বাবার কাছে অনেক ঋণি, করেছে
আমায় এত বড়। ঠিক যখন পূর্ণিমা
উদয় হবে ক্ষণিক মাস বাদে, বাবা
আর নেই!
আচমকা বৃষ্টি স্নাত কালো মেঘে
ঢাকা পড়ে গেল চাঁদ সওদাগর;
পথ দেখানোর তারাগুলো ও আর
মিলেনা। এতো বড় কালো কাগজে
সাদা রঙ ঢেলে অন্যের মনরঞ্জন
করার মত সামর্থও আমার নেই।
স্বপ্নগুলো শুষ্ক তুলিতে পড়ে রই,
সাদা কাগজে জলের ছাপ দিয়ে
যদি ছবি আঁকা যেতো, নোনা জলের
অনেক ছবি বানাতে পারতাম!
পুরনো আঁকা ছবি গুলো নতুন করে
বর্ণ ছড়ায়, নতুন কিছু জানতে পারি;
নোনা জলগুলো আশির্বাদ হয়ে
ছবিগুলোতে ঝরে পড়ছে, টুপ টুপ টুপ।
দিন যায়, মাস যায়, বাবার লাগানো
ফুলগুলো আজো ফুটে, সুরুভি টুকু
নাকের ঢগায় ভিড় করে,
এই ফুলগুলো আমার না;
মালা গাথার লোকের অভাব দেখিনা,
সবাই ফুলের মালিক।
অনেক ছোট থাকতে মাকে হারিয়েছিলাম,
বাবাও গেছে মায়ের দেশে; সাড়ে তিনহাত
ঘরে আছেন তাঁরা সুখে। শুধু এই দেশেতে
একলা আমি সবার চেয়ে সুখী, মস্ত-বড় মাটির
বিছানা, আমার থাকার জায়গা কই!
রুপক ও টিকাঃ পূর্ণিমা-সফলতা, কালো মেঘ-দুঃখ , চাঁদ সওদাগর- বাবার ছেলে, পথ দেখানোর তারাগুলো- আত্মীয়স্বজন, কালো কাগজ- এই পৃথিবীর বাস্তবতা, নোনা জল- চোখের জল, পুরনো আঁকা ছবি গুলো- বাবা থাকতে যা ছিলো, ফুলগুলো- বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি, এই দেশ- এই পৃথিবী, সবার চেয়ে সুখী-মূলত নিন্দা অর্থে দুঃখের বর্ণনা,
“পুরনো আঁকা ছবি গুলো নতুন করে বর্ণ ছড়ায়, নতুন কিছু জানতে পারি;
নোনা জলগুলো আশির্বাদ হয়ে ছবিগুলোতে ঝরে পড়ছে, টুপ টুপ টুপ।” – বাবা না থাকলে একটা ছেলের জীবনের যে সম্ভাবনা থাকে তাও এই সমাজ জীবনের নিষ্ঠুরতায় সব মলিন হয়ে যায়।
“দিন যায়, মাস যায়, বাবার লাগানো ফুলগুলো আজো ফুটে,
সুরুভি টুকু নাকের ঢগায় ভিড় করে, এই ফুলগুলো আমার না;
মালা গাথার লোকের অভাব দেখিনা, সবাই ফুলের মালিক।” – বাবার মিত্যুর পর সম্পত্তি গুলো নামে আমার হলেও, সব আত্মীয়স্বজন এর উপর দাবি রাখে।
“অনেক ছোট থাকতে মাকে হারিয়েছিলাম, বাবাও গেছে
মায়ের দেশে; সাড়ে তিনহাত ঘরে আছেন তাঁরা সুখে।
শুধু এই দেশেতে একলা আমি সবার চেয়ে সুখী,
মস্ত-বড় মাটির বিছানা, আমার থাকার জায়গা কই!”- প্রতিটি মানুষ(মুসলমান) মারা গেলে তার জন্যে সাড়ে তিন হাত মাটির ব্যবস্থা হলেও এতিম দের জন্যে এই মস্তবড় পৃথিবীতে কোথাও মাথা গুঁজে থাকার ঠাই মিলেনা।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ১:৪৮