somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সবাই তো সুখী হতে চায় তবু কেউ সুখী হয়, কেউ হয়নাঃ জীবনে সুখী হবার কয়েকটি উপায়

১১ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সবাই তো সুখী হতে চায় তবু
কেউ সুখী হয়, কেউ হয়না।
জানিনা বলে যা লোকে সত্যি কিনা?
কপালে সবার নাকি সুখ সয় না।

সুখের পেছনে ছুটতে ছুটতেই শেষ জীবনে পৌছায় মানুষ। তবুও যেন সুখের দেখা পায়না মানুষ।বিজ্ঞজনদের মতে “সুখ আপেক্ষিক একটা বিষয়”। কে কিসে সুখী হবে তা নিয়ে নানান মত আছে, বিতর্ক আছে।
কবি বলেন, “সুখ তুমি কী বড় জানতে ইচ্ছা করে, সুখ তুমি কিশোরীর হাসি, নাকি মায়ের আদর অথবা প্রিয়তমার চুম্বন বড় জানতে ইচ্ছে করে”। তবে ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়। ক্ষুধার্থের কাছে পূর্নিমার চাঁদ যেন ঝলসানানো রুটি”। ক্ষুধা পেলে সুস্বাদু খাবার আমাকে সুখ দেয়, সুখ দেয় প্রিয় মানুষের চুম্বন। প্রিয় দেশের জয় আমাকে সুখ দেয় , সুখ দেয় পড়ন্ত বিকেলের রোদ।
জীবন ক্ষনস্থায়ী। পৃথিবীতে সব চেয়ে কঠিন ও সত্য কথা হলো জন্মিলে মরিতে হবে। অথচ এই অমোঘ চির সত্য কথাটি আমরা ভুলে যাই দুনিয়ার মোহে!
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর পাক কোরআনে বলেন "তোমরা যেখানেই থাক না কেন; মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দূর্গের ভেতরেও অবস্থান কর, তবুও। বস্তুতঃ তাদের কোন কল্যাণ সাধিত হলে তারা বলে যে, এটা সাধিত হয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে। আর যদি তাদের কোন অকল্যাণ হয়, তবে বলে, এটা হয়েছে তোমার পক্ষ থেকে, বলে দাও, এসবই আল্লাহর পক্ষ থেকে। পক্ষান্তরে তাদের পরিণতি কি হবে, যারা কখনও কোন কথা বুঝতে চেষ্টা করে না।" (সূরা আন নিসা (মদীনায় অবতীর্ণ), আয়াত সংখ্যা ৭৮)
ক্ষনস্থায়ী জীবনে সুখ দুঃখ, পাওয়া না পাওয়ার বেদনা নিত্য সঙ্গী। তবে কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চললে জীবনে সুখী হলেও হতে পারেন। এর মধ্যে কয়েকটি সহজ উপায় হলোঃ


০১। সর্বাবস্থায় সৃষ্টিকর্তা ও তাঁর প্রেরিত রাসুল (সঃ) কে স্মরণ রাখতে হবে
০২। সবাইকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এই কথাটি ভুলে থাকা চলবেনা
০২। নিজের যোগ্যতা সন্বন্ধে সঠিক ধারণা থাকাতে হবে
০৩। যা থেকে পরিত্রান পাবেন না, তা সহ্য করে নিতে হবে
০৪। নিজেকে ছোট ভাবা যেমন ঠিক না ,
০৫। তেমনি নিজেকে বড় ভাবা ঠিক না
০৬। নেতিবাচক চিন্তা ও কাজ থেকে নিজেকে বদলাতে হবে
০৭। স্বীকৃতির জন্য কামনা করা পরিহার করতে হবে
০৮। ক্ষমা করে মনে রাখা যাবেনা
০৯। হিংসা কে মাটি চাপা দিতে হবে
১০। সাধ্যাতীত কাজ এড়িয়ে চলতে হবে
১১। অন্যের কাজে নাক গলানো যাবেনা
১২। মনকে শুন্য রাখা যাবেনা
১৩। অতীত নিয়ে ভাবনা ত্যাগ করতে হবে
‌১৪। আর কিছু চাইতে হলে একাগ্র চিত্তে কেবল মাত্র সৃষ্টিকর্তার কাছে চাইতে হবে।
বিরিয়ানী খাইলে, মায়ের ফু পাইলে , প্রিয়জন ফুল দিলে , পানে চুন দিলে ইত্যাদি ইত্যাদি – শরীরে এন্ডরফিন্স নিঃসৃত হয় ফলশ্রুতিতে আমরা সুখি হই । তবে এসব ডাক্তারী শাস্ত্রের কথা। আমরা সেই বিতর্কে না গিয়ে কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চললেও যে সুখী হওয়া যেতে পারে তা নিয়ে আলোকপাত করি। বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ব্রাজিলীয় লেখক পাওলো কোয়েলহো বাতলে দিয়েছেন সুখী হওয়ার কয়েকটি উপায়। এ কথাসাহিত্যিক বলেছেন, প্রতিদিন এ উপায়গুলো মানলে সুখী হওয়া কঠিন কিছু নয়।


১। অন্যকে ধন্যবাদ দিনঃ
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে মুঠোফোন, ফেসবুক কিংবা ই-বার্তার মাধ্যমে কাউকে না কাউকে ধন্যবাদ দিন অথবা তার ভালো কাজের প্রশংসা করুন। গবেষণা বলছে, এতে করে আপনার দিনটি ভালো যেতে পারে।
২। টাকা পয়সা খরচ করুন প্রিয়জনদের জন্যঃ
আপনি যাদের ভালোবাসেন, স্নেহ করেন বা শ্রদ্ধা করেন তাদের জন্য আপনার সাধ্যমত খরচ করুন। হতে পারে সে আপনার বান্ধবী,প্রিয়তমা স্ত্রী, সন্তান কিংবা পিতা মাতা। প্রিয় জনদের জন্য কিছু করতে পারলে যে আত্ম তৃপ্তি পাওয়া যায় তা স্বর্গীয় সুখের সাথে তুলনীয়।
৩। প্রিয়জনকে অন্তত ৫ বার আলিঙ্গন করুনঃ দিনেঅন্তত ৫ বার আপনার প্রিয়জনদের আলিঙ্গন করু্ন্য। আলিঙ্গন বলতে এখানে যৌনতাকে বুঝানো হয়নি। এই আলিঙ্গন ভালোবাসার, স্নেহের ও আদরের।
৪। যা ভালো পারেন তা-ই করুনঃ
যে বিষয়টি আপনি ভালো পারেন, সেটিই প্রতিদিন চর্চা করতে থাকুন। দেখবেন এ যোগ্যতা অন্যদের থেকে আপনাকে আলাদা করে তুলছে। এতে করে আপনি সারা মাসই সুখী থাকবেন।
৫। দিনে অন্তত ৫টি ভালো কাজ করুনঃ
অন্যের জন্য দিনে অন্তত ছোট্ট হলেও পাঁচটি ভালো কাজ করুন। এতে করে আপনি অনাবিল শান্তি অনুভব করবেন। দিনে না হোক সপ্তাহে অন্তত ছোট্ট পাঁচটি পরোপকারমূলক কাজ করার চেষ্টা করুন। তবে মানসিকভাবে তৃপ্ত হতে হলে জেনেশুনে ও সচেতনভাবে এ কাজগুলো করতে হবে। কাজ করার পর এ নিয়ে ভাবলে চলবে না।
৬। সানন্দে বেরিয়ে পড়ুন কোথাওঃ
এক গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ প্রিয় সিনেমা দেখে মূলত এন্ডোরপিন লেভেলকে বাড়ানোর জন্য। এন্ডোরপিন হচ্ছে এক ধরনের হরমোন; যা মানুষের হতাশা, কষ্ট, দুঃখ ভুলিয়ে দিতে সাহায্য করে। এ কারণে যাপিত জীবনে হাঁপিয়ে উঠলে একটু ছুটি নিয়ে নিন। ক্যালেন্ডারে কিছু দিন রাখুন, যাতে প্রিয় সঙ্গী বা বন্ধুবান্ধবকে নিয়ে কোথাও ক’টা দিন বা কয়েক সপ্তাহের জন্য বেড়িয়ে আসা যায়।
৭। বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানঃ
মনোবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানে অনেক গবেষণা রয়েছে যেখানে বলা হয়েছে, সামাজিক সম্পর্ক মানুষকে সুখী হতে সাহায্য করে। বিচ্ছিন্ন হয়ে সুখী হওয়া কঠিন বৈকি। মানুষের সঙ্গে মেশার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে বন্ধু, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে। আপনার ভালো লাগা, মন্দ লাগা তাদের সঙ্গে শেয়ার করুন। ব্রিটিশ হাউসহোল্ড প্যানেল সার্ভেতে দেখেছি, সামাজিক সম্পর্ক বাড়লে মানসিক তৃপ্তিও বাড়ে।
৮। ঘুমানোর আগে ভালো ঘটনা লিখে রাখুনঃ
প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে অন্তত ১০ মিনিট কাগজ-কলম নিয়ে টেবিলে বসে পড়ুন। টুকে রাখুন দিনে ঘটে যাওয়া তিনটি ইতিবাচক ঘটনার কথা। ইতিবাচক ঘটনাগুলো কখন ঘটেছে, কেন ঘটেছে ইত্যাকার বিষয়ে লিখে রাখতে পারেন। এটি কম্পিউটার বা নিজের ব্লগেও লিখতে পারেন। কোথায় লিখলেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সেগুলো লিপিবদ্ধ করে রাখা। এ তিনটি ঘটনা দুনিয়া কাঁপানো হবে তা নয়, এটি হবে সাদাসিধা। ঘটনা হবে এমন— ভাই বা বোনের চাঁদের মতো ফুটফটে পুত্র বা কন্যাসন্তান হয়েছে কিংবা স্বামী অফিস থেকে ফেরার সময় প্রিয় আইসক্রিম এনেছে ইত্যাদি।
উপরোক্ত উপায়গুলো অনুসরণ করতে পারলে সুখ পাখী আপনার কাছে ধরা দিলেও দিতে পারে।
তথ্য সূত্র 8 things to do every day that will make you happier

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ব্রেকিং নিউজ২৪.কম :-& ফেসবুক-১ :-& ফেসবুক-২
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:০৪
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×