somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাবার বাড়িই আসল বাড়ি

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের দেশে একটা কথা প্রচলিত আছে যে শ্বশুর বাড়ি মধুর হাড়ি । তবে নিজের বাপের বাড়ির মত সুখ শান্তি বোধকরি আর কোথাও নেই । এমন কি সেটা নিজের বাড়িতেও নেই । নিজের বাড়ির বেলাতে হয়তো অনেকের মনে হবে যে নিজের বাড়ির থেকে বাপের বাড়ি শান্তি বেশি হয় কিভাবে ! ব্যাপারটা অন্য রকম ভাবে ভাবুন । আপনি যখন নিজের বাড়ি থাকবেন, তখন সেই বাড়ির সব কিছুর দায়িত্ব আসলে আপনার । সব কিছু আপনাকে করতে হবে । সকল ঝামেলাও আসলে আপনাকে সামলাতে হবে । অন্য দিকে বাপের বাড়ি হল এমন জায়গা যেখানে আপনি কোন প্রকার চিন্তা ভাবনা ছাড়াই সময় পার করে দিতে পারবেন । কারণ আপনার মাথার উপর আপনার বাবা রয়েছে । সব কিছু দেখা শোনা করবে সে ! আমি এখনও সৌভাগ্যবান যে এই আরাম টুকু আমি এখনও উপভোগ করি ।

ঢাকাতে আমি রয়েছে প্রায় ১৫ বছর । ঢাকাতে আমি যখন থাকি তখন সব কাজ কর্ম আমার নিজেকে করতে হয় । এমন কি গোসলের পরে আমার হাফপ্যান্ট পর্যন্ত আমি ধুই । খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে কেনা কাটা সব কিছু আমাকেই করতে হয় । সেই জীবনের প্যারা অবশ্যই আছে । কিন্তু সেই সাথে আছে অপার স্বাধীনতা । আমি বলা চলা যখন যা ইচ্ছে তাই করতে পারি । যা ইচ্ছে খেতে পারি, চাইলেই যেদিক সেদিক চলে যেতে পারি । সকালের খাবার দুপুরে দুপুরের গোসল রাত বারোটাতেও করতে পারি । রাত বারোটা পর্যন্ত বাড়ির বাইরেও থাকতে পারি । কেউ কোন প্রশ্ন করার নেই । মোটামুটি এই জীবনেই আবি অভ্যস্ত । মানুষ আমাকে কিছু করতে বলবে কিংবা কারো কথা শুনে জীবন যাপন করতে হবে সেটা আমার ঠিক পছন্দ না । তবে অনেকে আবার এই টুকু পড়েই ভাবতে পারেন যে হয়তো খুব উৎশৃঙ্খল জীবন যাপন করি আমি । করতে পারি তার মানে এই যে করি । আমি সারা জীবন নিয়ম মেনে চলা মানুষ । কিন্তু সেই সাথে এটাও আমি খুব ভাল করে জানি যে চাইলেই আমি এই নিয়ম গুলো ভাঙ্গতে পারি । এটাই আমার স্বাধীনতা । তবে বাসায় আসলে সেই স্বাধীনতা খানিকটা হলেও খর্ব হয়ে যায় ।

ছুটির ভেতরেও সময় করে ঘুম থেকে উঠতে হচ্ছে সময় করে খেতে হচ্ছে । যদিও এখানে এই খাওয়া ছাড়া আমার আপাতত আর কোন কাজ নেই । ঘুম থেকে উঠি, খাই, তারপর আবার বিছানায় যাই , বই পড়ি নয়তো মুভি দেখি তারপর আবারও খাই । তারপর গোসল করি তারপর দুপুরের খাবার খাই । তারপর আবারও বিছানাতে যাই তারপর আবারও খাই এভাবেই আসলে দিন চলে যাচ্ছে । শেষ কবে এভাবে এতো সুখে দিন কাটিয়েছিলাম মনে করতে পারছি না । গতবার যখন বাসায় এসেছিলাম তখন আমার শরীরে একটু মাংস জমেছিলো তবে এবার কেন জানি আমার ওজন দুই কেজি কমে গেছে । আমার মায়ের ধারণা হয়েছে যে ঢাকায় আমি ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করি না । তাই এই কদিনে কেবল খাইয়ে খাইয়ে আমার শরীরে কিছু মাংস যুক্ত করার চেষ্টায় আছে ।

প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর সময় আমি এক অদ্ভুত নিস্তব্ধতা অনুভব করি । ঘরবাড়ি একেবারে অন্ধকার হয়ে যায় । ঢাকাতে তো কখনই পরিবেশ নিস্তব্ধ হয় না তবে এখানে হয় । রাত গভীর হলে এখানে কয়েক দিন আমি শেয়ালের ডাক শুনেছি । আগে আমাদের বাড়ির আশে পাশে অনেক বাঁশ ঝাড় আর ঝোড় জঙ্গল ছিল । সন্ধ্যা হলেই সেখান থেকে শেয়ালের ডাক ভেসে আসতো । এখন অবশ্য আশে পাশে অনেক বাড়িঘর হয়ে গেছে । সব কিছু পরিস্কার হয়ে উঠেছে । তারপরেও এখনও মাঝে মাঝে শেয়ালের ডাক শোনা যাচ্ছে । আরও একটা ব্যাপার একদম বদলায় নি সেটা হচ্ছে ট্রেন যাওয়ার শব্দ । আমাদের বাড়ির পাশ দিয়ে ট্রেন লাইন যায় নি । অনেক টা দুর দিয়েই গেছে । তবে রাত যখন গভীর হয় তখন সেই দুর থেকেই ট্রেন যাওয়ার শব্দ হুইসেলের আওয়াজটা শোনা যেত । এখনও সেটা যায় । প্রতিরাতেই এই শব্দটা শুনছি ।

ঢাকা থেকে বাসায় আসার সময় ভেবেছিলাম যে কাজ কর্ম কোন কিছু নেই এই কদিন খুব ব্লগ পোস্ট লিখবো কিন্তু এখানে এসে এই ব্লগের কথা ঠিক মনেই পড়ছে না । সারাদিন শুয়ে বসে থাকলেও বাসায় লোকজন রয়েছে । তারা আসছে নানান কথা বার্তা বলছে, আমি বই পড়তে পারছি, মুভি দেখছি অনেক । এই কদিনে কত গুলো মুভি আর টিভি সিরিজ দেখেছি হিসাব নেই । এখনও সেটাই দেখা চলছে । চলবে সামনের আরও কয়েকটা দিন । তবে একটা ব্যাপার আমি একটু অবাকই হচ্ছি। ঢাকাতে থাকা কালিন সময় সপ্তাহের ছুটি একদিন পার হয়ে দুইদিনের দিন আমার মাথা গরম হয়ে যেত বসে থাকতে থাকতে । কিন্তু নিজের বাড়িতে এসে এই একটা সপ্তাহ একেবারে শুয়ে বসে কাটিয়ে দিলাম আমার অন্য কিছু মনে হচ্ছে না । বরং খুবই শান্তি শান্তি লাগছে । সম্ভবত নিজের পরিবারের সাথে থাকার কারণেই ।


আশা করি আপনাদের সময়ও আপনাদের পরিবারের মানুষ গুলোর সাথে ভাল কাটছে ।
হ্যাপি হলিডে ! এবং সবাইকে বড়দিনের শুভেচ্ছা ।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৬
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×