জার্মানীর Deutsche Welle রেডিওতে চাকুরী করাকালীন সময়ে তোলা ছবি
আজ ২রা অক্টোবর গত ফেব্রুয়ারিতে নির্মমভাবে খুন হওয়া মেধাবী সাংবাদিক এবং আমাদের সহ-ব্লগার সাগর সরোয়ার এর জন্মদিন। সাগরের অসম্ভব’ টান ছিল নিজ জন্মভ‚মির প্রতি। তাই বিদেশ-বিভুইয়ে বেশি দিন থাকতে পারেননি। দেশের মাটির টানে ছুটে এসেছিলেন জার্মানি থেকে। দেশে ফিরেও যোগ দিয়েছিলেন তাঁর আজন্ম নেশার পেশা সাংবাদিকতায়। কিন্তু দেশে ফিরে তাঁকে যে সংবাদের শিরোনাম হতে হবে, তা হয়ত ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করতে পারেননি সাগর ও রুনি।
দু’ যুগের সাংবাদিকতা জীবনে সাংবাদিকতার পথে সব সময়ই সাগর সরোয়ার হেঁটেছেন সামনের সারিতে। তেমনি মেহেরুন রুনীও স্বামীর মতোই বেসরকারী টেলিভিশনে সাহসী সাংবাদিকতায় মন জয় করেছেন সারাদেশের মানুষের হৃদয়। সৎ ও সাহসী সাংবাদিকতার লড়াইয়ে পরাস্ত হননি ঠিকই, তবে শেষ পর্যন্ত সাগর-রুনীকে পরাজিত হতে হয় নিষ্ঠুর খুনীদের কাছেই।
জন্মদিনে সাধারণত শুভেচ্ছায় ভরে যায় চারিদিক। কিন্তু সাগরের ফেসবুকের দেয়ালে বন্ধু-আত্মীয় আর শুভানুধ্যায়ীদের ঝরছে ক্ষোভ আর হত্যার কোন কুল কিনারা এতদিনে না হওয়ার হতাশা। সবাইকে শোকসাগরে ভাসিয়ে বড়ই অকালে অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে জীবন দেয়া সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনী'র স্বজন-সহকর্মী ও শুভাকাক্সক্ষীদের চাপাকান্না এখনো থামছেনা। তাদের একটিই দাবি। সেটা হল কি এমন কারন ঘটলো যার কারনে কোন শত্রু না থাকার পরেও তাদের জীবন দিতে হল সেটার উদ্গাটন এবং খুনিদের শনাক্ত করে বিচার করা। সরকার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিক দম্পতির খুনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে সেগুলো এখনো নির্দেশেই থেকে গেছে বাস্তবের আলো দেখেনি। চোখের সামনে বাবা-মাকে নিষ্ঠুর ও পৈশাচিক কায়দায় খুনের দৃশ্য দেখা একমাত্র পাঁচ বছর বয়সী শিশুপুত্র মেঘ এখনো নির্বাক। তাঁর অসহায় মুখের দিকে তাকানোয় দুষ্কর।
সাগর সারোয়ার এর আজকের এই জন্মদিনে একটিই দাবি, সেটা হল খুনিদের গ্রেফতার এবং বিচার। সাগর ভাই.. আমি আপনার একজন অভাগা ভাই.. যে আপনার হত্যার বিচার চাইতে চাইতে ক্লান্ত.. কিন্তু প্রতিকার পাইনি.. এর বেশি আর কিছুও করতে পারছিনা.. ক্ষমা করবেন আমাকে..সাগর তুমি শান্তিতে ঘুমাও।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১০:২৩