বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীদের রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে পঙ্গু করে দেওয়ার যে রাজনীতি বাংলাদেশে চালু হল আমরা কি এই রাজনীতি থেকে বেড়িয়ে আসতে পারব? এই পোষ্টের নিচে অনেকেই হয়তো কমেন্ট করবেন বাবুনগরীকে আরো কয়েক ঘা দেওয়া দরকার ছিল। কিন্তু আল্টিমেটলি লাভ কি?? আজকে যারা ক্ষমতায় নেই তারা নির্যাতনে শিকার হচ্ছেন। কালকে তারা ক্ষমতায় দেলে তারাও নির্যাতন করবেন। মাঝখানে কিছু অসহায় নিরীহ মানুষ আটকা পড়ে প্রাণ হারাবে।
নির্যাতনে শারীরিক বৈকল্যের পথে বাবুনগরী
ইত্তেফাক রিপোর্ট
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা জুনাইদ বাবুনগরী এখন নিচু স্বরে কথা বলতে পারছেন। রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র থেকে তাকে সাত তলায় কেবিনে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। সেখানে চিকিত্সা দেয়া হচ্ছে। তার পাশে সার্বক্ষণিক রয়েছেন তার বড় জামাই মাওলানা এরশাদ, তৃতীয় জামাই মাওলানা কুতুব উদ্দিন, ছোট জামাই মাওলানা জুনাইদ প্রমুখ স্বজনরা। তার ছেলে সালমান গতকাল রবিবার চট্টগ্রামে গেছে।
ছোট জামাই মাওলানা জুনাইদ ইত্তেফাককে জানান, আগের থেকে বাবুনগরীর শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। তবে এখনো অসুস্থ ও দুর্বল । কথা বলছেন আস্তে আস্তে। উভয় পায়ের ক্ষতস্থানে চিকিত্সা দেয়া হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাবুনগরীর পরিবারের একজন দাবি করেছেন, দু'দফা রিমান্ডে রেখে নির্দয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে জুনাইদ বাবুনগরী এখন শারীরিক বৈকল্যের পথে। বাবুনগরী তার ঘনিষ্ঠ স্বজনদের বলেছেন, দুই দফা রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে তার ওপর। প্রথম দফায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করতে না পেরে দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে তাকে ইলেক্ট্রিক শক দেয়া হয় দুই পায়ের তলায় ও হাঁটুর নিচে। ভয় ভীতি দেখানো হয়, মানসিকভাবে করা হয় বিপর্যস্ত। নিয়মিত খেতে দেয়া হয়নি। গরমে প্রচণ্ড পিপাসা লাগলেও পানি পান করতে দেয়া হতো না। ডায়াবেটিস রোগী জানার পরও তাকে চিকিত্সা ও নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে দেয়া হয়নি। ইনসুলিন দেয়া হয় অনিয়মিত। ঠিক মতো ঘুমাতে দেয়া হয়নি। আলো বাতাসহীন ভেন্টিলেশনহীন রুদ্ধ কক্ষে তাকে দীর্ঘ সময় বসিয়ে, দাঁড় করিয়ে ও শুয়ে থাকতে বাধ্য করা হয়। ঘন অন্ধকার ও ফ্যানের বাতাস ছাড়া তাকে রাত দিন-পার করতে হয়েছে । এতে তিনি প্রচণ্ড অসুস্থ ও দুর্বল হয়ে পড়লেও চিকিত্সা দেয়া হয়নি। বাবুনগরীর একজন স্বজন দাবি করেন, স্বাস্থ্যের অবস্থা যখন চূড়ান্তভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়, তখনই তাকে তড়িঘড়ি করে বারডেমে আনা হয়। লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়। পরে তার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়লে তড়িঘড়ি করে জামিন এবং মুক্তি দেয়া হয়।
গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে মাওলানা জুনাইদ বাবুনগরীর নির্যাতন সম্পর্কে তার পরিবারের সদস্যদের মিডিয়াকে কোন তথ্য দিতে না করে দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
বাবুনগরীর কেবিন নজরদারি করা হচ্ছে বলেও স্বজনরা জানান।
উল্লেখ্য, গত ৬ মে রাতে বাবুনগরীকে চট্টগ্রামে পাঠানোর কথা বলে লালবাগ মাদরাসার কাছ থেকে তুলে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ। পরে গ্রেফতার দেখানো হয়। তাকে দুই দফায় মোট ৩১ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। প্রথম দফায় ৯ দিন ও দ্বিতীয় দফায় ২২ দিন। প্রথম দফায় রিমান্ডে নেয়া হয় ৭ মে এবং দ্বিতীয় দফায় নেয়া হয় ১৬ মে। প্রথম দফার রিমান্ডের পর যখন তাকে আদালতে হাজির করা হয়, তখন তিনি হাঁটতে পারতেন। কিন্তু পরে তিনি নিজে নিজে হাঁটতে পারেননি। দুজনের কাঁধে ভর দিয়ে হাঁটতে হয়েছে। তার স্বাস্থ্যের অবস্থা যখন অবনতির দিকে, তখন রিমান্ডে থাকা অবস্থায় তড়িঘড়ি করে গত ২৯ মে জামিন দেয়া হয়।
এদিকে বারডেম এর একজন চিকিত্সক জানান, বাবুনগরীর পায়ের পচন রোধ করা সম্ভব। তবে তার শরীরের যে অবস্থা তাতে তিনি সুস্থ হলেও আগের মতো স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারবেন না
Click This Link

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



