আমার একটা নিজেস্ব ওয়েবসাইট রয়েছে । খুব বেশি দিন হয় নি ব্লগ সাইটটা খুলেছি । ফ্রি ব্লগ সাইট নয়। একটু টাকা পয়সা খরচ করে খোলা হয়েছে । অনেক দিন ধরে ইচ্ছে ছিল নিজের একটা সাইট খোলার । নিজের নামে ডোমেইন থাকবে । অপু তানভীর ডট কম !
সামুতে আমার নিক খোলার গল্পটা বলি ! ঢাকাতে এসে প্রথম যখন নিজের একটা কম্পিউটার হল তারপর প্রবল দ্রুত গতির ইন্টারেনট সংযোগ লাগলো সেই আমলে তখন সবার মত আমার মনেও একটা ইচ্ছে জন্মালো যে ইন্টারনেট থেকে আয় কিভাবে করা যায় ! তখন নেট থেকে আয় সম্পর্কে আমার ধারনা একেবারে নেই । এখনও যে খুব একটা আছে তাও না । যাই হোক, আমার রুমে তখন একজন বড় ভাই থাকতো । সে আমাকে প্রথমে ধারণা দিলেন যে ব্লগ লিখে আয় করা যায় !
আমি জানতে চাইলাম কিভাবে আয় করা যায় । যে জানালো যে আগে ব্লগ খুলতে হবে । তারপর সেখানে নিজের লেখা দিতে হবে । আমার লেখা কত বার পড়া হবে, আমার ব্লগ কতবার ভিজিট হবে সেইটার উপরে আমাকে টাকা দেওয়া হবে । এছাড়া আমার ব্লগে এড প্রদর্শিত হলে সেটার ভিত্তিতেও আমাকে টাকা দেওয়া হবে । ব্যাস আর দেরি কেন ! লেখালেখি করেই যদি টাকা পয়সা আয় করা যায় তাহলে আর লাগে কি !
গুগলে সার্চ দিয়ে ফেললাম ব্লগ সাইট লিখে। গুগল সার্চ রেজাল্টের সবার উপরেই আসলো যে দ্য লার্জেস্ট বাংলা ব্লগ ! প্রথমে সাইটে ঢুকে কিছু সময় ঘুরে বেরালাম । কত ধরনের লেখা সেখানে । তারপর আর কিছু সময় রিসার্চ করে খুলে ফেললাম একটা নিক । যদিও পুরো ব্যাপারটা বুঝতে আরও কিছু সময় লাগলো । প্রথমে সামুতে আমি লিখতাম মাউস দিয়ে ! একবার ভাবুন তো ব্যাপারটা । সামুর যে ভার্চুয়্যাল কিবোর্ড রয়েছে সেটার উপরে মাউস দিয়ে ক্লিক করে করে লিখতাম ছোট ছোট পোস্ট ।
অবশ্য কিছু দিনের মাঝেই বুঝতে পেরেছিলাম যে যে উদ্দেশ্য নিয়ে আমি প্রথমে সামুতে একাউন্ট খুলেছিলাম এখানে সেসবের কিছুই হবে না । কিন্তু হু কেয়ার্স ! তখন প্রচুর পড়ার অভ্যাস ছিল আমার । চোখের সামনে যা পেতাম তাই গিলতাম । কিন্তু তখন সবে মাত্র ঢাকাতে এসেছি । বাসা থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমান টাকা আসতো কেবল । টিউশনি পাই নি তখনও । হাতে টাকা পয়সার অনেক টানাটানি । নিজের শহরে যখন ছিলাম তখন সেখানকার পাবলিক লাইব্রেরির সদস্য ছিলাম । তাই বই পড়তে খুব একটা টাকা পয়সা খরচ করতে হত না । ঢাকাতে এসে পাবলিক লাইব্রেরিতে গিয়েছিলাম একবার কিন্তু সেখানে কেন জানি মন বসে নি । আর কেমন যেন অস্বস্তি লাগতো । মানে হচ্ছে হাতে পড়ার মত বই পত্র নেই । সামুতে ঢুকে মনে হল আমি এক অজানা গুপ্তধনের সন্ধান পেলাম । কত কত লেখা । কত গল্প কত কিছু আছে পড়ার মত !
লেখা অন্য দিকে চলে যাচ্ছে । যাই হোক টাকা পয়সার দিকে আবার ফিরে আসি ! যাই হোক লেখা লেখি করে আসলেই কিন্তু আয় করা যায় । একটা চমৎকার সাইটের কথা বলি । নাম মিডিয়াম । সেখানে সেখানে প্বথিবীর বিখ্যাত সব লোকেরা লেখে । আর সেখানে আছে মিলিয়ের উপরে সাবস্ক্রাইবড পাঠক । আপনি সেখানে লিখবেন এবং আপনার লেখা যত জন সাবস্ক্রাইব পাঠক পড়বে, যত সময় আপনার লেখার উপরে তারা সময় ব্যয় করবে সেই অনুপাতে আপনার একাউন্টে টাকা জমা হবে । এছাড়া ওয়াটপ্যাড নামে একটা গল্প সাইট আছে । সেখানে পেইড স্টোরি নামে সেকশন আছে । আপনি গল্প লিখবেন অন্যেরা কয়েন খরচ করে সেই গল্প গুলো পড়বে । প্রতিলিপি নামে আরেকটা সাইট রয়েছে । ইন্ডিয়ান সাইট । সেটাও একটা গল্প লেখার সাইট । সেখানেও এই কয়েন ভিত্তিক অপশনটা সম্প্রতি চালু হয়েছে । লেখকদের সাপোর্টের জন্য ! পাঠকরা কয়েন খচর করে পছন্দের লেখকদের লেখা পড়ছে !
এখন এই শিরোনাম আমি কেন দিলাম । সামু কর্তৃপক্ষ আমাকে কেন টাকা বিকাশ করবে ? কারণ টা বলি ।
উপরে যে বললাম আমার একটা নিজেস্ব সাইট রয়েছে । সেই সাথে গুড এড চালু করা আছে । গুগল এড সম্পর্কে আশা করি সবার ধারণা আছে । এই যে আপনার সামুতেই লেখার আশে পাশে যে এড গুলো দেখতে পাচ্ছে এটা এসেছে গুগল এডের কারণে । আমার সাইটেও একই ভাবে এড চালু করা আছে । অর্থ্যাৎ গুগল এই এড দেখাবে আমার সাইটে তার বিপরীতে সে আমাকে কিছু টাকা দিবে । আমার সাইটটা এই পর্যন্ত দুই লাখ বারের বেশি ভিজিট হয়েছে । গতদিন একাউন্ট চেক করে দেখলাম যে সেখানে ৪০ ডলারের কিছু বেশি টাকা এসে জমা হয়েছে । যদিও এই টাকার জমা হওয়ার ব্যাপারের সাথে কেবল ভিজিট নয়, এড ক্লিকের একটা ব্যাপার জড়িতো । তবে রাফ হিসাবের জন্য এটা ধরাই যায় । গতকাল রাতে দেখলাম সামুতে আমার ব্লগ নিকটা মোট ৩০ লক্ষ ভিজিট ক্রস করেছে । এখন সেই রাফ হিসাব টা যদি করি তাহলে ৩০ লক্ষ ভিজিটের জন্য সামু মোটামুটি ১২০০ ডলার আয় করেছে গুগল এড থেকে আমার নিক ভিজিট থেকে । আগেই বলি এটা কেবলই রাফ হিসাব । বেশিও হতে পারে আবার কমও হতে পারে । তবে আমার মতে বেশিই হবে । আমার সাইটের রিচ কম । কেবল কিছু পরিচিত মানুষই সেটা নিয়মিত ভিজিট করে, অন্য দিকে সামুর রিচ অনেক বেশি । নানা রকম মানুষ ভিজিট করতে, এড ক্লিক করছে ! এই যে এতো টাকা সামু আমাকে দিয়ে আয় করলো এটা থেকে কিছু টাকা পয়সা কি সামু আমাকে দিতে পারে না ?
বলেন, পারে কিনা !
এখন এই লেখার ফলে সামু কর্তৃপক্ষ এসে বলবে, টাকা যে চাচ্ছো, তা সামু চালাতে যে এতো গুলো টাকা লাগে সেটা কে দিবে শুনি ?
ওয়েল, বাঙালির স্বভাব তো জানেনই । তারা কেবল সুবিধা নিয়ে রাজি, দায়িত্ব নিতে নয় ! আমিও তাই চোখ বন্ধ করে রাখলাম । এই সব আমি শুনতে পাই নি ।
বিকাশ নম্বর কার কাছে পাঠাবো সামু কর্তপক্ষকে জলদি সেটা মেইল দিয়ে জানানো অনুরোধ রইলো । রকেট অথবা ব্যাংক একাউন্ট নম্বর চাইলে সেটাও দেওয়া যাবে । তবে নগদে আমি এখনও একাউন্ট খুলি নাই ।
অনেকে আবার ইদানীং সব বিষয় নিয়ে সিরিয়াস হয়ে আছে । মানুষকে জ্ঞান দিয়ে বেড়াচ্ছে কিভাবে ব্লগিং করতে হয় ! কার ব্লগিং হচ্ছে কারটা হচ্ছে না । দয়া করে এই পোস্টটা আবার কেউ সিরিয়াসলি যেন না নেয় ! তবে হ্যা কর্তৃপক্ষ যেন টাকা বিকাশ করার ব্যাপারটা অবশ্যই সিরিয়াসলি নেয় !
Picture Source
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৪৫