সবুজ অনেক দিনপরে ছুটিতে গিয়েছিলো গ্রামের বাড়িতে । দিলরুবা অনেক দিন ধরে বাসায় যেতে বলছিলো । সময় সুযোগ না করার জন্য যাওয়া হচ্ছিলো না । যদিও এখন সবুজের আর আগের মত দিলরুবার প্রতি টান নেই । তার সকল টান এখন ঢাকার জেসমিনের প্রতি মেয়েটা দিন দিন সবজের প্রতি আরও একটু দুর্বল হয়ে উঠছে সেটা সবুজ খুব ভাল করেই বুঝতে পারছে । তবে দিলরুবাকেও সে একেবারে ভুলে যেতে চায় না । কলেজ জীবনের তীব্র প্রেমহীনতার সময় এই দিলরুবাই তার দিল ভরিয়ে রেখেছিলো । তাকে এই ভাবে ভুলে যাওয়াটা অন্যায় হবে । তবে ইদানীং মেয়েটা বিয়ের কথা খুব বলছে । বারবার বলছে যে বাসা থেকে ওর জন্য ছেলে দেখা শুরু হয়েছে । সবুজও তো এই চায় । বাসা থেকে যেন দিলরুবার বিয়েটা হয়ে যায় । তাহলে দিলরুবা আর ওকে খুব একটা দোষ দিতে পারবে না । ততদিন চলুক এভাবে। এবারের গ্রামে ভ্রমনটা খুব একটা খারাপ যায় নি । দিলরুবার সাথে সময় ভাল গিয়েছে । কিছু সুখ স্মৃতি নিয়ে সে ঢাকাতে ফিরে আসছে ।
হঠাৎ বাস থেমে গেল । একটু পরেই বাসে উঠে এল কয়েকজন লোক । তারা কাউকে কিছু না বলেই যাত্রীদের ব্যাগ পরীক্ষা করতে শুরু করলো । সবুজের ব্যাগও চেক করলো তারা । ব্যাগ চেক করা শেষ করে একজন বলে উঠলো, ফোন বের করেন।
সবুজ যেন আকাশ থেকে পড়লো । বলল, ফোন ? ফোন কেন?
-যা বলছি করেন । ফোন বের করেন।
সবুজ ভয়ে ভয়ে পকেট থেকে ফোন বের করলো । ফোনটা হাতে নিয়ে সবুজকে বাধ্য করলো ফোনের লক খুলে দিতে । তারপর আস্তে আস্তে ফোনের ভেতরে দেখতে শুরু করলো । সবুজ খানিকটা বলার চেষ্টা করলো যে কী করছেন, এভাবে আমার ফোন তো আপনারা দেখতে পারেন না । কিন্তু কিছু বলার সাহাস পেল না ।
গ্যালারী চেক করতে গিয়েই প্রথম ছবির দিকে তাকিয়েই লোকটা বলল, এটা কে ? কেমন যেন চেনা চেনা মনে হচ্ছে ?
ছবিটা দেখলো সবুজ। দিলরুবার ছবি । সবুজ বলল, স্যার এটা আমার প্রেমিকার ছবি ।
আরও কয়েকটা ছবি দেখলো লোকটা । তারপর বলল, বাহ গ্যালারী ভর্তি যে প্রেমিকার ছবি । তা আর কারো ছবি নাই ?
বলতে বলতে থেমে গেল । কারণ তার সামনে এখন চলে এসেছে জেসমিনের ছবি ।
-এটা কার ছবি?
-স্যার এটাও আমার প্রেমিকার ছবি ।
-তোর প্রেমিকা কয়টা?
-স্যার বেশি না মাত্র দুইটা । তবে আমি রাখতে চাই নি । ওরা জোর করে আমাকে ভালোবাসে । বিশ্বাস করেন স্যার !
-তাই না? চল নিচে দুই দুই প্রেমিকার নিয়ে ঘোরোস । এতো বড় দুর্নীতি ! মানুষের মন নিয়ে খেলা করা !
সবুজকে বাস থেকে নামিয়ে নেওয়া হল ! তারপর তাকে তোলা হলে জীপে । এখান থেকে তাকে চালান করে দেওয়া হবে ! কোন অপকর্ম সহ্য করা হবে না।
আপনাদের কী মনে হয় কাজটা ঠিক হয়ে ?
কাহিনী বানানো হলেও ঘটনা কিন্তু ঠিকই আছে । যদিও অনেকে বলছে এভাবে যে কারো ফোন চেক করা মোটেই সভ্য দেশের ঘটনা হতে পারে না । মানুষের ফোন অবশ্যই গোপনীয় একটা ব্যাপার । এখানে হস্তক্ষেপের অধিকার কারো নেই । আমি বলি অবশ্যই আছে । উন্নয়নের পক্ষে থাকার জন্য যে কোন কাজই করা যায় । মানুষের ফোনের ভেতরে যে ভয়ংকর অস্ত্র জমা থাকে তা অবশ্যই খোজার অধিকার থাকা উচিৎ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ।
তবে এখন থেকে ফোন নিয়ে বাইরে বের হওয়ার আগে অবশ্যই ফোনের ভেতরে যত কিছু উল্টা পাল্টা জিনিস আছে সব মুছে ফেলবেন । এমন কি সেসব পিসির ভেতরেও রাখবেন না । যেখানে ফোনই চেক করা হচ্ছে যেখানে আপনার ল্যাপটপ যে চেক করা হবে না সেটার নিশ্চয়তা কি? ফোন রাখবেন একেবারে পরিস্কার এবং পরিছন্ন । কোন আজে বাজে ছবি ভিডিও সেখানে রাখবেন না । প্রেমিকার ছবিও না । এমন কি বউয়ের ছবিও না ।
তবে অবশ্যই সরকারের উন্নয়ন মুল ভিডিও রাখতে পারেন । এটা একটা ভাল জিনিস রাখার । সময় থাকতেই সাবধান হয়ে যান । ভাল হয়ে যান এবং উন্নয়নের পক্ষে আসুন ।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ২:২৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


