somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে দুর্ভাগ্যের ঘটনা গুলো আমার সাথে সব সময় ঘটে ....

০৮ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা ভাগ্য বিশ্বাস করেন না । তাদের কাছে নিজের পরিশ্রম দিয়ে সব কিছু পরিবর্তন করা সম্ভব বলে মনে করেন । তবে আমি খুব ভাগ্য বিশ্বাস করি । বিশ্বাস করি যে সব কিছু আসলে পরিশ্রম দিয়ে অর্জন করা সম্ভব না । পরিশ্রমের সাথে সাথে আপনার কপালে আসলে সেটা থাকতেও হয় । যাই হোক, সেটা নিয়ে আজকে কথা না বলি । আজকে কথা বলি দুর্ভাগ্য নিয়ে । যেহেতু ভাগ্যে আমার বিশ্বাস আছে তাই দুর্ভাগ্যেও আমার বিশ্বাস আছে । আজকে নিজের সাথে নিয়মিত ভাবে ঘটে যাওয়া দুর্ভাগ্যের কয়েকটা ঘটনা শেয়ার করি ।

১.
ঢাকাতে যারা ব্যাচেলর হিসাবে থাকেন তাদের ভেতরে খুব কমই আছেন যারা আসলে গ্লাসে পানি পান করেন । তাদের সবারই একটা করে পানির বোতল থাকে । সেখান থেকে সরাসরিই পানি পান করা হয় । পানি পান করা শেষ করে পানির বোতলের মুখ বা ছিপি আটকে রাখা হয় । এটাই স্বাভাবিক ঘটনা । কিন্তু মাঝে মাঝে কি হয়, বোতলের মুখটা আটকানো হয় না । কিংবা হালকা করে রাখা হয় । আমি বেশ সাবধানী মানুষ । চলটে ফিরতে বেশ সাবধানেই চলি । ঘরের ভেতরে যখন চলি তখন খুবই আমার পায়ের আঘাতে কিছু পড়ে যায় । এখন যখন পানির বোতলের মুখটা আটকানো থাকে শক্ত করে তখন কখনই পায়ের আঘাতে পড়ে না । আমার যতদুর মনে পড়ে কোন দিন পড়ে নি অসাবধানতা বশত । কিন্তু ... জ্বী ঠিকই ধরেছেন যখনই পানির বোতলের মুখটা না লাগাই কিংবা হালকা করে লাগানো থাকে তখনই পানির বোতলটা পড়ে যায় এবং পুরো ফ্লোরে পানি ভেসে একাকার হয়ে যায় । একবার হলে হয়তো আমি তেমন কিছু মনে করতাম না । এই ঘটনা আমার সাথে কম করে হলেও ছয় থেকে সাতবার হয়েছে ।

২.
এবার আসি রাস্তায় চলা নিয়ে । আগে যখন বাসে চড়তাম তখন এই ঘটনা আমার সাথে ঘটতো প্রায়ই । আমি যেখানে থাকি সেখান থেকে বাসে ওঠার স্থানে যেতে মিনিট ৬/৭ হাটতে হয় । একটা লম্বা গলি আছে । সেটার মাথায় এলে মুল রাস্তাটার একটা অংশ দেখা যায় । এখন এই আসার প্রায় প্রতিদিন আমার সাথে এই ঘটনা ঘটতো যে যখনই আমি গলির এই মাথায় এসে হাজির হতাম তখনই দেখা যেত রাস্তার উপর দিয়ে আমার নির্ধারিত বাসটা চলে যাচ্ছে । চোখের সামনে দিয়ে । প্রায় প্রতিটা দিন । আমাকে লোভ দেখিয়ে বাস চলে গেছে আর যেন আমাকে বলে যাচ্ছে, দেখ বেটা তোকে নিলাম না !

৩.
বাসের সাথে ঘটে যাওয়ার আরেকটা দুর্ভাগ্যের ঘটনা । এটা মনে হয় আপনাদের অনেকের সাথেই হয় । বাসে যখন উঠি, প্রায়ই সিট পাওয়া যায় না । তখন আমরা সিটের পাশে দাড়িয়ে থাকি । এখন এটা আমার সাথে আজীবন হয়েছে । আমি ঠিক যে সিটটার কাছে দাড়িয়ে থাকি সেই সিটের মালিক যখন আমার আগে উঠে যান না । আমার সামনের আগের পিছের সব সিট থেকে যাত্রী উঠে যান এবং অন্য কেউ বসার সুযোগ পায় । এই ভাবে যদি আমি একটু সরে যাই কিংবা অন্য সিটের পাশে গিয়ে দাড়াই তাহলে একটু আগে যে সিটের কাছে আমি দাড়িয়ে ছিলাম সেই সিটের যাত্রী উঠে নেমে যাবে এবং যথারীতি আমি বসতে পারবো না । ব্যাপারটা এমনই একটা চরম আকার ধারণ করেছিলো যে আমি আর কখনই বাসে সিটের জন্য যেতাম না । এমন একটা মনভাব নিয়ে বাসে উঠটাম যে বাসে সিটে আমি বসবই না । দাড়িয়েই যাবো !

৪.
ইলেক্ট্রনিক্স ভাগ্য আমার বরাবরই খারাপ । যে কোন ইলেক্ট্রনিক্স পন্য আমি যখন কিনবো তখন শতকরা ৮০ ভাগ সম্ভবনা থাকবে যে সেই জিনিসটাতে কোন না কোন সমস্যা থাকবেই । এমন প্রতিটা বারই আমার সাথে হয়ে থাকে । দেখা যাবে ১০০০ টা পন্যের ভেতরে এক পন্য একটু ডিফেক্টিভ তৈরি হয়েছে এবং ঐ একটা পন্যই আমার কপালে জুটবে !

৫.
বাসের পরে এবার আসি সাইকেলের কথায় । বাসে এখন মোটামুটি আর উঠি না যদি না দুরুত্বটা অনেক বেশি হয় । করোনার আগে থেকেই আমার নিয়মিত বাহন হচ্ছে সাইকেল । এই সাইকেলে চলাচলের ফলে বাসের জন্য কিংবা সিটের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না । কিন্তু এখন অপেক্ষা করতে হয় সিগনালের জন্য । এই ব্যাপারটা আমার সাথে সব সময়ই হয় । আমি যখন সেই দিকে যাবো ঠিক সেই সেই দিকে সিগনাল পড়বে । কিন্তু ব্যাপারটা ঠিক এমন না যে সিগনাল টা অনেক আগে থেকেই পড়ে আছে । আমি দেখতে পাচ্ছি যে সিগনাল ক্লিয়ার । আমার সামনে দিয়ে গাড়ি গুলো পার হয়ে যাচ্ছে । একদম আমি যেই সময়ে না সিগনালে হাজির হব ঠিক সেই সময়ে ট্রাফিক সেটা বন্ধ করে দেবে । এই ব্যাপারটা সব থেকে বেশি ঘটে রাতের বেলা ফেরার সময় । আমি আড়ং হয়ে ২৭ নম্বর দিয়ে বাসায় আসি প্রায়ই । আড়ং পার হয়ে ২৭ নম্বরের দিকে যাওয়ার সময় দেখতে পাই যে আমার চোখের সামনে দিয়ে বাইক গাড়ি গুলো সব চলে যাচ্ছে । একদম আমি যখন কাছে গিয়ে হাজির হব ঠিক সেই সময়ে ট্রাফিক সিগনাল দিয়ে আমাকে আটকে দিবে ।

৬.
এই রাস্তার আরেকটা মজার ব্যাপার হয় প্রায় । মাঝে মাঝে আমার বাসায় ফিরতে ফিরতে ফিরতে প্রায় এগারোটা বেজে যায় । ২৭ নম্বরের এই রাস্তায় দশটা কি সাড়ে দশটার পরে আর ট্রাফিক পুলিশ থাকে না । তখন হয় কি গাড়ি গুলো যে যার ইচ্ছে মত চলাচল করে । এই রাতে এই সময়ে ট্রাক চলাচল করে । যখন ট্রাফিক পুলিশ চলে যায় তখন একদিকে গাড়ি যখন চলে তখন চলেই । থামে না । তো আমার বাসা ফেরার দুইটা রুট আছে । একটা হচ্ছে আড়ং ফার্মগেট হয়ে আড়ং দিয়ে ২৭ নম্বর কিংবা বসুন্ধরার সামনে দিয়ে কলাবান হয়ে ২৭ নম্বর ! আমি দুই রুটই ব্যবহার করি । এখন ঘটনা ঘটে হচ্ছে আমি যেদিন যেই রুট দিয়েই যাই না কেন অন্য রুটটা বেশি ফাঁকা থাকে । ধরুন রাত এগারোটা বেজে গেছে । আমি আজকে আসছি মানিক মিয়া এভিনিউ আড়ং দিয়ে । এখন ২৭ নম্বরে এসে দেখবো যে কলা বাগান হয়ে গাড়ির সারি । সেটা যাচ্ছে তো যাচ্ছেই আর থামছে না । আমাকে এই ২৭ নম্বরে আটকে থাকতে হচ্ছে । ঠিক একই ভাবে ধরুন আমি এসেছি কলাবাগান দিয়ে । সেদিন দেখা যাবে কলাবাগানের দিয়ে মিরপুর রোডে জ্যাম আটকে আছে সেই কলাবাগান সিগনাল থেকেই । ২৭ নম্বর দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে তো যাচ্ছেই কিংবা আড়ংয়ের এখানে জ্যাম আটকে আছে । এটা আমার সাথে প্রায়ই প্রতিদিনই ঘটে ।

৭.
আমি খাওয়া দাওয়ার সময় বেশ ধীর স্থির ভাবে খাই । তবে সমস্যা হচ্ছে যখন আমি সাদা বা সাদা ধরণের টিশার্ট কিংবা শার্ট পরি এবং যখন খাওয়া দাওয়া করতে যাই তখনই এই ঘটনা ঘটে । দেখা ডাল দিয়ে ভাত খাচ্ছি । মাছ কিংবা মাংশের টুকরোটা হাত থেকে টুপ করে পড়বে ডালের ভেতরে । আমি সব সময় ডাল পাতে একটু বেশি নিয়ে খাই । টুপ করে পড়বে এবং সেখান থেকে ডালের একটা অংশ আমার সাদা টিশার্টের উপরে এসে পড়বে । এটা আমার সাথে হবেই । যতবার আমি সাদা জিনিস পরে খেতে গিয়েছি ততবার কোন না কোন ভাবে এমন হয়েছে । এভাবে কত টিশার্ট যে আমার বাতিল হয়েছে তার কোন ঠিক নেই । তারপর থেকে সাদা কিছু পড়ে খাওয়া দাওয়া করা একদম বাদ দিয়েছি । এখন এই ঘটনা আমার সাথে একদমই ঘটা না । এখন মাংসের টুকটো ডালের ভেতরে পড়লেও সেটা ছিটকে আসে না !

আপাতত এই ঘটনা গুলো মনে পড়লো । আরও অনেক কিছুই ঘটে নিয়মিত । আপনাদের সাথে নিশ্চিত ভাবেই এমন ঘটে সব সময় ।


pic source
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:২৫
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×