somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চরম ফ্লেক্সিবল একটা জেনারেশন গড়ে উঠেছে!

১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে যেকোনো একটি ইস্যু সারাদেশে সবার মাঝে খুব দ্রুতই ছড়িয়ে যাচ্ছে। পজেটিভ বিষয়ের চেয়ে নেগেটিভ জিনিসগুলো বেশি দ্রুত ছড়াচ্ছে এবং মানুষের নেতিবাচক রিয়েকশন দেখা যাচ্ছে। আপাত দৃষ্টিতে এটা সোশ্যাল মিডিয়ার খারাপ দিক বিবেচনা করা হলেও মূলত এমন একটি জেনারেশন গড়ে উঠেছে, যারা নেতিবাচক বিষয়গুলিকে খুব দ্রুত এডপ্ট করে নিচ্ছে নিজেদের মধ্যে। এটা খুবই ভয়ঙ্কর একটি বিষয় ঘটে যাচ্ছে জাতির মধ্যে।
গত ১৫ বছর স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকার পরেও দেশে সুশিক্ষিত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারেনি। প্রশ্নফাঁস, শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি, অদক্ষ শিক্ষক নিয়োগ এগুলি সুশিক্ষিত জনশক্তি তৈরিতে প্রধানতম বাধা। প্রগতিশীল মানুষেরা মোটামুটি প্রতিক্রিয়াশীল মানুষের কাছে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। যেকোনো একটি নেতিবাচক ও ভুল অবস্থানকে প্রতিক্রিয়াশীল মানুষের কাছে খুব সহজেই পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে এবং তারা সেটা একযোগে গ্রহণ করছে। অনেকেই হয়তো বলবে ভুল অবস্থান সময়ের সাথে সাথে একটা সময় হারিয়ে যাবে। হ্যাঁ, এটা হতে পারে কিন্তু এই সময়ের সাথে সাথে সময়টুকু কতটুকু লম্বা সেটা অজানা। এটা যদি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকে তাহলে এর নেতিবাচক প্রভাব এমনভাবে ছড়িয়ে পড়বে যার থেকে উত্তরণের পথ বের করা খুবই কঠিন হবে।

ভাস্কর্য ইস্যু থেকে শুরু করে পাঠ্যপুস্তকে হস্তক্ষেপ, লিঙ্গ সমতা, বয়কট বয়কট খেলা, বৈশাখী উৎসব সব জায়গায় শেষ পর্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল জনগোষ্ঠী জয়ী হয়েছে। ধর্মের মোড়কে যত ইস্যু বানানো হয়েছে কিংবা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে সবগুলিই সফল হয়েছে। এটা জাতির জন্য এক ধরনের অশনি সংকেত। আধুনিক জাতি গুলির সাথে যদি আমাদের উন্নতির গ্রাফ তুলনা করা হয় তাহলে অবশ্যই আমরা পেছনের দিকে যাচ্ছি।
সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে জাতির অর্থনৈতিক সমস্যা গুলিকে ক্ষমতাশীলরা রাজনৈতিক সমাধান দিচ্ছে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধর্মীয় সমাধানও দেওয়ার চেষ্টা করছে। যার জন্য অর্থনৈতিক খাত গুলো দিন দিন অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হচ্ছে। যার কারণে বর্তমান উন্নয়ন গুলো ভবিষ্যতের গলার কাটা হয়ে দাঁড়ায় কিনা বলা মুশকিল! আগামী বছর থেকে বড় বড় অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য যে ঋণ সহায়তা নেওয়া হয়েছে সেগুলির কিস্তি দেওয়া শুরু হবে। বর্তমানে রিজার্ভের যে অবস্থা এবং পণ্য আমদানি যেভাবে সীমিত করা হচ্ছে তাতে এই লোন পরিশোধ করতে গিয়ে অর্থনীতির কি অবস্থা হয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।

যাই হোক যেমনটি বলছিলাম বর্তমানে একটি ফ্লেক্সিবল জেনারেশন গড়ে উঠেছে, যাদেরকে খুব সহজে যে কোনো দিকে মুভ করানো সম্ভব হচ্ছে। গত কয়েক বছরে বেশ কিছু ইস্যুতে দেখেছেন কিভাবে ম্যাসিভ আকারে নতুন জেনারেশনের ছেলেমেয়েরা মোটিভেটেড হচ্ছে। এখন এই মোটিভেটেড হওয়াকে প্রতিক্রিয়াশীল একটি গোষ্ঠী খুব সূক্ষ্মভাবে কাজে লাগাচ্ছে। প্রগতিশীল মানুষজন এখানে ব্যর্থ হচ্ছে।
এ ফ্লেক্সিবল জেনারেশনকে প্রতিক্রিয়াশীল গুষ্টি যেভাবে মোটিভেটেড করছে ঠিক একইভাবে প্রগতিশীল লোকজন সে পথে হাঁটতে হবে। প্রতিক্রিয়াশীল লোকজন ৫ বছরে যে পরিমাণ মোটিভেটেড ও মিস গাইডেড তাদেরকে করতে পারবে প্রগতিশীল লোকজন তাদের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে ৫ মাসে তাদের সে পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে পারবে। তাই আমি এতসব হতাশার ভিতরেও কিছুটা আশার আলো দেখতে পাই। ছোট্ট একটি উদাহরণ হচ্ছে, যারা আমার পূর্বের ব্লগ পোস্ট পড়ছেন তারা জেনেছেন আমাদের একটি স্বেচ্ছা-সেবামূলক ফাউন্ডেশন আছে। যেখান থেকে বিভিন্ন সৃজনশীল প্রোগ্রাম করা হয় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদেরকে নিয়ে। গ্রামের একটি গোষ্ঠী এই ধরনের সৃজনশীল প্রোগ্রামে সব সময় বাধা প্রদান করে ও গুজব রটনা করে। আমি দেখেছি তারা গত পাঁচ বছরে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার বাচ্চাদের তাদের আয়োজিত বিভিন্ন প্রোগ্রাম ও শিক্ষার মাধ্যমে কুসংস্কারাচ্ছন্ন করে রাখে। কিন্তু আমাদের একটি প্রোগ্রামে তাদের বাচ্চারা তাদের অগোচরে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে, আমাদের সাথে জড়িত হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে। আমাদের প্রোগ্রাম গুলো তাদের বেশি আকৃষ্ট করে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, প্রগতিশীল লোকজন যদি তাদের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে দেশব্যাপী বিভিন্ন প্রোগ্রাম হাতে নেয়, তাহলে এক নিমিষেই প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর সাম্রাজ্য ভেঙে পড়বে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৫
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অল্প পুঁজিতে অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসার সন্ধান, যে কেউ চাইলে শুরু করতে পারে

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৫



কেউ একজন জানতে চেয়েছেন ১০/১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে কিভাবে মাসে ১/২ লাখ টাকা ইনকাম করা যায়? বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করে দেখলাম বাংলাদেশে ১০/১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজনীতির পন্ডিত, ব্লগার তানভীর জুমারের পোষ্টটি পড়েন, জল্লাদ আসিফ মাহমুদ কি কি জানে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৯



সামুর রাজনীতির ডোডো পন্ডিত, ব্লগার তানভীর ১ খানা পোষ্ট প্রসব করেছেন; পোষ্টে বলছেন, ইউনুস ও পাকিসতানীদের জল্লাদ আসিফ মাহমুদ ধরণা করছে, "সেনাবাহিনী ও ব্যুরোক্রেটরা বিএনপি'কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নীল নকশার অন্ধকার রাত

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৬


কায়রোর রাস্তায় তখন শীতের হিম হাওয়া বইছিল। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। দুইটা বড় সংবাদপত্র অফিস: আল-আহরাম এবং আল-মাসরি আল-ইয়াউম—হঠাৎ করেই আগুনে জ্বলে উঠলো। কিন্তু এই আগুন কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×