তখন সবে মাত্র কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হইছে । অনলাইনে সবার মনে আনন্দে। তখন মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা খুব শেয়ার হচ্ছে । এমন সময়ে ফেসবুকে একটা লেখা শেয়ার হল খুব । আমি নিজেও শেয়ার দিলাম । লেখাটার বিষয় বস্তু হচ্ছে একজন রাজাকারের ছেলে তার বাবাকে ত্যাগ করেছে । লেখা পড়ে সবাই ছেলেকে খুব বাহবা দিচ্ছে । আমিও দিলাম । কিন্তু অনালইনে কাউকে সহজে বিশ্বাস করতে নেই । মানুষজন কমন্টে জানতে চাইলো গল্পের সত্যতা । সে কোথায় থাকে এইসব । কিন্তু সেই পাবলিক সহজে জবাব দেয় না । উত্তর দেয় ঘুরায়ে প্যাঁচায়ে । একদিন পরে বের হয়ে আসলো লেখাটা আসলে বানানো । সত্য না । অনলাইনের ইতিহাসে আমি মানুষকে সহজে কখনই বিশ্বাস করি না । একজন একটা কথা বলল তার মানেই সেটা সত্য সেটা ধরে নেওয়ার কোন কারণ নেই ।
কাউকে বাস্তবে দেখলাম না, জানলাম না । কি করে কোথায় থাকে কিছুই জানলাম না । সে এসে বলল যে আমি মুক্তিযোদ্ধা আর অমনি বিশ্বাস করে নিতে হবে যে সে মুক্তিযোদ্ধা? এই বিশ্বাস স্থাপন কি কোন ধর্মের পর্যায়ে পড়ে? না বিশ্বাস করলে আমি হয়ে গেলাম মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি? এই নিয়মটা বানাইলো কেডা? আসমান থেকে আইছে?
অনলাইনে কাউকে অবিশ্বাস করার অনেক কারণ আছে। যে মানুষ নিজের পরিচয় লুকিয়ে অনলাইলে চলাচল করে তাকে বিশ্বাস করার কোন কারণ দেখি না । অনলাইনে অনেকে নানান কারণে নিজের পরিচয় লুকিয়ে থাকে । নিজের নিজের কারণ থাকতে পারে । কিন্তু একজন যখন নিজের বস পরিচয় লুকিয়ে মানুষকে কেবল নিজে মুক্তিযোদ্ধা এই পরিচয় জানাতে সদা সচেষ্ট হয় সেই মানুষকে বিশ্বাস করার তো প্রশ্নই আসে না । আসে কি?
এটার থেকেও সব থেকে বড় কথা যে কেউ বিশ্বাস করলো কিংবা না করলো তাতে তো কারো কিছু যাওয়া আসার কথাও না । তাই না ? একটা মানুষ যখন সত্যিই মুক্তিযুদ্ধ করেছে দেশের জন্য নিজের জীবন বিপন্ন করেছে তখন কেউ যদি সেটা বিশ্বাস না করে তাতে কি তার কিছু যায় আসার কথা? মোটেও না । কিন্তু যখন কেউ এতে খুব বেশি প্রতিক্রিয়া দেখায় তখন তো মনে সন্দেহ জাগবেই । না না, মোটেই আমি কোন প্রমাণ চাচ্ছি না । বলছি না কেউ প্রমাণ করুক । কারো প্রমাণের দরকার নেই তো । কথা হচ্ছে কেন কেউ এতো হাউখাউ করবে? সত্যের কোন সাপোর্ট দরকার হয় না । সাপোর্ট দরকার হয় মিথ্যার । মিথ্যাকে সাপোর্ট করা লাগে । কেউ যখ সত্যিই মুক্তিযুদ্ধ করেছে তার অন্য কারো কোন কথায় কান দেওয়ার কোন দরকার নেই । কাউকে নালিশ করারও দরকার নেই ।
যখন শুনি সামনের মানুষটা মুক্তিযোদ্ধা তখন আপনা আপনিই শ্রদ্ধা জাগে মনে । কিন্তু কোন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা যখন আসল মুক্তিযোদ্ধার মত সম্মান পায় তখন আমার মেজাজ বড় খারাপ হয় । আশে পাশে কত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে তার কোন হিসাব নেই । ভীরের মধ্যে আপনি যদি কোন চোরকে গালি দেন দেখবেন কেবল মাত্র যে চোর তার গায়েই গালিটা লাগবে । ঘুষখোরকে গালি দিলে দেখবেন কেবল ঘুষখোরই নাখুশি হবে । তেমনি ভাবে আপনি যখন কেবলল ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাকে কিছু বলবেন কেবল মাত্র যে যে ভুয়া তারই গায়ে লাগবে । অন্য কারো গায়ে লাগবে না । কারণ আসল যোদ্ধরা ভুয়া নন। তারা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন । তারা জানেন তারা কি ! তাদের কারো কাছে প্রমাণের কিছু নেই । কারা কি বলল সেটাতেও তাদের কিছু যায় আসে না ।
নিচে দেখুন কয়েকটি খবর । সংবাদ পত্র থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া ।
এরা হচ্ছে বাস্তবের মানুষ । তাই তাদের ভেতরে কত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা দেখেন । এখন আমি যদি অনলাইনাই কোন অজ্ঞাত ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধা হওয়া নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করি তাহলে আমি হয়ে গেলাম মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষ শক্তি? আপনাদের কি হাটুতে বুদ্ধি?
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৫১