somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেউ

০১ লা মে, ২০১১ রাত ১০:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কেউ আমাকে খেয়ালই করেনি।আমিই কি করেছিলাম কাউকে?কত মানুষের যাওয়া আসা পাশ দিয়ে। মনে নেই আমার। একবারই জন্ম তবু ঐ সময়টাকে মনে হয় অন্য একটা জীবন। যে জীবনের কোন কথাই মনে নেই। হঠাৎ খেয়াল করল সে


আমার খুব তর্ক করতে ইচ্ছে করছে। তর্ক করার মত কোন বিষয় নেই। আশেপাশে এমন কেউ নেই যার সাথে তর্ক করব। হঠাৎ আমার এ ধরনের ইচ্ছে হল কেন বুঝতে পারছি না। অপরিচিত একটা জায়গায় এসেছি সবকিছুই নতুন। রোদেলা দুপুর। আকাশে মেঘের ছিটেফোঁটা নেই। এসময় ইচ্ছে করা উচিত কোন একটা ফাঁকা মাঠ খুঁজে বের করে মাঝখানে বসে থাকা। সেখানে ইচ্ছে করছে কিনা কারো সঙ্গে তর্ক করতে। এসব ভেবে লাভ নেই তার চাইতে এমন কাউকে খুঁজে বের করা যাক যার সাথে তর্ক করা যাবে। একটা সাদাসিদা টাইপের লোক আসছে। এ ধরনের লোকেরা সাধারণত মানুষের সাথে তর্ক করতে পছন্দ করেন না। কিন্তু গায়ে পড়ে পরামর্শ দিতে এদের জুড়ি নেই। লোকটা আমার কাছে এসে পৌঁছেছে। চোখে মুখে কৌতুহল। এ ধরনের লোকদের কৌতুহল বেশি থাকে। তিনিই প্রথম কথা পাড়লেন,
-আপনাকে এ এলাকায় নতুন মনে হচ্ছে। কোন সমস্যায় পড়েছেন নাকি?
-আপনার কি মনে হয় আমার জন্য কোন উপকার করতে পারবেন?
-মানুষের উপকার করতে পারার মাঝে যে কি তৃপ্তি আছে সেটা সবাই জানে না। আমি জানি তাই মানুষের উপকার করার লোভ সামলাতে পারি না। বলুন আপনার জন্য কি করতে পারি?
-আমাকে এমন একজনের সন্ধান দিন যার সাথে তর্ক করতে পারব। আমার খুব তর্ক করতে ইচ্ছে করছে।
-এ মুহুর্তে আবশ্যক হলে আমার সাথে করতে পারেন। কিন্তু আমার সাথে তর্ক করে মজা পাবেন না। আমার আপোস করার স্বভাব আছে। যারা সহজে আপোস করে তাদের সাথে তর্ক করে মজা নেই। আপনার কি ধরনের লোকের সাথে তর্ক করতে ইচ্ছে করছে জানিনা। আপনাকে একজন মহিলা তর্কবিদের সন্ধান দেই যিনি ভীষন যুক্তিবাদী। উদ্ভট টাইপের বিষয় নিয়ে তর্ক করেন এমন একজনও আছেন আমাদের এখানে। কিন্তু তিনি দিনে তাকে পাওয়া যাবে না। আরো অনেকে আছেন আপনি চাইলে তাদের সন্ধান দিতে পারি।
-থাক্ আমার কারো সন্ধান চাই না। আপনাদের যুক্তিবাদী তর্কবিদ মহিলাটির ঠিকানা দিন ।
-আপনার কাছে অনুরোধ আপনি ঐ জাদরেল মহিলার কাছে যাবেন না। উনি একবার তর্ক শুরু করলে নিজে হার না মানা পর্যন্ত ছাড়বেন না। ওনাকে হারানো সহজ না। আরো কিছু ব্যাপার আছে যা বললে ওনার সমালোচনা করা হবে। আমি মানুষের সমালোচনা করতে পারি না। তার চাইতে আপনি সোজা ডানে গিয়ে বামে ছয়’পা ফেললেই একটা ঘড়ির দোকান দেখতে পাবেন। ওখানে গেলেই অকারণে তর্ক করতে পারবেন।
-সুন্দর পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ।
-আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।
সত্যিই এ ধরনের লোকেরা মানুষের উপকার করে তৃপ্ত হন। ভালোই হল অনিকের হাতঘড়ির চেইনটা খুলে গেছে সেটা ঠিক করে নেয়া যাবে। সোজা ডানে গিয়ে বামে ছয়’পা ফেলতেই একটা ঘড়ির দোকান পাওয়া গেল। দোকানের নাম ’টাইম কনফার্ম উয়িথ নো ডিবেট’। ভালোই বিপদে পড়া গেল। যা হোক ঘড়িটা বাড়িয়ে দিলাম। কিছু বলার আগেই একটা কৃপণ হাসি দিলেন। কৃপণ হাসি বলতে তিনি হাসতে চাচ্ছেন না কিন্তু হাসছেন। কেন হাসছেন সেটা কোন রহস্য নয় তবে সেটা ঠিক কি আমি জানিনা।
কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি ঘড়ির দেহে চেইনটা লাগিয়ে দিলেন। দামও জিজ্ঞেস করতে হল না ঘড়িটা বাড়িয়ে দিয়ে বললেন তিন টাকা দিতে হবে। তিনি আমাকে কথা বলার সুযোগ দিচ্ছেন না কেন বুঝতে পারছি না। তিনি কি জানেন আমি তার সাথে তর্ক করতে চাচ্ছি।
-দুই টাকা দেই?
-ঠিক আছে তাই দিন।
-শুনেছি আপনি অকারণে মানুষের সাথে তর্ক করেন।
-ভূল শুনেছেন । এলাকায় স্বল্পভাষী হিসেবে আমার খ্যাতি আছে।
-একটা উপকার করতে পারেন?
-বলুন।
-আশেপাশে একটা জায়গা আছে। যেখানে যাওয়ার জন্য যে রাস্তা আছে সে রাস্তার মাটিগুলো ধবধবে সাদা। রাস্তার দু’পাশে সারি সারি গাছ। গাছগুলোতে লাল লাল ফুল। ফুল গুলো খুবই সুন্দর। কিন্তু কেউ সেই ফুলগুলোর নাম জানে না। সেখানে গেলে আর ফিরতে ইচ্ছে করে না। মনে হয় এখানেই কাটিয়ে দেই অনন্তকাল।
-দুঃখিত । আপনি যদি বলেন কুল খাব তাহলে আমার বাড়ির গাছ থেকে কুল পেড়ে এনে খাওয়াতে পারি কিন্তু এ ধরনের কোন জায়গার সন্ধান দিতে পারব না।
-চকলেট খাবেন?
-না আমি চকলেট খাই না।
-আরে খান তো.......।
অনেকক্ষন থেকে একটা লোক আমাকে ফলো করছে। কেন করছে জানিনা। আমার এও জানা নেই আমাকে ফলো করার পেছনে তার উদ্দেশ্য কি? কোন র‌্যাবের ইনফর্মার না’তো! হলেও কিছু আসে যায় না আমাকে নিয়ে ইনফর্ম করার মত কোন বিষয় নেই। একবার ভাবলাম লোকটার সাথে কথা বলা যায়। পরে মনে হল কি দরকার!
ঐ অদ্ভুত জায়গায় যেতে পারলে ভালো হত যেখানে গেলে আর ফিরতে ইচ্ছে করে না। রাস্তাতো চিনি না। ঐ জায়গার সন্ধান কেউ দিতেও পারবে না। ঐ জায়গা কেউ কোনদিন দেখে নি। আমি দেখেছি .....স্বপ্নে। খুব ছোটবেলায় যে স্বপ্ন গুলো বারবার দেখেছি তার মধ্যে একটা।
একটা রাস্তা দিয়ে চলছি তো চলছি। রাস্তার মাটিগুলো ধবধবে সাদা। দু’পাশের সারি সারি গাছে লাল লাল ফুল। চমৎকার মিষ্টি সে ফুলের গন্ধ। সেই ফুলের নাম কেউ জানেনা। হঠাৎ দেখা হয় একটা বয়স্ক লোকের সঙ্গে। লোকটা আগাগোড়াই সাদা। চুল,ত্বক,কাপড় সবকিছুই। এ পর্যায়ে এসে স্বপ্নটা ভেঙ্গে যায়। সত্যিই কি আছে এরকম কোন জায়গা? কে জানে হয়তো থাকতেও পারে । সারাদিন ভাত খাই নি এখনো খাওয়ার ইচ্ছেবোধ করছি না। সূর্য অস্ত যাবে কিছক্ষনের মধ্যেই। অস্তয়মান সূর্যে এক রক্তিম আভা। যে রাস্তাটায় দাঁড়িয়ে আছি সেটা কতদূর গেছে জানিনা। তাকিয়ে থাকতে ভালোই লাগছে।
1 May the day of touching Jarul Phool


আজকে জারুল ফুল ছোঁয়ার খুব ইচ্ছে ছিল। ট্রেন ছুটে চলেছে তার আপন গতিতে। জানালার পাশে বসে আছি। কিছু জারুল ফুল চোখে পড়ছে। শিকল টেনে ট্রেনটাকে থামালে হয়। যাত্রীরা মহা বিরক্ত হবে। অকারণে শিকল টেনে ট্রেন থামানোর নিয়ম নেই। কিন্তু এটাতো অকারণ নয়। আমার জারুল ফুল ছুঁতে ইচ্ছে করছে। জারুল ফুল হয়তো পরেও ছুঁয়ে দেখা যাবে কিন্তু আমার ইচ্ছে করছে এখন। পরে হয়তো আর ইচ্ছে করবে না। আমার এ যুক্তি কেউ শুনবে না। অযথা শিকল টেনে ট্রেন থামানোর জন্য দু’শ টাকা দন্ড দিতে হবে। আমার পকেটে দু’শ টাকা নেই । ট্রেন কর্তৃপক্ষ কি করবে কে জানে? তাদের যা করার করুক। সে অভিজ্ঞতাও হয়তো হবে অন্যরকম।
১২টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×