somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শায়মা আপুর পরীরাজ্যে আমার বিচরন !!

৩০ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১০:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গত দিনের ধরা খাওয়ার পর থেকেই মনটা খুবই খারাপ ছিল !
বারবার মনে হচ্ছিল পরী আপুর সাথে দেখা হল না !! :( :( :(
আর এই দিকে শায়মা আপু তো আমার এই কথা শুনে হেসেই খুন !
আমি রাগ করে বললাম
-আপি আমি তোমার সাথে দেখা করতে গিয়ে কি বিপদে পড়লাম আর তুমি কিনা হাসছো ? X( X( X(
শায়মা আপু হেসে বলল
-ও লে লে ! আমার পিচকা ভাইয়া টা !! :P :P
আমি মন খারাপের ইমো দেই !
:( :( :( :(( :(( :((
আপু বলল
-কাঁদো কেন ! তুমি আমার ভাইয়া না ! দাড়াও এখনই তোমার মন ভাল করে দিচ্ছি ! :) :)
-কিভাবে ?
আপু একটু হেসে বলল
-কালেক তোমাকে আমি আমার পরী রাজ্যে নিয়ে আসবো !
-সত্যি ? :-B :-B :-B
-হুম ! একদম সত্যি ! কাল সকালেই আমার পঙ্খিরাজ পৌছে যাবে তোমার দরজায় !
-পঙ্খিরাজ ? B:-) B:-)
আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না । পঙ্খিরাজ আবার আইলো কই থেকে ?
আপু আর একটু হেসে বলল
-দেখবা ! কালকেই দেখবা !!
আমার কথাটা বিশ্বাস হয় না । শায়মা আপু সাথে দেখা হবে কেমনে ? পরীর সাথে কি দেখা হয় ? পরীকে কি দেখা যায় নাকি ?
কিন্তু পরী যখন কোন কথা দেয় নিশ্চই সে রাখে ! আপু যখন বলেছে তখন নিশ্চই দেখা হবে !!
নাকি হবে না ?
এই চিন্তা নিয়েই ঘুমাতে গেলাম !
সকাল বেলা ঘুম ভাঙ্গলো গাড়ির হর্ণ শুনে ! জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি বাইরে একটা BMW। এটা কার গাড়ি ?


আমাদের এই এলাকায় কারো তো BMW নাই । আর আমাদের বাড়ির কারো তো থাকার প্রশ্নই আসে না ! তাহলে ?
আপুর ফোন ঠিক তখনই !
-কি পিচকা ? পঙ্খিরাজ পৌছিয়েছে ?
আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম ! বললাম
-এটা তোমার গাড়ি ?
-হ্যা তো ! এটা আমার পঙ্খিরাজ ! এখন চট জলদি গুছিয়ে নাও আজ তোমাকে পরীরাজ্য দেখাবো !!
আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না যে সত্যি সত্যি আমি পরীরাজ্যে যাচ্ছি !!
হাট মুখ ধুয়ে চট জলদি তৈরি হয়ে নিলাম ! তারপর উঠে বসলাম পঙ্খিরাজে !
পঙ্খিরাজ চলল পরীরাজ্যের উদ্দেশ্য !!

এতো দিন কেবল মেগাসিটিতে ঝুলে ঝুলে রাস্তায় চড়েছি ! আর আজ একবারে BMW তে ! চারিদিকে খুব ভাব নিয়ে তাকাতে লাগলাম !
ইচ্ছা হল গাড়ির জানালা খুলে নিজের চেহারাটা মানুষকে একটু দেখাই ! মানুষ কে বলি
ব্যাট দেখ আমি BMW তে চড়ি !!
কিন্তু এসি চলছিল ! তাই জানলা খুলতে পারলাম না ! কাঁচের ভিতর থেকেও বাইরের লোকজন কে দেখতে লাগলাম !

কখন যে পৌছে গেলাম টের ই পেলাম না ! আমি যখন নামলাম তখনও আমার ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না যে আমি আপুর সাথে সত্যি সত্যি দেখা করতে যাচ্ছি !!
বাড়ির গেট দিয়ে ঢুকতেই দেখলাম সদর দরজার পাশে আপুর ডালমেশিয়ান ডগটা বসে আছে । সামনে দেখি আবার বই ! :-/ :-/ এমন একটা ভাব যেন খুব পড়া লেখা করছে ! কাল এমবিএ পরীক্ষা :#) :#)
আমাকে দেখে মুখ তুলে তাকালো !


আমারর মনে হল বেটা আমাকে বলছে
কে তুমি হে বাপু ! আমার পড়ার সময় ডিস্টার্ব করতে এসেছ? /:)
আমি আর একটু এগিয়ে গেলাম ! ঠিক তখনই দরজা ঠেলে আপু বের হয়ে এল !



কিছুক্ষন তাকিয়েই রইলাম পরী আপুরটার দিকে ! গত পোষ্টে অনেকে আপুকে মোটা বলেছে ! /:) /:) সবাই কে বলতে ইচ্ছা করছে দেইখ্যাই যা ! চেহারা কাকে বলে ?
আমি একটু হাসি দিলাম B-)) B-)) B-))
একটু লজ্জাও পেলাম আপুটার সামনে :!> :!> :!> :#> :#>
শায়মা আপু বলল
-পিচকা ভাইয়াটা ভাল আছে তো ?
-খুব ভাল আছি !!
-আসো ভিতরে আসো ! আমার পরী রাজ্যে তোমার স্বাগতম !
আমি ঘরে ঢুকেই থ !!


আমি কিছুক্ষন তাকিয়েই রইলাম ! শায়মা আপু আমাকে পাশের শোফা দেখিয়ে বলল


-বস !
আমি বসলাম ! আপু বসলো আমার সামনেই


আপু বলল
-বল কেমন লাগছে ?
আমি বললাম
-এখনও ঘোরের মধ্যে আছি ! আখনও ঠিক বিশ্বাসই হচ্ছে না যে আমি তোমার সামনে বসে আছি !
আপু হেসে বলল
-আচ্ছা তোমার ঘোর কাটতে থাকুক ! আমি তোমার খাবার জন্য কিছু নিয়ে আসি !
-না ! না ! কিছু লাগবে না !
আপু একটু চোখ রাঙ্গিয়ে বলল
-শুনো পিচকা, এই সব ফর্মালিটি করবা বাইরের মানুষের মানুষের সাথে ! আমার সাথে না ! ওকে ?
-ওকে !
তারপর যেন খাবারের বন্যা বইতে লাগলো !
আমি এতো সব খাবারের নামও জনি না !
প্রথমে এল কেক!


এরপর এল ক্লাসটার্ড না কি যেন ! ঠিক মত নামও জানি না !


তারপর এল পুডিং


এবং সবার শেষে এল ঠান্ডা চা ! চা আবার ঠান্ডা !


খেয়েছেন কখনও ? না খেলে জীবন বৃথা !

খাওয়া দাওয়া শেষ হল ! আপু আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-চল তোমাকে নিয়ে আমার রাজ্য ঘুরে আসি !
আমি আমাকে নিয়ে তার সারা বাড়ি ঘুরালো । আমরা ড্রয়িং রুমে থেকে চলে এলাম আপুর পড়ার ঘরে ! এখানে কত বই !


আপু আমাকে নিয়ে গেল তার একুরিয়ামের ঘরে !


এবার আপুর পুতুল !


পুতুলে ভরা সোকেজ


সাথে আরো দেখলাম দেওয়াল ঘড়ি ! দেখার মত !



এবার এল খাওয়া দাওয়ার পালা ! ও মাই গড !! আপু আমার জন্য কত কিছুর আয়োজন করেছে ! আমি দেখে আবারও থ !!
সব গুলো ছবি একসাথে


আহা ! ! !
মুখ দিয়ে কেবল এই শব্দটাই বের হল !!
এর কোন তুলনা নাই

খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষে আবার ড্রয়িং রুমে ! আমি আপু আবার আমার সামনেই বসলো ! তবে নিচে বসলো নরম টুলটুলে কার্পেটের উপর !


আমার দিকে ফিন্নি এগিয়ে দিয়ে বলল


-ভাইয়া তুমি ফিন্নি খাও ! আমি একটু সামু থেকে ঘুরে আসি !
আপু তার ট্যাব দিয়ে সামু ওপেন করলো



এবার বিশ্রাম নিলাম ! একটু বেশি খেয়ে ফেলেছি তো ! আপু আমাকে বলল
-তুমি একটু ঘুমাও আমি আসছি !
আমি বিশ্রাম নিলাম কিছুক্ষন !
বিকেল বেলা আপু আবার এসে বলল
-চল তোমাকে নিয়ে যাই আমার আঙুর বাগানে !
-তোমার আঙুর বাগান আছে?
-আছে তো ? চল ! তোমাকে নিয়ে যাই !
একটু পর আপু সত্যি সত্যি আমাকে আঙুর বাগানে নিয়ে গেল !


তার পর টসটসে পাকা আঙুর !!


আমি সারা বিকেল বেলা আঙুর বাগানেই কাটিয়ে দিলাম ! কিছুক্ষন পর আপু বলল
-চল ভিতরে ! বিকেলের নাস্তা করবা না?
-আবার খাবো ?
-আরে খাবা তো ! চল চল !

আবার খাবার টেবিলে এসে হাজির হলাম ! প্রথমে মোগলাই পরোটা , তারপে পায়া-নান এরপর ফুচকা !! সবার শেষে আবার ঠান্ডা চা ! তবে এবার স্বাধটা যেন কেমন একটু ভিন্ন লাগলো !
আপু বলল এতে নাকি পুদিনা পাতা দেওয়া !


সব কিছুতো হল । এবার যাবার পালা ! যাওয়ার সময় আপুর মন খারাপ হল !


যাওয়ার সময় আপু আমাকে অনেক গুলো চকলেট দিল !


আমি চকলেট নিয়ে মনের আনন্দে বাইরে আসছিলাম !
সব কিছু ঠিকই ছিল । আপুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যখন বাইরে বের হতে যাবো ঠিক তখনই গেটের সাথে পা আটকে নিচে পড়ে গেলাম । আমার মনে হল যেন আপু আমাকে আমার নাম ধরে ডাকছে । কিন্তু চোখক খুলে দেখলাম কোথায় আপু ! B:-) B:-)
কোথায় গেট ?
কোথায় কি ?
আমি তো আমার ঘরেই আছি !
আমার রুমমেট আমার নাম ধরে ডাকছে ! বলছে জলদি বাজারে যাও ! একটু পরেই বুয়া চলে আসবে...

তাহলে ?
এতোক্ষন ?
আমি স্বপ্ন দেখছিলাম ! :|| :|| :|| :||




বলাই বাহুল্য এই পোষ্ট টা পরী আপুটার জন্যই ! আমার অনলাইন জীবনের সব থেকে প্রিয় মানুষ !
কৃতজ্ঞতাঃ শায়মা আপু কে এই ছবি গুলো ব্যবহার করতে দেওয়ার জন্য !
যদিও এটা একটা কাল্পনিক লেখা তবে একটি আমি ঠিকই এই পরীরাজ্যে বিচরন করবোই ! এবং সেটা খুব জলদিই !!

(আর সবার কাছে একটা অনুরোধ, ফান করবেন কোন সমস্যা নাই কিন্তু প্লিজ এইটা দেখবেন যেন লিমিট অতিক্রম না করে ।)


সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৫৯
৫৪টি মন্তব্য ৫৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×