somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফারেনহাইটের গল্প

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিদঘুটে ফারেনহাইট স্কেল দেখে অনেকেই হয়ত অনেকবার ভ্রু কুঁচকিয়েছেন। মানে ৩২ ডিগ্রিতে পানি বরফ হবে এটা কেমন কথা আর ১০০ ডিগ্রিকে মানুষের দেহের তাপমাত্রা ধরলেও বিষয়টা না হয় মেনে নেওয়া যেত কিন্তু প্রায় '১০০' কে দেহের সাধারণ তাপমাত্রা ধরলে তাহলে স্কেলের সাথে ব্যাপারটা মিলে, কিন্তু আবার 'প্রায়' কেন। চলেন একটু ঘুরে আসি অষ্টাদশ শতক থেকে।

১৭০১ সালের ১৪ই আগস্ট নিঃসন্দেহে পোল্যান্ডের ড্যানিয়েল গ্যাব্রিয়েল ফারেনহাইটের জীবনের সবচেয়ে বাজে দিন ছিল। এইদিনে হঠাৎ করেই মাশরুম পয়জনিং এর কারণে তার বাবা ও মা মারা যান। এরপর তাকে পাঠানো হয় আমস্টারড্যামে, যেখানে সে শিক্ষানবিস হিসাবরক্ষক হিসেবে কাজ করতেন। কিন্তু কাজটি তার এতই অপছন্দ ছিল যে সে এই কাজ রেখে এতবার পালিয়ে গেছিল, যে কারনে তার নিয়োগকর্তা তার নামে ওয়ারেন্ট বের করেছিল। আমস্টারড্যাম থেকে পালিয়ে সে ইউরোপের বিভিন্ন শহর ঘুরতে শুরু করে। এই সময়েই বিভিন্ন সায়েন্টিফিক যন্ত্রাংশের উপর তার আগ্রহ সৃষ্টি হয় , বিশেষ করে থার্মোমিটারের উপরে। ১৭০৮ সালে তিনি দেখা করেন কোপেনহেগেনের মেয়র অলে রোমারের সাথে হয়ত সেই ওয়ারেন্টের ব্যাপারেই :D। কিন্তু ভাগ্যক্রমে অলে রোমার ছিলেন একজন বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ। তিনি প্রথম আলোর পরিমেয় গতি হিসেব করে বের করেন। ওই সময়ে তিনি পা ভেঙ্গে ঘরেই দিনকাল কাটাতেন।তিনি ঘরে বসেই তাপমাত্রা মাপার একটি স্কেল তৈরি করেন যেখানে পানি বরফ হত ৭.৫ ডিগ্রিতে আর মানুষের দেহের তাপমাত্রা ছিল ২২.৫ ডিগ্রিতে।রোমার জ্যোতির্বিদ ছিলেন বলেই কিনা মনে হয় সেই স্কেলে পানি বাষ্প হওয়ার তাপমাত্রা ছিল ৬০ ডিগ্রিতে। ফারেনহাইট মূলত রোমারের এই স্কেলটিতে সামান্য পরিবর্তন এনে থার্মোমিটার তৈরি শুরু করেন। তিনি ৭.৫ কে ৮ এবং ২২.৫ কে ২৪ ধরেন কারণ তিনি মনে করতেন "ভগ্নাংশের ব্যবহার ছিল অসুবিধাজনক এবং অসুন্দর"। এভাবে কিছুদিন থার্মোমিটার তৈরির পর তিনি স্কেলটিকে ৪ দিয়ে গুন করেন। এভাবেই আমরা পাই ৮x৪ বা ৩২ ডিগ্রি যা বরফের তাপমাত্রা এবং ২৪x৪ বা ৯৬ ডিগ্রি যেটা প্রায় দেহের তাপমাত্রার একদম কাছাকাছি। তিনিই থার্মোমিটারে পারদ ব্যবহারের পথিকৃৎ ছিলেন। গ্যাব্রিয়েল ফারেনহাইট তার থার্মোমিটার তৈরির পদ্ধতি নিয়ে অনেক গোপনীয়তা অবলম্বন করতেন। তার তৈরি থার্মোমিটারগুলি ছিল সমসাময়িক সময়ের সেরা, এজন্য তিনি রয়্যাল সোসাইটিতে অভিষিক্ত হন যেখানে তিনি নিউটন, বয়েল আর হুকের গবেষণা নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। তাই তিনি কি জানতেন যে তরলের তারপমাত্রা ১ ডিগ্রি বাড়লে তরলের আয়তন নির্দিষ্ট হারে বাড়ে নাকি শুধু হিসাবের সুবিধার জন্য ৪ দিয়ে গুন করেছিলেন তা হয়ত আমরা কোন দিনই জানতে পারব না।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:১৫
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×