগে তাতেও দল খন্ড-বিখন্ড হয়ে যাবে।
মোটা দাগে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভুমিকা একপাশে রেখে আলোচনা করলেও জাশির শ্রেণী রাজনীতি দলটিকে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনাকে ক্ষীণ করে। ভিন্ন কোনো পথে যদি ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়, তাহলে গণমানুষের সরকার না হয়ে একটা শ্রেণী সরকার হয়ে ওঠার আশঙ্কা থাকবে শতভাগ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০২৫ দুপুর ১:১০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




