
বাংলাদেশের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সব সময় আমেরিকানরা একটু সরব থাকে। এখানে ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান কিছুটা জটিল বলে আমেরিকানরা সরাসরি এখানে বেশি কিছু বলতে পারছে না। বিশেষ করে ভারতের জন্য আমেরিকার এখানে কিছুটা ডিফেন্সিভ সিদ্ধান্ত নিতে হয়। তারপরেও অভারঅল আমেরিকা নির্বাচন সম্পর্কে যেসব বার্তা দিচ্ছে সেগুলোকে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলি ঠিকভাবে অনুভব করতে পারেনা। তবে এক্ষেত্রে বিএনপি সবচেয়ে হতভাগা দল, যারা হয়তো তাদের বার্তাটুকু অনুবাদও করতে পারে না! আমেরিকার দু চারটা কথা শুনে তারা হাত পা ছেড়ে দিয়ে বসে থাকে, ভাবতে থাকে এই বুঝি আমেরিকা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সিআইএ, এফবিআইকে পাঠিয়ে দিবে! বিএনপি যেভাবে ভাবে আমেরিকার রাজনীতি সেভাবে কাজ করেনা। তাদের মেসেজ ডিকোড করা খুব সহজ, আবার খুবই কঠিন।
আমাদের নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা প্রথম থেকে যেভাবে বলে আসছিল তারা এখনো ঠিক সেভাবে বলে আসছে। ইভেন নির্বাচন নিয়ে এখন তাদের হোয়াট হাউসের মুখপাত্রকে প্রশ্ন করলে সে বিরক্ত হচ্ছে। সে বলতে চাচ্ছে একই অবস্থান সে আর কতবার পরিষ্কার করবে! তারা পূর্বের মতোই এখনো বলছে বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। নির্বাচনে যেনো কোন সহিংসতা না হয়। নির্বাচন বাধা দেওয়ার চেষ্টা যেনো না করা হয়। এই কথাগুলি এখনো তাদের ভাষ্য। তাহলে তারা নিশ্চয়ই অবগত আছে এই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করছে না এবং প্রকৃতপক্ষে আর অংশগ্রহণ করার সুযোগও নেই। তাহলে কেনো তারা এখনো নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হতে হবে বলছে!
তাদের এই অবস্থান থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় তারা বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করাটাকে খুব বেশি সিরিয়াসলি নিচ্ছে না। তাদের অবস্থান হচ্ছে নির্বাচনে যেনো সহিংসতা না হয়, সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে আসতে পারে এবং নির্বাচনটি মানুষের অংশগ্রহণে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়।
গত কয়েকদিন আগে ডেইলি স্টারের মাহফুজ আনাম একটি লেখা লিখেছে। সেখানে আগামী নির্বাচন ও বিএনপি'র রাজনীতি সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। মাহফুজ আনাম এরকম নির্মহ ভাবে খুব কমই লেখা লিখে থাকে। আমার বিশ্বাস বিএনপির নেতৃবৃন্দ যদি সেই লেখাটি পড়ে অনুধাবন করতে পারে তাহলে তাদের রাজনীতির পলিসি মেকিংয়ে কোন কোন জায়গায় সমস্যা হয়েছে সেটা তারা বের করতে পারবে। আমার মনে হয় ব্লগাররা ইতিমধ্যে সেই লেখাটি পড়েছেন। যদি না পড়ে থাকেন এখান থেকে পড়ে নিতে পারেন।
যাইহোক বিএনপি এখনো যদি না বুঝতে পারে শেখ হাসিনা কিন্তু ঠিকই বুঝতে পারছে আমেরিকা আসলে কি চাচ্ছে! যার জন্য শেখ হাসিনা জান প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করছে নির্বাচনটি সুষ্ঠু, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও সহিংসতাবিহীন যেনো হয়। তবে যত চেষ্টা করুক না কেনো, গত ১৫ বছর শেখ হাসিনা যে ধরনের রাজনীতি করেছে সেই রাজনীতিতে ক্ষমতা লোভী যে শ্রেণী গড়ে উঠেছে তাদেরকে শেষ পর্যন্ত তিনি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে না! এবং নির্বাচনটি অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৮:৪২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



