somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজাকারের মুক্তি অথবা রক্তের ঋণ শোধের গল্প !!

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-আবীদ ! এই আবীদ !
ছোট মামার ডাক শুনে ড্রয়িং রুমে গিয়ে দেখি বেশ কয়েকজন লোকের সাথে মামা বসে আছে গম্ভীর মুখে । যদিও তারা সবাই সিভিল পোষাকেই ছিল কিন্তু বুঝতে অসুবিধা হচ্ছিল না যে তারা সবাই পুলিশের লোক । আসলে সব সময় ছোট মামার আসে পাশে থাকিতো পুলিশের লোক চিনতে খুব একটা অসুবিধা হয় না । মামা ঢাকার এসিস্ট্যান্ট ডিআইজি । তার আশে পাশের সব সময় পুলিশ আর অপরাধীরাই থাকে বেশি ।
আমি মামার পাশে গিয়ে দাড়ালাম । সবার চেহারার দিকে তাকিয়ে মনে হল কিছু একটা সিরিয়াস বিষয় । সবার মুখ খুব গম্ভীর । সব মিলিয়ে চার জন যাদের একজন কে আমি চিনি । আরমান খান । ডিবির একজন অফিসার । ছোট মামা বলল
-তোর ক্লাস নাই তো ?
-না মামা । শিবির হরতাল ডেকেছে । সব ছুটি ।
-চল তাহলে । আর তোর ল্যাপটপ না নিয়ে নিস ! কিছু কাজ করতে হবে তোকে !
মামার কথা শুনে চার জনের তিন জনের মুখের ভাব একটু পরিবর্তন হল কিন্তু আরমান খানের মুখের ভাব অপরিবর্তিত রইল । আরমান খানের সাথে আমার আগেই পরিচয় আছে । তিনি মোটামুটি সব কিছুই জানেন । আমি বললাম
-কোথায় ?
-যেতে যেতে জানবি ।
আমি আর কিছু জানতে চাইলাম না । তবে আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আজকে সকালে একাডেমিয়ার সামনে যে বোম ব্লাস্ট হয়েছে এরা সেই ব্যাপারে এসেছে । কিন্তু সেটা তো মোহাম্মুর থানার আন্ডারে । এখানে আসার কথা না । অবশ্য সব কিছুই ডিবির আন্ডারে পড়ে । যদি সেই রকম সিরিয়াস কিছু হয় তাহলে তো মামার ডাক পড়বেই ।
আমরা যখন বাসা থেকে বের হলাম তখন প্রায় দুপুর হয়ে এসেছে । পথে যেতে আরমান খান বলল
-আজকে সকালে মোহাম্মুদপুরে বোম ব্লাস্ট হয়েছে শুনেছ তো ?
আমি বললাম
-জি ! শুনেছি ! খবরে দেখছিলাম । কিন্তু কোন হতাহতের খোজ পাওয়া যায় নি ।
-হুম ! সকাল বেলা ছিল তো তাই ।
আরমান খান কিছুক্ষন চুপ করে রইলো । তারপর বলল
-ঐ ঘটনার কিছুক্ষন পরেই আমাদের রমনা থানায় একটা ফোন আসে । ফোনে বলা হয় আমাদের থানার ওসি সাহেবের টেবিলের নিচে নাকি একটা বোমা রাখা আছে । এই বলেই লাইন কেটে যায় । আমরা প্রথমে ব্যাপারটা খুব বেশি গুরুত্ব না দিলেও কেবল একবার চেক করার জন্য গিয়েছিলাম ।
-তারপর ?
-গিয়ে দেখি সত্যি সত্যিই সেখানে একটা হাই এক্সপ্লোসিভ বোম রাখা ছিল । রিমোর্ট দিয়ে কন্টল করা যায় এমন !
আমি বললাম
-কি সর্বনাশ ! থানার ভিতরে কিভাবে এল এই বোম ?
-আমাদেরও সেই চিন্তা ! কিভাবে এল ?
-যদি থানার ভিতরেই বোম রাখতে পারে তাহলে শহরের যে কোন জয়গারই বোম রাখতে পারবে ! তাহলে তো .....
আমি আমার কথা শেষ করতে পারলাম না । মামা বলল
-ওরা শহরের মোট ২১ জায়গায় বোমা রেখেছে ।
-মানে কি ? ওরা মানে কারা ?
-আমরা ধারনা করছি শিবিরের লোক !
কথাটা বলল আরমান খান !
আমি বললাম
-আপনারা কিভাবে জানেন ? অন্য কেউ হতে পারে !
আরমান খান মাথা নাড়ালো ।
-তা পারে !তবে মনে হচ্ছে ওরাই ! বোমার খোজ পাওয়ার পরেই আবার ফোন আসে । ফোন কারী বলে যে সে মোট ২১ জায়গায় বোমা রেখেছে । তার দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত সে প্রত্যেক ঘন্টায় একটা করে বোমা ফাটাবে !!
-বলেন কি ? তার দাবী কি ?
-যুদ্ধোপরাধীর মুক্তি ! এই আর কিছুক্ষনের ভিতরেই তার ফোন আসার কথা । সে বর কোন অথরিটির সাথে কথা বলতে চাইছিল । জিআইজি সাহেব এখন খুব বিজি ! তাকে এই বিষয়ে জানালে সে স্যারের কথা বললেন ! তাই এলাম স্যার কে নিতে !

আমরা ডিবির অফিসে আসলাম কিছুক্ষনের ভিতরেই ! পাঁচ মিনিটও হয় নি ফোন এসে হাজির । ছোটা মামা স্পিকার ফোন অণ করতে বললেন !
কিছুক্ষন নিরবতা !
কেমন একটা শো শো আওয়াজ হচ্ছে ! হঠাৎ করেই আওয়াজ বের হয়ে এল !
-মিষ্টার রাহাত কবির ! কেমন আছেন ?
আমি বেশ অবাক হলাম ! আমার ছোটা মামার নাম রাহাত কবির । টেলিফোন কারী কিভাবে জানলো যে আমার মামা এসে হাজির হয়েছে ।
মামাও দেখলাম বেশ চমকে গেছে ! নিজেকে সামলে মামা বলল
-ভাল আছি !
-আমি খুব বেশি কথা বলব না । কিছু কথা আগেই বলে নিই আমাকে খোজার ব্যর্থ চেষ্টা করবেন না ! অথবা বোম গুলো খোজারও চেষ্টা না করাই ভাল । কারন আমাকে বা বোমা গুলো খুজতে যে সময় টুকু নষ্ট হবে সে সময়ে লক্ষাধিক লোক ওপারে চেল যাবে ! পারিষ্কার বোঝা গেছে ?
মামা আমাকে চোখের ইশারা করলো ! আমি বসে গেলাম । কিছু কাজ এখন করতে হবে !
প্রথম কাজ হল কল ট্রেস করতে হবে ! কলার কোন জায়গা থেকে করছে সেটা বের করার জন্য আমরা বুয়েটের কয়েক জন বন্ধু মিলে দারুন এক সফ্টওয়ার বের করেছি !
এমন ফোন গুলো সন্ত্রাসীরা সাধারনত কল ডাইভার্ট করে ফোন করে ! সে জন্য আসল লোকেসন খুব সহজে বের করা যায় না । কিন্তু আমাদের সফ্টওয়ারটা দিয়ে সেটা বের করা সম্ভাব । কিন্তু সমস্যা হল এতে একটু বেশি সময় লাগে ।
ছোট মামা বলল
-কি চান আপনি ?
-আমি এমন কিছু চাই না । আগে একবার বলেছি ! আবার বলছি ! আজকের ভিতরেই আপনি যে কয়জন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের নামে প্রহশন করছেন সেই সব গুলো মানুষকে মুক্তি দিবেন ।
আমি ঠিক এই ভয় টাই করছিলাম । এমন কিছু না চেয়ে বসে লোকটা । কিন্তু তাই হল !
এমনিতেই সারা দেশে সরকারের উপর অসন্তোষ দেখা দিয়েছে কাদের মোল্লার ফাঁসি না হয়ে কারাদন্ড হয়েছে বলে । এখন যদি তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় তাহলে তো দেশে আগুন লেগে যাবে ।
মামা বলল
-এটা সম্ভব না !
-মিষ্টার কবির ! আপনার কাছে আর কোন অপশন নাই ! আমি পুরো ঢাকা শহর ধ্বংশ করে দিবে কেবল কয়েকটা বাটন চেপে ! আমি এমনিতেও তাদের কে মুক্ত করে নিতে পারবো ! কিন্তু আপনাকে একটা সুযোগ দিতে চাই যে আপনি চাইলেই লক্ষাধিক লোককে বাঁচাতে পারেন ! বাকীটা আপনার ইচ্ছা !
-দেখুন ! আমার কাছে সেই অথরিটি নাই ।
-যার আছে তাকে নিয়ে আসুন ! আপনার কাছে ঠিক ৫১ মিনিট সময় আছে । ৫১ মিনিট পরে আর একটা বোমা ফাটবে !
-শুনুন ....
আর কোন কথা হল না । লোকটা লাইন কেটে দিলো !
ইসস !! আর একটু সময় দরকার ছিল আমার প্রায় ধরে ফেলেছিলাম ।
মামা আমার দিকে তাকালো ! আমি কেবল মাথা নামড়ালাম । আরমান খান বলল
-স্যার কলটা আবুধাবী থেকে করা হয়েছিল ।
আমি বললাম
-ঠিক আবুধাবী না । ওখানে কলটা ডাইভার্ট ছিল । কলটা মিরপুরের কোন একটা জায়গা থেকে এসেছিল । আর একটু বেশি সময় পেলে বের করে ফেলতাম !
আরমান খান বলল
-স্যার নাম্বারটা তো আমাদের কাছে আছে ! আমরা কি লেগে যাবো ?
মামা বলল
-লাভ নেই ! এতোক্ষনে সিম বন্ধ করে দিয়েছে !
-তাহলে এখন আমাদের কি করা উচিৎ ! আমরা কি করবো ?
মামা বলল
-আমাদের কিছু করার নাই ! দেখি ডিআইজি সাহেবের সাথে কথা বলে দেখি !

সত্যি সত্যি ৫১ মিনিট পরে আর একটা বোমা ব্লাষ্ট হল ঠিক নগর ভবনের সামনে ! ওখানে একটা গাড়ি দাড়িয়ে ছিল সেটা সম্পুর্ন উড়ে গেল । তবে ভাগ্য ভাল যে তখন এর ভিতরে কেউ ছিল না । তবে বেশ কয়েক জন আহত হয়েছে ।
এবার সবাই একটু নড়ে চড়ে বসলো ! দেখলাম জিআইজি সাহেব এসে হাজির হল অফিসে ! তারপ কিছুক্ষনের ভিতরেই ফোন এসে হাজির !
-ডিআইজি সাহেব ?
-বলছি !
-আমি দিতীয়বার বলবো না । বিকেলের ভিতরেই দাবী আদায় চাই ! আমদের সব নেতা কে মুক্ত চাই ! এর বিপরীত হলে .....
-দেখুন ! এই ভাবেই তো মুক্তি চাই বললেই মুক্ত করা যায় না । সব কিছুর একটা প্রক্রিয়া আছে ! আমাদের একটু সময় দরকার ।
-ঠিক আছে আপনি সময় নিতে থাকুন ! কিন্তু মনে রাখবেন সময় যত বেশি নেবেন মানুষ তত বেশি মরবে !
আবার লাইন কেটে গেল !!
লাইন কেটে যাওয়ার পর মামা এবারও আমার দিকে তাকালো !
আমি আবার মাথা নাড়ালাম ! এবারও আমি ঠিক মত পৌছাতে পরি নি তার কাছে । কিন্তু এবার আমি একটু হতাশ হলাম । এবার লোকেশন দেখাচ্ছে শাহবাগের কাছে ।
আশ্চার্য !!

জিআইজি সাহেব মন্ত্রালয়ে চলে গেলেন ! সেখান থেকে সংসদের দ্রুত জরূরী অধিবেশন বসলো ! বিরোধী দল কোনদিন সংসদে আসে না কিন্তু তারা খুব দ্রুতই হাজির হল । তাদের একটাই দাবী যে সাধারন জনগনের জীবনের নিরাপত্তাই সবার আগে ! যেহেতু সরকার কিছু করতে পারছে না দাবী পুরন ছাড়া আর কোন উপায় নাই !

বিকেলের আগে সবাই সব কিছুই জেনে গেল । কে বা কারা যেন মিডিয়াতে খবর লিক করে দিয়েছে । টিভিতে ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে খবর গুলো ! ব্রেকিং নিউজে আসবে পাঁচ রাজাকার মুক্তি পাচ্ছে আজ !!
পুরো ঢাকা শহর যেন এই খবররে স্তদ্ধ হয়ে গেল । সরকার এটা কি করছে ?
কেন করছে ?
একে তো কাদের মোল্লার ফাসির দাবী ছিল তার উপর সরকারের এমন সিদ্ধান্তে জনমানুষের মনে প্রচন্ত ক্ষোবের সৃষ্টি হল ! কোন কোন জায়গায় পুলিশের সাথে সাধারন জনগনের সংঘর্ষও বাধলো !!
মামাকে দেখলাম শান্ত মুখে বসে আছে !
আমি মামা কে বললাম
-তোমার মুখটা এমন শান্ত লাগছে কেন ? এমন একটা ভাব যেন কিছুই হয় নি !
-কি জানি ! হিসাবটা ঠিক মেলাতে পারছি না !
-মানে ?
-দেখ সকাল থেকে তিনবার বোমা ব্লাষ্ট হয়েছে কিন্তু একটা লোকও মারা যায় নি ! আমার কেন জানি মনে হচ্ছ লোকটা কেবল ভয় দেখাচ্ছে !
-কিন্তু বোমা গুলো তো আসল !
-তা আসল !
-যদি শিবির বা জামাতের লোক গুলো এই কাজ করতো তাহলে তারা এতোক্ষনে মানুষ মেরে সাফ করে ফেলতো ! কিন্তু এই লোক টা তা করছে না ।
-তাহলে ডিআইজি সাহেবকে বল !
-নাহ ! দেখি লোকটা কি করতে চায় ! আমার সব চেয়ে অবাক লেগেছে কোন ব্যাপার টা জানিস ?
-কোনটা ?
-লোকটা কিন্তু যুদ্ধাপোরাধী গুলোকে দেশ থেকে বের করে নেওয়ার ব্যাপারে কোন কথা বলে নি ! কেবল বলেছে ওদের কে মুক্ত করে স্মৃতি সৌধের একটা প্রিজন ভ্যানে রেখে আসতে ! কেন ? লোকটা যেভাবে আমাদের কে কাত করে দিল ইচ্ছে করলেই সে সবাইকে দেশের বাইরে রেখে আসার কথা বলতে পারতো !
আমি মামার কথায় খানিকটা চিন্তিত হয়ে পরলাম । আসলেই তো !
মামা আবার বলল
-আর একটা কথা কি জানিস ?
-কি ?
-লোকটা কিন্তু দারুন বুদ্ধিমান ! লোকটা এমন ভাবে প্লানিং করেছে যে আমাদের পুরো সিস্টেম তাকে ধরতে পারছে না । এই কাজ শিবিরের হতে পারে না । ঐ সমস্ত মাথা মোটা ছাগুদের মাথায় এই বুদ্ধি আসবেই না । ওদের মাথায় তো কেবল গোবর ভরা ।
ছোট মামার প্রত্যেকটা কথা আমার মাথার ভিতর ঘুরপাক খেতে লাগল ।
আসলেই তো !
এমন তো হবার কথা না । লোকটা নিঃসন্দেহে বুদ্ধিমান । আমাদের সবার থেকে তো বুদ্ধিমান ।

সন্ধ্যার কিছু আগে ।
সাভারের স্মৃতি সৌধ এলাকা লোকে লোকারন্য । স্মৃতি সৌধের ভেতরে একদম মিনারের ঠিক সামনেই একটা কালো রংয়ের প্রিজন ভ্যান দাড়িয়ে আছে । এই ভ্যানটা এখানে কিভাবে আসলো সেটা একটা বড় প্রশ্ন ।
আমি স্মৃতিসৌধের একজন গার্ডের কাছে জিজ্ঞেস করেছিলাম । গার্ড বলল ঘন্টা খানেক আগে ভ্যানটা এসেছে এখানে । সরকারি অর্ডারে নাকি এসেছে ভ্যান টা ।
ইতিমধ্যে পুরো চত্তর থেকে সব দর্শনার্থীকে বের করে দিয়েছে পুলিশ । কিন্তু পুরো স্মৃতিসৌধের চারিপাশে হাজার লোকের ভিড় । তাদের সবার মনে একটা ইচ্ছা কিছুতেই ঐ পাঁচ রাজাকারকে এখান থেকে বের হতে দিবে না । কেউ কেউ আবার দেওয়াল টপকে ভিতরে চলে আসতে চাইছে । পুলিশ তাদেরকে আসতে দিচ্ছে না ।
আমি ছোট মামার পাশেই বসে আছি । মুল চত্তর থেকে প্রায় একশ মিটার দুরে আমরা দাড়িয়ে আছি । খুব জলদিই পাঁচ রাজাকার এসে হাজির হবে এখানে । তারা রাস্তায় আছে বলে খবর পাওয়া গেছে ।
আমি অপেক্ষায় আছি কি ঘটে তা দেখার জন্য !
আধা ঘন্টা পরেই পুলিশের প্রিজন ভ্যান এসে হাজির । ভ্যানটা সোজা মেইন ফটক দিয়ে কালো প্রিজন ভ্যানটার দিকে এগিয়ে গেল । প্রথম দুজন পুলিশ নামলো । তারপর নেমে এল কাদের মোল্লা, এরপর মেশিন সাইদি এরপর একে একে আরো তিন জন । শেষে গোলাম আজম ।
গোলাম আজম কে এতদিন টিভিতে দেখতাম হুইল চেয়ার ছাড়া চলতে পারে না । কিন্তু আজকে দেখলাম কেবল একটা লাঠিতে ভর দিয়ে দাড়িয়ে আছে । আসলে মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে এই আনন্দে বোধহয় গায়ে শক্তি পেয়েছে ।

ঐ পাঁচ জনকে দেখতে পেয়ে চারিপাশের মানুষ চিত্‍কার চেঁচামেচি শুরু করে দিল । কেউ কেউ ইট, পায়ের স্যান্ডেল ছুড়ে মারতে লাগল । জনগন বেপরোয়া হয়ে যাচ্ছে পুলিশ দুজন পাঁচ রাজাকার কে জলদি করে কালো প্রিজন ভ্যানের ভিতর ঢুকিয়ে তালা মেরে চলে এল । তারপর তারা তাদের ভ্যান নিয়ে চলে এল !
ততক্ষনে সৃর্য ডুবে গেছে । কিন্তু চারিদিকে আলোর কোন অভাব নাই । সব মিডিয়া চ্যানেল গুলো লাইভ কাভার করছে । হঠাত্‍ কোথা থেকে যেন মাইকে আওয়াজ ভেসে এল ।
একটা দেশের গান ।

প্রথম বাংলাদেশ
........
জীবন বাংলাদেশ
মরন বাংলাদেশ
বাংলাদেশ বাংলাদেশ ......

গানটা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই মাইকে একটু ঘড়ঘড় আওয়াজ করে উঠল । তারপর শোনা গেল সেই লোকটার আওয়াজ । কেবল কয়েকটা লাইন ! লোকটা বলল
-আজ ৪২ বছর পরে দেশ দায় মুক্ত হবে !
আজ ৪২ বছর পরে শহীদ মুক্ত যোদ্ধাদের রক্তের ঋণ শোধ !

এই লাইন দুটো শেষ হবার সাথে সাথে আর একটা লাইন বেজে উঠল

রাজাকার তোর নিস্তার নাই ।
বাংলার মাটিতে তোর ঠাই নাই ।


কয়েক মুহুর্ত নিরবতা !
তারপর ! তারপর !
প্রচন্ড শব্দে বিস্ফোরন । মুহুর্তের ভিতরেই রাজাকার সম্পলিত প্রিজন ভ্যানটা আগুনে ভস্মিভূত হয়ে গেল ।
দাউ দাউ করে জ্বলতে লাগল কেবল আগুন !

আমি চারপাশে লোকজনের দিকে তাকিয়ে দেখতে লাগলাম । কয়েক মুহুর্ত সবাই স্তদ্ধ হয়ে গেলেও সবার গলা দিয়ে যেন একটা আনন্দের ধ্বনি শোনা গেল । সবার মুখেই কেবল একটা স্লোগান

রাজাকার নিপাত যাক !
সোনার বাংলা মুক্তি পাক !


মামার সন্দেহ ঠিকই ছিল । লোকটা জামাত শিবিরের কেউ হতে পারে না ! জামাত শিবিরের মাথায় এতো বুদ্ধি আসবে না !

এই কাজ একজন বাংলাদেশীর একজন মুক্তিযোদ্ধার !
আমি লোকটা দেখতে পাই নি কিন্তু সেই লোকটা কে স্যলুট করলাম !!



'A Wednesday Day' মুভিটার ছায়া অবলম্বনে গল্পটা লেখা ! টেকনিক্যাল ব্যাপার গুলো আরো বিস্তারিত লেখা উচিৎ ছিল কিন্তু আমি এই ব্যাপার গুলো কম বুঝি ! আশা করি ক্ষমা সুলভ দৃষ্টিতে দেখবেন !
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×