মিথ্যে দিয়ে আপনি কতক্ষণ টিকে থাকতে পারবেন? কৃষ্ণগহ্বরের দিকে আলো ছুঁড়ে সে আলো ফিরে পাওয়ার সম্ভবনা তো নেই! আমাদের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি'র হয়েছে সেই অবস্থা। জাতির বেশ কিছু ঐতিহাসিক ঘটনা তারা মিথ্যে মিশিয়ে প্রচার করে যাচ্ছে। রাজনীতিতে মিথ্যে বলার অভ্যেস সব সময় ছিল কিন্তু কিছু ঐতিহাসিক সত্য কে বিকৃত কিংবা মিথ্যে ভাবে উপস্থাপন করা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এতে যেমন জাতির কোন উপকার হয় না, তেমনি নিজেদেরকেও অস্তিত্ব সংকটে পড়তে হয়।
ক) স্বাধীনতার ঘোষণা
খ) দেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট
গ)৭৫'র ভূমিকা
ঘ) ১৫ই আগষ্ট বেগম জিয়ার জন্মদিন
আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণা কে দিয়েছে এটা নিয়ে আসলে ৯১সাল পর্যন্ত কোন বিতর্ক হয়নি এবং এটা বিতর্কের বিষয়ও ছিলনা। কার নেতৃত্বে, কার ঘোষণায় একাত্তরে মানুষ পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম শুরু করেছে এটা এতটাই ক্রিস্টাল ক্লিয়ার যে, এটা নিয়ে যারা প্রশ্ন করবে কিংবা বিকৃত করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধেই প্রশ্ন উঠবে এবং তাদের অবস্থানও বিকৃত হয়ে যাবে! মেজর জিয়া জীবিত থাকতে কখনো এতবড় দাবি তোলেননি। পাকিদের পক্ষ থেকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর একজন সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ অফিসার থেকে যুদ্ধের আহবানের গুরুত্ব তখন দরকার ছিল। মেজর জিয়া সে দায়িত্ব পালন করে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, সেটা মানুষের মনবল বৃদ্ধি করেছিল।
দেশের প্রেসিডেন্ট, প্রাইম মিনিস্টার, চীফ জাস্টিস এগুলি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন নথিপত্রে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এই ব্যাপারগুলি খুবই সামান্য ব্যাপার, এগুলি নিয়ে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করা হাস্যকর এসব নিয়ে ভুল তথ্য জাতির সামনে তুলে ধরলে নিজেদের অজান্তেই নিজেরা হাস্যকর হয়ে যায়। মেজর জিয়াকে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে উপস্থাপন করলে এতে বিএনপির কি সুবিধে হবে আমার জানা নেই! যেখানে ৭৫'এর পরে মেজর জিয়া খল চরিত্রে আবির্ভূত হয়েছিল!
পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্ট আমাদের বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক দিন। নিঃসন্দেহে বাঙালি জাতির জন্য একটি শোকাবহ স্বরনীয় দিন। বাঙালি জাতির জন্য শেখ মুজিবুর রহমানের অকল্পনীয় ভূমিকা কখনোই মুছে যাওয়ার মতো নয়। যারা তাঁর ভূমিকাকে মুছে দিতে চেয়েছে তাকে হত্যার মাধ্যমে তারা অবশ্যই ইতিহাসের ঘৃণিত চরিত্র। যেখানে আমাদের পরিবারের একজন সদস্যকে হারানোর শোক অবর্ণনীয় হয়ে ওঠে সেখানে পুরো পরিবারেকে হারানোর শোক কেমন হতে পারে? বেগম জিয়ার এই দিনে অসত্য ও ভুয়া জন্মদিন পালন করা মোটেও সঠিক কাজ নয়। এগুলি রাজনৈতিক প্রজ্ঞা নয়, রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা।
যাইহোক যুগে যুগে ইতিহাস বিকৃতি হয়ে এসেছে এবং ভবিষ্যতে হবে। বলা হয়ে থাকে ইতিহাস লেখা হয় বিজয়ীদের হাতে। বিএনপিকে বুঝতে হবে তারা বিজয়ী নয়, তাদের হাতে নিজেদের মতো করে লেখা ইতিহাস কখনো প্রতিষ্ঠিত হবে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০২১ সকাল ১১:০৫