৪২ বছরের স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের আজ এই সংকটাপন্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে নিজেকে বড় অসহায় মনে হচ্ছে। প্রিয় মাতৃভূমি, প্রিয় জন্মভূমির জন্য কিছুই করতে পারাচ্ছি না।
৭১’এর চেতনা নিয়ে যারা কাজ করছেন তাঁদের তুলনায় হেফাজত ইসলাম একটি অতি ক্ষুদ্র শক্তি। বাংলাদেশের সরকার, ৩২ টি টিভি মিডিয়ার মধ্যে ২৯ টি, একশ’র উপর পত্রিকার মধ্যে প্রায় সবই, বলতে গেলে দেশি-বিদেশি অনেক কিছুই তাঁদের সাথে রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হল, তাঁরা নিজেরাই বাংলাদেশের সব ধরণের ক্ষমতার অধিকারী, সবাই বড় বড় বুদ্ধিজীবী। এরা বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ শক্তি। তাঁরা চাইলেই দেশ বিভক্তিকে অনায়াসেই রুখতে পারেন। তাই তাঁদের কাছে আমাদের আশাও বেশি।
সূর্যের ন্যায় শক্তির এই পরিণতি কেন??
কেন হেফাজতে ইসলামের মত একটি মাটির প্রদীপ মানুষের মনে আলো ছড়িয়ে দিয়ে গেল??? হেফাজতের দফা নিয়ে আমরা কেউ চিন্তিত নয়। তাঁরা মুসলিম শাসন ব্যবস্থার ছোট একটি অংশের কথা তুলে ধরেছে মাত্র। এটা নিয়ে ভাবার কিছু নেই। হেফাজতে ইসলাম এপর্যন্ত যে প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছে, তাঁতে তাঁদের সাথে সঠিক সময়ে সঠিক আলোচনার মাধ্যমে এই দফাগুলোকে আধুনিকায়ন করা সম্ভব।
যে কোন সত্যিকারের ধর্ম ভীরু মানুষই সহজ-সরল হয়ে থাকে। তাই তাঁরা সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকে। কিন্তু এঁদের সরল চিন্তা নিয়ে রাজনীতি করলে তাতে ক্ষতি ছাড়া দেশের মঙ্গল কোন ভাবেই সম্ভব নয়।
দেশের বুদ্ধিজীবীদের কাছে সাধারণ মানুষের আকুল আবেদন, রাজনীতি নয় দেশের স্বার্থে এঁদের দফাকে নয় এঁদের আবেগকে বিবেচনা করুন।
আমরা সবাই আমাদের মাতৃভূমিকে ভালবাসি। একমাত্র অসুস্থ ব্যক্তি ছাড়া কেউ নিজের দেশকে, নিজের জাতিকে, নিজের ধর্মকে ঘৃণা করতে পারেনা। তাতে তার অস্তিত্বই বিলুপ্ত হবে বইকি।
তাই মাকে ভালবেসে মায়ের ব্যথা অনুভব করে, মায়ের কষ্টকে দূর করার জন্য সবকিছু জলাঞ্জলি দিতে চাই বারবার।
৭১’এর মুক্তিযোদ্ধারা যখন দ্বিধা বিভক্ত হয়ে যায় তখন সত্যিই মনটা ভয়ে, সংশয়ে, লজ্জায়, কান্নায় ভরে উঠে। নির্লিপ্ত নয়নে খুঁজে বেড়াই আশার আলো। কে দেখবে এই আলো??
আমরা এই প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। আমরা শুধু গল্প শুনেছি। গৌরবের ইতিহাস, বীরত্বের ইতিহাস। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যখন রাজনীতি হয় তখন বুকটা আর্তনাদ করে উঠে একটু সাহায্যের জন্য। কে আমাদের দিকে সাহায্যের হাত প্রশমিত করবে??
ব্যথিত সাধারণ হৃদয় ও প্রাণের ইচ্ছা, ৭১’এর চেতনাকে কথায় নয় কাজে প্রতিফলিত করতে চাই।
জানি না কে আমাদের পথ দেখাবেন, কিন্তু আমরা একজন নেতার অপেক্ষায় আছি। জানি না কবে আসবেন, কিন্তু সেই আশায় প্রতি নিয়ত বিধাতার কাছে প্রার্থনা করছি।