মীরার মুখটা কেন যেন সব সময় গম্ভীর থাকতো ! আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারতাম না যে এমন সুন্দর একটা মেয়ে কিভাবে হাসি খুশি না থেকে পারে ! একটা সুন্দরী মেয়ের সব সময় হাসি হাসি মুখ করে থাকা উচিৎ ! আমার মনে হয় এমন একটা আইন সংসদে পাশ করা উচিৎ যে সব সুন্দরী মেয়েরা সব সময় মুখে হাসি হাসি ভাবটা বজায় রাখতে বাধ্য থাকিবে !
এটা আসলেই করা উচিৎ ! সুন্দরী মেয়েদের মুখ বিষন্ন থাকলে অন্তত তার আশেপাশে শখানেক ছেলেদের ঘুম হারাম হয়ে যায় !
বার বার কেবল একটা কথাই চিন্তা করে যে মেয়েটার মন কেন খারাপ !
কেন মন বিষন্ন !!
তাদের সব মনযোগ চলে যায় সেই মেয়ের দিকে ! আমাদের ক্লাসেই এমন দশ বারো দল ছেলে আছে তাদের ক্যাম্পাসে এসে প্রধান কাজ হল মীরার খোজ খাবর নেওয়া ! মীরা কেমন আছে ?
কেন ওর মুখটা বিষন্ন !
কেন এমন টা হবে ?
কি করলে ওর মুন ভাল করা যাবে !
একবার লিমন নামের এক ছেলে তো মীরার জন্য ১০০ লাইনের এক মহা কাব্য লিখে ফেলল ! এবং সবার সামনে সেটা পাঠও করে শোনালো ! সবাই তো সেই লিমন কে মহা কবি উপাধী দিয়ে দিবে কিন্তু তার প্রতিযোগীরা তো তাকে পারলে টেনে ডাস্ক থেকে নামিয়ে ফেলে !
কিন্তু মীরার এসবে কোন ভ্রুক্ষেপ নাই ! ও আসতো ! সামনের দিকে একটা চেয়ারে বসত ! ক্লাস করতো আবার চলে যেত !
তবুও আমাদের ক্লাসে উৎসাহের কোন শেষ নাই ! কিন্তু একদিন সবারই উৎসাহে ভাটা পরলো যেদিন মীরার সাথে ওর হবু বর ক্যাম্পাস দেখতে এল ! আমাদের সেই মহা কবি লিমন তো ফিট হয়ে যাবার মত অবস্থা !
যেই মেয়েটা সব সময় চুপ চাপ থাকতো দেখালাম সেই মীরাই সবার সাথে তার হবু জামাইকে পরিচয় করিয়ে দিল !
আমার কেন জানি মনে হয়েছিল মীরা এটা ইচ্ছা করেই করেছিল সবার থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য ! অনেকেই সেদিন কষ্ট পেয়েছিল ! কিন্তু সব থেকে বেশি কষ্ট পেয়েছিলাম আমি নিজে !
আমি যদিও কোন দিনই মীরার পেছনে যাই নি কিন্তু মীরা অসম্ভব পছন্দ করতাম ! ওর সাথে কথা বলার ইচ্ছা করলেও সংকচের কারনে কেন জানি যেতে পারি নি !
তবে মীরা যে আগে থেকেই এঙ্গেইজ এইটা জানার পর থেকে ওর পিছনে লোকজান ঘোরা ফেরা কেন জানি একটু কমে গেল !
আগে থেকে ফেসবুকে টুকটাক লেখা লেখি করতাম ! এটা ওটা স্টাটাস দিতাম ! দুচার লাইনের কবিতা অথবা দশ বারো লাইনের গল্প ! একদিন অবাক হয়ে লক্ষ করলাম মীরা আমার বেশ কয়েকটা গল্পে লাইক দিছে ! এটা খানিকটা অবাক করলো আমাকে !
একবার মনে হল তাহলে কি মীরা আমার লেখা পরছে নিয়মিত ! নাকি এমনি রেগুলার চোখের সামনে পরে গেছে তাই লাইক দিয়েছে !
কিন্তু ওর লাইক দেওয়ার ধরন দেখে মনে হল সে আসলেই আমার লেখা পড়তেছে ! কারন বছর খানেক আগের লেখা গল্প গুলো তেও সে লাইক দিয়েছে !
যদিও কোন কমান্ট দেয় নি ! তবে লাইক দিয়েছে ! যাক ভাল লাগলো এটা জেনে ! এর ভিতর একটু মনের ভিতর শংকা কাজ করলো এই ভেবে যে ও আবার বুঝে ফেলবে নাতো !
কারন বেশ কিছু লেখা ছিল ওকে নিয়ে ! যদিও সরসরি কিছু লেখা নাই তবুও একটু লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে যে আমি ওকে নিয়েই গল্প লিখেছি ! কবিতার লাইন লিখেছি !
প্রতিদিন একটু ভয় ভয় করতাম এই ভেবে যে ও হয়তো আমাকে ইনবক্স করে বলবে কি ব্যপার তুমি আমাকে নিয়ে গল্প কেন লিখছ?
ফাজিল ছেলে !
আবার যদি লিখেছ তাহলে ফাপড়িয়ে তোমার দাঁত ফেলে দিবো !
আমি একবার মনে করলাম যে ওকে নিয়ে লেখা গুলো ড্রাফটে নিয়ে ফেলি ! কিন্তু তটক্ষনে দেরি হয়ে গেছে ! মীরা সেই গল্প গুলো পড়ে ফেলছে আবার লাইকও দিয়েছে ! দেখলাম একটা কবিতায় আবার কমান্টও করেছে !
কবিতা টি ওকে নিয়েও লেখা !
একদিন ও নীল রংয়ের একটা সেলোয়ার কামিজ পরে এসেছিল ! ঠিক যেন একটা নীল পরীর মত মনে হচ্ছিল ওকে ! আমি নীল পরী নিয়েই লিখেছিলাম কবিতা টা !
কবিতার কমান্টে ও লিখেছে "নাইস ওয়ান" !
আমি বার ঘুরে ফিরে এসে সেই কামন্ট টাই দেখি ! আমার কাছে বড় আপন মনে হয় লেখাটা !
তরপর একদিন মীরাস সাথে আমার সামনা সামনি কথা হল ! আমি সব সময় একটা ব্যাপার লক্ষ্য করতাম যখনই মীরা আমার সামনে এসে হাজির হত অথবা আমার সামনে দিয়ে হেটে যেত আমার হার্টবিট বেড়ে যেত সেই সাথে কেন জানি হাত পা খানিকটা অবশ হয়ে আসতো ! আর কথা আটকে যেত ! এমন তেই আমার কথা একটু বাধতো ! কিন্তু মীরার সামনে যেন কথাই বে রহত না ! ঐদিন আমি আমাদের ডিপার্টমেন্টের সামনে দাড়িয়ে ছিলাম এমনি সময় মীরা আমার পাশে এসে হাজির ! আমি ঠিক লক্ষ্য করি নি ! আমার পাশে এসে বলল
-কি ব্যাপার কবি তানভীর কি খবর ?
প্রথমে মনে আমি মনে হয় স্বপ্ন দেখছি ! কিন্তু যখন মনে হল আসলে আমি বাস্তবে আছি তখন আমার হাত পা কেমন যেন অবশ হয়ে এল ! আমি মীরা কথার উত্তরে কেবল একটু হাসার চেষ্টা করলাম ! কিন্তু খুব বেশি লাভ হল বলে মনে হয় না !
মীরা বলল
-তুমি খুব সুন্দর কবিতা লেখ !
কোন রকমে বললাম যে ধন্যবাদ !
আমি আসলে কোন দিন ভাবতেই পারি নাই যে মীরা আমার সাথে কথা বলবে ! কি আশ্চর্যের কথা !
আমি সারা টা দিন কেবল মীরার কথাই ভাবলাম । ওকে নিয়ে অয়েক লাইন কবিতাও লিখে ফেললাম !
একটু হেসে যখন তুমি বললে আমায় কবি !
মনের ভিতর তখন আমার ভাসে তোমার ছবি !
তুমি যখন একটু তাকাও
একটু হাসো
একটু কথা বল
মন টা আমার হয় কি জানো
হাত টা ধরে বলি তোমায়
ঐ দূর অজানায় চল !
সেথায় অনেক স্বপ্ন দেবো
এক গুচ্ছ আলো দেবো
আরো দেবো ভালবাসা !
এই না ভেবেই কাছে আসা !
লিখে দিলাম ফেবু স্টাটাস !
আমি ভেবেছিলাম আমার লেখার সাথে সাথেই মীরা লাইক দিবে এমন কি কমান্টও দিবে ! কিন্তু আমার ধারনা সম্পূর্ণ ভুল প্রামনিত করে দিয়ে মীরা কোন কমান্ট ই দিলো না ! আমি একদিন অপেক্ষা করলাম ! এর মাঝে আর কোন স্টাটাসও দিলাম । কোন কিছু লিখলাম ও না ! কেবল এই কথা টুকুই চিন্তা করতেছি যে মীরা ককখন আসবে কখন ওকে নেওয়া লেখা কবিতাটা দেখবে !
একটু লাইক দিবে !
দু একটা কমান্টও করবে !
কিন্তু হল না !
যখন ওকে ভার্সিটিতে পেলাম তখন খুব জানতে ইচ্ছা করল । ও কি আমার কবিতাটা দেখে নাই ?
এমন তো হতেই পারে !
আমার তো কাজ নাই তাই সারা দিন ফেসবুকে বসে থাকি ! মানুষের তো কাজ থাকে ! আমার মনে কোথা থেকে সাহস এল আমি বলতে পারবো না আমি সরসরি ওর কাছে চলে গেলাম !
মীরা চুপ করে চেয়ারে বসে কি যেন একটা বই পড়ছিল !
আমি ওর সামনে দাড়াতেই আমার দিকে ফিরে তাকালো ! আমি ওর দিকে তাকিয়ে কেমন যেন হয়ে গেলাম ! বলতে গেলাম এটাই আমার প্রথম ওর দিকে সরাসরি তাকিয়ে কথা বলা ! ওর চোখে কেমন যেন একটা বিষন্নতা !
কিছু যেন না পাওয়ার কষ্ট !
কিছু হারানোর কষ্ট !
কি বলতে এসেছিলাম আর বললা কি ?
আমি বললাম
-তোমার মন খারাপ থাকে কেন সব সময় ? কি কষ্ট লুকিয়ে রেখেছ ?
আমার কথা শুনে মীরা দেখলাম একটু যেন চমকালো ! জোর করে মুখে হাসার চেষ্টা করে বলল
-কি বলছ এসব ? কষ্ট থাকবে কেন ?
-নেই ?
-নাহ !
আমি একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম ! তাকিয়ে দেখি বেশ কিছু কৌতুহলী চোখ আমার আর মীরার দিকে তাকিয়ে আছে ! আমি ওকে কি বলি এটা শোনার জন্য !
আমি বললাম
-তুমি কাল ফেসবুকে বস নাই ?
-বসেছি তো ! কেন ?
-না এমনি ! আচ্ছা থাকো !
আমি আর দাড়ালাম না ! চলে এলাম ! তবুও কেন জানি মীরা বিষন্ন চোখ দুটো আমার মনের ভিতর লেগেই রইলো !
ঐ দিন রাতে মীরাই আমাকে নক করলো চ্যাটিংয়ে !
-তুমি সকালে ঐ কথা কেন বললে ?
-কোন কথা ?
-এই কি কষ্ট লুকিয়ে রেখেছি ?
-ও ! মনে হল তাই বললাম !
-কি মনে হল ?
-না এর আগে তোআমর সাথে সরাসরি কথা বলি নাই তো তাই তোমাকে সরাসরি দেখা হয় নাই ! আজকে তোমার চোখ সরাসরি দেখে মনে হল !
-হুম ! সরাসরি দেখো নাই লুকিয়ে তো দেখেছো !!
আমি একটু অবাক হলাম ! এই মেয়ে ঠিকই লক্ষ্য করছে ! হুম তাই তো আমার ফেবুতে লেখা নোট গুলো পড়েছে !
মীরা বলল
-জানো আজকের আগে কেউ আমাকে এই কথা বলে নাই ! সবাই মনে করেছে আমি এমনিতেই মন খারাপ করে থাকি ! কিন্তু কেউ ই জানতে চায় না আমি কেন মন খারাপ করে থাকি ! কেন আমার এই বিষন্নতা !
-আমাকে বলবে ?
-শুনবে তুমি ?
-হুম !
-বরক্ত হবে না তো ?
-বিরক্ত হব কেন ?
আমি আসলেই বিরক্ত হয় নি ! মীরা আস্তে আস্তে আমার সাথে মিশতে থাকে ! আমার সাথে কথা বলতে থাকে ! কত না বলা কথা বলতে থাকে আমাকে !
মীরা দের পরিবারে একটা বড় সমস্যা ছিল মেয়েদের মূল্যায়ন না করা ! আগের কার দিনে বাংলার ঘরে যেমন মেয়েদের কে দাবিয়ে রাখা হত সেটা এখনও মীরা দের পরিবারে করা হয় ! মীরা বলেছিল ওর বড় আপু একটা ছেলেকে পছন্ড করতো ! ছেলেটাও বেশ ভাল, পড়া লেখা জানা শিক্ষিত ছেলে ! কিন্তু
কেবল মেয়ে পছন্দ করেছে বলে এটা মীরার বাবা কিছুতেই মেনে নিতে পারে নি ! বরং তাকে সহ্য করতে হয়েছে বাবা আর ভাইয়ের অকথ্য নির্যাতন ! ওদের পরিবারে সব মেয়ে গুলারই ঠিক একই অবস্থা । নিজের কোন স্বাধীনতা নাই ! বাড়ির পুরুষ যা বলবে তাই !
মীরাকে আরো আগেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হত কেবল মীরা হবু স্বামীর ইচ্ছা যে তার বউ গ্রজুয়েট হোক ! আমি ওর কথা গুলো শুনতাম চুপচাপ ! ওর মাঝে একটা যে চাপা হতাশা আর দীর্ঘশ্বাস ছিল টের পেতাম !
মীরাকে একদিন বললাম
-চল বসুন্ধরার দিকে যাই ! ওখানে কাশবন আছে ! সময় ভাল কাটবে !
-নাহ ! এটা সম্ভব না !
-কেন ?
-তুমিতো জানো আমার বাসার ব্যপারটা । জনলে খবর আছে !
-আরে কিভাবে খবর আছে ? তুমি যেভাবে ক্লাস করতে আসো সেই ভাবে আসবা ! তারপর আমরা দুজন পগার পার হয়ে যাবো !
-পগার পার মানে ?
আমি হেসে উঠলাম ! বললাম
-আরে কোন মানে নাই ! এমনি বললাম !
মীরা যদিও না না করতেছিল তবুও কেন জানি আমার মনে হল মীরা রাজি হয়ে যাবে ! দুদিন পরে সত্যিই আমার কাছে এসে বলল
-চল আজকে যাই !
-কোথায় ?
-তুমি বললে না সে দিন কাশবনে যাবা ! আজকে যাওয়া যাবে ! আব্বা আজ বাসায় নাই !
ঐদিন আসলেই মীরাকে কেন জানি খুব ভাল লাগছিল ! মীরাকে এতো আনন্দিত আমি আর কোন দিন দেখি নাই ! আমরা একসাথে কাশ বনের ভিতরে দৌড়াদৌড়ি করলাম কিছুক্ষন ! ওকে দেখে মনে হচ্ছিল যেন বন্দী কোন পাখি আজ মুক্ত হয়ে এল !
ফেরার পথে মীরা আমার হাত ধরে বলল
-এমন একটা দিনের খুব দরকার ছিল আমার জন্য ! ধন্যবাদ !
-না ! ঠিক আছে !
আমি অন্য কিছু আর ভাবছি না মীরা আমার হাত ধরে আছে এটাই বড় কথা ! আমি তখন অন্য কিছু ভাবছি !
আমি বললাম
-কেন ? তোমার প্রিয়নছে ? ও তোমাকে নিয়ে যায় না ?
দেখলাম মীরার মুখটা কেমন একটু বিষন্ন হয়ে গেল ! কিছুক্ষন চুপ থাকার পর মীরা বলল
-আসলে আমার প্রিয়নছে তেমন না ! সেও আমার পরিবারের মত ! আমি কেবল এক জেল খানা থেকে বের হয়ে আরেক জেল খানায় ঢুকবো !
আমি কোন কথা না বলে চুপ করে রইলাম ! আসলেই এই মেয়েটার জন্য কি আমি কিছু করতে পারি না ?
আমি মীরাকে এতো পছন্দ করি কিন্তু ওকে বলতে পারলাম না তুমি আমার কাছে চলে আসো !
কিন্তু আমি এর কিছুই বলতে পারলাম না । মনের ভিতর কেবল একটা হতাশা কাজ করছিল । বারবার মনে হল ওকে বলি যে তুমি সব কিছু ছেড়ে আমার কাছে চলে এসো । আমার হাতে হাত রেখে আমরা উড়বো মুক্ত আকাশে । কাশ বসে দৌড়াদৌড়ি করবো আর পা ভিজিয়ে বসে দুজন ঐ শান বাধানো পুকুর পাড়ে ।
কিন্তু কেন জানি বলতে পারলাম না । কিসের যেন একটা দ্বিধা কাজ করছিল মনের ভিতর ।
যখন বাসায় পৌছালাম তখন মনের ভিতর অফসোসটা রয়েই গেল । ইস যদি বলতে পারতাম ! একটা বার বলতে পারতাম ! বলতে পারতাম মীরা তোমাকে আমি ভালবাসি ।
ঐ দিন মীরা অন লাইনে এল না । ঠিক বুঝতে পারলাম কেন এল না । প্রতিদিনই তো আসতো এই সময়ে । পরদিন ক্লাসে আসবে ভাবলাম । কিন্তু আমাকে হতাশ হতে হল । পুরো একটা সপ্তাহ পার হয়ে গেল মীরার কোন খবর নাই । না ভার্সিটি না ফোন আর না ফেসবুক ।
পরের সপ্তাহে ক্লাসে এসে দেখি আমার ক্লাসের মহা কবি অবস্থা খারাপ । সব সময় হাসি খুশি থাকা ছেলেটা কে কেমন যেন মন মরা লাগছিল । কিন্তু একটু পরে যা শুনলাম তাতে আমার অবস্থা খানিকটা খারাপ হয়ে গেল । মীরা ভার্সিটিতে আসছে না । কারন ওর বিয়ে হয়ে গেছে ।
বিয়ে হয়ে গেছে ?
মনে হল যেন আমার কাছ থেকে কিছু যেন একটা হারিয়ে গেছে মুহুর্তেই ! এটা কিভাবে হতে পারে ?
মীরার বিয়ে কিভাবে হতে পারে ?
কিভাবে ?
মীরার সাথে আর আমার দেখা হয় নাই ! ওর বিয়ের পর থেকে আর ও কোন দিন ভার্সিটিতেই আসে নাই ! ওর ফেসবুক একাউন্ট টাও বন্ধ তারপর থেকে !
আচ্ছা মানলাম বিয়ে হয়ে গেছে তাই বলে কি যোগাযোগ করবে না মেয়েটা ?
এমন কেন ?
তারপর কেটে গেছে অনেক দিন !
একদিন নিউ মার্কেটে গেছি কেনা কাটা করার জন্য ! হঠাত পাশ থেকে আমার কাধে হাত রেখে একজন বলে উঠলো
-কি খবর কবি সাহেব ?
আমি পিছন ফিরে অবাক হলাম !
মীরা !
একদম আগের মত ! এটু যেন বদলাই নাই !
-তুমি ?
-হুম !
-এখানে ?
-হুম !
-কিভাবে ? আমি তো জানতাম তুমি চট্টগ্রামে থাকো !
-থাকতাম ! এখন আর থাকি না ! এখন এখানে থাকি !
বুকের ভিতর আবার কেমন যেন কেঁপে উঠে ! এতো দিন পরেও মনে হল মীরা কে ভুলতে পারি নি !
এস সাথে বসে রইলাম অনেক্ষন ! মীরা বলল ওর জীবন ভালোই চলছে ! যে রকম ভেবেছিল সেরকম হয় নাই !
আমি বললাম
-এভাবে কেন গায়েব হয়ে গেলে ?
-অভিমানে ?
-অভিমান ? কার উপর ?
মীরা কথা বলল না ! অন্যদিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষন !
তারপর মীরা বলল
-জানো ঐ দিনের কথা !
-কোন দিন ?
-যে দিন আমাদের শেষ দেখা হয়েছিল ! আমার মন খুব ভাল ছিল !
-হুম !
-কিন্তু বাসায় গিয়ে দেখি বাবার মুখ খুব গম্ভীর ! কিভাবে যেন বাবা জেনে গেছিল ! আমি জানি না !
-তারপর ?
-ঐ দিনই আমাকে বিয়ে দিয়ে দিল ! আমি কিছু বলতেও পারলাম না !
আমি কেবল চুপ করে রইলাম ! কি বলবো কিভাবে বলবো ঠিক মত বুঝতে পারলাম না !
মীরা একটু চুপ করে থেকে আবার বলল
-জানো আমার যখন বিয়ে পড়ানো হচ্ছিল তাখন কেন জানি তোমার কথা মনে হচ্ছিল ! আমার একবার মনে হয়েছিল তুমি যেন আমাকে মুক্ত করবে ! মিথ্যে করে হলেও আমাকে একবার বলতে যে আমার কাছে চলে আসো ! ইস ! যদি বলতে ! তাহলে হয়তো জীবন অন্য রকম হতে পারতো !
আমি কেবল চুপ করে রইলাম ! বুকের ভিতর কেমন যেন একটা কষ্ট হতে লাগলো !
ইস যদি বলতাম একটা বার ! আসলেই জীবন টা হয়তো অন্য রকম হতে পারতো !!
ফেবু লিংক
আলোচিত ব্লগ
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
মিশন: কাঁসার থালা–বাটি
বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।