
আমার পরিচিত কয়েকজনকে দেখলাম অফলাইনে অনলাইনে একটা বিষয় নিয়ে আক্ষেপ করতে। এরা আক্ষেপ করে বলছে শেখ হাসিনার সরকার ছাত্রলীগের ছেলেপেলেদের উপর অবিচার করছে। ছাত্রলীগের ছেলেপেলেরা নাকি ভালো চাকুরী পাচ্ছে না, বেকার বসে আছে। যারা চাকুরিতে আছে তাদের ভালো জায়গায় প্রমোশন হচ্ছে না, ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ পাচ্ছেনা। সব নাকি দলের অনুপ্রবেশকারীরা দখল করে নিচ্ছে! প্রশাসনের বড় বড় জায়গায় সরকার বিরোধীরা বসে আছে!
এদের এসব কথা শুনলে আমার প্রচন্ড হাসি পায়। চাকুরী পাওয়ার জন্য, ব্যবসা-বাণিজ্য করার জন্য কিংবা প্রমোশন পাওয়ার জন্য ছাত্রলীগ কি কোন যোগ্যতার মাপকাঠি! এরা বলছে ছাত্রলীগের ছেলেপেলে চাকুরী পাচ্ছেনা, তারা হতাশাগ্রস্ত। অন্যদিকে বাকিরা বলছে ছাত্রলীগের ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকলে চাকুরী পাওয়া যাচ্ছেনা, প্রমোশন হচ্ছেনা কি একটা অবস্থা!
রাজনৈতিক পরিচয়কে চাকুরী পাওয়ার যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা এই দেশে অনেক আগ থেকেই চলে এসেছে। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রমোশনের জন্যও নাকি রাজনৈতিক পরিচয় খোঁজা হয়? সরকারদলীয় রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থাকলে সরকারি চাকরি বাকরি খুব একটা হয়না। তাহলে ছাত্রলীগের ছেলেপেলেরা এমন কান্নাকাটি করছে কেনো?
আসলে কান্নাকাটি করার কারণ হচ্ছে শেখ হাসিনা নিজের লোকজনের জন্যেও পর্যাপ্ত পরিমাণ চাকুরী সৃষ্টি করতে পারেনি। দেশে চাকুরী সৃষ্টি করতে হলে উৎপাদন বাড়াতে হয়। নতুন নতুন দেশীয় প্রোডাক্ট বাজারে আনতে হয়। চায়না গার্বেজ এনে দেশ ভর্তি করে ফেললে দেশে চাকুরী সৃষ্টি হবে না, সর্বোচ্চ ময়লার ভাগাড় পরিষ্কার করার জন্য লোক লাগবে। সিটি কর্পোরেশনের লোকজনের উপর চাপ বাড়বে।
যাইহোক দেশের চাকুরীর বাজার ভালো না এটা সহজেই অনুমান করা যায়। যেখানে শেখ হাসিনার নিজের লোকজন চাকুরীর জন্য কান্নাকাটি করে, সেখানে অন্যদের যে কি অবস্থা সেটা বুঝাই যায়। শেখ হাসিনার এখন অতিসত্বর উচিত নিজের দলের এসব ছেলেপেলেদের জন্য চাকুরীর ব্যবস্থা করা। এরা যদি চাকুরী পায় তাহলেও বিশাল একটি অংশের বেকারত্ব সমস্যা দূর হবে। এরা চাকুরী না পেলে এবং যখন দেখবে এদের বড় ভাই, চাচা কিংবা দাদুরা কোন চাকুরী বাকুরী না করে, ব্যবসা-বাণিজ্য না করে শুধু দল করে কোটি কোটি টাকা আয় করছে, তখন এরাও তাদের পথ অনুসরণ করার চেষ্টা করবে।
তবে সবচেয়ে ভালো হয় শেখ হাসিনা যদি তাদের বলে পড়ালেখা করো, দক্ষতা অর্জন করো, নিজের লক্ষ্য স্থির করো। মিছিল, মিটিং, মারামারি এগুলির এখন আর দরকার নেই। ভালোভাবে পড়ালেখা শেষ করার পর যদি সম্ভব হয় আমাকে সাহায্য করিও, দলে যোগ দিও।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:২৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



