আরিলরা দুপুরে চট্টগ্রাম ছেড়ে গেছে।
আপাতদৃষ্টিতে প্রাথমিক কাজটা আমরা করে ফেলতে পেরেছি বলে মনে হয়।
পরশু সকালে যখন আরিল আর রাহিলের সাথে প্রথম দেখা হয় তখন তারা তাদের মুল ভাবনাটা জানিয়েছিলো।রাহিলের মতে আমদের যেহেতু ক্ষমতা সীমিত তাই আমরা হয়ত বিরাট স্কেলে সাহায্য করতে পারবো না কিন্তু আমরা ছোট ছোট কয়েকটা কেস হয়ত ডিল করতে পারি। সে ভাবছিলো যে এইযে সরকার আর এনজিও রা তো এখন রিলিফ ওয়ার্ক চালাচ্ছে কিন্তু কয়েকদিন পর যখন সবকিছু ঠান্ডা হয়ে আসবে তখন তো এরা আর থাকবে না এই বিপন্ন মানুষের পাশে ( যেটা আসলে সম্ভব ও না)। রিলিফ দিয়ে হয়তো প্রাথমিক ধাক্কাটা সামাল দেওয়া যাবে কিন্তু এইযে স্বপ্নভাঙা এতগুলো লোক তাদের কে আবার নতুন করে জীবনের স্বপ্ন দেখানোর জন্য যদি কিছু করা যায় তাহলে খুব দারুন হয়। আমরা ভাবছিলাম যে অন্তত কয়েকটা পরিবারকে ও যদি আঅম্রা সাহায্য করতে পারি তাদের আগের অবস্থায় কিংবা তার চেয়ে ও ভালো জায়গায় ফিরিয়ে নিতে তাহলএ বেশ দ্দারুন একটা ব্যাপার হবে। আর এই মডেলটা যদি এইখানে কাজে দেয় তাহলে এইটাকে হয়ত পরে অন্য কোথাও ব্যবহার করা যাবে।
তাই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা গুলো ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম এবং এই ধরনের পরিবারের খোজ করছিলাম যাদের জন্য সাহায্য আসলেই খুব দরকারী। আমরা বিশেষ করে দেখছিলাম যে সব পরিবারে উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মারা গেছে ( স্বামী বা বাবা) তাদেরকে আমরা কোনভাবে সাহায্য করতে পারি কিনা। এটা খুবই কঠিন একটা ব্যপার ছিলো কারন অধিকাংশ লোক দুর্গত ছিলো এবং তারা আমাদেরকে তাদের নানা অভাব-অভিযোগ জানাচ্ছিল।তবু ও আমরা পাঁচটা পবিবারকে বেছে নিয়েছি যাদেরকে আমাদের উপযুক্ত বলে মনে হয়েছে এবং আমরা খুব করে চাইছি জে এদের জন্যে আমরা কিছু করবো।
আমরা হুমায়ুনের পবিরাবকে পেয়েছি যাদের কথা আরিল আগেই বলেছে।আমাদের সাথে কথা হয়েছে ফাহিনুর আর তার বাবার ( যারা কিনা মাত্র দেরমাস আগে এখানে এসেছে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায়!) ফাহিনুর হারিয়েছে তার মা আর ছোট দুই ভাইকে , ফাহিনুরের বাবা ও মাটিতে চাপা পড়েছিলেন এবং ভদ্রলোক ভালোই আহত । তিনি নির্মাণ শমিক হিসাবে কাজ করেন এবং খুব তাড়াতাড়ি কাজে যোগ দিতে পারবেন বলে মনে হয় না। ফাহিনুর নিজে ও বস্থশিল্পে শ্রমিকের কাজ করে যদিও মা আর ভাইদের হারানোর শোক ভুলে স্বভাবিক অবস্থায় ফিরতে তার সময় লাগারই কথা। আমরা তাদের জানিয়েছি যে আমরা আপাতত তাদেরকে তাদের থাকার ব্যবস্থা করে নিতে সাহায্য করবো( যেমন তারা যদি একটা নতুন বাসা খুঁজে পায় তাহলে তার খরচ আমরা দিবো পাশাপাশি তাদেরকে কিছু আসবাবপত্র ও আমরা দিতে পারি। )। আমরা ঠিক করেছি যে তাদেরকে আমরা তিন মাসের খরচ দিবো তবে পুরে টাকাটা একসাথে না দিয়ে প্রতি মাসে অল্প অল্প করে দেবো যাতে এই তিনমাস তারা নিরুপদ্রব ভাবে থাকতে পারে।তবে তাদেরকে এই তিন মাসের মাঝে নিজেদেরকে ফিরে পেতে হবে অন্তত কিছু উন্নতির চিহ্ন দেখাতে হবে ( আমাদের চট্টগ্রামের বন্ধুরা এই কাজে তাদের সাথে যোগাযোগ রাখবেন বলে জানিয়েছেন)।
আমাদের সাথে কথা হয়েছে বেলায়েতের পরিবারের সাথে। তার সাত সন্তান মারা গেছে মাটিতে চাপা পড়ে। তার বড় মেয়ের স্বামী মারা গেছে শ্বশুরের পরিবারকে সাহায্য করতে গিয়ে।বেলায়েতের বড় মেয়ে গার্মেন্টসে কাজ করত। বাচ্চার কারনে আপাতত সে কাজে যায় না। সে আমাদের জানিয়েছে যে তাড়াতাড়িই সে হয়ত কাজে ফেরত যাবে। আমরা তাকে জানিয়েছি আমরা তার পাশে আছি , সে যেন সাহস না হারায়। লেবুবাগানে আমাদের সাথে দেখা হয়েছে ১৪ বছর বয়সী আকলিমার। আকলিমা হারিয়েছে সবাইকে, শুধু তার মা প্রায়-মৃত অবস্থায় শুয়ে আছে সি এম এইচ এ। এছাড়া কুসুমবাগে আমরা খুজে পেয়েছি এক মহিলাকে যার স্বামী মারা গেছে এবং একটা ছোট বাচ্চা ছাড়া কেউ নেই।
এই পাচজন হলো আপাতত আমাদের প্রায়োরিটি টার্গেট। আমরা চাই এদেরকে কিছু একটা ফিরিয়ে দিতে। জানি যা হারিয়েছে তা কোন দিন হয়ত ফেরত দিতে পারবো না, তবু ও কিছু একটা চেষ্টা করা।
// আরিলের চাপাচাপিতে এই লেখাটা লেখা । খুব বেশী গোছানো হয়নি। খুব বেশী তথ্যবহুল ও না আসলে। ঃ-(

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




