ফরাসি অভিনেত্রী সিমন সিনিয়রে যাকে ফ্রান্সের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র তারকা বলে অভিহিত করা হয়। একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী প্রথম ফরাসি নারী সিমন সিনিয়রে। এছাড়া তিনি তার অভিনয় জীবনে দুটি সেজার পুরস্কার, তিনটি বাফটা পুরস্কার, একটি এমি পুরস্কার, একটি কান চলচ্চিত্র উৎসব পুরস্কার, একটি রৌপ্য ভল্লুক, একটি ন্যাশনাল বোর্ড অব রিভিউ পুরস্কার লাভ করেন এবং দুটি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। ১৯৭৮ সালে সিমন সিনিয়রের স্মৃতিকথা নস্টালজিয়া ইজন্ট হোয়াট ইট ইউজড টু বি প্রকাশিত হয়। ১৯৮৫ সালে তার রচিত উপন্যাস আদিও ভলদিয়া প্রকাশিত হয়। সিনিয়রে অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৮৫ সালের আজকের দিনে ফ্রান্সের ওতই-ওতুইয়ে শহরে মৃত্যুবরণ করেন। আজ তার ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। ফ্রান্সের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র তারকা সিমন সিনিয়রে'র মৃত্যুবার্ষিকেতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
সিমন সিনিয়রে ১৯২১ সালের ২৫শে মার্চ জার্মানির ভিসবাডেনে জন্মগ্রহণ করেন। তার পূর্ণ নাম সিমন অঁরিয়েত শার্লত কামিনকের। তার পিতা অঁদ্রে কামিনকের ও মাতা জর্জেত (সিনিয়রে) কামিনকের। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি সর্বজ্যেষ্ঠ। তার ছোট দুই ভাই রয়েছে। তার পিতা সম্মিলিত জাতিপুঞ্জে কাজ করতেন এবং দোভাষীদের অগ্রদূত ছিলেন। তিনি পোলীয় ইহুদি পরিবারে ফরাসি সেনা কর্মকর্তা ছিলেন।তিনি তার পরিবার নিয়ে প্যারিসের ন্যয়ি-সুর-সেন শহরতলীতে চলে আসেন। তার মাতা জর্জেত ছিলেন একজন ফরাসি ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী। ১৯৪২ সালে ল্য বিয়েলফেতু চলচ্চিত্র দিয়ে তার বড় পর্দায় অভিষেক হয়। ১৯৫২ সালে কাস্ক দর চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ বিদেশি অভিনেত্রী বিভাগে বাফটা পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৫৭ সালে লে সর্সিয়ের দ্য সালেম ছবির জন্য তিনি আরেকটি বাফটা পুরস্কার লাভ করেন। পরের বছর রুম অ্যাট দ্য টপ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি তার প্রথম শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন, এছাড়া তিনি তার তৃতীয় বাফটা পুরস্কার ও প্রথমবারের মত শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে কান চলচ্চিত্র উৎসব পুরস্কার, ন্যাশনাল বোর্ড অব রিভিউ পুরস্কার লাভ করেন এবং গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। ১৯৬০-এর দশকে শিপ অব ফুলস্ (১৯৬৫) চলচ্চিত্রের জন্য তিনি পুনরায় শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি, বাফটা ও গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। তার আরও দুটি বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন আসে ডেডলি অ্যাফেয়ার (১৯৬৬) এবং গেমস (১৯৬৭) চলচ্চিত্রের জন্য। তার একটি এমি পুরস্কার আসে বব হোপ প্রেজেন্টস দ্য ক্রিসলার থিয়েটার (১৯৬৬) টেলিভিশন নাটকে অভিনয়ের জন্য। ১৯৭০-এর দশকে ল্য চাট (১৯৭১) ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি ২১তম বার্লিনেলে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে রৌপ্য ভল্লুক এবং মাদাম রোজা ছবিতে অভিনয়ের জন্য ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে দাভিদ দি দোনাতেল্লো ও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে সেজার পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া তিনি লেতুইল দ্যু নর্দ (১৯৮২) ছবিতে অভিনয়ের জন্য অপর একটি সেজার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।
(সিমন সিনিয়রে ও তার স্বামী ইভ মোঁতঁ/SIMONE SIGNORET & YVES MONTAND )
ব্যক্তিগত জীবনে সিমন সিনিয়রে ১৯৪৪ সালে চলচ্চিত্র নির্মাতা ইভ আলেগ্রেকে বিয়ে করেন। তাদের এক কন্যা রয়েছে। তাদের কন্যা কাত্রিন আলেগ্রে একজন অভিনেত্রী। ১৯৪৯ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। ১৯৫১ সালে তিনি ইতালিতে জন্মগ্রহণকারী ফরাসি অভিনেতা ইভ মোঁতঁকে বিয়ে করেন। সিনিয়রে অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৮৫ সালে ৩০শে সেপ্টেম্বর ৬৪ বছর বয়সে ফ্রান্সের ওতই-ওতুইয়ে শহরে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে প্যারিসের পের লাশেজ সমাধিস্থলে সমাধিস্থ করা হয়। আজ তার ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। ফ্রান্সের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র তারকা সিমন সিনিয়রে'র মৃত্যুবার্ষিকেতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৫