somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অন্ধবিন্দু
বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৯ (১) ও ৩৯ (২)(ক) এবং মানবাধিকার সনদ(UDHR) এর অনুচ্ছেদ-১৯ ও অনুচ্ছেদ-২৭ বিশেষভাবে উল্লেখপূর্বক; “অন্ধবিন্দু”- ব্লগ পাতাটির লেখককর্তৃক গৃহীত ও ব্যবহৃত একটি ছদ্মনাম মাত্র।

নামমাত্র মুসলমান থেকে কাজের মুসলমান হবার প্রথমধাপ: জ্ঞানার্জন

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



((( সুধী স্বজন, ব্লগ পাতাটিতে প্রাসঙ্গিক বিষয়ে আপনার আলোচনা/সমালোচনা/প্রতিক্রিয়া লিখতে কুণ্ঠাবোধ করবেন না। আমরা কেউই সবজান্তা নই। তবে আমার আস্থা রয়েছে; আন্তর্জালের তীক্ষ্ণ মেধাবী ও স্বশিক্ষিত অংশটির প্রতি। যাঁরা দায়িত্বসহকারে পড়েন-লিখেন, ব্লগিং করে থাকেন; তাঁরা কমজান্তাও নন! কামনা করি, আমাদের মধ্যকার এই ব্লগ-মিথস্ক্রিয়া সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর থাকুক )))

বিছমিল্লা-হির রাহ মা-নির রাহীম।
কোরআন, হাদীস-সুন্নাহের জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য অত্যাবশ্যকীয় অর্থাৎ ফরজে আইন। ইসলাম গ্রহণ করার পর ইসলামের সকল বিধি-বিধান পালন করার চেষ্টাটি তাই অপরিহার্য; এখানে উপযুক্ত কারণ ব্যতিরেকে ঐচ্ছিকতার কোনও স্থান নেই। আর পালনের জন্যই জানার/শিক্ষা করার বাধ্যবাধকতা আসে। হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে ‘যার ইলম নাই তার ঈমান নাই’। আমরা যারা পাঁচ কলেমা মুখস্থ করে বা নামায রোযার দু-চারটা মাসালা-মাসায়েল জেনেই নিজেকে মুসলমান দাবী করছি; এ দাবী টি যৌক্তিক ? না অনেক বড় মূর্খতার শামীল !! বাপ-দাদার উত্তরাধিকার সূত্রে পৃথিবীতে মুসলমানের সংখ্যা রোজই বাড়ছে। কিন্তু দ্বীনি-শিক্ষা এবং জীবনাশ্রিত ও যাপনঘনিষ্ঠ ইসলামি হুকুম-আহকাম-শরীয়াহ্-ফেকাহ্ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান না-থাকার দরূন আমাদের মুসলমানের বিশ্বাস― অসচেতন/দূর্বল থেকে যাচ্ছে। এই অচেতনতার প্রতি ইঙ্গিত করে সূরা ইউসুফে(১০৬) সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা’য়ালা বলছেন― ‘ওয়ামা ইউ’মিনু আকছা রুহুম বিল্লা-হি (অনেক মানুষ আছে যারা আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করে) ইল্লা ওয়াহুম মুশরিুকূন (কিন্তু তারা মুশরিক)।। এছাড়া আমরা এমনও আছি যারা কোরআনের আরবী-বানী উচ্চারণ করে পাঠ করতে শিখলেও মাতৃভাষায় তার অর্থ ও সাহিত্য উপলব্ধি করার তাগিদ করি নে। যার ফলে, মহান আল্লাহ তায়ালা রচিত মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের সহিত আমাদের আত্মিক(জ্ঞান-প্রজ্ঞাগত রূহানী হুঁশ) যোগাযোগ গড়ে ওঠতে, বাধা হয়ে দাঁড়ায় ভাষার দূরুত্ব। তেমনি, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর রেখে যাওয়া হাদীস-সুন্নাহ-আদর্শে মনোদৈহিক, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক তথা সার্বিক-সার্বজনীন অতলস্পর্শ গভীরতার তাৎপর্য অনুধাবনে ব্যার্থ আমরা; একদল― খাবারের পর মিষ্টি খাওয়া সুন্নাত, দাড়ি রাখা, লম্বা জামা, তিনি নুরের তৈরি, তার বৈবাহিক অবস্থা, মনগড়া গাল-গপ্প আর বিচ্ছিন্ন দৃষ্টিকোণে উৎসুক থাকি। একদল― ইসলামের বাস্তবায়ন মানুষের চিন্তা-চেতনায় নয় বরং তরোবারি/অস্ত্রের জিহাদে ভর করে মুসলমানিত্বের মৌলিক সংজ্ঞা প্রকাশে মশগুল হই। একদল আছি― রাব্বুল আলামিনের আহবানকৃত মধ্যপন্থার কথা ভুলে, মাজহাবের ভ্রাতৃত্ব ত্যাগ করে মারপ্যাচের সেলাই ধরেছি। আরেকদল মনে করি― যা হবার তা তো হবেই। এসব দলাদলির সমন্বয়হীনতা দেখে, পবিত্র কোরআনের সূরা আল জুমআ’র আয়্তটি মনে পড়ে যায় বারবার―“কামা ছালিল হি’মা-রি ইয়াহ মিলু আছফা-রাং (তাদের উপমা সেই গাধা, যে পুস্তক বহন করে)”।। পরিণামস্বরুপ― যোগ্য নেতৃত্ব সৃষ্টিতে মুসলিমদের অজ্ঞানতা-ঐক্যহীনতা, বিশ্বকেন্দ্রিক দ্বীনি দাওয়াতের পরিবর্তে জাহেলী তাকলিদ বা অন্ধানুকরণ যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে যাওয়া, আধুনিক অপবস্তুবাদ-ভোগবাদে নিজেদের অস্তিত্বসংকট/আত্মদৈন্যতা সহ বিজ্ঞান শিক্ষায় শোচনীয়রকম পিছিয়ে পড়ার ইত্যাদি ইত্যাদিতে অষ্টপ্রহর মরছি।

আজকের পাশ্চাত্যের সাথে আমার/আমাদের মধ্যে অনেকেরই শিক্ষা ও গবেষণামূলক নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে, অস্বীকার নেই। কিন্তু যখন তথাকথিত আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো ফ্যাব্রিক্যাটেড টেরোরিজম অব্যক্ত রেখে জার্নালিজমের কোড এন্ড কোন্ডাক্টস ভঙ্গ করে ইসলামের মডারেট, র‌্যাডিক্যাল, ট্যারোরেস্টিক ব্যাখা-বিশ্লেষণের উদয় ঘটায় ! তবুও যতোটানা দোষ ওই ষড়যন্ত্রকারীদের ছুঁড়ে দিতে ইচ্ছে; তার চাইতেও বহুগুন আমি নিজেদের করছি। কারণ ১৪শ বছর আগে থেকে পবিত্র কোরআন আমাদের স্পষ্টত সাবধান করে আসছে এবং করনীয় দিক-নির্দেশনায় নবীজি পাক (সা.) অত্যন্ত দৃঢ় উদাহরন ও কৌশল (উসওয়াহে হাসানাহ) উপস্থাপন করে গেছেন। সর্বোত্তম অগ্রদূত, অবিকৃত-কালজয়ী-শ্বাশ্বত আল-কুরআন আর সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিশ্চিত অভয়বানী পাওয়ার পরও আমাদের এহেন পতন, চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়― আমরা নামের মুসলমান ঠিক কী অর্থে।

কুরআন আল-কারীমের সূরা সূরা হা-মীম সেজদা’য় আল্লাহ তা’য়ালা নবীজিকে সম্বোধন করে বলছেন―
“আর ভাল ও মন্দ সমান হতে পারে না। মন্দকে প্রতিহত কর তা দ্বারা যা উৎকৃষ্টতর, ফলে তোমার ও যার মধ্যে শত্রুতা রয়েছে সে যেন হয়ে যাবে তোমার অন্তরঙ্গ বন্ধু। / সমান নয় ভাল ও মন্দ। জওয়াবে তাই বলুন যা উৎকৃষ্ট। তখন দেখবেন আপনার সাথে যে ব্যক্তির শত্রুতা রয়েছে, সে যেন অন্তরঙ্গ বন্ধু।” (৪১:৩৪)

আরবী গুণবাচক শব্দ “আহ্সান বা আফ্দাল” এর বাংলা অর্থ হচ্ছে উৎকৃষ্টতর/সেরা/শ্রেষ্ঠ্য। সূরাটিতে আল্লাহ নির্দেশ করছেন― ইদ্ফা’ বিল্লাতী হিয়া আহ্সানু―উৎকৃষ্টতর ব্যবহার দ্বারা মন্দ আচরণের নিবৃত্তকরন। ঈমানদার চরিত্রকে আল্লাহ তা’য়ালা এভাবেই উত্কর্ষ/এহ্সান(আরবী নামপদ) দিয়ে থাকেন। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে―ক্বাদ আফলাহা মান জাক্কাহা (যারা আত্মার উৎকর্ষ সাধান করে তাঁরাই মুক্তি পাবে) ওয়া ক্বাদ খাবা মান দাসসাহা (আর যারা আত্মাকে কুলষিক করে তারা ধংস্বপ্রাপ্ত)। আমাদের প্রাণের চাইতেও প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সা.) এর ব্যক্তিত্বে যা ছিলো প্রতিনিয়ত উদ্ভাসিত; নবীজি (সা.) মুশরিকদের কতোনা ঠাট্টা-বিদ্রুপ, অপমান-অপদস্থ, বঞ্চনা-নির্যাতন সহ্য করেছেন দিনের পর দিন, প্রতিক্রিয়ায় তবু মন্দ আচরণ করেন নি। সূরা আল-হিজরে আল্লাহ তা’য়ালা সহানুভূতি প্রকাশ করে এরশাদ করছেন― “আমি জানি, তারা যেসব কথা-বার্তা বলে তাতে আপনার মন সংকুচিত হয়” আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত― নবী কারীম সা. কে বলা হল ‘হে রাসূল ! মুশরিকদের বিরুদ্ধে দুআ করুন, উত্তরে তিনি বললেন ‘আমাকে অভিসম্পাতকারী হিসেবে প্রেরণ করা হয়নি। আমাকে রহমত, দয়া ও করুণা হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছে’ (সহীহ মুসলিম:২৫৯৯) আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত―তিনি বলেন, রাসুল সা. কে বলতে শুনেছি ‘হে আল্লাহ, আমার উম্মতের মধ্যে কেউ যদি ক্ষমতাশীল হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে, তুমি তার উপর কঠিন আচরণ করো। আর যে ক্ষমতাশীল হওয়া সত্বেও তা অন্যায়ভাবে প্রয়োগ না করে মানুষের সাথে ভাল ব্যবহার ও নম্র-ভদ্র আচরণ করে তুমি তার সাথে ভাল ব্যবহার এবং তার প্রতি দয়া কর। (মুসলিম:১৮২৮)


বর্তমান জমানায় জীবিত আদর্শ দেখে শেখার সুযোগ খুবই কম বা সে মানুষের সংখ্যা গুটিকত; সময়টাতে আবার সন্ত্রাসীরাও নিজেকে খলিফা দাবী করে বসছেন। তাই কোরআন-হাদীসের প্রকৃত শিক্ষা হাসিল করতে চাইলে- বিজ্ঞ আলেম বা ইসলামী স্কলারদের যথাসম্ভব সাহচর্যে থাকার পাশাপাশি পঠন ও অনুসন্ধানের বিকল্প নেই। থাকা চাই আল্লাহর ভয়, সদিচ্ছা এবং রসুলপ্রেম। হাদীসে জানা যায়, “মানবমন্ডলীর মধ্য হতে আল্লাহর কিছু বিশেষ লোক আছে; আহ্লে ক্বুরআন। ক্বুরআন বুঝে পাঠকারী ও তদানুযায়ী আমলকারী ব্যাক্তিরাই হলো আল্লাহর বিশেষ/খাস লোক।(আহমাদ, নাসাঈ, বাইহাক্বী, হাকেম)” পবিত্র কোরআন, হাদীস বা সিহা-সিত্তাহ, ফেকাহশাস্ত্র, ইজতিহাদ, ইসলামের ইতিহাস-জীবনচরিত নিয়মিত অধ্যয়ন করার সহিত এও মনে রাখা জরুরী, মহান আল্লাহর অন্যতম প্রধান অনুগ্রহ― মহান জীবন ব্যবস্থা 'আল ইসলাম কেবল দ্বীনি ইলম গ্রহনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে বলে নি বরং জ্ঞানের অন্যান্য শাখা-প্রশাখা বিষয়ক বিদ্যা/পাণ্ডিত্য অর্জনের মধ্য দিয়ে সর্বব্যাপক মহাজ্ঞানী আল্লাহ তা’লার সান্নিধ্য লাভের পথটিকে আরও সুগম করে তোলে। বিদ্যার সাগর (জ্ঞান-তাপস) হওয়া তাই মুস্তাহাব। কোরআনের আয়াত তো বটেই, মুহাম্মাদ (সা.) এর বহু কথামালায় জ্ঞানের প্রতি অতি মহামূল্যবান আগ্রহের কথা ওঠে এসেছে।

পবিত্র কোরআনের সূরা ফাতির এ আল্লাহ বলেন― আল্লাহকে তার বান্দাদের মধ্যে সেই-তো ভয় করে, যে জ্ঞানের অধিকারী (‘ইন্নামা-ইয়াখ্শাল্লা-হা মিন্ ইবা-দিহিল্ ঊলামা-য়’:২৮)

হযরত আনাস (রা) বর্ণনা করেন― রাসূলে আকরাম সা. বলেছেন: যে ব্যাক্তি জ্ঞানের সন্ধানে বের হলো, সে ফিরে না আসা পর্যন্ত আল্লাহর পথে অবস্থান করে (তিরমিযী)

সূরা যুমারে (৩৯:৯), আল্লাহ কত চমৎকার করে উত্তর দিচ্ছেন―“কুল হাল ইয়াসতাবি ল্লাযীনা (বলুন, তারা কি সমান হতে পারে? যারা জানে) ইয়া’লামূনা ওল্লাযীনা (এবং যারা জানে না) ইন্নামা-ইয়া তাযাক্কারু (চিন্তা-ভাবনা/অনুধাবন কেবল তারাই করে) উলুল আলবা-ব (যারা বুদ্ধিমান)” নবী করিম সা. থেকে জ্ঞানার্জন সম্পর্কে উদ্ধৃত হয়― “আত্তা লিবূল ইল্ম ফারিদাতুল কুলি মুসলিমিন” তিনি আরও বলেছেন “আল্লাহ যার কল্যান কামনা করেন তাকে দীনের ইলম দান করেন। আর অধ্যয়নের মাধ্যমেই জ্ঞান অর্জিত হয়(বোখারী)”

সূরা মুল্ক এ আলাহ তা’য়ালা বলছেন―“ওয়া কা-লূ লাও কুন্না- নাছমা’উ (তারা আরও বলবে, যদি আমরা শুনতাম) আও না কি’লূ (অথবা বিবেক-বুদ্ধি প্রয়োগ করতাম) মা কুন্না ফী আছহা-বিছ্ছা’ঈর(তবে আমরা জাহান্নামবাসীদের মধ্যে থাকতাম না)” আল্লাহপাক য়াকল শব্দটি ব্যাবহার করেছেন। বাংলায় একে বিবেক বা মানুষের অন্তর্নিহিত বিচারবোধ ধরে ভাষান্তর করলে আরবীর মূলভাবটি সঠিক থাকে। কেননা, মস্তিস্ক সৃষ্টিগতভাবেই য়াকল যুক্ত।

জ্ঞান মানুষের জন্য মঙ্গল-অমঙ্গল দুটোরই কারণ হতে পারে। রাসুলূল্লাহ সা. শিখিয়েছেন― “তোমরা আল্লাহর কাছে উপকারী জ্ঞান প্রার্থনা করো এবং অপকারী জ্ঞান থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাও” হাদিসটি ইব্ন মুহাম্মাদ (রা) ও জাবির (রা) থেকে বর্ণিত (সুনানে ইবন মাজাহ্:৩৮৪৩)

মুহাম্মাদ বাকির মজলিসির, বিহার আল্ আনওয়ার গ্রন্থে(ভল.২) একটি ঘটনার বর্ণনা করা হয়েছে― একদা রাসুলূল্লাহ সা. কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল: জ্ঞানার্জন কি?
তিনি উত্তরে বললেন: চুপ থাকা।
প্রশ্নকর্তা: তারপর ?
তিনি বললেন: মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করা।
প্রশ্নকর্তা: তারপর ?
তিনি বললেন: স্মৃতিতে ধারণ করা।
প্রশ্নকর্তা: তারপর ?
তিনি বললেন: যা শেখা হলো তার ওপর আমল করা।
প্রশ্নকর্তা: তারপর ?
তিনি বললেন: অর্জিত শিক্ষা/জ্ঞান সকলের মাঝে প্রচার করা।

অন্য এক হাদীসে এসেছে―বিশ্বনবী সা. কে জিজ্ঞসা করা হলো, সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী কাহারা ? তিনি জবাব দিলেন, যারা মৃত্যুকে সবচেয়ে বেশী স্মরণ করে থাকে। সর্বোপরি পরহেজগারী ও জীবনের রহস্য সম্পর্কে যে ব্যক্তি সর্বাপেক্ষা বেশী অনুভূতি রাখে। কুরআন মাজীদে(৫:১৫) আরও এরশাদ হয়েছে― “ক্বাদ জা আকুম মিনাল্লাহি(নিশ্চয়ই তোমাদের কাছে এসেছে আল্লাহর পক্ষ হতে) নূরুন ওয়া কিতাবুন মুবীন(উজ্জল জ্যোতি এবং একটি সহজবোধ্য/সুস্পষ্ট গ্রন্থ)” এই সুস্পষ্টতাকে অর্ন্তচুক্ষ দ্বারা এক্সপিরিয়েন্স করতে পারলেই তো সে উজ্জল জ্যোতির/অনুভূতির বোধি পাওয়া যায় এবং উলিল আবসার হওয়া সম্ভব।

আবু সায়ীদ খুদরি হতে বর্ণিত― রাসূল সা. বলেছেন, ‘জ্ঞান অর্জনের জন্য তোমাদের কাছে অনেক সম্প্রদায় আসবে। যখন তোমরা তাদের দেখবে, স্বাগত জানিয়ে বলবে, রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নির্দেশক্রমে তোমাদের স্বাগত জানাই। এবং তাদের শিক্ষা দেবে। শিক্ষায় সাহায্য করবে। (তিরমিযী ২৬৫০, ইবনে মাজাহ)

লিখাটির শেষ করছি সহীহ্ ইবনে ৬২০নং হাদীসটি দিয়ে― রাসুলুল্লাহ সা. রাতের তাহাজ্জুদ নামাযে আল্লাহ তা’য়ালার ভয়ে প্রায়ই কান্নাকাটি করতেন, একদিন বেলাল রা. জিজ্ঞাসা করলেন, হে রাসূল !, আপনি কাঁদছেন কেন ? আল্লাহ তো আপনার পূর্বাপর সকল গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন। নবীজি সা. বললেন, আমি কি তাঁর কৃতজ্ঞ বান্দা হবো না ? রাতে আমার উপর একটি আয়াত অবতীর্ণ হলো, দুর্ভাগ্য তার, যে পাঠ করলো কিন্তু চিন্তা করলো না। সে আয়াতটি হলো সূরা আলে-ইমরানের ১৯০নং স্তবক―
ইন্না ফী খালকি ছ্ ছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদি(নিশ্চয় আসমান ও যমীন সৃষ্টিতে) ওয়াখতিলা ফিল লাইলি ওয়ান্নাহা-রি(রাত্রি ও দিনের আবর্তনে) লা আ-য়া-তিল্ লিঊলিল আলবা-ব (নিদর্শন রয়েছে সেসব লোকেদের জন্য যারা বোধশক্তি সম্পন্ন/চিন্তা করে)

পাঠকগণ, আপনাদের মূল্যবান সময়ের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। পরম দয়ালু অসীম করুণার আধার মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাকে সহ আমাদের সবাইকে বুঝার ও আমল করার তৌফিক দিন। আমিন। ৥আস্ সালামু আলাইকা আইয়্যুহান্'নাবিয়্যু ওয়া রহ্ মাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু ৥ আল্লাহুম্মা ইন্নী আস য়ালুকা ইলমান নাফিয়ান ওয়া রিযকান ত্বইয়্যিবান ওয়া আমালান মুতা কাব্বালান৥



১৪ অগ্রহায়ণ ১৪২২
অন্ধবিন্দু | সামহোয়‍্যার ইন...ব্লগ
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩২
২৩টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×