somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডিভাইনের সীমাহীন প্রতারণা

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাত্র ১০ বিঘার মালিক হয়েই বিক্রি করা হয়েছে ১০০ বিঘারও বেশি জমি। অগ্রিম অর্থ নেয়া হলেও চুক্তিপত্র কিংবা রেজিস্ট্রেশন দেয়া হয়নি দীর্ঘদিনেও। আকর্ষণীয় নকশা (ম্যাপ) দেখিয়ে জমিহীন প্রজেক্টও বিক্রি করা হয়েছে। গ্রাহকদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন করতে নামমাত্র টাকা বুকিংয়ে জমির ক্রেতা সেজেছেন কোম্পানির কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। এ রকম নানা প্রতারণায় ক্রেতাদের কাছ থেকে অন্তত ১০০ কোটি টাকা হাতানোর তথ্য-প্রমাণ মিলেছে ‘দেশ ও জাতির কল্যাণে’ স্লোগান নিয়ে ব্যবসা করা ‘ডিভাইন গ্রুপ’-এর বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট সূত্র ও দৈনিক বর্তমানের নিজস্ব অনুসন্ধানে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, লোভনীয় বিজ্ঞাপন আর মিথ্যা প্রলোভনে দেশি-বিদেশি গ্রাহকের কাছে প্লট, ফ্ল্যাট ও হোটেল বিক্রি করে যাচ্ছে ডিভাইন গ্রুপ। তবে প্রকল্প এলাকা দেখে ও প্রতারণার তথ্য জেনে এরই মধ্যে অসংখ্য গ্রাহক ‘স্বপ্নের সম্পদ’ পাওয়ার আশা ছেড়ে কিস্তি পরিশোধ বন্ধ করে জমা দেয়া টাকা ফেরত নিতে চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু এক্ষেত্রেও হয়রানিসহ নানাভাবে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করছে ডিভাইন গ্রুপ।

এদিকে প্রতারণা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক দৈনিক বর্তমানকে বলেন, ‘যে কোনো ধরনের প্রতারণা আইনের চোখে বড় ধরনের অপরাধ। প্রতারণাকারীদের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল মামলা করে আইনি শাস্তির ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’

বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক দৈনিক বর্তমানকে বলেন, ‘প্রতারণা ফৌজদারি অপরাধ। প্রতারণাকারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমাণসহ মামলা করলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা আইনে আছে। এমনকি ভূমি ব্যবসায়ীদের জন্য ২০১০ সালে করা আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কেউ প্রতারণা করলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। প্রতারণাকারীদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী মামলা করে এবং সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নিতে পারে।’

সূত্রের দাবি, সম্প্রতি বেশ কটি বোর্ড মিটিংয়ে নানা ধরনের প্রতারণার তথ্য ফাঁস হয়। ধরা পড়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি। যার প্রতিবাদ করে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানসহ অন্তত ২১ পরিচালক পদত্যাগ করেন। যাদের অনেকেই এখন মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ ফেরতসহ ডিভাইনের প্রতারণার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এরই মধ্যে কেউ কেউ উকিল নোটিসও পাঠিয়েছেন।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ডিভাইন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এসএম হাবিবুর রহমান, সিইও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল্লাহ ফিরোজ চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টা ও সাবেক সিইও নজরুল ইসলাম (সাবেক সচিব), ভাইস চেয়ারম্যান মানোয়ার হোসেন পাঠান, পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাসুদ, গোলাম মাওলা সোহাগ, এএনএম কেফায়াতউল্লাহ (নাইম), এহসান উদ্দিন মুরাদ, চিফ মার্কেটিং অফিসার শাহাদত হোসেন বাহারসহ বেশ কয়েকজনের যোগসাজশে পরিকল্পিতভাবে প্রতারণা করা হচ্ছে। বিস্ময়কর হলো, দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে এলেও এখন পর্যন্ত কোনো ক্রেতাই প্লট, ফ্ল্যাট ও হোটেলের দখল বুঝে পাননি ডিভাইন গ্রুপ থেকে।

জানতে চাইলে ডিভাইন গ্রুপের পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান এএইচএম গোলাম কবির টেলিফোনে দৈনিক বর্তমানকে বলেন, ‘ডিভাইন গ্রুপের কতিপয় কর্মকর্তার স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম-দুর্নীতি চরমে পৌঁছেছে। সর্বত্র প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে তারা। এসবের প্রতিবাদ করে আমিসহ অনেক পরিচালকই পদত্যাগ করেছেন। বিনিয়োগকৃত মোটা অঙ্কের টাকা ফেরত পেতে এখন আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

জানতে চাইলে ডিভাইন গ্রুপের পদত্যাগ করা পরিচালক মাহামুদুল হাসান টেলিফোনে দৈনিক বর্তমানকে জানান,

‘ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে ডিভাইন। তাদের অপরাধের প্রতিবাদ করেই পদত্যাগ করেছি। আমার বিনিয়োগ করা এক কোটি টাকা ফেরত পেতে উকিল নোটিস পাঠিয়েছি।’

তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে ডিভাইন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এসএম হাবিবুর রহমান গতকাল মঙ্গলবার টেলিফোনে দাবি করেন, ‘অনেকে তো লোকসানেও শেয়ারবাজার থেকে সব বিক্রি করে বেরিয়ে আসে; আমাদের কিছু পরিচালকও তাদের নিজস্ব কারণে পদত্যাগ করেছেন।’ প্রজেক্টে প্রোফাইলে ডিভাইন স্যুট হোটেল ২০১৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর গ্রাহককে বুঝিয়ে দেয়ার শর্ত থাকলেও এখনও কাজই শুরু হয়নি— এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে কাজ শুরু করা যায়নি।’ তিনি স্বীকার করেন, কেরানীগঞ্জ-উত্তরাসহ বিভিন্ন প্রজেক্ট ঘোষণা করেও কোম্পানির নিজস্ব সিদ্ধান্তে স্থগিত করা হয়েছে। তবে আমাদের বেশকিছু প্রজেক্ট প্রস্তাবিত এবং আপকামিং রয়েছে। এজন্য অনেক ক্ষেত্রে ঘোষণার তুলনায় কম জমি রয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধান করে প্রতারণার বিস্ময়কর তথ্য পাওয়া গেছে। কোম্পানির প্রোফাইল ও নকশায় একরের পর একর জমি দেখানো হলেও এর সত্যতা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মেলেনি। আর এরই মধ্যে ডিভাইনের প্রতারণার তথ্য জানতে পারা দেশের গ্রাহকরাও নতুন করে বুকিং কিংবা প্লট কিনছেন না। ফলে ডিভাইনের বিক্রি কার্যক্রম ঝুঁকেছে প্রবাসী ক্রেতাদের দিকে।

ডিভাইন সী সিটি: কোম্পানির প্রোফাইল অনুযায়ী কক্সবাজারের ইনানীতে অবস্থিত ডিভাইন সী সিটি অত্যাধুনিক ল্যান্ড প্রজেক্ট ও অনুমোদিত লে আউট প্ল্যান হিসেবে ঘোষিত। এ প্রজেক্টে ৬২ দশমিক ৩৫ বিঘা জমি ও ২৪২টি প্লট (৩ ও ৫ কাঠা) দেখানো হয়েছে। জমি হস্তান্তরের সময় ১৬ ডিসেম্বর ২০১৫ (প্রথম প্রোফাইল) থাকলেও পরেরটিতে (আরেক প্রোফাইল) বলা হয়েছে ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সী সিটি নামে ইনানীতে কোনো প্রজেক্টের অস্তিত্ব নেই ডিভাইনের। অথচ বিক্রি করা হয়েছে শত শত প্লট। ১০০৫ নং প্লট ক্রেতা ও স্টার ফ্যাশন হাউসের স্বত্ব্বাধিকারী মনির হোসেন টেলিফোনে দৈনিক বর্তমানকে জানান, ‘৩ কাঠা জমি কেনার লক্ষ্যে এরই মধ্যে ৪ লাখ ৪৪ হাজার টাকা পরিশোধ করেছি। কিন্তু চুক্তিপত্র চাইলেও তারা তা না দিয়ে বিভিন্ন ধরনের চতুরতার আশ্রয় নিচ্ছে। ফলে ৮ মাস কিস্তির কোনো টাকা দেইনি।’ ১০০২ নং প্লট ক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এখনও কোনো চুক্তিপত্র পাইনি। ফলে ৭ মাস টাকা পরিশোধ বন্ধ রেখেছি।’

জানতে চাইলে পদত্যাগ করা পরিচালক ও চট্টগ্রামের বাসিন্দা নুরুল আলম টেলিফোনে দৈনিক বর্তমানকে বলেন, ‘কক্সবাজারের ইনানীতে ডিভাইন গ্রুপের কোনো জমি নেই। প্রকল্পটির জন্য কেনা ৮ বিঘা জমির সবই চট্টগ্রামের বাসিন্দা সাবেক ১২ পরিচালকের (ডিভাইনের পদত্যাগকারীরা)। এ প্রজেক্টের জমি পেতে হলে আমাদের মালিকানার ‘ডিভাইন গ্রুপ অব কোম্পানি অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে টাকা পরিশোধ করতে হবে। এক্ষেত্রে ডিভাইন গ্রুপকে টাকা দিলে এবং সেই টাকা ডিভাইন আমাদের না দিলে জমি প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবেন গ্রাহকরা।’ পদত্যাগের কারণ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক পদত্যাগ নয়, বনিবনা না হওয়ায় আমরা চলে এসেছি। এখন আমরা বিনিয়োগের টাকা ফেরত নিতে চেষ্টা চালাচ্ছি।’

ডিভাইন সিডনী সিটি: কোম্পানির প্রোফাইল অনুযায়ী ঢাকার পূর্বাচলে অবস্থিত ডিভাইন সিডনী সিটি অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপিয়ান কনসেপ্টে নির্মিতব্য দৃষ্টিনন্দন ও দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল পরিকল্পিত নগরী হিসেবে ঘোষিত। এ প্রজেক্টে ১ হাজার ৩৬৪ বিঘা জমি ও ৪ হাজার ২৬১টি প্লট (৩, ৫ ও ১০ কাঠা) দেখানো হয়েছে। জমি হস্তান্তরের সময় দেয়া হয় ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮। এ প্রকল্পের প্রতিকাঠা জমি ১৫ থেকে ১৮ লাখ টাকায় বিক্রি করছে ডিভাইন গ্রুপ।

ডিভাইনের প্রোফাইলে প্রজেক্টের অবস্থান পূর্বাচলের রাজউক পরিকল্পিত মেগাসিটির ডিপ্লোমেটিক জোনের ২৬ ও ২৭ নম্বর সেক্টরে দেখানো হলেও এর সত্যতা মেলেনি। সরেজমিনে পূর্বাচলের বাতুড়িয়াঘাট এবং কালীগঞ্জের তায়েবদিয়া বরকাও বাজারের মাঝামাঝি মঠবাড়িয়া মৌজায় (নিমতলী গ্রামের পাশে) ডিভাইনের সাইনবোর্ড দেখা যায়। অথৈ পানির ভিতর উঁকি দিয়ে অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে ডিভাইনের এ সাইনবোর্ড। উন্মুক্ত নদী এলাকার এ জমিতে ডিভাইনের কোনো বাউন্ডারি, অফিস কিংবা পাহারাদার নেই। পার্শ্ববর্তী গ্রাম ও জমির মালিকরা জানালেন, এখানে ডিভাইনের নিজস্ব জমি মাত্র ৪/৫ বিঘা। এ তথ্যের সত্যতা মিলেছে কোম্পানির বোর্ড মিটিংয়ের তথ্য থেকে। সম্প্রতি এক মিটিংয়ে এমডি জানান, গত বছর ৫ বিঘা জমি ১ কোটি ২৫ লাখ টাকায় কেনা হয়। এরপর আর ১ বিঘার বায়না হয়েছে। কিন্তু এখন চেষ্টা করেও আর জমি কেনা যাচ্ছে না।’

জমি ক্রেতা পরিচয়ে সিডনী সিটির লোকেসানে যেতে চাইলে ডিভাইনের এক মার্কেটিং অফিসার জানান, ‘জমি এখন পানির নিচে। গিয়ে লাভ হবে না।’ তাহলে আকর্ষণীয় নকশা দেখিয়ে জমি বিক্রি প্রতারণার শামিল কি না জানতে চাইলে তিনি নিরুত্তর থাকেন।

এ প্রকল্পে ১০২৫ নম্বর প্লট কেনা মামুনুর রহমান টেলিফোনে জানান, ‘আমরা চার বন্ধু মিলে ৫ কাঠার প্লট বুকিং দিয়ে ১০ লাখ ৬০ হাজার টাকা পরিশোধও করেছি। কিন্তু এখন শুনছি এ কোম্পানির জমি নেই। ফলে গত জানুয়ারি থেকে টাকা দেয়া বন্ধ রেখেছি। এখন টাকা ফেরত চাইলে নানা বাহানায় ঘোরাচ্ছে।’ প্রায় একই ধরনের অভিযোগ করে প্লট বুকিং দেয়া ব্যাংক কর্মকর্তা আবু আলম দৈনিক বর্তমানকে বলেন, ‘বরাদ্দকৃত প্লটটি বিক্রি না হওয়া পর্যন্ত টাকা পরিশোধ হবে না, আর এক্ষেত্রে অগ্রিম দেয়া ৫০ হাজার টাকাও কেটে রাখা হবে বলে জানিয়েছে ডিভাইন।’

ডিভাইন স্যুট হোটেল: কোম্পানির প্রোফাইল অনুযায়ী কক্সবাজারের কলাতলী রোডে অবস্থিত ডিভাইন স্যুট হোটেল (ডিএসই) স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট হিসেবে ঘোষিত। এতে রয়েছে সমুদ্রমুখী অবকাশ যাপন, সমুদ্রতীরে হাঁটাচলার সুবিধাসহ সর্বোচ্চ মুনাফার সুযোগ। এ প্রজেক্টে ৩ দশমিক ৫ কাঠা জমির ওপর ৭ তলা হোটেলের প্রতি ফ্লোরে ২২১, ২৩৬ এবং ৪৪৮ বর্গফুটের রুম রাখা হয়েছে। রুম হস্তান্তরের সময় ১৬ ডিসেম্বর ২০১৩ (প্রথম প্রোফাইল) থাকলেও পরেরটিতে (আরেক প্রোফাইল) বলা হয়েছে ১৬ ডিসেম্বর ২০১৫।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ডিভাইন স্যুট হোটেলের রুম (সবই বিক্রি শেষ) চলতি বছরেই গ্রাহকদের কাছে হস্তান্তরের শর্ত থাকলেও এখনও নির্মাণের কোনো প্রস্তুতিই শুরু হয়নি।

এ জমির মালিক এবং ডিভাইন গ্রুপ থেকে পদত্যাগ করা পরিচালক তারিক চৌধুরী হিল্লোল জানান, ‘১ কোটি ৪০ লাখ টাকা মূল্য কেনার নামে আগেই দলিল করে নেয় ডিভাইন গ্রুপ। দিচ্ছি-দেব করে এখনও সব টাকা পরিশোধ করেনি তারা। যে চেক দিয়েছে, তাতেও টাকা নেই। ফলে আমি দখল ছাড়িনি। এজন্য কাজও শুরু করতে পারেনি ডিভাইন গ্রুপ।’

হোটেলের ৪৪৮ স্কয়ার ফিটের ১০০৮ নং রুমের ক্রেতা আবু মুসা টেলিফোনে দৈনিক বর্তমানকে জানান, ‘প্রবাসে থাকা মেয়ের জন্য ১৭ লাখ টাকায় রুম কিনে ৫ লাখ ৫ হাজার টাকা শোধ করেছি। সম্প্রতি প্রকল্প এলাকায় গিয়ে এখনও কাজ শুরু না হওয়া দেখে টাকা দেয়া বন্ধ রেখেছি।’

ডিভাইন মডেল সিটি: কোম্পানির প্রোফাইল অনুযায়ী চট্টগ্রামের কোরিয়ান ইপিজেডের বিপরীতে অবস্থিত ডিভাইন মডেল সিটি (ডিএমসি) এক্সক্লুসিভ ল্যান্ড প্রজেক্ট হিসেবে ঘোষিত। এতে ১ হাজার ৮১ বিঘা জমি আর ২ হাজার ৭৩৩টি প্লট (আড়াই, ৩, ৫ ও ৭ কাঠা) দেখানো হয়েছে। জমি হস্তান্তরের সময় ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭। এ প্রজেক্টে ক্রেতা আকৃষ্টের লক্ষ্যে গ্রুপের প্রধান মার্কেটিং কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন বাহার তার পুত্র ইসমাম নাওয়ারের নামে ১টি প্লট (ডিএমসি-১০২১) ১৫ হাজার টাকায় বুকিং দিয়ে রেখেছেন। যদিও পরে আর কোনো কিস্তি শোধ করেননি।

অনুসন্ধানে মিলেছে, এ প্রজেক্টের নামে কেনা প্রায় ২০ বিঘা জমির মালিক ডিভাইন গ্রুপ নয়; কোম্পানির সাবেক ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী শাওনসহ চট্টগ্রামের আরও ১২ ব্যবসায়ী (সাবেক পরিচালক)। ডিভাইন থেকে পদত্যাগ করে এসব পরিচালক তাদের নিজস্ব ভবন তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ লক্ষ্যে তারা ‘ডিভাইন গ্রুপ অব কোম্পানি অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ নাম দিয়ে একটি কোম্পানিও প্রতিষ্ঠা করেছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পদত্যাগ করা পরিচালক ও চট্টগ্রামের বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন টেলিফোনে দৈনিক বর্তমানকে বলেন, ‘চট্টগ্রামের মডেল সিটিতে ডিভাইন গ্রুপের কোনো জমি নেই। প্রকল্পটির জন্য কেনা ২০ বিঘা জমির সবই চট্টগ্রামের বাসিন্দা সাবেক ১২ পরিচালকের। এ প্রজেক্টের জমি পেতে হলে আমাদের ‘ডিভাইন গ্রুপ অব কোম্পানি অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে টাকা পরিশোধ করতে হবে। এক্ষেত্রে ডিভাইন গ্রুপকে টাকা দিলে এবং সেই টাকা ডিভাইন আমাদের কোম্পানিকে না দিলে জমি প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবেন গ্রাহক।’ তিনি জানান, জনগণের টাকা নিয়ে প্রতারণা করছে ডিভাইন। তারা কয়েকজন আয়েশি জীবনযাপন করলেও অসংখ্য পরিচালকই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। শাহাবুদ্দিনের তথ্যের সত্যতা মিলেছে পদত্যাগ করা পরিচালক ও চট্টগ্রামের বাসিন্দা নুরুল আলমের বক্তব্যেও।

হোটেল ডিভাইন সী পয়েন্ট: কোম্পানির প্রোফাইল অনুযায়ী হোটেল ডিভাইন সী পয়েন্টের (ডিএসসি) অবস্থান কক্সবাজারের সুগন্ধা বিচ এলাকায়। ৫ তারকা মানের হোটেলের ৮৫০, ৬১২, ৫৩০, ৪৯৫ ও ৪৬৮ বর্গফুট স্যুটের শেয়ার বিক্রি প্রায় শেষ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২৫ জনের মালিকানাধীন ১৯ শতক জমিতে হোটেল সী পয়েন্টের অবস্থান। ডেভেলপার হিসেবে চুক্তিপত্র নিয়েই এ হোটেলের রুম বিক্রি করে আসছে ডিভাইন গ্রুপ। এ বছরেই রুম হস্তান্তরের শর্ত থাকলেও সম্প্রতি স্পাইলিং শুরু করেছে ডিভাইন গ্রুপ।

১০৩৩ ও ১০৩৪ রুমের ক্রেতা এমএ গাফফার বাপ্পী জানান, ‘জমি না থাকার খবর নিশ্চিত হয়ে শেয়ার বাতিল করেছি। কিন্তু তারা এখন আর আমার জমাকৃত টাকা ফেরত দিচ্ছে না।’

১০০৫ নং রুমের ক্রেতা রোকেয়া বেগম টেলিফোনে জানান, ‘শুধু কাগজ দেখে জমি কিনে হয়তো ভুলই করেছি।’

জানতে চাইলে পদত্যাগ করা পরিচালক ও কক্সবাজারের বাসিন্দা হাফেজ সালামতউল্লাহ দৈনিক বর্তমানকে বলেন, ‘ডিভাইনের প্রতারণা দেখে সরে এসেছি। আমারও জমি দেয়ার কথা ছিল ডিভাইনকে। না দিয়ে ভালোই করেছি।’

ডিভাইন হাতিরঝিল সিটি: কোম্পানির প্রোফাইল অনুযায়ী রাজধানীর বনশ্রীতে অবস্থিত অত্যাধুনিক অ্যাপার্টমেন্ট প্রজেক্ট হিসেবে ঘোষিত ডিভাইন হাতিরঝিল সিটি। এতে রয়েছে আধুনিক জীবনযাপনের সর্বাধিক সুবিধা। ২৫ বিঘা জমির ওপর নির্মিত ১৩ তলা ভবনের প্রতি ফ্লোরে ৮৫০, ১০০০, ১২৫০ ও ১৫০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট হবে। হস্তান্তর ২১ জুলাই ২০১৭।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, হাতিরঝিল সিটি নামে কোনো জমি কিংবা প্লটের অস্তিত্ব নেই ডিভাইন গ্রুপের। অথচ আকর্ষণীয় লে আউট প্ল্যান করে বিক্রি শুরু করেছে ডিভাইন গ্রুপ। আর ক্রেতা আকৃষ্টের লক্ষ্যে নিজ ও স্ত্রীর নামের বিপরীতে ৪ প্লট (১৫ হাজার টাকা করে) বুকিং দিয়েছে এমডি নিজে।

ডিভাইন উত্তরা সিটি: কোম্পানির প্রোফাইল অনুযায়ী রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ডে পাঁচ তারকা মানের ডুপ্লেক্স আবাসিক অ্যাপার্টমেন্ট জোন হিসেবে ডিভাইন উত্তরা সিটি (ডিইউসি) ঘোষিত। এতে সর্বোচ্চ নাগরিক সুবিধাসংবলিত ২৫ বিঘা জমির ওপর স্থাপিত অ্যাপার্টমেন্টের প্রতি ফ্লোরে ১২০০ ও ৩৬০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট রাখা হয়েছে। হস্তান্তর ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ডিভাইন গ্রুপ এ প্রজেক্টের নামে ৯০ শতাংশ জমি কিনলেও গত বছর তা নোয়াখালীর ব্যবসায়ী ফারুক হোসেনের কাছে প্রায় ৭ কোটি টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে। এরপর ঘোষণা ছাড়াই হঠাত্ প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ অনেক ফ্ল্যাট ক্রেতা এখনও তা জানতেও পারেননি। আর যারা জেনেছেন, তাদের পূর্বাচল সিডনী সিটিতে জমি দেয়ার ‘মিথ্যা সান্ত্বনা’ দেয়া হচ্ছে।

কেরানীগঞ্জ গার্ডেন সিটি: মাত্র ১০ কাঠা জমি বায়না করেই আকর্ষণীয় নকশা দেখিয়ে কেরানীগঞ্জ গার্ডেন সিটির (ডিজিসি) প্লট বেশকিছু ক্রেতার কাছে বিক্রি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ক্রেতা আকৃষ্টের লক্ষ্যে গ্রুপের প্রধান মার্কেটিং কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন বাহার তার আরেক পুত্রের (ইকরাম নাওয়ার) নামে ১টি প্লট (ডিজিসি-১০০৯) ১৫ হাজার টাকায় বুকিং দিয়েছেন। যদিও পরে আর কোনো কিস্তি দেননি। এখন এ প্রজেক্টটিও বাতিল। অথচ ক্রেতারা টাকা ফেরত চাইলে ডিভাইন সিডনী সিটিতে প্লট দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে।

আকর্ষণীয় নকশায় ‘কল্পিত’ জমি: বাস্তবে জমি না থাকলেও ডিভাইন গ্রুপের রয়েছে আকর্ষণীয় নকশায় ‘কল্পিত’ জমিব- যা দেখিয়ে প্লট, ফ্ল্যাট ও হোটেল বিক্রি করা হচ্ছে ও হয়েছে। জমি না থাকলেও ডিভাইন সিডনী সিটি, কেরানীগঞ্জ সিটি, ডিভাইন মডেল সিটি, ডিভাইন সী সিটি, ডিভাইন উত্তরা সিটিসহ বিভিন্ন প্রজেক্টের আকর্ষণীয় নকশায় রয়েছে কল্পিত প্লট-ফ্ল্যাট, হোটেল।

কিস্তি পরিশোধ বন্ধ: প্রকল্পে জমি না থাকায় দেশীয় ক্রেতাদের মধ্যে এখন আর তেমন জমি বিক্রি করতে পারছে না ডিভাইন গ্রুপ। এজন্য তাদের বিক্রি কার্যক্রম প্রবাসী ক্রেতা ও বিদেশনির্ভর হয়ে পড়েছে। এখন বিভিন্ন মেলার নামে আমেরিকা, লন্ডন, অস্ট্রেলিয়া, সৌদি আরব, দুবাই, কুয়েত, কাতার, আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে নিয়ে যাচ্ছেন অভিনেতা জাহিদ হাসান, পূর্ণিমার মতো ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডরদের। তাদের শো করে চলছে জমি বিক্রির কার্যক্রম।

ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডরও প্রতারিত: ডিভাইন গ্রুপের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর অভিনেতা জাহিদ হাসান। তাকে দিয়ে নির্মিত বিজ্ঞাপন এখন ব্যাপক প্রচারিত। তাকে নেয়া হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মেলাতে। বিনিময়ে (সম্মানী হিসেবে) দেয়া হয়েছে কক্সবাজারের ইনানীর ‘ডিভাইন সী সিটি’তে ৫ কাঠার প্লট। অথচ এই প্রজেক্টে ডিভাইনের নিজস্ব কোনো জমি নেই।

সম্মাননার নেপথ্যেও প্রতারণা: ডিভাইন গ্রুপের কার্যক্রম নানাভাবে প্রচারের লক্ষ্যে ‘সম্মাননা স্ট্র্যাটেজি’ রয়েছে ডিভাইনের। তারা আলোচনায় থাকতে ও ক্রেতা আকৃষ্টে এরই মধ্যে সাবেক উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলি খান, ভাষামতিন, আসম আবদুুর রব, অধ্যাপক আবু সাইয়িদকে বিভিন্ন দিবসে সম্মাননা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টদের দাবি, এসব সম্মাননার নেপথ্যে রয়েছে ডিভাইনের প্রতারণা।

সরকারের সঙ্গেও প্রতারণা: পদত্যাগ করা পরিচালকরা জানান, জমি বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতালেও সরকারকে কোনো ট্যাক্স দেয় না ডিভাইন গ্রুপ।

প্রতারণার প্রতিবাদে পদত্যাগ: জমি না কিনে বিক্রি করা, ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম-দুর্নীতিসহ নানা ধরনের প্রতারণার অভিযোগ তুলে পদত্যাগ ও গ্রুপ ছেড়েছেন চেয়ারম্যান এএইচএম গোলাম কবির, ভাইস চেয়ারম্যান জাফর উল্লাহ, ডিএমডি মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী শাওন, পরিচালক হাজী রহিম উল্লাহ (জেদ্দা শাখার আওয়ামী লীগ সভাপতি), নূরুল আলম (ঢাকা), নূরুল আলম (চট্টগ্রাম), ড. দেলোয়ার হোসেন (ইসলামী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা), ড. লকীয়তউল্লাহ (বায়োফার্মার পরিচালক), তারিক চৌধুরী হিল্লোল, মাহামুদুল হাসান, হাসান তারেক, ফিরোজ, হাফেজ সালামতউল্লাহ, শাহাবুদ্দিন, হাসিব উদ্দিন আহমেদ, জাহাঙ্গীর আলম, ফটিক, সাকিবউল্লাহ আরমান, দুবাই প্রবাসী মোহাম্মদ মোস্তফা, সাইফুল ইসলাম ও মাওলানা নূর মোহাম্মদ। এসব পরিচালকের অধিকাংশই গড়ে ৫০ লাখ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করেছেন ডিভাইন গ্রুপে।

এদিকে ডিভাইন গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল্লাহ ফিরোজ চৌধুরী গত সপ্তাহের মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৪ মিনিটে নিজ উদ্যোগেই এ প্রতিবেদককে ফোন করে রিপোর্ট প্রকাশ না করার ব্যাপারে কোম্পানির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। বিভিন্ন কথোপকথের সময় তিনি দৈনিক বর্তমানকে জানান, ‘এ গ্রুপে অসংখ্য পরিচালক আছেন। প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান জাফর উল্লাহসহ কয়েকজন পরিচালক এ কোম্পানিতে থাকার যোগ্যতা রাখেন না। আর অভিযোগকারীরাও ঠিক বলেননি। আমাদের সুন্দর অফিস আছে, জমি আছে। আসেন; যা যা জানতে চান সব বলব।’ চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেছেন কী না এমন প্রশ্নে বলেন, ‘না। চেয়ারম্যান এখনও আছেন; তার মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ আছে ডিভাইন গ্রুপে।’

সূত্র- দৈনিক বর্তমান
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×