somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ কুহুকের কান্না - নুরুন নাহার লিলিয়ান

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজকে কুহুকের মৃত্যু বার্ষিকী ।আমাকে যেতে হবে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে । সেখানেই নিজ বাড়িতে বাবা মায়ের পাশেই কুহুক ঘুমাচ্ছে । গত সাত বছর ধরেই ঘুমাচ্ছে ।প্রতিবছরই আমি গিয়েছি কুহুকের কবরে। আমি ছাড়া কুহুকের জন্য দোয়া করার কেউ নেই। জনমদুঃখি কুহুক যতোটুকু দুঃখ নিয়ে জন্মেছিল। তারচেয়ে অনেক বেশি দুঃখ নিয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছে।

সেই দুঃখের চিহ্ন হিসেবে আমি রয়ে গেছি এই পৃথিবীতে । আমার আর কুহুকের ভালোবাসাটা আজ ও আমার অনুভুতিতে রয়ে গেছে । সমগ্র অস্তিত্বে এখন ও কুহুকের স্পর্শ পাই ।দুর্ভাগা জীবন আমার কাছ থেকে শুধু কুহুককেই কেড়ে নেয়নি । আমার বেঁচে থাকার সবটুকু শক্তি নিয়ে গেছে ।

শেষ বার আমি ওকে ঘুমন্ত অবস্থায়ই হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে রেখে এসেছিলাম। মনে পড়ে ওর রুমমেট পলিন আমাকে পনেরো মিনিট অপেক্ষা করতে বলল। আমি আর আমার জুনিয়র এডভোকেট সুমন তখন প্রায় পয়তাল্লিশ মিনিট বসে ছিলাম। কুহুকের ঘুম ভাঙেনি। কি অদ্ভুত ক্লান্তির ঘুমে তলিয়ে যাচ্ছিল মেয়েটা। আমি আর সুমন বিছানার পাশে বসে রইলাম। প্রায় এক ঘন্টার মতো। ভাবলাম ডেংগু আক্রান্ত রোগী বিরক্ত করা ঠিক হবে না। আমি অনেকক্ষণ ওর ঘুমন্ত মায়াভরা চেহারাটার দিকে পলকহীন চেয়ে রইলাম ।

ডেঙ্গু জ্বরের ধাক্কায় কয়েকদিনেই মেয়েটা একদম রোগাটে হয়ে গিয়েছিল । ওর চোখ না খুললেও চোখের কোণা বেয়ে গভীর নোনা জল গড়িয়ে পড়েছিল । মানুষ যখন গভীরভাবে কষ্ট পায় , তখন ঘুমের মধ্যে ও কেঁদে উঠে । কুহুক ও গভীর কষ্টে তলিয়ে যাচ্ছিল । আমি কুহুকের পাশে বসে দেখছিলাম একটা বিশাল জলোচ্ছ্বাস কুহুককে আমার কাছ থেকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে ।

কোন এক অচেনা ঝড়ের তান্ডবে খন্ড খন্ড বিচ্ছিন্ন ভাবে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের বেঁচে থাকার স্বপ্ন গুলো ।আমি নির্মম ভাগ্যের কাছে অসহায় ছিলাম ।আমার দু'ফোটা চোখের জল মিশে যাচ্ছিল কুহুকের চোখের জলে। আমাদের দুজনের কষ্ট নোনা জলের নদী হয়ে কোন এক অজানা মোহনায় মিশে যাচ্ছিল ।দুর্ভাগ্য ছাড়া আর কেউ আমাদের আপন হতে পারেনি ।

সেই সময় কুহুক আমাকে অনেক বার বিয়ে করতে চেয়েছিল । মারা যাওয়ার আগে শুধু একবার বউ ডাক শুনতে চেয়েছিল । আমি আমার ভালোবাসার সেই শেষ চাওয়াটা পূরণ করতে পারিনি । জীবনের নানা অক্ষমতা আর সীমাবদ্ধতায় আমি ছিলাম ভীষণ অসহায় । দারিদ্রতা যাদের জীবনে ছায়ার মতো থাকে তাঁরাই কেবল অনুভব করতে পারে সেই ছায়া মাড়িয়ে যাওয়া কতোটা কষ্টের ।

আমি ছিলাম আমার বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে ।

ছোট ছোট দুটো বোন । বাবা সরকারি চাকরিজীবী হলেও স্কুলে থাকতেই পরলোকগমন করেন ।ধনী আত্মীয় স্বজনদের সহায়তায় মা আমাকে আর ছোট দুই বোনকে কোনরকমে মানুষ করেছেন ।

সব সময় সবার অবহেলা আর অনাদর পেয়েই বড় হয়েছি । সুখাদর কি তা কেবল কুহুক জীবনে আসার পরই বুঝেছিলাম ।

আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে পাশ করে বের হয়ে জজ কোর্টের সনদের জন্য পরিক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম ।

একদিন রেজিস্টার বিল্ডিং থেকে বের হয়ে মলচত্তরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম । পাশ দিয়েই হেটে যাওয়ার সময় একটি মেয়ের ছোট পার্স মাটিতে পড়ে গিয়েছিল । সেই পার্স তুলে ফেরত দিতে গিয়েই পরিচয় হয় কুহুকের সাথে । আমার মনে পড়ে প্রথম পরিচয়েই কেমন অন্য এক আকর্ষণে আমি কুহুকের দিকে পলকহীন তাকিয়ে ছিলাম । একদম বাংলা সিনেমার পরিচিত দৃশ্য গুলোর মতো । দুজন অচেনা মানুষ কয়েক মিনিটেই পরিচিত হয়ে গেল। তারপর পরিচয় , প্রনয়ের দিন গুলো উত্তাল দুঃখ কষ্টের জলোচ্ছ্বাসের ভেতরে ঘোরপাক খাচ্ছিল। তবুও আমরা দুজন একসাথে ভাসতে ভাসতে স্বপ খুঁজে ফিরছিলাম। শত কষ্টেও নিজেদের তৈরি একটা কল্পনার পৃথিবী ছিল।

পাঁচ ফুট উচ্চতার চাপা ফর্সা গায়ের রঙ । শত দুঃখের বিষণ্ণতা যেন তাঁর মিষ্টি চেহারাটাকে ঢেকে রেখেছে।কিন্তু চোখ দুটো যেন মেঘের মায়া । আমাকে কেমন যেন স্পর্শ করে গেল । আর সেই থেকে দুই বছর আমার জীবনটা এক অদৃশ্য ভালোবাসার শক্তিতে দ্রুত চলে যাচ্ছিল ।

কুহুক আমাদের পাশের এলাকার মেয়ে । আমার মতোই ছোট বেলায় বাবা মারা গিয়েছে। অনার্স পাশ করার পর তাঁর মা ও মারা যায় । আজিমপুরে একটা ফ্ল্যাট বাসায় দুই বান্ধবি নিয়ে থাকে । মা বাবার রেখে যাওয়া কিছু গচ্ছিত টাকা আর টিউশনি কোনরকমে চলছিল জীবন।গ্রামের বাড়িতেও তেমন আপন কেউ ছিলনা ।দুই এক সময় বাড়িতে বেড়াতে গেলে ও বাবার চাচাতো ভাইয়ের পরিবারে থেকে চলে আসে । বলা যায় গ্রামের বাড়ির সম্পত্তির লোভে বাবার চাচাত ভাইয়েরা অভিবাবকের ভাব নিত। যখন কেউ অভিভাবক হারায় সমাজের সবাই তাঁর অভিবাবক হয়ে যায় ।

আমি বুঝতাম কুহুক খুব একা আর অসহায় । খুব অসহায়! এই পৃথিবীতে আমি ছাড়া কুহুকের আপন কেউ নেই।

আমরা পাশাপাশি বসে যখন গল্প বলতাম কুহুক কখনও তাঁর জীবন যুদ্ধের গল্পটা আমার কাছে বলতো না ।ওর আত্মমর্যাদাবোধ আর স্পর্শকাতর মনটা আমাকে আরও বেশি দুর্বল করে দিত। আমি শুধু ওকেই আমার পৃথিবী ভাবতাম ।ওর ভালোবাসার গভীরে হারিয়ে যেতাম ।

যখন কোন মানুষ এতিম হয় তখন সে কেবল বুঝে মাথার ছায়া চলে গেলে জীবন কেমন খরতাপে পুড়ে ।

সে সময়টা আমার সুপ্রিম কোর্টে সনদের পরীক্ষা ।আমার মা থাইরয়েড নামের একটি রোগে বহু বছর ধরে ভুগছিল। আমি ছাড়া মায়ের ভরসা করার মতো ও কেউ নেই ।আমার একটি অসহায় পরিবার আর কুহুক নামের একটি অসহায় মেয়ের ভালোবাসার কঠিন দায়িত্ব শুধু আমার মাথার উপরে কালবৈশাখী ঝড়ের মতো ঘূর্ণিপাক খাচ্ছিল ।

থাইরয়েড বেরে গিয়ে মায়ের হৃদযন্ত্রে সমস্যা দেখা দেয় । মায়ের জীবন ও মৃত্যু আমার চোখের সামনে । আর বুকের ভেতরে হাসপাতালে নিথর শুয়ে থাকা আমার অসহায় ভালবাসা । কান্না শুকিয়ে যাওয়া কুহুকের দু'জোড়া অভিমানী চোখ । আমার দিকে নির্বাক তাকিয়ে আছে ।

পিজি হাসপাতালে মায়ের একটি অপারেশন হল ।মায়ের বেঁচে থাকার আশা কিছুটা সঞ্চারিত হতে শুরু করল।পরের দিন আমার সনদের পরিক্ষা । আমি হাসপাতালেই মায়ের বিছানার পাশে বসে বইয়ে মনোযোগ দেই।

ভোর রাতের দিকে আমি পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে যাই । কুহুকের রুমমেট আমাকে মোবাইলে কল দেয় । একটি মৃত্যুর খবর দিয়ে আমি ভোরের আকাশ দেখি। আমার প্রিয়তম মানুষটির শেষ বিদায়ের খবর।

প্রিয়তম বিয়োগের মতো বিশাল পাহাড় বুকে চেপে আমি সকালে পরিক্ষার হলে যাই । নির্বিকার ভাবে পরিক্ষা দেই । তারপর হাসপাতালে যাই কুহুককে শেষ বারের মতো একবার দেখতে। হাসপাতালে কুহুকের আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে তেমন কেউ আসেনি।

আমি দুই একজন বন্ধুর কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে হাসপাতালের বিল দেই। তারপর কুহুকের লাশটা এম্বুলেন্সে করে ওদের বাড়িতে নিয়ে যাই । দু'ফোটা চোখের জল ফেলার মতো , জড়িয়ে ধরে কাঁদার মতো কাউকে পেলাম না । কি নির্বাক গ্রামবাসী! একটি অসহায় মেয়ের মৃত্যু আর তাঁর পরলোকগত বাবা মা কে নিয়ে দুই একজন আফসোস করছিল শুধু ।

আমার দু'চোখের পানি জমতে জমতে বরফ হয়ে গিয়েছিল। সেই জমে যাওয়া বরফ বুকে নিয়ে আমি ফিরে আসতে পারছিলাম না । পথে পথে কোথাও আমার আমার পা দুটো পিছলে যাচ্ছিল ।

শুধুই নিজেকে বুঝিয়েছিলাম দরিদ্র ছেলেদের ভালোবাসা এমন কান্না হয়েই বেঁচে থাকে ।ঠিক কুহুকের কান্নার মতো ।

তিন বছর পর আবার পৃথিবীর নিয়মে আমি ঘর সংসারী হই । আমার স্ত্রী আনু একজন আইনজীবী এবং নারী অধিকার কর্মী। সে জানে একদিন আমি কুহুক নামের একজনকে ভালোবাসতাম । সে এই পৃথিবীর সব মায়া আর মোহের অনেক দূরে। কিন্তু আনু জানেনা আমার চোখ দুটো কুহুকের কান্না স্পর্শ করে এই পৃথিবীর আলো দেখে।

ঢাকা থেকে ছাব্বিশ কিলোমিটার দূরে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর । বাসে দেড় ঘন্টা লাগবে।কুহুক কে ভাবতে ভাবতে এক ঘণ্টা চলে গেছে । নগরভ্রমন নামের বাসটা ধলেশ্বরী নদীর দ্বিতীয় সেতু পার হয়ে গেছে । আমি শ্রাবন মাসের সাতাশ তারিখে কোন কাজ রাখি না । এই দিনটা শুধু কুহুকের কবরের পাশে বসে দু' ফোঁটা কান্না ঝরানোর জন্য রাখি । বুকে জমে থাকা কান্নাজলের বরফটা গলে নদী হয়ে যেতে পারে। সেই নদীতে কোন মানুষ না থাকুক। একটি নিঃসঙ্গ নৌকা তো থাকবে।সেই নিঃসঙ্গ নৌকাটা আমার ভালোবাসার স্তম্ভ। কুহুক আমার আত্মার ঐশ্বর্য । কুহুকের কান্না আমার বেঁচে থাকার শক্তি । আমার নিভৃত প্রেমের পরশ ।

পৃথিবীতে কিছু মানুষ এমন দুর্ভাগ্য নিয়েই স্বার্থপর পৃথিবীতে জন্মায় ।যাদের জীবনে দারিদ্রতাই সত্য আর আপন ।

#গল্প কুহুকের কান্না
#নুরুন নাহার লিলিয়ান
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:১০
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×