আমার বাবা একজন অসাধারন মানুষ। তাঁর জীবনবোধ ও জ্ঞানের পরিসর মাঝে মাঝে আ্মাকে অবাক করে। একজন সাধারন শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষ কি করে ধর্ম সম্পর্কে এত জানেন? আবার রবীন্দ্র-নজরুল নিয়েও তাঁর অনেক জ্ঞান। তাঁকে দেখলেই প্রমথ চৌধুরীর "সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত" এই উক্তিটার স্বার্থকতার প্রমান পাই। আমি যখন অনেক হতাশা আর কষ্ট কিংবা ব্যর্থতাকে সাথে নিয়ে তাঁর সাথে কথা বলি তিনি কোরআন-হাদীস দিয়ে তার অসারতার ব্যাখ্যা দেন আর তার সাথে সাথে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি কবিতা প্রায়ই আবৃতি করে শোনাতে ভুল করেন না - কবিতাটা আসলেই অসাধারন। উৎসাহিত করার নেয়ামকও বটে-
বিপদে মোরে রক্ষা করো
এ নহে মোর প্রার্থনা,
বিপদে আমি না যেন করি ভয়।
দুঃখতাপে ব্যথিত চিতে
নাই বা দিলে সান্ত্বনা,
দুঃখে যেন করিতে পারি জয়।
সহায় মোর না যদি জুটে
নিজের বল না যেন টুটে,
সংসারেতে ঘটিলে ক্ষতি
লভিলে শুধু বঞ্চনা
নিজের মনে না যেন মানি ক্ষয়।
আমারে তুমি করিবে ত্রাণ
এ নহে মোর প্রার্থনা,
তরিতে পারি শকতি যেন রয়।
আমার ভার লাঘব করি
নাই বা দিলে সান্ত্বনা,
বহিতে পারি এমনি যেন হয়।
নম্রশিরে সুখের দিনে
তোমারি মুখ লইব চিনে,
দুখের রাতে নিখিল ধরা
যেদিন করে বঞ্চনা
তোমারে যেন না করি সংশয়।
(তবুও আমার 'কই মাছের প্রাণ' নিয়ে বেঁচে থাকা ব্যর্থতা, কষ্ট, হতাশাগুলো মরেনা, কারন ওগুলোকে আমি পুষি, আর ওগুলোও আমাকে এতটাই ভালোবাসে যে আমাকে ছাড়া একদন্ডও দূরে থাকতে চায়না, কখনো একটু দূরে চলে গেলে আবার দৌঁড়ে ছুটে আসে আমার কাছে। আমার খুব কষ্ট হয় আমার মা-বাবার জন্য যাঁরা আমাকে সান্তনা আর ভালোবাসা দিয়ে বাচিঁয়ে রেখেছেন আর অকৃতজ্ঞ আমি অনবরত তাঁদের আশাগুলো কে কবর দিয়ে নিরাশায় রূপ দিয়ে চলেছি... )

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




