
যারা বিকাশের মাধ্যমে লেনদেন করেন, কিংবা যাদের বিকাশ একাউন্ট আছে তারা আশা করি করি বিকাশের এই স্ক্যাম সম্পর্কে জানেন । অন্তত আপনার কাছে একবার হলেও এই চক্রের একটা ফোন আপনার কাছে এসেছে । ফোন দিয়ে দিয়ে তারা জানিয়েছে যে আপনার বিকাশ একাউন্টটি লক হয়ে গিয়েছে কিংবা যাবে । এখন তারা আবারও আনলক করে দিবে । পিন কিংবা ওটিপি নম্বর চাইবে - এমন কিছু ! না হয়ে থাকলে নিশ্চিত থাকতে পারেন যে সামনের কোন না কোন দিন এমন একটা ফোন এসে হাজির হবে ।
আজকে দুপুরের দিকে আমার বিকাশে কিছু টাকা রিলোড করেছিলাম গ্রামের এক দোকান থেকে । একটু আগে আমার আমার নম্বরে ফোন এসে হাজির । ফোন দিয়ে প্রথমে একজন জানালো যে সে আমাদের গ্রামের মোড়ের মাথায় এক দোকানদার । আমার পরে এক মহিলাকে সে টাকা পাঠিয়েছে ভুল করে কিন্তু এখন সেই মহিলার নামে রিপোর্ট করতে গিয়ে ভুল করে আমার নম্বরে রিপোর্ট চলে গেছে । এখন আমার একাউন্ট লক হয়ে আছে । আমি এই একাউন্ট থেকে কোন টাকা উঠাতে পারবো না । তবে এখন সে অফিসে ফোন দিয়ে জানিয়ে দিবে যে আমার একাউন্ট টা যেন চালু করে দেয় । অফিস থেকে ফোন এলে আমি যেন বলি যে দোকানদার আমার পরিচিত ।
ফোন রাখার তিন মিনিটের মাথায় ফোন এসে হাজির । সে জানালো সে বিকাশ কাস্টমার কেয়ার থেকে বলছে । তার নাম মামুন । একটু আগে আমার সাথে কোন দোকানদারের কথা হয়েছে কিনা !
নিচে ফোন নম্বর দুটো দিলাম ।

তারপর সে নানান কথা বার্তা বলতে লাগলো । আমিও তার সাথে নানান প্যাচাল পারতে লাগলাম । এক পর্যায়ে আমি বললাম যে আপনাকে আর কষ্ট করতে হবে না । আমিই বরং অফিশিয়াল ফোন নম্বরে ফোন করে একাউন্টটি চালু করে নিচ্ছি । আমি জানতাম যখনই এমন হয়, প্রতারক চক্র যখন বুঝে ফেলে যে তাদের জোচ্চুরী ধরা পড়ে গেছে তখনই সে গালি দিয়ে ফোন রেখে দেয় । আমি তাই তখনই লাইন কেটে দিলাম ।
কিছু কিছু চক্র আছে যারা এই রকম বিকাশের দোকানের আশে পাশে ঘোরাফেরা করে । আবার কিছু কিছু বিকাশ এজেন্ট এজেন্টও যুক্ত থাকে এদের সাথে । সেই সে টাকা পাঠানোর তথ্য নিয়ে আপনাকে ফোন দেয় । আপনি কত টাকা লোড করেছে, কখন লোড করেছেন এই তথ্য দিয়ে আপনাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে । আপনার মনে হয় আমার এতো ডিটেইলস জানে তার মানে হয়তো অথেনটিক লোকজন । এই ভুলে অনেকেই পিন নম্বর কিংবা ওপিটি নম্বর দিয়ে দেয় । আবার অনেক চক্র কেবল রেনডমলি ভাবে ফোন দিয়ে বলে যে আপনার একাউন্টটি লক হয়ে গেছে ।
আমার মনে আছে প্রথম যখন আমার কাছে এমন ফোন আসে তখন আমার কোন কারণে মেজাজ খুব খারাপ ছিল । ফোন দিয়ে বেটা কয় আপনার একাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে । আমি কইলাম যাক । আপনার এতো টেনশন নিতে হবে না । যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে টাকা আপনি নিয়ে যাইয়েন ।
এরপর আরও দুই তিনবার ফোন এসেছে । তখন অবশ্য প্রতিবারই আমি লম্বা কথা বলার চেষ্টা করি । কেন বন্ধ হল কী কারণে বন্ধ হল । একই প্রশ্ন আমি দুই তিনবার করে করি । এমন একটা ভাব করি যেন আমি খুব চিন্তিত আমার একাউন্ট নিয়ে । ওরা ভাবে পাইছি একটারে !
সব সময় মনে রাখবেন বিকাশ অফিস থেকে আপনার কাছে ফোন দেওয়ার সম্ভবনা প্রায় নেই বললেই চলে । বিকাশের কাস্টমারদের তো খেয়ে দেয়ে কাজ নেই তার আপনাকে খুজে বের করে আপনার লক একাউন্ট খুলে দিতে নিজ থেকে ফোন করবে! আর আপনার একাউন্ট লক হওয়ার সম্ভবনাও খুব কম । এক যদি আপনার একাউন্ট থেকে অস্বাভাবিক পরিমান লেনদেন হয় তাহলে সেটা হয়তো লক হতে পারে আর যদি আপনি আপনার মোবাইল বদল করেন তাহলে একদিনের জন্য আপনার একাউন্ট লক থাকে । ২৪ ঘন্টা পরে সেটা আবার আপনা আপনি চালু হয়ে যায় । বিকাশ একাউন্টে পাসওয়ার্ড দিয়ে প্রবেশ করার সময় পর পর ৩ বার ভুল পিন প্রবেশ করালে নিরাপত্তার স্বার্থে বিকাশ একাউন্টটি সাময়িকভাবে একাউন্ট ব্লক হয়ে যায়। । সুতারাং এছাড়া অন্য কোন ভাবে অন্য কারো রিপোর্টে আপনার একাউন্ট লক হবে না । কেউ যদি ফোন করে এমন কথা বলে মানে হচ্ছে তারা মিথ্যা বলছে । আর সত্যিই যদি আপনার একাউন্ট লক হয়ে যায় তাহলে সেটা আগে আপনি নিজে চেক করে দেখবেন । মানে আপনার একাউন্ট দিয়ে টাকা পাঠানো যাচ্ছে কিনা মোবাইল রিচার্য হচ্ছে সেটা নিজে চেক করে দেখুন । যদি দেখেন যে বন্ধ করে গেছে তাহলে নিজেই সেটা ওপেন করতে পারবেন খুব সহজে । বিকাশের একটা হটলাইন নম্বর আছে । সেখানে ফোন দিন । কাজ হয়ে যাবে । নয়তো তাদের ভ্যারিফাইড ফেসবুকে নক দিন । একটা লাইভ চ্যাট অপশন আছে এছাড়া ইমেল অপশন আছে। সব শেষে ওদের কাস্টোমার সেন্টারে গিয়েও কাজ করতে পারেন ।
বিকাশ থেকে নাহিদ কিংবা মামুনদের ফোনের ব্যাপারে সাবধান !
pic source
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



