somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টাকা পয়সা জমিয়ে আসলে কী লাভ?

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ধরেন, আপনার পকেটে ৮০ টাকা রয়েছে। এই টাকা দিয়ে আপনি এখন দুপুরের ভাত খাবেন। এক প্লেট ভাত ১০ টাকা এবং একটা ডিম ৩০ টাকা। এই ৪০ টাকা দুপুরের খাবার এবং এরপরে রাতের জন্য বাকি ৪০ টাকা রেখে দিলেন। কিন্তু যখন হোটেলে ঢুকলেন তখন আপনার চোখ গেল বেশি ঝাল দিয়ে রান্না করা মুরগির মাংসের দিকে চোখে গেল। ব্রয়লার মুরগির মাংসের দাম ৭০ টাকা। এখন আপনি চাইলে আপনার কাছে থাকা পুরো ৮০ টাকা দিয়েই এক প্লেট ভাত আর আপনার পছন্দের মুরগির মাংস দিয়ে খেতে পারেন।মনের ইচ্ছে পূরণ করতে পারেন। কিন্তু তাতে সমস্যা হচ্ছে রাতে আপনি যে কী খাবেন সেটা সেটার কোন নিশ্চয়তা নেই। হয়তো অভুক্ত থাকতে হতে পারে। এখন আপনি কী করবেন?
ধরেন আপনি র‍্যাশোনাল আচরণই করলেন। আপনি নিজের ইচ্ছেকে জলাঞ্জলি দিয়ে আপনি ৪০ টাকা দিয়ে ডিম দিয়ে ভাত খেলেন এবং বাকিটা রাতের জন্য রেখে দিলেন। কিন্তু হোটেল থেকে বের হয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে আপনি গাড়ি চাপা পড়ে মারা গেলেন। মরার আগে আপনার কেবল একটা কথাই মনে হল যে মুরগির দিয়ে ভাত খেলেই হত। ইচ্ছে টা তো পুরণ হত !
আবার ধরেন আপনি আপনার ইচ্ছে পূরণ করলে মুরগি দিয়েই ভাত খেলেন কিন্তু বাড়ি যাওয়ার পথে মরলেন না। এবং রাতে আপনাকে অভুক্তই থাকতে হল। তখন ক্ষুধা পেতে আপনার মনে হচ্ছিল যে ডিম দিয়ে খেলেই বুঝহি ভাল হত। রাতে এই রকম না খেয়ে থাকতে হত না।

অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের অবস্থাও বুঝি এমনই। আমরা আসলে যাই সিদ্ধান্ত নেই না কেন যদি কপালে আমাদের খারাবী থাকে তাহলে সেটা আসলে কোন ভাবেই দুর করা যায় না। আমরা দুঃসময়ের জন্য জন্য কত প্রস্তুতিই না নিয়ে রাখি কিন্তু দেখা দেখা যায় সে সে সব আয়োজন রেখেই আমরা টুপ করে মরে যাই। আমাদের হাতে আসলে কিছুই থাকে না।

আমার মা সব সময় আমার টাকা পয়সা জমাতে বলে। আমি যখন কিছু টাকা খরচ করি কিংবা কোথাও বেড়াতে যাই, তখন তার মূল কথাই থাকে টাকা পয়সা খরচ না করে জমানো দরকার। কখন যে কোন বিপদে পড়ি তখন আসলে কেউ সাহায্য করতে আসে না। তখন জমানো টাকাই আমাদের সাহায্য করে। তার কথায় আসলে কোন ভুল নেই। সত্যিই তাই, আমাদের জীবনে কখন যে কোন বিপদ আসে তার কোন ঠিক নেই। তখন জমানো অর্থই আমাদেরকে সাহায্য করতে।

কিন্তু আমার বরাবরই মনে হয় যে এই ধরেন আমি মুরগির মাংস খাওয়ার ইচ্ছে করা সত্ত্বেও এবং আমার কাছে টাকা থাকা সত্ত্বেও আমি সেই শখ পূরণ না করে ডিম দিয়েই ভাত খেলামা। এবং বাড়ি যাওয়ার পথে বাসের নিচে চাপা পড়লাম? তখন? শেষ যে আফসোস! সমর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কেবল ভবিষ্যতের চিন্তা করে আমি সেই শখ পূরণ করলাম না। আর সেই ভবিষ্যৎ আসার আগেই, সেই ভবিষ্যতের সুবিধা পাওয়ার আগেই যদি সব কিছু উর্ধ্বে চলে যাই তখন সেই আফসোসের সীমা থাকবে না। আসলে আমরা আমাদের জীবনের অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রন করতে পারি না। আমি যাই করি না কেন আমাদের সাথে কী ঘটবে তার অনেক কিছুই অন্যের কার্যকলাপের উপর নির্ভর করে।

আমি তখন ঢাকাতে নতুন সাইকেল চালানো শুরু করেছি। বাংলামোটর হয়ে কাঠাল বাগান রাস্তার দিকে যাচ্ছি। এমন সময়ে তিন রাস্তার মোড়ে এসে দেখি দুই দিক থেকে দুইটা লড়ি আসছে। আমার মনে হল যে আমি এই দুই গাড়ির মাঝ দিয়ে পার হয়ে যেতে পারব। তবে আমার হিসাবে একটু ভুল। আমি একেবারে তাদের মাঝে গিয়ে পড়লাম। এখন অবস্থা এমন যে এই দুই গাড়ির একটাও যদি না থামে তাহলে আমার খবর শেষ। কিন্তু কপাল ভাল যে দুই গাড়ি হার্ড ব্রেক করল। আমি মাঝে বেঁচে গেলাম। একটা গাড়িও যদি না থামাতো তাহলে আজকে এই ব্লগ আমার লেখা হত কিনা সন্দেহ। কয়েক মাস পরে একই স্থানের ঘটনা। তারপর থেকে আমি আর ঝুঁকি নিয়ে সাইকেল চালাই না। আমি সিগনালে দাঁড়িয়ে রয়েছি। কিছু সময়ে পরে হঠাৎ পেছন থেকে একটা রিক্সা এসে আমার সাইকেলের চাকার সাথে ধাক্কা দিয়ে দিল। আমি উল্টে পড়লাম। একেবারে রাস্তার উপরে। অথচ এখানে আমার কোন হাত ছিল না। তবুও আমার এই হাল হল। অথচ আগের ঘটনায় আমার সম্পূর্ণ হাত ছিল, সিদ্ধান্ত আমার ছিল তারপরেও আমার আমি রক্ষা পেলাম অন্যের কারণে। আর পরের ঘটনায় আমি বিপদে পড়লাম অন্যের কারণেই।

তাহলে আমাদের কী করা উচিৎ?



Image by Mohamed Hassan from Pixabay
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১১:১৮
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=স্মৃতির মায়ায় জড়িয়ে আছে মন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:০৯


ঘাস লতা পাতা আমার গাঁয়ের মেঠো পথ, ধানের ক্ষেত
জংলী গাছ জড়ানো লতাবতী - আহা নিউরণে পাই স্মৃতির সংকেত,
রান্নাবাটির খেলাঘরে ফুলের পাপড়িতে তরকারী রান্না
এখন স্মৃতিগুলো পড়লে মনে, বুক ফুঁড়ে বেরোয় কান্না।

ফিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×