somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফিরে পাওয়া ভালবাসা (১ম খন্ড)

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১০:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

“বলতেই হবে । আজ কোন ছাড়াছাড়ি নাই” ।
সবাই এক সাথে বলে । আমি সাহায্যের আশায় রফিক ভাইয়ের দিকে তাকাই ।
কিন্তু তিনিও আজ সবার সাথে সুর মেলান ।
“আচ্ছা বাবা বলছি । কিন্তু এটা এমন কোন বিশেষ কিছু না । খুব সিমপল একটা গল্প” ।
লিনা বলল “ কোন সমস্যা নাই অপু ভাই । আমরা তবুও শুনবো” ।
তারপর সবার দিকে তাকিয়ে বলল “কি শুনবো না ?”
“ শুনবো”। সবাই একসাথে বলে উঠল ।
আমি চট করে তনুর দিকে তাকালাম । ও কোন কথা বলে নি ।
এখানে সবাই আমরা কলিগ । একই গ্রুপের । বেশ কয়েক দিন ধরে আমরা সবাই একটা এসাইনমেন্ট নিয়ে কাজ করছিলাম । কাল সেটা একসেপ্ট হয়েছে । এই জন্য আমাদের গ্রুপ লিডার আমাদের কে ট্রিটে নিয়ে এসেছে ।
আর এখানে সবাই আমাকে ধরছে আমার ভালবাসার কথা শোনার জন্য । আগে বেশ কয়েক বার আমি এড়িয়ে গেছি । কিন্তু এই মনে হয় পার পাবো না ।
রফিক ভাই বলল “আজ শেয়ার করেই ফেলল” ।
আমি আমার গল্প শুরু করি ।
“তিন সাড়ে তিন বছর আগের কথা । তখন আমি ভ্যগাবন্ডের মত ঘুরে বেড়াই । পড়ে লেখা শেষ , বাপের হোটেলে খাই কোন চেন্সন নাই । সারাদিন খাইদাই আর ঘুরে বেড়াই” ।
সবাই তাকিয়ে আছে আমার দিকে । কিন্তু তনু তাকিয়ে আছে অন্য দিকে ।
“এক দিনের কথা । বাসা থেকে বের হয়েছি । নিউমার্কেট যাবো বলে । বাসস্ট্যান্ডে দাড়িয়ে আছি বাসের জন্য । এমন সময় একটা মেয়েকে দেখলাম দাড়িয়ে আছে ঠিক রাস্তার অপজিটে । বলবো না যে সে বিশ্ব সুন্দরী ছিল । কিন্তু তার চেহারার মধ্যে কেমন একটা কোমলতা ছিল । আমি চোখ ফেরাতেই পারলাম না । অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম বুকের ভেতর কেমন যেন এক অনুভুতি হচ্ছে । এটাকে উপেক্ষা করার ক্ষমতা আমার নাই । আমি যন্ত্রের মত রাস্তা ক্রস করে ওপারে চলে গেলাম । যাওয়ার কথা ছিল নিউ মার্কেট চলে গেলাম মহাখালি” ।
“এরপর ঐ একই কাজ । মেয়েটার জন্য বাসস্ট্যান্ডে ওয়েট করা । একই বাসে করে মহাখালি যাওয়া । তারপর ফিরে আসা । এই মোটামুটি দিনের রুটিং আমার । মেয়েটা মনে হয় মহাখালিতে কোন একটা কিছুতে কোন কোর্স করতো । আমি সিওর ছিলাম না । কেবল জেনেছিলাম সপ্তাহে তিন দিন মেয়ে টা সকাল নয়টা সাড়ে নয়টার মধ্যে বাস স্ট্যান্ডে আসতো । তারপর শুরু হত আমাদের সরি আমার স্বপ্নের বাস জার্নি” ।
আমি একটু চুপ করলাম ।
“থামলেন কেন ?” লিনা বেশ অধর্য্য ।
“বলছি তো । দম নিতে তো দিবেন” । আমি আবার বলা শুরু করলাম ।
“ মেয়েটা প্রথমে কিছু লক্ষ্য না করলেও পরে ২/৩ সপ্তাহের মধ্যে ঠিকই ক্ষ্যল করলো যে আমি তার পিছু নিয়েছি । প্রথম প্রথম কিছু না হলে পরে দেখতাম আমাকে দেখলেই তার চোখমুখ শক্ত হয়ে যেত । ইস্পষ্টই সে বিরক্ত । আমার এরকম আচরন সে মোটেই পছন্দ করছে না । কিন্তু আমার তখন অবস্থাটা খারাপ । মেয়েটাকে না দেখে থাকতে পারি না । কি অদ্ভুদ তাই না ?”
“ মেয়েটার নাম পর্যন্ত আমি জানি না কিন্তু কি অদম্য এই আকর্ষন । তারপর একদিন মেয়েটা নির্দিষ্ট সময়ে বাসস্ট্যান্ডে এলো না । পর পর তিন দিন এলো না । আমার অবস্থা তখন কি বলব । মনে হলে হয়তো শরীর খারাপ । অথবা কোর্সের সময় বদলিয়ে নিয়েছে । কিন্তু সে আর এল না । পরের তিনটা মাস আমি ঐ বাস স্ট্যান্ডে প্রতি দিন মেয়েটার জন্য ওয়েট করে থাকতাম । সকাল থেকে সন্ধ্যা । কিন্তু সে এল না । যেন একেবারে গায়েব হয়ে গেল আমার জীবন থেকে ।“
“ বাবা মনে হয় কিছু একটা আচ করতে পেরেছিলেন । আমাকে বড় চাচার বাসায় পাঠিয়ে দেন কলকাতায় । এক রকম জোর করেই । কলকাতায় সময় কাটাতেই এমবিএ তে ভর্তি হয়ে যাই । তারপর এই অফিস ।“
“ গল্প শেষ !” লিনা বলল “ আপনি আর কোন দিন তার দেখা পান নি না ?”
আমি হাসলাম । বললাম “আর একটু বাকি আছে গল্পের” ।
“বাকি আছে ?”
“ তারপর ?”
“ কিছুদিন আগে মেয়েটার সাথে আমার আবার দেখা হয়েছে” ।
“হোয়াট” ? কথাটা সবাই একসাথে বলল ।
“কোথায় ?”
(চলবে)
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×