নিশি আমার উপর রাগ করেছে । রাগ করে কথা বলছে না ।
বিকেল বেলা অল্প একটা বিষয় নিয়ে রাগ করে আছে । আমি মনে মনে হাসছি । আমি খুব ভাল করেই জানি নিশি আমার উপর খুব বেশিক্ষন রাগ করে থালতে পারবে না । খুব বেশি হলে কয়েক ঘন্টা । এর বেশি ওকে রাগ করে থাকতে দেখি নি ।
একবার কি হয়েছে দুপুর বেলা আমার সাথে ঝগড়া করে বাড়ির বাইরে চলে গেল । বলে গেল আর ফিরবো না ।
আমি আটকানোর চেষ্টা করলাম না । মোল্লার দৌড় যেমন মসজিদ পর্যন্ত নিশির দৌড় আমার শ্বশুর বাড়ি পর্যন্ত মানে ওর বাবার বাড়ি পর্যন্ত । এই কয়েকটা গলি পরেই আমার শ্বশুর বাড়ি । আমি ধরেই নিলাম যে ও ঐ বাড়িতেই যাবে ।
আধা ঘন্টা পর ওর ফোন এল
-কি খবর সোনা পাখি ?
-কোথায় তুমি?
-বাসায় আবার কোথায় !! তুমি বাসা ছেড়ে চলে গেছ কাউকে না কাউ কে বাসায় তো থাকতে হবে !
-হুম বুঝলাম । একটু নিউমারকেটের দিকে আসো !!
-কেন ??
-আমি টাকা আনতে ভুলে গেছি । সিএনজির ভাড়া দিতে পারছি না ।
আমি হেসে ফেললাম । বললাম
-সিএনজি নিয়ে আবার চলে আসো । বাসার সামনে আসো ।
-না । আমি আসবো না । তুমি আসবে । আমি রাগ করেছি । আমার রাগ ভাঙ্গাবে তারপর আমি যাবো !
আমি সত্যি খুব মজা পেলাম নিশির ছেলেমানষী দেখে !
যখন নিউ মার্কেটে গেলাম দেখলাম নিশি ফুটপাতের উপর বসে আছে । আমি সিএনজি য়ালা কে ভাড়া দিয়ে দিলাম । তারপর গিয়ে বসলাম নিশির পাশে । ওর রাগ ভাঙ্গাতে হবে । হাসি আসছিল । হাসি চাপাতে চাপাতে বললাম
-কি করলে তোমার রাগ ভাঙ্গবে বল?
-গান গাও একটা ।
নিশি কেমন যেন গাল ফোলাল । নিশির এই গাল ফোলানো টা আমার খুব পছন্দ । কেমন একটা মিষ্টি মিষ্টি কিউট বাবুর মত লাগে । এই সময় ওর লাগে একটা চুম দিতে খুব মজা !! :!> :!> :!> :!> আর আিমি জানি চুম খেলেই ওর রাগ পরে যাবে । কিন্তু পাবলিক প্লেসে কাজটা করি কিভাবে ?
বললাম
-চল সোনাপাখি । এখন কত লোক রয়েছে । মানুষ জন কি বলবে ? বাসায় চল । যা করতে বলবা তাই করবো !
- না এখনই !
-পাখি একটু বিঝার চেষ্টা কর । এতো মনুষ জন রয়েছে । কি বলবে বল ? বলবে ছেলে মেয়ে দুটো কি করছে রাস্তার মধ্যে !! তখন শুনতে কি ভাল লাগবে বল ?
আমাদের কথা ডেশ কয়েক জন শুনছিল পাশে দাড়িয়ে । মজা দেখছিল । দেখলাম এক বৃদ্ধা এগিয়ে এল । নিশি কে বলল
-স্বামীর উপর রাগ করে থাকতে নেই । বাসায় চলে যাও মা ! !
এই কথায় কাজ হল । নিশি বাসায় চলে এল । তারপর কি হল নাই বা শুনলেন
রাতে খাওয়ার সময়ও কথা বলল না । কিন্তু ওর মুখ দেখে মনে হচ্ছিল যে ও খনিকটা অস্থির হয়র গেছে কথা বলার জন্য । আমি সুযোগ দিচ্ছি না বলে ও কথা বলতে পারছে না । আমি মনে মনে হাসলাম । খুব ভাল করে জানি আর বেশিক্ষন ও থাকতে ই পারবে না ।
সব থেকে বড় কথা হল ঘুমানোর সময় আসছে । যত রাগই হোক ঘুমানোর সময় ও আমার সাথে রাগ করে থাকতে পারে না । আমাকে জড়িয়ে না ধরলে ওর ঘুমই আসে না । কথাটা আমার জন্যও সত্য । কেন জানি যতক্ষন নিশিকে জড়িয়ে ধরি ঘুম কিছুতেই আসে না ।
একবার ও শ্বশুর বাড়ি গেছে । আমি যাই নি । অফিসের কাজ নিয়ে খানিকটা ব্যস্ত ছিলাম । রাতে যখন ঘুমাতে গেলাম, দেখি কেবল এপাস ওপাস করি । ঘুম আর কিছুতেই আসে না । একবার মনে হল নিশিকে ফোন দেই । তারপর মনে হল থাক ও হয়তো ঘুমাচ্ছে । ঠিক তখনই নিশির ফোন এসে হাজির । ফোন করেই বলল
-তুমি এখনই আসো আমাদের বাসায় !
-এতো রাতে ?
-হুম !! এখনই । এখনই !
-কোন সমস্যা হয়েছে নাকি ?
-জানি না । আসো । আসতে বলছি আসো !
মনটা খুশিই হল । রাত তখন প্রায় দুইটা । স্বশুর বাড়ি গিয়ে হাজির হলাম ।
নিশির বোন দরজা খুলে দিল । বললাম
-কি হয়েছে ?
-আপনাদের প্রেম দেখলে আর বাঁচি না । একজন কে ছাড়া আরেক জনের ঘুম ই আসে না । যান আপনার বউকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে আসেন ।
দুজন দুদিকে শুয়ে আছি । এমন একটা ভাব যেন ঘুমাচ্ছি । একটু পর লক্ষ্য করলাম ও নড়াচড়া করছে । তারমানে ওর অসস্তি লাগা শুরু করেছে । আমি আসতে করে ওর হাত ধরলাম । ভেবেছিলাম হাত সরিয়ে দিবে !! দিল না । বললাম
-এখনকার মত রাগটা মুলতবি রাখ । কাল সকাল থেকে না হয় আবার রাগ কর । এখন একটু ঘুমাও !
নিশি এবার আমার দিকে পাশ ফিরল। দেকলাম আামর সোনা বউটার চোখে পানি । আমি পৃথিবীর সব কিছু দেখে হজম করে নিতে পারি কেবল কেন জানি নিশির চিখে পানি কিছুতেই সহ্য হয় না ।
সোনা বউয়ের চোখে পানি মুছিয়ে দিয়ে ওকে বুকের মধ্য জড়িয়ে ধরলাম । নিশি যেন আরো একটু ফুপিয়ে উঠল ।
এতোক্ষন কথা বলে নি । কষ্ট টুকু বাইরে বের তো হতে হবে !
আামর কথাঃ টিয়াপাখির সাথে সেদিন কথা বলছিলাম । ওকে বললাম
-দেখো যখন আমাদের ঝগড়া হবে আমরা কথা বলবো না তখ কিন্তু একটা কথা মনে রাখবে ।
- কি কথা ?
- দিনের বেলা যত যাই হোক না কেন রাতের বেলা আমাদের আমাদের মধ্যে কোন কোন মনমালিন্য থাকবে না । যেমন যুদ্ধ বিরতি হয় না আমরা তেমনি রাতের বেল ঝগরা বিরতি হবে । ঠিক আছে !
-আহা!!
-আহা বললে হবে না । শুনতে হবে ।
-কেন ??
-কারন রাতের বেলা তোমাকে জড়িয়ে না ধরলে আমার ঘুম আসবে না ।
টিয়াপাখি হাসল কিছুক্ষন । বলল
-এখন কিভাবে আসে?
-আসে আর কই ?? তোমাকে ছাড়া কি ঘুম আসে ? কবে যে আমার বউ হবা ?? আর কবে যে..........
ড্রাফটে দুটো গল্প লিখে রেখেছি । কিন্তু কেন জানি এই লেখাটা পোষ্ট করতে ইচ্ছা হল । মুলত এটা কোন গল্প না । টিয়াপাখি কে নিয়ে আমার সুন্দর একটা কল্পনা । না জানি কল্পনাটা বাস্তবে রুপান্তরিত হবে কি না !!!
আমার বউ আমাকে ছাড়া রাতে ঘুমাতেই পারে না ! :!> :!> :#> :#>
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৩৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ইরান কি তবে কাগুজে বাঘ?
সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-হামাস-হিজবুল্লাহ ত্রিমুখী যুদ্ধে প্রচুর লোক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।২০২২ সালে ফিলিস্তিনের সংগঠন হামাস ইসরায়েলের উপর হামলা করলে এই যুদ্ধ শুরু হয়।এখন পর্যন্ত ইসরায়েল ফিলিস্তিনের প্রায় ৫০... ...বাকিটুকু পড়ুন
অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা নিয়োগ কারা দেয় ?
বৈষম্যবিরোধি আন্দোলনের সফল পরিসমাপ্তির পর আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কেরা ডক্টর ইউনুসকে দেশের ক্ষমতা গ্রহন করার আহবান সেই শহীদ মিনার থেকেই জানিয়েছিল। ডক্টর ইউনুস প্রথমে অরাজি হলেও পরে ছাত্রদের হাজারো অনুরোধের মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন
গণমুখী একটি চাওয়া
মানুষের মুখে হাসি ফুটুক,
আঁধার মুছে আলোর ছোঁয়া,
ক্লান্তিহীন পথ চলুক,
নতুন স্বপ্ন আনবে জোড়া।
দিনবদলের শপথ নিয়ে,
কাঁধে কাঁধ মিলে কাজ করে যাই,
নদীর স্রোতে ভেসে ভেসে
একটি স্রোতে মিলিয়ে যাই।
সবার তরে সমান বিচার,
ধনীর দুঃখীর,... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলার একমাত্র অভিশপ্ত রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ
২৩শে জুন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব জনাব সিরাজ উদ দৌলা ব্রিটিশদের কাছ হেরে যান কেবলমাত্র মীরজাফর, জগৎশেট, রাজভল্লভ, ঘষেটিদের কারণে। বাংলার ইতিহাসে এই দিনটি একটি অভিশপ্ত দিন। এর পর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সেকালের গ্রামের বিয়ের বর দেখা
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
একদিন পরেই শুক্রবার। সকালেই বাবাকে ঐ বাড়ির ঘরবর (অর্থাৎ বর দেখা অনুষ্ঠানকে আঞ্চলিক ভাষায় ঘরবর বলে) উপলক্ষে ডাকা হয়েছে। বাবা সকালে গিয়ে বর দেখা উপলক্ষ্যে কি কি... ...বাকিটুকু পড়ুন