সকাল বেলা বাগেরহাট থেকে রওনা হলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে। অবশ্য আরিচা হয়ে নয়, এলাম মাওয়া হয়ে। মাত্র পাঁচ ঘন্টায় সায়েদাবাদে পৌছে ও গেলাম। এবার আমাদের গন্তব্য মোহাম্মাদপুরে ব্লগার দূর্ভাষী-অপরাজিতা জুটির বাসা।
বাস থেকে নেমে দরকার একটা সিএনজি বা ট্যাক্সি। কিন্তু এই সামান্য কাজটুকুর জন্যই হতে হলো গলদঘর্ম। সিএনজি আছে যথেষ্ঠ, কিন্তু তারা রাস্তায় এসেছে যেন বসে থাকতে। যে যেখানে যেতে চাক তাদের এক কথা যাবে না। আরে বাবা কোথাও যখন যাবিনা তখন অটোরিক্সা নিয়ে রাস্তায় এলি কেন । যাই হোক প্রায় ৪৫ মিনিট যুদ্ধ করে তারপর একটা ট্যাক্সিওয়ালা রাজী হলো আমাদের নিয়ে যেতে। কিন্তু ভাড়া শুনে মাথায় বাজ পড়লে ও কিছু করার নেই, যেতে যখন চেয়েছে তখন আর ছাড়লে চলবে না।
আমরা রওনা হলাম হলুদ ট্যাক্সি ক্যাবে, কিন্তু এই গরমে হলুদ ট্যাক্সি ক্যাবের এসি নষ্ট আর সিটগুলিতে বসে বমি আসার উপক্রম। অনেক কষ্টে নাকমুখ চেপে ধরে বসে থাকলাম। কিন্তু সায়েদাবাদ থেকে মোহাম্মাদপুর মনে হলো উত্তর মেরু আর দক্ষিন মেরু। ট্যাক্সি এক মিনিট চলে তো ১০ মিনিট বসে থাকে, কারন আর কিছুই নয় জ্যাম। অবশেষে যখন মোহাম্মাদপুর পৌছলাম তখন পার হয়ে গেছে দুটি ঘন্টা।
বাসায় যখন ঢুকলাম ভাইয়া তখন অফিসে, ভাবী স্বাগত জানালো এবং আমাদের পৌছানোর খবর ভাইয়াকে জানাতে ভূল করল না। বাসায় বসে সেদিন বিশ্রাম নিলাম। পরদিন ভাবী আর আমি আমার পিচ্চিটাকে সাথে নিয়ে বের হলাম শপিং এ। রাস্তায় বের হয়ে রিক্সার জন্য অপেক্ষা। খালি পেয়ে ভাবী জিজ্ঞাসা করল নিউমার্কেট যাবে কি না, রাজী হলো কিন্তু ভাড়া জিজ্ঞাসা করতেই আমার আর একবার টাসকি খাওয়ার পালা। মোহাম্মাদপুর থেকে নিউমার্কেটের রিক্সাবাড়া ৬০ টাকা। অবশেষে একজনকে ৫০ টাকায় রাজী করিয়ে রওনা হয়ে নিউমার্কেট পৌছাতে লাগল প্রায় একঘন্টা। কেনাকাটা বিভিন্ন মার্কেটে ঘোরাঘুরি করে যখন বাসায় ফিরলাম তখন জ্যামের অবস্থা আরও খারাপ। সায়েন্স ল্যাব মোড়ে প্রায় দেড় ঘন্টা বসে থাকা, গরমে আমাদেরই অবস্থা করুন আর পিচ্চিটার কথা নাই বা বললাম।
তিন দিন ছিলাম ঢাকা শহরে, কিন্তু এই তিন দিনেই হাপিয়ে উঠলাম, তিন দিনের অভিজ্ঞতার মনে হয়েছে ইট কাঠের এই শহরে জ্যাম আর পরিবহন সেক্টরের খামখেয়ালীপনায় জিম্মি নগরবাসী।