
আমরা যে শহরে বাস করছি অর্থাৎ ঢাকা শহর, এটি অনেক বছর থেকেই জেনে আসছি বসবাসের একটি অযোগ্য শহর। তার উপর সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরের মধ্যে একটি। মানুষ যে পরিমাণ ব্যয় করে লিভিং কস্ট হিসেবে তারা সে তুলনায় নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পায় না। একে তো ব্যস্ততম শহর তার উপর রাজনৈতিক দলগুলি এটা সেটার নাম করে প্রতিদিনই রাস্তা চলাচলে বাধার সৃষ্টি করছে। ঢাকা শহরের গণপরিবহন গুলির গড় গতি ঘন্টায় পাঁচ কিলোমিটার। এসব রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের কারণে বলতে গেলে কিছু কিছু রাস্তায় গতিই থেমে যায়!
যাক এগুলি কোনটাই নতুন কথা নয়, আমাদের নিয়তির সাথে এগুলি অনন্তকালের জন্য হয়তো লেখা হয়ে গেছে। বলার বিষয় হচ্ছে শহরের তো দুইজন মেয়র আছে তারা এসব নিয়ে কোন ভাবনা চিন্তা করছে? তাদের কোন আওয়াজ পাচ্ছেন? সিটি মেয়রের বাংলায় খুবই সুন্দর একটি নাম আছে, “নগরপিতা”। তো নগরের সন্তানেরা যখন প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হচ্ছে পিতা তখন কোন আওয়াজই করছে না, পিতা বেঁচে আছে কিনা সেটাও তো বুঝা যাচ্ছে না!
আগামীকাল ঢাকায় বড় দুটি দলের বিশাল সমাবেশ হতে যাচ্ছে। ১০-১৫ লক্ষ লোকের সমাগম হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই এটা খুবই চিন্তার বিষয়, যেকোন সময় যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। যে এলাকায় এই ধরনের বড় সমাবেশ হচ্ছে সেই এলাকার মানুষের যে কোন ইমারজেন্সি প্রয়োজনে বের হওয়া প্রয়োজন হতে পারে। অসুস্থ রোগীর হাসপাতালে যাওয়া লাগতে পারে, কোনো প্রসূতি মায়ের ডাক্তারের কাছে যাওয়া লাগতে পারে, ব্যবসায়িক প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠান খুলতে হতে পারে। এইসব জরুরি প্রয়োজনে পিতা সন্তানের জন্য কি কি করতে পারবে সেটা কি জানিয়েছে? অথবা যদি পিতার কিছুই করার না থাকে তাদেরকে সেটাও তো জানাতে হবে!
কোন সভ্য দেশের সভ্য শহরে এ ধরনের বড় সমাবেশ হলে তার বেশ কয়েকদিন আগ থেকেই নগরপিতা তার নগর সন্তানদের উদ্দেশ্যে অবশ্যই অবশ্যই বিশেষ দিক-নির্দেশনা দিবেন। অন্তত কিছু না বললেও এটা বলবেন, নগরের সকল সাধারণ মানুষ যেন নিরাপদ জায়গায় থাকে, দেখে শুনে পথ চলে, ইমারজেন্সি কোন প্রয়োজন হলে যেন উনার অফিসে যোগাযোগ করে। সম্ভব হলে উনি উনার সাধ্যমত তাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করবেন।
যাই হোক, আমাদের দুইজন নগর পিতা আছেন। তারা কোন ক্রাইসিস মুহূর্ত আসার আগেও কোন দিকনির্দেশনা দেয়না, ক্রাইসিস মুহূর্ত চলার সময়ও দেয়না, এমনকি ক্রাইসিস মুহূর্ত শেষ হলেও উনাদের কোন আওয়াজ শোনা যায় না! আমাদের নগর পিতারা কেনো এমন! আমার কাছে মনে হয় তারা নগর সেবার চেয়ে দলীয় রাজনীতিকেই প্রাধান্য দেয়। নগরের দায়িত্বকে তারা অপশনাল হিসেবে নিয়েছে। ঈশ্বর আমাদের বোবা, বধির নগর পিতাদ্বয়দের সুস্থ করে তুলুন!
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১০:৩৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



