রাখাল বালক ও বাঘের গল্প আমরা মোটামুটি সবাই জানি। একবার এক শিক্ষক এই বহুল প্রচলিত গল্পটি বলে ছাত্রদের কাছে জানতে চাইলেন, তোমরা এই গল্প থেকে কি শিখলে? এক ছাত্র উঠে বলল, “আমরা শিখলাম মিথ্যে কথা বললে সবাই দৌড়ে আসে, কিন্তু সত্যি বললে কেউ আসতে চায় না।” এই গল্প থেকে এই ধরনের শিক্ষা আমাদের দেশে কারা পেয়েছে বলে মনে হয়? আশাকরি ব্লগাররা কেউ এ ধরনের শিক্ষা নেয়নি এই গল্প থেকে। এই ধরনের শিক্ষা যদি কেউ নিয়ে থাকে তাহলে আমাদের বেশিরভাগ রাজনীতিবিদরা নিয়েছে। নির্বাচনের আগে-পরে বিভিন্ন সময়ে তারা মানুষকে এধরনের আশ্বাস দিয়ে থাকে। তাদের নিজেদের আওতার বাইরে
অনেক ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে, যা পরবর্তীতে পূরণ করতে ব্যর্থ হয়।
আমাদের রাজনীতিবিদদের মধ্যে যারা সংসদে আছে তাদের প্রধান কাজ কি? তাদের প্রধান কাজ হচ্ছে জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে বিল আকারে সংসদে উপস্থাপন করা এবং সেটাকে আইন হিসাবে সংযোজন করা। আমি এখন পর্যন্ত নির্বাচনের আগে বা পরে কোন সাংসদকে জনগুরুত্বপূর্ণ কোন বিষয় বিল আকারে উপস্থাপন করে সেটাকে আইন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে এমন প্রতিশ্রুতি দিতে দেখিনি! অথচ একজন সাংসদের প্রধানতম কাজ এটিই।
নাকি বাংলাদেশে মানুষের প্রয়োজনীয় সব বিষয় সংসদে বিল আকারে উত্থাপিত হয়ে গেছে! না সংসদে এখনো বিল উত্থাপিত হয় তবে তা মন্ত্রিসভা হয়ে আসে, যার জন্য অনেক বিলে আমলারা সুবিধামত পরিমার্জন করে থাকে।
যাইহোক আপনারা দুই একটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বলতে পারেন যা সংসদে বিল আকারে আসা উচিত। আমি আপাতত দুইটি বলতে পারি যার একটা আমি আমার এলাকার এমপিকেও বলেছিলাম যে, আমাদের আইনে ধর্ষণের সংজ্ঞা পরিমার্জন করার জন্য উনি যেন উদ্যোগ নেন।
আরেকটি হলো সরকারি কর্মকর্তা,কর্মচারীদের দৈনিক কর্মঘন্টায় কর্তব্য পালনে মনিটরিং আইন।
দেশের জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনো বিল যদি সাংসদদের মাধ্যমে সংসদে আসতে থাকে, তাহলে সংসদকে প্রাণবন্ত মনে হয় এবং এতে আমাদের সাংসদদের বুদ্ধিমত্তা ও দায়িত্বশীলতা প্রকাশ পায়। আগামীতে নির্বাচনের আগে আমাদের জনপ্রতিনিধিরা দেশ ও জনগণের স্বার্থ রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নে প্রতিশ্রুতি দিবেন। সে সাথে মিথ্যা কথা বলে রাখাল বালকের মত মানুষ জড় করে বিভিন্ন অমূলক প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অভ্যাস পরিহার করবে সেই প্রত্যাশাও থাকলো।