somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্প বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী তনুজা মুখার্জীর ৭৭তম জন্মবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


তনুজা মুখার্জী ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী। তবে তনুজা নামেই চলচ্চিত্র অঙ্গনে তিনি পরিচিত ব্যক্তিত্ব। এই প্রবাদ প্রতীম অভিনেত্রী একসময় বলি-টলি দুই পর্দাই কাঁপিয়ে ছিলেন একই সঙ্গে। বাংলা ছবিতে তার হাতেখড়ি হয় দেওয়া নেওয়া ছবির মধ্যে দিয়ে। বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন উত্তম কুমার। বাংলা, মারাঠী এবং গুজরাটি চলচ্চিত্রেও তিনি ধারাবাহিকভাবে অভিনয় করেছেন। জাকুল (মারাঠী), এন্টনী ফিরিঙ্গী (বাংলা), দেয়া নেয়া, তিন ভুবনের পারে (১৯৬৯), প্রথম কদম ফুল, রাজকুমারী, সীমানা পেরিয়ে তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র। ১৯৪৩ সালের আজকের দিনে তিনি ভারতের মুম্বাইতে জন্মগ্রহণ করেন। আজ তাঁর ৭৭তম জন্মবার্ষিকী। জনপ্রিয় অভিনেত্রী তনুজা মুখার্জীর জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।


(দুই শিশু কন্যা কাজল ও তানিশার সাথে তনুজা মুখার্জী)
তনুজা মুখার্জী ১৯৪৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ভারতের মুম্বাইয়ের মহারাষ্ট্রের মারাঠী পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের সময় তার নাম ছিলো তনুজা সমর্থ। তার পিতা কুমারসেন সমর্থ এবং মা শোভনা সমর্থ। কুমারসেন সমর্থ ছিলেন একজন কবি ও চলচ্চিত্র পরিচালক। 'শোভনা সমর্থ' ১৯৩০ ও ১৯৪০ এর দশকে ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন। তনুজার শৈশবকালেই পিতা-মাতার মধ্যে বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে। তনুজার বড় বোন নুতনের সাথে হামারি বেটি (১৯৫০) ছবিতে 'বেবি তনুজা' নামের চরিত্রে শিশু শিল্পী হিসেবে অভিনয়ের মাধ্যমে তাঁর চলচ্চিত্র জীবনের সূত্রপাত ঘটে তনুজার। ছাবিলি (১৯৬০) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি পূর্ণাঙ্গ নায়িকা হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। ছবিটির পরিচালক ছিলেন তার মা এবং তার বোনও এতে নেতৃত্ব দেন। সহজাত ও স্বভাবশৈলী অভিনয় নৈপুণ্যের মাধ্যমে তিনি খুব শীঘ্রই প্রধান অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেন। পূর্ণাঙ্গ নায়িকা হিসেবে তিনি কিদার শর্মা'র হামারি ইয়াদ আয়েগী (১৯৬১) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে খ্যাতির শিখরে পৌঁছান। ১৯৬৭ সালে জুয়েল থিফ চলচ্চিত্রে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য ফিল্মফেয়ারের সেরা সহ-অভিনেত্রীর মনোনয়ন পান। ১৯৬৯ সালে জিনে কি রাহে ছবিতে জীতেন্দ্রের সাথে অভিনয় করেন ও আশ্চর্য্যজনকভাবে ছবিটি ব্যবসা সফল হয়। ঐ বছরই তনুজা পয়সা ইয়ে পেয়ার ছবির মাধ্যমে 'ফিল্ম ফেয়ারঃ সেরা সহ-অভিনেত্রীর পুরস্কার' পান।


(১৯৬৭ সালে জুয়েল থিফ চলচ্চিত্রে তনুজা মুখার্জী)
১৯৬০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে তনুজা কলকাতার বাংলা চলচ্চিত্রেও সমানতালে অভিনয় করতে শুরু করেন। ১৯৬৩ সালে দেয়া নেয়া চলচ্চিত্রে বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি উত্তম কুমারের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। এছাড়া, অন্যান্য উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হিসেবে এন্টনি-ফিরিঙ্গী (১৯৬৭) এবং রাজকুমারী (১৯৭০) অন্যতম। তনুজা তার অত্যন্ত চমকপ্রদ ও আকর্ষণীয় মুখশ্রী নিয়ে অন্যতম সুপারস্টার সৌমিত্র চ্যাটার্জী'র বিপরীতেও বেশ কয়েকটি ব্যবসা সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তন্মধ্যে - তিন ভুবনের পাড়ে (১৯৬৯) এবং প্রথম কদম ফুল অন্যতম। বাংলা চলচ্চিত্রে তিনি নিজেই ছবির সংলাপ বলতেন। এর পর ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত তিনি একাধারে অভিনয় করে গেছেন। পরবর্তীতে তনুজা বেশ কয়েক বছর চলচ্চিত্রাঙ্গন থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখেন।


(দুই কন্যা কাজল মুখার্জী এবং তানিশা মুখার্জীর সাথে তনুজা মুখার্জী)
শমু মুখার্জী'র সাথে বৈবাহিক সম্পর্কের ইতি টানার পর তিনি পুণরায় চলচ্চিত্রে ফিরে আসেন। সহকারী অভিনেত্রী হিসেবে অভিনয়ের জন্য তিনি তার পূর্বের নায়কদের কাছ থেকে প্রস্তাবনা পান। পেয়ার কি কাহানী'র নায়ক অমিতাভ বচ্চন খুদ্দার (১৯৮২) ছবিতে তাঁকে 'ভাবী' হিসেবে সম্বোধন করেন। রাজ কাপুরের প্রেম রোগ (১৯৮২) ছবিতেও তিনি সহ-অভিনেত্রী ছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে সাথিয়া (২০০২), রুলস্‌ (২০০৩) এবং খাকী (২০০৩) চলচ্চিত্রগুলোয় তিনি সহ-অভিনেত্রী হিসেবে অংশ নেন। এছাড়াও ২০০৮ সালে জি টিভি'র পারিবারিক নাঁচের অনুষ্ঠান "রক এন্ড রোল ফ্যামিলী"তে বিচারক হিসেবে তনুজা তার মেয়ে কাজল এবং মেয়ে জামাই অজয় দেবগনকে সাথে অংশগ্রহণ করেছিলেন।


ব্যাক্তিগত জীবনে তনুজা পরিচালক শমু মুখার্জীর সাথে এক বার মুসকরা দো (১৯৭২) ছবিতে কাজ করার সময় প্রেমে পড়ে যান এবং ১৯৭৩ সালে প্রেম থেকে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন । পরবর্তীতে তাদের দাম্পত্য জীবনে সম্পর্কের ভাটা পড়লে তারা পৃথকভাবে বসবাস করেন। কিন্তু তারা কখনো বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটাননি। তাদের সংসারে কাজল মুখার্জি এবং তানিশা মুখার্জী নামে দু'টো মেয়ে রয়েছে। ১০ এপ্রিল, ২০০৮ সালে শমু মুখার্জী হৃদজনিত কারণে পরলোকগমন করেন।আজ তাঁর ৭৭তম জন্মবার্ষিকী। জনপ্রিয় অভিনেত্রী তনুজা মুখার্জীর জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৪০
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×