
পদ্মাসেতু নিয়ে গত ১০ বছরে অনেকেই অনেক ধরনের মন্তব্য করেছেন। কেউ এটার পক্ষে বলেছে, কেউ বিপক্ষে বলেছে। কেউবা আবার যদি, কিন্তু, তবে এ ধরনের শর্ত নিয়ে পক্ষ বিপক্ষ অবস্থান নিয়েছে। পদ্মাসেতু নিয়ে আসলে বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার মতো কোনো কারণই নেই। দক্ষিণাঞ্চল মানুষের জন্য এটা খুবই দরকারী অবকাঠামো ছিল। যারা বিপক্ষে অবস্থান করছে তাদের মস্তিষ্কের সমস্যা থাকতে পারে।
যাই হোক এই সেতু নিয়ে গত কয়েক বছর পত্র-পত্রিকায় মিডিয়ায় আমাদের অর্থনীতিবীদ, সাংবাদিক, আওয়ামীলীগের এমপি-মন্ত্রী, মির্জা ফখরুল, রিজভী সাহেব শতবারের বেশি বিবৃতি দিয়েছে। পদ্মা সেতু নিয়ে নিজেদের অভিমত দিয়েছে, দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেছে। ওভার ইনভয়েস নিয়ে কথা বলেছে। কিন্তু আমি গত ১০ বছরে আমাদের কোন নামকরা ইঞ্জিনিয়ারের মুখে পদ্মাসেতু তৈরীর টেকনোলজি নিয়ে কথা বলতে দেখিনি। কেনো দেশীয় ইন্জিনিয়াররা এমন জটিল ইনফ্রাস্ট্রাকচার টেকনোলজি সম্পর্কে দক্ষ নয়, অথবা কি কি পরিকল্পনা নিলে আগামী এত বছর নাগাদ আমাদের দেশের ইঞ্জিনিয়াররা এমন একটি সেতু বানাতে পারবে। যতটুকু দেখেছি সেটা ছিল পদ্মাসেতুর পিলারের উচ্চতা ৪০তলা বিল্ডিং এর সমান, চারপাশের ৬টি স্টিলের পাত দিয়ে এর ভিতর থেকে পানীয় ও মাটি বের করা হয়েছে। শ্রমিকরা যখন এর নিচে নামে তখন প্রচুর গরম সহ্য করে কাজ করতে হয়। এটা তৈরী হয়ে গেলে ১হাজার কিলো টনের বেশি জোরে ধাক্কা দিলেও এর তেমন কোন ক্ষতি হবে না। এর আয়ুষ্কাল ধরা হয়েছে ১০০বছর। সেতু তৈরি করার জন্য চীনা ইঞ্জিনিয়াররা হল্যান্ড থেকে একটা স্পেশাল হাতুড়ি(স্টিলের পাত গুলিকে প্রেস করার জন্য) বানিয়ে নিয়ে এনেছে। এর বেশি কিছু আমার চোখে পড়েনি।
আসলে আমি বলতে চাইছিলাম এরকম একটি সেতু যখন দেশে তৈরি হচ্ছিল তখন সবচেয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকার কথা ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজি নিয়ে যারা কাজ করে তাদের মধ্যে। আগামীতে এই ধরনের ইনফ্রাস্ট্রাকচার তারা কিভাবে জাতিকে উপহার দিতে পারবে সেই নিয়ে আলাপ আলোচনা করবে। সরকারের সাথে কথা বলবে, কি কি সুযোগ সুবিধা দিলে আগামীতে চাইনিজ, জাপানিজদের ব্রিজ করার জন্য এদেশে ভাড়া করে আনার দরকার হবে না। আরবের হার্ড কারেন্সি দেশের ভিতরেই রাখা যাবে সেসব নিয়ে কথা বলবে। জাপানিজ, চাইনিজ ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে থেকে কি কি টেকনোলজি শিখতে পেরেছে। অবশ্য চুক্তিতে এই ধরনের কিছু আছে কিনা আমি ঠিক জানিনা। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কিন্তু।
এছাড়াও টোল আদায়ের টেকনোলজিটাও আমাদের হাতে নেই। গতকাল আমাদের প্রধানমন্ত্রী যখন টোল আদায় করেন সেই রিসিটের ছবি আমি ফেসবুকে দেখেছি, যার নিচে লেখা “কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে কর্পোরেশন।” উনি রিসিটটি হাতে নিয়ে যদি পড়ে থাকেন তাহলে উনাকে ব্যথিত করার কথা!
ব্লগার চাঁদগাজী ব্লগে একটি পোস্ট দিয়েছেন যে, পদ্মা সেতু হলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কি কি উপকার হতে পারে? উনি কতগুলি পয়েন্ট উল্লেখ করেছেন, মন্তব্যে অনেকে অনেক কিছু লিখেছেন। আমি এখানে আরো একটি যোগ করতে চাই, পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে দক্ষিণাঞ্চলের বেকার ছেলে মেয়েরা ঢাকায় দিনে এসে চাকরির ইন্টারভিউ দিয়ে আবার দিনের ভিতরেই চলে যেতে পারবে। এটা বেকার ছেলেমেয়েদের জন্য অবশ্যই বিরাট একটি সুবিধা।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০২৩ বিকাল ৫:১০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




