আমার বিবাহ বেলা এবং বউ নিয়ে বাস জার্নির গল্প !!
একেবারে .....
একেবারে ...।
নাহ ! এই কান্না কে কি বলে কে জানে ?
ঝুম বৃষ্টি হলে যেমন বলে কেটস এন্ড ডগস । সেই রকম ঝুম কান্না কে কিছু একটা নাম দেওয়া দরকার । কি নাম দেওয়া যায় ?
শেয়াল কুকুর কান্না ?
এরকম কিছু একটা দিতে পারলে ভাল লাগতো !
নিহিন দিকে তাকিয়ে একটু বোঝার চেষ্টা করলাম ! যে ভাবে কান্না শুরু করেছে তাতে মনে হচ্ছে না আজকে রাতে এদের কান্না থামবে !
আবার চোখের জলে বন্যা না সৃষ্টি না হয়ে যায় !!
কালকের সংবাদ পত্রের প্রধান শিরোনাম বিয়ে করতে এসে বন্যার কবলে বরযাত্রী !
আচ্ছা বিয়ের সময় মেয়েরা এমন করে কাঁদে কেন ?
যেখানে কান্নার কোন কারনই আমি দেখি না । হ্যা এমন একটা ব্যাপার থাকে যদি বিয়েটা যদি মেয়ের অপছন্দে হয় তাহলে একটা কথা থাকে ।
নাহ !
আমি যতদুর জানি বিয়েতে নিহিনের পুর্ন মত আছে । তাহলে এতো কান্না কাটির কি আছে ?
আচ্ছা আমার এখন কি করার আছে ?
নিহিনকে শান্তনা দিবো ?
নাহ !
জিনিসটা কেমন দেখাবে কে জানে ?
ওর চার পাশে ঘিরে ওর বাবা মা রয়েছে । আরো কত আত্মীয় আছে ! এখন কিছু বলাটা কেমন হয়ে যায় ?
আমি চুপ করে পাশে দাড়িয়ে রইলাম । আমার চার পাশেও অবশ্য আমার অনেকেই আছে ! সবাই নিজেদের মধ্য ব্যস্ত ! আসলে আমি যে এই বিশেষ অনুষ্ঠানের সব থেকে গুরুত্বপূর্ন একজন সদস্য এটা যেন কারো মনে নেই । ক্ষনিকের জন্যই সবাই যেন নিহিনকে নিয়ে ব্যস্ত ! এমন কি আমার ভাবীরও নিহিনের সাথে রয়েছে !
আমি চারপাশ দেখতে লাগলাম !
এমন সময় বন্ধু সুমন এসে বলল
-রাফাত !
-কি ?
-তোর বউয়ের কান্না শেষ বারের মত দেখে নে ?
-মানে কি ?
-মানে হল এর পরে আর কোন দিন তোর বউয়ের কান্না দেখতে পাবি না !
-ভাল তো ! এইটা ভাল না !
সুমন আমার দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষন ! তারপর বলল
-তুই আসলে গাধাই রয়ে গেলি ! আমি কি বলতে চেয়েছি বুঝিস নাই ?
-মানে ?
-মানে হল তোর বড় আজকেই শেষ বারের মত কাঁদবে আর এর পর থেকে তুই কাঁদবি !
-আমি কেন কাঁদবো ?
-বুঝবা মামা ! বুঝবা ! বিয়া করছো না ! আজ থেকেই বুঝবা !
-তুই ও তো বিয়ে করেছিস ! তুই কি বুঝছিস ?
আমার এই কথা বলতেই সুমনের চোখমুখ কেমন যেন একটু করুন হয়ে গেল ! আমি আমার উত্তর পেয়ে গেলাম । কিছু বলতে যাচ্ছিল সুমন ঠিক তখন সুমনের বউ অনু ভাবি এসে হাজির ।
সুমনকে উদ্দেশ্য করে বলল
-এই তুমি রাফাত ভাইকে কি বলছো ?
সুমন একদম কাচুমচু করে বলল
-না বাবু কি বলি নাই তো ? এমনি গল্প করছি !
-এদিকে এসো ! তোমার সাথে দরকার আছে !
সুমনকে নিয়ে অনু ভাবি চলে গেল বাধ্য ছেলের মত ! না জানি কি বলবে !
আচ্ছা সত্যি কি এমন হয় ? বিয়ের পরে সব পুরুষ মানুষের কপালে কি দুঃখ থাকে ?
নিশ্চই না ?
তাহলে সবাই এমনটা কেন বলে ? আল্লাহই জানে ?
আমার বউ মানে নিহিন কেমন হবে ?
আমার তো তা মনে হয় না !
নিহিন কে প্রথম দেখেই আমার ভাল লাগে । বলতে গেলে পছন্দ হয়ে যায় । ওর সাথে কথা বলেও ভাল লেগেছিল খুব ! মনেই হয় নি অপরিচিত কেউ ! পারিবারিক ভাবেই সব কিছু ঠিক হয় ! আমার তো মনে হচ্ছে না আমার সাথে এমন কিছু হবে ?
নাহ ! মনে হয় না ।
আমি আবার নিহিনের দিকে তাকালাম ! একটু আগে নিহিন তার মায়ের গলা জড়িয়ে কাঁদছিল এখন মনে হয় চাচী কিংবা মামী গোছের একজনের গলা জড়িয়ে কাঁদছে ।
আমার মনে হচ্ছে লাইন বেশ লম্বা ! আমি বাবার দিকে তাকিয়ে একটু চোখ ইশারা করলাম । এখন প্রায় দশটা বেজে গেছে । এখনও অনেকটা পথ যেতে হবে । লম্বা জার্নি ! আর তাছাড়া আমরা সবাই বেশ ক্লান্ত !
সে সকালবেলা বের হয়েছি বিয়ে করার জন্য ! আবার পৌছাতে হবে সময় মত !
বাবা তার সদ্য হওয়া বিয়াইর মশায়ের সাথে কথা বলতে গেলেন । দুজন মিলে কি কথা বার্তা শুরু করে দিলেন কে জানে ? আমি বেশ ভাল করেই দেখছি আব্বাও তার বিয়াই মশায়ের সাথে কি এতো গল্প করছে ! দেখে মনে হচ্ছে দুজন কত দিনের পরিচিত !
সবাই দেখতেছি ভালই সময় কাটাচ্ছে কেবল আমি ছাড়া ! আমারই কেন জানি একটু অস্বস্থি লাগছে !
সব কান্না কাটির পর্ব শেষ করে বের হতে আরো ঘন্টা খানেক লেগে গেল । গাড়ি যখন ছাড়বে নিহিনের বাবা আমার হাত ধরে বাংলা মুভির স্টাইলে বলল
-বাবা ! আমার মেয়েকে তোমার হাতে তুলে দিলাম । তুমি একে দেখে রেখ !
আমার মনে হল একটু মজা করলে কেমন হয় ? আচ্ছা যদি বলি না আঙ্কেল ! এতো বড় দায়িত্ব আমি নিতে পারবো না ! আপনার মেয়ে আপনার কাছে থাকুক ! আমরা যাই !
কিন্তু আমি চাইলেই তো আর এই সব কিছু বলা যায় না !
আমিও বাংলা মুভির স্টাইলে বললাম
-আব্বা আপনি কোন চিন্তা করবেন না !
আব্বা ??
সিরিয়াস লি ?
আব্বা !!
হাস্য কর ?
আর এই হাস্যকর কাজটাই আমাকে করতে হল ?
না জানি সমানে আরো কত কিছু করতে হবে ?
-কিছু খাবে ? খিদে লেগেছে ?
নিহিন আমার দিকে তাকালো ! কিছু একটা বলতে গিয়েও বলল না ।
-খাবে না ? খিদে লাগে নাই ?
-আশ্চার্য ! খিদে লাগবে কেন ?
-তাহলে কাঁদসো কেন ?
-মানে কি ? তোমার মনে হচ্ছে আমার খিদে লেগেছে বলে আমি কাঁদছি ?
-না মানে দেখো নাই ছোট বাচ্চারা খিদে লাগলে কাঁদে তাই ভাবলাম হয়তো এই জন্য কাঁদছো !
-মানে কি ? আমাকে দেখে কি তোমার বাচ্চা মনে হচ্ছে ?
-না আমি তো আর কোন কান্নার কারন দেখছি না ! তোমার ইচ্ছাই তো বিয়ে হয়েছে । কান্নাকাটির কোন কারন নাই ।
নিহিন কিছু বলতে গিয়েও বলল না । চুপ করে তাকিয়ে রইলো অন্য দিকে । তবে একটা ব্যাপার হল নিহিনের কান্না থেমে গেল !
-এই !
কোন কথা নাই !
-এই ।
-কি হল ?
-রাগ করেছ ?
কোন কথা নাই
-রাগ করেলে নাকি ?
-না ! রাগ করি নাই !
-তাহলে কথা বলতেছো না কেন ?
-কি বলবো ?
-আরে ! আমাদের সবে মাত্র বিয়ে হল কত কিছু বলার আছে না ! মুন্নী শাহার মত করে যদি বলতে হয় আপনার অনুভুতি কি ?
নিহিন হেসে ফেলল !
-তুমি এমন ফাজিল জানতাম না ! আগে যখন তোমার সাথে দেখা হয়েছিল তখন তো খুব ভদ্রতা দেখাচ্ছিলে । একদম যেন ভাজা মাছটাও উল্টে খেতে জানো না ! আর এখন ?
-না মানে । তখন তো তুমি আমার বউ হও নাই ! একটু তো ভদ্রতা দেখাতে হবেই !
-তাই না ?
-হুম !
আমি আসলে নিহিনের সাথে কথা চালিয়ে যাচ্ছিলাম ! নিহিন যত সহজ হয় ততই ভাল !
-তোমার বসতে কষ্ট হচ্ছে না তো ! এখনও কিন্তু অনেকটা পথ যেতে হবে !
-আসলে আমার খুব ক্লান্ত লাগছে ! সারা দিন এতো ধকল গেছে !
-হুম ! তুমি এক কাজ কর ! একটু ঘুমিয়ে নাও !
-সিটে হেলান দিয়ে ঘুম আসবে না !
-আমার কাধে হেলান দাও !
আমার কথা শুনে একটু যেন লজ্জা মত পেল !
-ওরা কি মনে করবে ?
-আরে কি মনে করবে ? তুমি আমার বউ না ?
আমার নিজের কানেই যেন কেমন লাগলো ! বউ না ??
পিছন থেকে সুমন বলে উঠল
-হুম ভাবী ! আমরা কিছু মনে করবো না ! আপনি রাফাতের বউ না ?
বাসের ভিতর হাসির রোল উঠল ।
নিহিন আমার কাধে না আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো ! বাসের ভিতর মৃদু আলো জ্বলছিল ! সেইআলোতেই আমি নিহিনের চেহারের দিকে তাকিয়ে রইলাম !
বাস চলছে বেশ দ্রুতই ! খোলা জানলা দিয়ে বাতাস আসছে । নিহিনের মুখের উপর চলে আসছিল । আমি ওর চুল গুলো সরিয়ে দিতে লাগলাম !
বাস এগিয়ে চলছে । আমি আর নিহিনও এগিয়ে চলছি । সামনের জীবনের দিকে ! আমাদের সামনের জীবনের দিকে !
আমার দুজনের জীবন !!
Click This Link

ভূমিকম্প নিয়ে যত মিথ
১. সমতল এই পৃথিবীর একপাশে আছে বিশাল বিশাল সব পর্বত, অন্যপাশে আছে একজন বিশাল দৈত্য। সেই দৈত্যের স্ত্রী আকাশ ধরে ঝুলে আছে। দৈত্যের যখন স্ত্রীর সাথে আলিঙ্গন করার ইচ্ছে হতো,... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভুমিকম্পের পর আমার শনিবার। (ছবি ব্লগ)
ভুমিকম্প সবসময় আমার একটা স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। তিন বন্ধু তিনটি ভূমিকম্পে একই ছাদের নিচে ছিলাম। এইবার একজন কল দিয়েছে। আমি ঠিক আছি কিনা। আর আমি তখন নদীর ধারে। ঠিক... ...বাকিটুকু পড়ুন
"ভুমিকম্পের জন্য গায়িকারা দায়ী"
আজ সকালে ৫.৬ মাত্রায় ভুমিকম্প হয়েছে। ভোর বেলা তখনও ঘুম থেকে ওঠিনি। অনুভব করলাম খাট সহ পুরা বিল্ডিং কাঁপছে। শুয়েই থাকলাম। ভুমিকম্পে মৃত্যু লেখা থাকলে কেউ বাঁচাতে পারবেনা। দৌড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমার জীবনের সবচাইতে রোমান্টিক ঘটনা
আমার জীবনটা রোমান্টিকতায় পরিপূর্ণ না। প্রেম যে জীবনে আসে নি, তা না, কিন্তু আমার কবিতা লেখালেখি থেকেই আপনারা আন্দাজ করে সত্যটা বুঝতে পেরেছেন যে, এ বাংলার ব্যর্থ প্রেমিকদের মতো আমিও... ...বাকিটুকু পড়ুন
ঈশ্বরী
সে একজন আছেন, উন্মাদিনী
ক্ষমতার মসনদে বসে চালান খেয়াল খুশী
ইচ্ছে হলেই নিয়ে নিতে পারেন প্রাণ
ইচ্ছে হলেই করতে পারেন জীবন দান।
তিনিই এক এবং অদ্বিতীয়
বিকল্প নেই তাঁর কোথাও,
সুতরাং আনুগত্য হও।
তাঁর শক্তির... ...বাকিটুকু পড়ুন