somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভ্যালেন্টাইনসঃ আমার দুঃখ ভর্তি প্রেমের সত্যি গল্প

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



জীবনে প্রেম পিরিতি আমি কম করি নাই । মানে এখনও কার্যক্রম চলছে আর কি । শেষ হয় নি । যাই হোক সেই সব কথা বার্তার দিকে না যাই । আজকে এই ভালোবাসা দিবসে আমার একটি দুঃখের গল্প বলি । গল্পটা এর আগেও একবার লিখেছিলাম কোন এক ব্লগ পোস্টে । কিন্তু সেটা আর খুজে পেলাম না । আবার নতুন করে আবার লিখছি । এবং এই গল্পের ভেতরে কোন মিথ্যা নেই । সব সত্যিই গল্প !

আগেই বলেছি যে প্রেমের সংখ্যা নেহত কম না । সেই স্কুল জীবন থেকে শুরু । তবে আশ্চর্যজনক ভাবে আমাকে সব সময় এই ভালোবাসা দিবসে একা একাই থাকতে হয়েছে । আজ পর্যন্ত কোন ভালোবাসা দিবসে আমি আমার কোন প্রেমিকাকে নিয়ে ঘুরতে বের হতে পারি নি । এটা একেবারে সত্যি কথা । প্রেম গুলো সব ভালোবাসা দিবসের পরে শুরু হয় আর পরের ভালোবাসা দিসব আসার আগেই শেষ হয়ে যায় । যদি শেষ নাও হয় অবস্থা এমন হয় যে দেখা করার কোন উপায় থাকে না । গত ১৫/১৬ বছর ধরে এই একই ঘটনা বারবার ঘটে আসছে । যাই হোক এই ঘটনা আমার স্কুল জীবনের । একেবারে প্রথম প্রেমের গল্প ।

মফস্বলের প্রেম গুলো যেমন হয় । আমার আর আমার প্রথম প্রেমিকার প্রেমটাও ঠিক তেমন ছিল । লুকিয়ে দেখা করা, লুকিয়ে চিঠি আদান প্রদান এভাবেই চলছিল । এবং যতই লুকোচরি চলুক এক সময় সেটা ঠিকই জানাজানি হয়ে যায়। আমাদেরটাও প্রেমটা শুরু হয়েছিলো ভালোবাসা দিবসের পরেই । এবং সেটা শেষ হয়েছিলো পরের ভালোবাসা দিবসের আগে । আরও ভাল করে বললে ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুর দিকে । সম্ভবত এক কি দুই তারিখের দিকে । কার দোষ ছিল, কার কারণে সম্পর্ক ভেঙ্গেছিলো, সেই দিকে না যাই ।

যা বলছিলাম । আমাদের মাঝে প্রেম শেষ হয়েছে । তবে সেটা তখনও মানুষ জানে না । মানে সবাই জানে যে সে তখনও আমার প্রেমিকাই আছে । যথারীতি ১৪ই ফেব্রুয়ারি এল । আমার সেদিন সন্ধ্যার সব ঘটনা বেশ ভাল করেই মনে আছে । আমি তখন প্রচুর মুভি দেখতাম । হিন্দি, চাইনিজ, ইংরেজি সব... । সেদিন একটা হিন্দি মুভি আমি দেখছিলাম সন্ধ্যা থেকে । মুভির নাম ছিল ''চাহাত এক ন্যাশা'' মুভিটার নাম আজও আমার মনে আছে স্পষ্ট । যাই হোক, মুভি অর্ধেক দেখা শেষ । এমন সময়ে আমার মা দরজায় ধাক্কা দিল । আমি মুভি পজ করে দরজা খুললাম । মা এসে বলল, এই এদিকে আয় তো । তোর সাথে কে জানি দেখা করতে এসেছে ।
তখন ঘড়িতে রাত বাজে আট কি সাড়ে আটটা । এই সময়ে আমাদের এলাকাতে কেউ কারো বাড়িতে যায় না দেখা করতে যদি না কোন ইমার্জেন্সী হয় !

আমি সিড়ির ঘরে যেতেই চোখ কপালে তুললাম । আমাদের গ্রামের মোড়ল গোছের একজন দাড়িয়ে রয়েছে সাথে একজন মানুষ । মানুষ টা হচ্ছে আমার সদ্য প্রাক্তন হওয়া প্রেমিকার মামা । আমার মনে এই প্রশ্ন জাগছে যে এই লোক এখানে কী করতেছে !

একটু পরে তার বক্তব্য শুনে যা বোঝা গেল তা হচ্ছে আমার প্রাক্তন প্রেমিকা বিকেলে বাইরে বের হয়েছে এবং এখনও বাসায় ফেরে নি । কোন বন্ধুর বাসায় নেই সে । আমার সদ্য প্রাক্তন বাসার লোকজন আমাকে চিনতো । তারা জানতোও যে আমার সাথে তাদের মেয়ের একটা কিছু চলছে । তারা এই ধরে নিয়েছে যে তাদের মেয়ে পালিয়েছে । আর আমি যেহেতু তার প্রেমিক তার মানে আমার সাথেই পালিয়েছে । এই জন্য মেয়ের খোজে আমার বাসায় এসেছে । অথচ আমি এর কিছুই জানি না ।

আমি বললাম যে আমি এসবের কিছুই জানি না । এবং তারা এই কথা বিশ্বাস করলেন না । বলে গেলেন যে তাদের মেয়ে খুজে দিতে । ঘন্টাখানেক পরে আমাদের জেলার তখনকার সব থেকে বড় গুন্ডা আমাদের বাসায় এসে হাজির । হুমকি দিয়ে বলল মেয়ে বের দিতে নয়তো খবর আছে ! আমি তো ভয়ে বাঁচি না । আমার আব্বা মুখ গম্ভীর করে আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে । কিছু বলতেও পারছে না । কারণ মেয়ে তো আমার সাথে পালায় নি ! আমার দোষ না । আমি অশান্তির ভেতরে রয়েছি । যতই বলি যে ব্রেক আপ হয়েছে, যখন শোনা যায় যে প্রেমিকা অন্য কারো সাথে পালিয়ে গেছে এটা হজম করা এতোটাও সহজ ব্যাপার ছিল না ।

পরে জানা গেল যে প্রাক্তন প্রেমিকা তার প্রাইভেট শিক্ষকের সাথে সে পালিয়েছে রাজশাহী !

এই হচ্ছে আমার আমার প্রথম ভালোবাসার প্রথম ভ্যালেন্টাইনের গল্প । সেই ভালোবাসা দিবসের শেষ সময় টুকু যে উৎকন্ঠা নিয়ে কেটে ছিল সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না । এবং সেই থেকে আমার ভ্যালেন্টাইনের কুফা লেগেছে যা এখনও কাটে নি । আদৌও কাটবে কিনা কে জানে !

যাই হোক আমার ভালোবাসা দিবস ভাল না যাক, আশা করি আপনাদের ভালোবাসা দিবস ভালো গিয়েছে । প্রিয় মানুষের সাথে ভালো সময় কেটেছে আরও একটু বিশেষ ভাবে ।

সবাইকে হ্যাপি ভ্যালেন্টাইনস ডে ! ভালোবাসা ছড়িয়ে পড়ুক সব খানে !


Photo by Min An from Pexels
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৩:২৪
২৬টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×