-আর কত ঘুমাবি ? ওঠ !
আমি কোন মতে চোখ মেলে ঘড়ির সময়টা দেখার চেষ্টা করলাম ! মাত্ড় সাতটা !
এই মেয়েটার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে ? এই রাত দুপুরে আমার কাছে ফোন দিছে কেন ?
আমি বিরক্ত হয়ে বললাম
-কি ব্যাপার ফোন দিছস ক্যান ? তুই জানোস না এতো সকালে আমি ঘুমাই !
-তুই এখনই ওঠ !
মামা বাড়ির আবদার ! এখনই ওঠ !
-দেখ ফাজলামো করিস না ! এখন ঘুমাইতে দে ! চারটার সময় ঘুমাই !
-জি জানি আপনি চারটার সময় ঘুমিয়েছেন !
আমি একটু হেসে উঠলাম ! জিনা তো জানবেই যে আমি চারটার সময় ঘুমাইছি ! আসলে রাতে চারটা পর্যন্ত জিনার সাথেই চ্যাটিং করছিলাম !
-দেখ আমি এখন ঘুমাবো ! পরে কথা বলি !
-না ! এখন কথা বলতে হবে !
-আমি কিন্তু ফোন রেখে দিবো !
-ফোন রেখে দেখ একবার !
আমি জানি ফোন রেখে লাভ হবে না ! আমি যতবার ফোন রেখে দিবো জিনা ততবার ফোন করবে ! যতক্ষন না সে তার মনের কথা গুলো না বলবে সে শান্তি পাবে না ! আর আমাকেও শান্তি দেবে না !
আমি বললাম
-কি চাস বল ?
-শোন ! এখন টিএসসি তে আয় !
-এখননননননন?
-এই ভাবে টান দিলি কেন ? এমন একটা ভাব যেন আমি তোকে যুদ্ধের ময়দানে আসতে বলেছি !
-এখন কিভাবে আসবো ! এতো ভোর বেলা ?
-ভোর ? এখন ভোর ! শোন ফাজলামীর একটা সীমা আছে ! আমি টিএসসিতে আসতেছি তুই আয় ! এখন সাতটা বাজে ! ঠিক সাড়ে সাতটার ভিতর হাজির হবি !
-দেখ....।
-কোন কথা শুনতে চাই না ! ঠিক সাড়ে সাতটার সময় যদি তোকে না পাই মনে রাখবি জীবনে সকালে আর তুই ঘুমাতে পারবি না !
জিনা আর কিছু না বলে ফোন রেখে দিল !
আমি বিরক্ত হয়ে উঠে পড়লাম ! এই মেয়ের জ্বালাতন সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে দিন দিন !
দেখি টাইট দিতে হবে ! চিন্তা ভাবনা করতে হবে !
কিন্তু এখন তো আর কিছু করার নাই ! যেতেই হবে !
যখন ঘড়িতে সাতটা ছাব্বিশ বাজে তখন টিএসসিতে পৌছালাম ! গিয়ে দেখি জিনা আগেই এসে হাজির ! ওয়ালের সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে ! পরনে কালো রংয়ের একটা টাইট জিনস আর টপস ! আর ছাদা রংয়ের এটা চাদর এক পাশে জড়ানো !
আমি কিছু বলতে যাবো জিনা বলল
-কি রে জ্যাকেট পর নাই ক্যান ?
জিনার এই ব্যাপারটা আমার আসলেই খুব ভাল লাগে ! ফোনে আমার সাথে যতই বাদরামী করুক না কেন সামনাসামনি ও কখনই আমার সাথে কিছু বলে না ! এমন কি আমাকে তুই করেও বলে না !
-তাড়া হুড়া করে আসতে গিয়ে মনে নাই !
জিনা কিছু বলতে গিয়েও বলল না ! নিজের গায়ের চাদরটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল
-এটা গায়ে দাও !
-তোমার ঠান্ডা লাগবে তো !
-আমার ঠান্ডা নিয়ে এতো ভাবতে হবে না !
-জি না মিস জিনা ভাবতে হবে ! আমার ওতো ঠান্ডা লাগছে না !
জিনা আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়েই রইলো ! আমাকে বলল
-এখানে বস !
আমি বসলাম ! জিনার পাশে একটা হটপট দেখছিলাম । ও হটপট খুলে আমাকে বলল
-তুমি বলেছিলে না অনেক দিন তুমি সকালে ঘরে বানানো নাস্তা খাও না !
আমি অবাক হয়ে দেখলাম জিনা আস্তে আস্তে হটপট থেকে আমার জন্য নাস্তা বের করলো ! হাতে বানানো রুটি আর আলু ভাজি !
এই মেয়েটা এতো ভাল কেন ?
আমি ওর পাশে বসে হাত দিতে গেলাম ও তখন আমাকে আটকালো !
-আমি খাইয়ে দেই ?
হায় !! এই মেয়েটা !! যদিও জোড়ে বলা উচিৎ তবুও আমি মনে মনে বলল
-আই লাভ ইউ আমার জানটা !
জিনা আমাকে মুখে তুলে খাইয়ে দিল ! আর বলল
-একটু জোরে বললে কি হয় ?
-কি ?
-এই যে একটু আগে বললা ?
-মানে ?
-বারে ... একটু জোরে আই লাভ ইউ বললে কি হয় ?
আমি কেবল অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি এই মেয়েটার দিকে ! এই মেয়েটা এতো কিছু বুঝে কিভাবে ?
আমার জানটা একটা !!
(কমন গল্প লাগতে পারে কিন্তু এটা আমার স্বপ্নের গল্প যা আমি দেখি)
জি না, মিস জিনা আমার ভাবতে হবে ! তোমার কথা আমার ভাবতে হবে !!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৩২টি মন্তব্য ৩২টি উত্তর

আলোচিত ব্লগ
শেয়াল ও মুরগি প্রসঙ্গে
নারীদের মুরগি আর পুরুষদের শেয়ালের সাথে তুলনা করা কোন সমাধান নয়। এটা সত্য যে, শিশু ও নারীরা কিছু ব্যক্তির কাছে সত্যি নিরাপদ নয়। এই যে , এত ধর্ষণ হয়, শিশুরা... ...বাকিটুকু পড়ুন
গদির উপর যদির মা
চাইছি আমি নাও বিদায় চাইছো তুমি থাকতে
আমারতো আর সাধ্য নেই তোমায় ধরে রাখতে।
চালগুলো সব খাওয়া হল চুলোটাই কেবল বাকি
তবুও তোমার টালবাহানা আর কিছুদিন থাকি।
ধারকর্যে চলতে গিয়ে খাচ্ছি হোঁচট... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিনয়াবনত চিত্ত আপনার জীবনকে উর্ধ্বমুখী করবে
বর্তমান প্রজন্মের একটা নিয়মিত অভ্যাস নিজেকে একটু ফোকাস করতে পারা। অথচ এ কাজটা করতে গিয়ে সে নিজেকে প্রতিনিয়ত কলুষিত করছে নিজের অজান্তেই। একটু ভেবে দেখুন। আজকালকার ছেলেদের “বডি ল্যাংগুয়েজ” একটু... ...বাকিটুকু পড়ুন
নিজে ভুক্তভোগী না হলে অন্যের দুঃখ অনুধাবন করা যায় না
রাজধানীর রামপুরায় একটা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের ফুড আউটলেটে কিছুদিন কাজ করতে হয়েছিল। ঝাড়পোছ থেকে শুরু করে পণ্য বিক্রি, যাকে বলে জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ- সব কাজই করতে হতো। যেহেতু অন্য কোনো... ...বাকিটুকু পড়ুন