
প্রিয় এবং অপ্রিয় ব্লগার মন্ডলী, আশা করি ভাল আছেন। আবারও হাজির হলাম এই মাসের ব্লগার'স ইন্টারভিউ নিয়ে। আজকে আমাদের মাঝে হাজির আছে ব্লগের পরিচিত মুখ ব্লগার নতুন। সামু ব্লগে যে কয়জন ব্লগার একেবারে শুরু থেকে এখনও নিয়মিত ব্লগিং করছেন তাদের ভেতরে ব্লগার নতুন অন্যতম। আজকে আমার ইন্টারভিউয়ের জালে তিনি ধরা দিয়েছেন। তাহলে চলুন দেরি না করে আজকের ইন্টারভিউ শুরু করা যাক।
অপুঃ কেমন আছেন?
নতুনঃ ভালো আছি ভাই, সময় খুব দ্রুতই চলে যাচ্ছে। ২০২০ এর পর থেকে সময়ের গতি মনে হচ্ছে বেড়ে গেছে।
অপুঃ এটা অবশ্য একেবারে সত্য বলেছেন। ২০২০ সালের পরে সময় যে কী পরিমান দ্রুত যাচ্ছে তার ঠিক নেই। যাই হোক, নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন। কোথায় থাকেন, কী করেন, পরিবার এইসব। তবে অবশ্যই এটা খেয়াল রাখবেন যে এটা পাবলিক ডোমেইনে যাবে, তাই সেই ভাবেই উত্তর দিবেন যাতে পরে এই তথ্যের কারণে আপনার কোনো সমস্যা না হয়।
নতুনঃ ব্যক্তি জীবনে আমি চাকরি করছি, হসপিটালিটি প্রফেশনাল। দুবাইতে হোটেল ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছি। কাজের ক্ষেত্রে বিশ্বের ১৩৫ দেশের মানুষের সাথে কাজ করছি, এবং বিশ্বের সব দেশের মানুষই বেড়াতে আসে, তাদের সাথে কথা হয়। তাই মানুষ নিয়েই কারবার প্রতিদিন।
বাবা এবং মা দুজনকেই হারিয়েছি কয়েক বছর হলো। বর্তমানে দেশে ভাই বোন আছে, আর দুবাইতে শারমিন আর ডানাকে নিয়ে সুখী পরিবার আমাদের।
অপুঃ বাবা মাকে হারিয়েছেন শুনে দুঃখ লাগল। আসলে এই জগতে যারা বাবা মা চলে যায় কেবল সেই এই কষ্টটা অনুভব করতে পারে। একই সাথে যে পরিবারের সাথে থাকেন এটাও আনন্দের ব্যাপার। শুরু থেকেই ভাবী আপনার সাথেই দুবাইতে নাকি পরে এসেছে?
নতুনঃ হুমায়ুন আহমেদের বইতে পড়েছিলাম যে মায়ের সাথে জন্মের পরেই নাড়ী কাটা হলেও অদৃশ্য একটা নাড়ী বাধা থাকে মায়ের সাথে। আসল নাড়ী কাটা পরে মায়ের মৃত্যুর পরে। মা মারা যাবার পরে সেটা বুঝতে পেরেছিলাম।
মালোয়েশিয়া থেকে চাকুরী নিয়ে দুবাই পাড়ি জমাই ২০০৮ এ। শারমিনের সাথে বিয়ে হয় ২০১০ এ। তারপরে ২০১১ এ দুবাই বেড়ানে নিয়ে আসি। তার পরে ২০১৫ থেকে দুবাই স্থায়ী ভাবেই আছি এক সাথে। দেখতে দেখতে ১৪ বছর পার হয়ে গেছে।
অপুঃ ব্লগ সম্পর্কে ধারণাটা কিভাবে এল বা কোথা থেকে এই ব্লগ সম্পর্কে জানলেন?
নতুনঃ ব্লগ কী, এই ধারণা আসে ২০০৫-এ ঢাকায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারের সময়। তখন বিভিন্ন ফোরামে অনেক মুভি নামাতাম, আড্ডা দিতাম।
অপুঃ বাংলা ব্লগিংয়ের শুরুটা কিভাবে হল? ব্লগের কথা, বিশেষ করে সামহোয়্যারইন ব্লগের কথা কিভাবে জানলেন?
নতুনঃ ২০০৬-এ মালয়েশিয়াতে পড়াশোনা করতে যাবার পরে ওই ফোরামে অনেক সময় কাটাতাম। সেখান থেকেই সামহোয়্যারইন ব্লগের খোঁজ পাই। একে তো বিদেশে, তারপরে বাংলাদেশিদের সাথে বাংলায় ব্লগে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা, অনেক গল্প, কবিতা, তথ্য, প্যাঁচাল, ক্যাঁচাল... কত কিছু! ওই সময়টাতে ব্লগের সাথে থাকাতে দেশ থেকে দূরে থাকার কষ্ট কমাতে অনেক সাহায্য করেছে।
অপুঃ আচ্ছা তার মানে আপনি মালেশিয়াতে পড়াশোনা করেছেন! তা কোন বিষয়ে পড়াশোনা যদি সমস্যা না থাকে বলুন প্লিজ?
নতুনঃ ইচ্ছা ছিলো পাইলট হব তাই বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা করেছি দেশে। পরে জিডি পাইলটের আইএ্সএসবি শেষে লাল কার্ড ধরিয়ে দিলো যে ইংরেজীতে উন্নতি করতে হবে। তাই ভর্তি হলাম ইংরেজী সাহিত্য শিখতে। দেশের পড়াশুনা শেষ করে ইচ্ছা ছিলো ব্যবসা করবো। কিন্তু বাবার সাথে মতের মিল হবে না বলে বিদেশে পড়তে গেলাম। তখন হোটেল ম্যানেজমেন্টের চল ছিলো। তাই এই ক্যারিয়ারে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যাওয়া যাবে তাই হসপিটালিটি এন্ড টুরিজম ম্যানেজমেন্টে ডিপ্লোমা করতে মালোয়েশিয়ার সানওয়ে কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম।
অপুঃ যখন ব্লগে নিক খুলেছিলেন, তখন কী মনে করে নিজের আসল নামে না খুলে ছদ্মনামে নিক খুললেন?
নতুনঃ ইন্টারনেটে তখন নতুন। বিভিন্ন ফোরামে তখন সবাই ছদ্মনামেই রাখত।
অপুঃ এতো নাম রেখে ‘নতুন’ কেন? এই নিক নেওয়ার পেছনে কি বিশেষ কোনো কারণ ছিল?
নতুনঃ ইন্টারনেটে তখন নতুন। আর আমি ম্যাট্রিক্সের নায়ক নিও’র ভক্ত। ইংরেজি ব্লগে আমার নিক রাখতাম Neo। আমার ইমেইলও তাই। তাই বাংলায় কী দেবো তখন? নিও অর্থ নতুন, তাই নতুন নামই রেখেছিলাম। পরে দেখলাম আমার নাম কখনোই পুরোনো হবে না।
অপুঃ হ্যা আপনার নিক কখনই পুরানো হবে না। আমি এই ব্যাপারটা নিয়ে প্রায়ই ভাবী যে ব্লগের সব চেয়ে পুরানো নিকের নাম ‘নতুন’। সেই শুরুর দিকে কোন ধরনের লেখা পড়তে আসতেন বেশি? অন্যভাবে বললে, কোন লেখাগুলো পড়ে ব্লগের প্রতি আকর্ষণ তৈরি হল?
নতুনঃ ২০০৬-এ দেশের বাইরে গেছি। কলেজের পরে বাসায় যতটুকু সময় কাটত, তার বেশিরভাগই ব্লগে কাটত। তখন ব্লগে নানা রকমের লেখা আসত। বিজ্ঞানের উপর, কম্পিউটার, গল্প, ভ্রমণ, ছবি ব্লগ, সমসাময়িক ঘটনার আপডেট—পত্রিকার আগে ব্লগে পেতাম।
অপুঃ সেই সময়ের ব্লগিং কেমন ছিল? সেই সময়ে দিনে গড়ে কত সময় কাটত ব্লগে?
নতুনঃ বিদেশের একাকিত্ব কাটাতে ব্লগে অনেক সময় দিতাম। আমি লেখক হতে পারিনি। কিন্তু কমেন্ট করতাম আর ক্যাঁচাল দেখতাম।
অপুঃ পুরানো প্রায় সবাই ব্লগ ছেড়েছে। তাদের এই ব্লগ ছেড়ে যাওয়ার পেছনে কারণ কী আছে বলে আপনার মনে হয়? সব তো আপনার চোখের সামনেই ঘটেছে।
নতুনঃ সময় আর মানুষের কাজ আমাদের জীবনের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে। আমার কাজের ক্ষেত্রে পার্সোনাল কম্পিউটার আছে। আমি অফিসে কাজের ফাঁকে ব্যবহার করতে পারি। কোম্পানির তরফ থেকেও ব্যক্তিগত কাজে মডারেট ব্যবহারের অনুমতি আছে। আর এখন পদাধিকারে আমি কী করি তা যেহেতু কেউ নাক গলায় না, তাই চলে যাচ্ছে।
আমার মনে হয় দেশের মানুষও সময় এবং কাজের পরিবেশের জন্যই ব্লগ থেকে দূরে চলে গেছে। অনেকেই মোবাইলে ফেসবুকে ব্যস্ত। অনেকে আবার ক্যাঁচালের কারণেও সরে গেছে।
অপুঃ এখনকার ব্লগিং কেমন লাগছে?
নতুনঃ এখন ব্লগে আগের মতো জমজমাট টপিক নিয়ে কেউই আর লেখে না, যেটাতে চিন্তার খোরাক থাকে। তবে আমার ব্লগে আসাটা এখন অভ্যাসের মতো। কম্পিউটার ওপেন করার পরে সামু ট্যাব ওপেন করে দেখি নতুন কী লেখা আসলো।
অপুঃ লেখার কোয়ালিটির বিবেচনায় আগের সময়ের সাথে বর্তমান সময়ের একটা তুলনা করতে পারবেন কি?
নতুনঃ আগের অনেক ব্লগারই সময় নিয়ে গবেষণা করে একটা বিষয়ে লিখতেন। অনেক লেখা কয়েক পর্বে থাকত। আর এখন বেশিরভাগই কপি-পেস্ট করা। অথবা অন্য লেখা থেকে নিজের মতো করে লেখা। আগে ধর্ম নিয়ে আরো জটিল বিতর্ক হতো, রেফারেন্স নির্ভর আলোচনা হতো।
অপুঃ রেফারেন্স নির্ভর আলোচনা হতো! এই ব্যাপারটা আমি এখন খুব মিস করি। আগে লেখা প্রতিটা পোস্টের প্রতিটা লাইনের রেফারেন্স থাকত। আর এখন যে কেউ যা ইচ্ছে মন গড়া ব্লগে লিখে ছেড়ে দিচ্ছে যার পেছনে ন্যূনতম রেফারেন্স নেই। ধর্ম রাজনীতি সব ক্ষেত্রেই এই একই। এই ব্যাপারটাতে আপনার বিরক্ত লাগে না?
নতুনঃ আগে লিখতে গেলে অনেক পড়েই লিখতেন, সেটা আগের লেখাগুলি পড়লে বোঝা যায়। এখন বেশিরভাগই কোথাও থেকে কপি করে তাই জবাব দিতে গেলে পাল্টা যুক্তির পেছনে রেফারেন্স থাকে না।
অপুঃ ব্লগ আর আগের মত জমজমাট নেই কেন বলে আপনার মনে হয়? কোয়ালিটি লেখা কেন আসছে না কিংবা কেন বর্তমান ব্লগাররা তেমন লেখা লিখতে আগ্রহ পাচ্ছেন না?
নতুনঃ আগে ব্লগই ছিলো পত্রিকার চেয়ে ভালো, ইন্টারএকটিভ, এখন অনেক সোসাল মিডিয়া আছে, তথ্য পাওয়া সহজ, অনেক ক্ষেত্রে তথ্যের ওভারফ্লো হচ্ছে এখন। আগে আমি একটা নতুন বিষয় খুজে পেলে ব্লগে লিখতাম, সবাই আলোচনা করতো, এখন বেশিরভাগ জিনিসই বেশিরভাগ মানুষ জানে।
অপুঃ বর্তমান ব্লগের এই অবস্থার জন্য ঠিক কোন কোন কারণগুলো দায়ী বলে আপনি মনে করেন?
নতুনঃ সময়ের সাথে তালমেলাতে না পারা। সমাজের ব্লগাররা নাস্তিক এব সরকারের অসহযোগিতা। এই সব কারনে ব্লগের প্রচারণা কমে গেছে, স্কুল কলেজের ছেলে মেয়েরা সম্ভবত জানেই না এমন চমৎকার একটা প্লাটফর্ম আছে।
অপুঃ ব্লগের বর্তমান অবস্থার জন্য ব্লগ টিম বা মডারেটর প্যানেলকে কি কোন ভাবে দায়ী করবেন?
নতুনঃ ব্লগ টিমকে ধন্যবাদ দিতে হবে যে টাকাপয়সা ছাড়া এমন একটা ব্লগ এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন।
অপুঃ এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দিলেন না। হেহে! যাক, সামু টিমকে আপনার কতখানি নিরপেক্ষ মনে হয়? টিমের কি নিরপেক্ষা থাকার সুযোগ আছে কিংবা চাইলেও কি থাকতে পারে ? এবং সামু টিম কি সবার প্রতি সমান নিরপেক্ষ আচরণ করে বলে আপনার মনে হয়?
নতুনঃ নিরপেক্ষতা আপেক্ষিক বিষয়, যারে দেখতে নাড়ি তার চলন বাঁকা। তাই অনেকের সাথে নেওয়া সিদ্ধান্ত গুলি বায়াস্ড বলে অনেকে ধারনা করে। তবে আমি ব্যক্তিগত ভাবে জাদিদ ভাইকে চিনি তাই তার সিদ্ধান্তে আমার আস্থা আছে। উনি ব্যক্তিস্বার্থে কোন অন্যায় করার মতন মানুষ না।
অপুঃ সত্যি কথা বলতে জাদীদ ভাইয়ের ব্যাপারে আমার নিজের মনভাবও এমনই। মাঝে মাঝে তার আচরণে আমি খুশি না হলেও ব্যক্তিগত ভাবে তাকে আমি যতখানি চিনি তাতে এই বিশ্বাস আমারও আছে যে উনি ব্যক্তিস্বার্থে কোন অন্যায় করার মতন মানুষ না। আচ্ছা এবার অন্য দিকে যাই। বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে আপনার মনভাব কী?
নতুনঃ আমি পজিটিভ ভাবনার মানুষ। কিন্তু দেশের রাজনীতি নিয়ে আমি ভালো কিছু আশা করিনা। আমরা জাতিগত ভাবেই অন্য ভালো জাতি থেকে অনেক আলাদা। ভন্ডামী ভাইরাস আমাদের রক্তে এমন ভাবে আক্রান্ত করেছে তার ভ্যাকসিন এখনো আবিস্কার হয় নাই।
অপুঃ এই কথার সাথে দ্বি-মতের কোন সুযোগ নেই। আমরা ভ্যাজালের জাতি। তাই আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোও যে তেমনই হবে সেটা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তা আওয়ামীলীগ সরকার যে এভাবে পালাবে কোন দিন ভেবেছিলেন?
নতুনঃ শেখ হাসিনা চাইলে আমৃত্যু ক্ষমতায় থাকতে পারতেন, তেমন পথই আয়ামীলীগ তৈরি করে ফেলেছিলো। শুধুই ঢাবিতে ছাত্রলীগের হামলা করে সাধারন ছাত্রছাত্রীদের পেটানো ঠিক হয় নাই।
অপুঃ প্রেম করেছেন কতগুলো জীবনে?
নতুনঃ আমি কাঠখট্টা মানুষ, আবেগ কম যুক্তিদিয়ে ভাবি বেশি। ছাত্রজীবনে বুঝতে পেরেছি যদি এখন প্রেম করি তবে বিয়ে করা হবেনা তাই প্রেম করিনাই। তবে মেয়েদের মাঝে ভালো বন্ধু ছিলো স্কুলে, কলেজে। তবে কলেজে করিডোরে এক বন্ধুকে দৌড়ানি দেবার সময় পিছলে পড়ে এক মেয়ে আমার কোলে এসে পড়েছিলো।
অপুঃ ভাবীর সাথে কী প্রেমে বিয়ে নাকি এরেঞ্জ?
নতুনঃ এরেন্জ ম্যারেজ। ২০০৬ এ দেশের বাইরে, প্রেম করার সময় পাইলাম না জীবনে। ২০০৯ এ বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে ২০১০ এ বিয়ে। এখন অবশ্য দুজনে খুবই ভালো আছি। আমার মতে বিয়ের আগের প্রেমের চেয়ে বিয়ের পরের এই ভালোবাসা বেশি ভালো।
অপুঃ ব্লগে কি কখনও কারো প্রেমে পড়েছেন? বা কোন ব্লগারের লেখা অসম্ভব ভাল লেগেছে কী ?
নতুনঃ ব্লগে কারুর প্রেমে পড়িনাই। তবে বেশ কয়েকজনের লেখা ভালো লাগতো।
অপুঃ কার আর লেখা ভাল লাগল? বর্তমানে কোন কোন ব্লগারের লেখা আপনার পছন্দ?
নতুনঃআমার প্রিয় ব্লগের লিস্ট অনেক বড়। ব্লগে আগে সবাই নতুন কিছু লেখার চেস্টা করতো। নতুন বিষয় সবার আগে আলোচনার একটা চেস্টা থাকতো। অনেক প্রিয় ব্লগার আছেন তবে যাদের মান এখন মনে পড়ছে তাদের কয়জনকে সবাই চেনে । কান্ডারি অথর্ব, ,, উদাসী স্বপ্ন , , সোহেলী , , ইমন জুবায়ের , শের শায়রী, , রাগ ইমন হোরাস্, মানবী …..
বর্তমানে সৈয়দ কুতুব ভালো লিখছেন, উনার ভাবনা পরিধি বড়। শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু ভালো লিখছেন, টপিকগুলি সমসাময়িক তবে উনি সম্ভবত এআই ব্যবহার করেন আর উনার জবাবে বক্তব্যকারীর সাথে ইন্টারেকসনের চেস্টা করেন না।
অপুঃ আপনাকে যদি ব্লগের মডু বানিয়ে দেওয়া হয় তাহলে ব্লগকে আগের জায়গায় নিতে কী কী করবেন?
নতুনঃ ব্লগকে জীবিত রাখাই সামনের চ্যালেন্জ। আগে আয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। কম হলেও মাসে ২-৫ লক্ষ টাকা আয়ের ব্যবস্থা না হলে ব্লগ এক সময় বন্ধ করার ঘোষনা চলে আসবে। আমি মনে করি বর্তমানের পরিস্থিতিতে ই-কমাস ব্যবসা ব্লগের সাথে চলতে পারে। আয়ের ব্যবস্থা হলে তারপরে আসবে নতুন প্রজন্মকে ব্লগে টানার জন্য মার্কেটিং প্রচারণা। সেটা স্কুল, কলেজ পর্যায়ে শুরু করতে হবে।
অপুঃ আর কোন ব্লগারকে ঘাড় ধরে বের করে দিবেন?
নতুনঃ কয়েকটা অসুখী মানুষ কিছু বাজে নিক নিয়ে ব্যক্তিআক্রমনের উদ্দেশে কিছু মাল্টি ব্যবহার করে সেগুলি বের করে দিতে হবে।
অপুঃ ধর্ম নিয়ে যদি এইপ্রশ্ন আমি কাউকে করি না তবে আপনাকে করলাম। ধর্ম সম্পর্কে আপনার মনভাব কী? ?
নতুনঃ আমার মনে হয় বর্তমানের প্রচলিত ধর্ম গুলি মানুষের সৃষ্টি। যদিও সৃষ্টিকর্তা আছে বা নেই সেটার প্রমান মানুষের সামনে নেই। প্রচলিত প্রতিটা ধর্মের নিয়ম, কাহিনি, নিয়ে ভাবলে বোঝা যায় কোথাও বড় একটা ঘাপলা আছে। তাই আমি নিজে ধর্ম পালন করিনা। কিন্তু অন্যের পালনে সমস্যা সৃস্টি করিনা। আমি জানি না সৃষ্টিকর্তা আছেন কিনা। থাকার সম্ভবনা ৫০%-৫০% কিন্তু আপনি যে আমারই মতন একজন মানুষ সেটা তো ১০০% সত্যি। তাই আরেকজন মানুষের যেন কোন ক্ষতি না হয়, কষ্ট না দেই সেটার চেষ্টা করি।
পৃথিবিতে প্রায় ৪০০০ এর মতন ধর্ম আছে। মানুষকে নিয়ন্ত্রনের জন্য কিছু জ্ঞানী মানুষ তাদের ফিলোসফি দিয়েছে। সেই ফিলোসফাররা হয়তো বিশ্বাস করতো যে ডিভাইন কিছু একটা ক্ষমতার সাথে তাদের কথা হয়। তাদের সেই কথা গুলি অনুসারীরা ছড়িয়ে দিয়েছে। একসময় রাজরাজারা সাধারন মানুষের নিয়ন্ত্রয়নের জন্য ধর্মের প্রচার করেছে। এখন ধর্মের হাল বাটপারদের হাতে। ধর্মের নামে কিছু মানুষ করে কেটে খাচ্ছে। যদিও দেশে পীর ফকির মাজারে দান কমেছে। বর্তমানেই বেশির ভাগ মানুষ ধর্ম সামাজিক অনুস্ঠানের মতন পালন করে। যদি বাংলাদেশে সত্যিকারের ধর্ম পালন করতো তবে দূনিতি, ধান্দাবাজীতে আমাদের দেশ এতো উপরে থাকতো না।
তাই বেশিরভাগ মানুষ ভয় পায় যে যদি আসলেই ধর্ম সত্যি হয় তবে মৃত্যুর পরে বিপদে পরে যাবে তাই তারা ধার্মিক সাজে। আমি হয়তো ভন্ডামী করিনা তাই সরাসরি বলি যে আমি প্রার্থনা করিনা।
অপুঃ যাক আপনার মনভাব বুঝতে পারলাম। এখন ব্লগারদের উদ্দেশ্য করে কিছু বলতে চান? যে কোন কথা।
নতুনঃ ব্লগারদের উদ্দেশে জ্ঞান দেবার মতন অবস্থানে আমি যেতে পারিনাই। ব্লগে অনেক জ্ঞানী মানুষ আছেন, অনেক জ্ঞানী মানুষেরা চলে গেছেন। অনেক কিছুই শিখতে পেরেছি ব্লগ থেকে। অনেক নতুন বিষয়ে প্রথম জেনেছি ব্লগে। তবে কিছু ব্লগারদের উদ্দেশে বলতে চাই যে মতের অমিল হলে কখনোই একজন ব্যক্তিকে গালী দেওয়া বা মনে কষ্ট পায় এমন কিছু বলা উচিত না। সবার উপরে মানবতা তারপরে দল, ধর্ম বা অন্য কিছু।
অপুঃ আমাদের আজকের ইন্টারভিউ এখানেই শেষ। আপনার এই ইন্টারভিউ পড়ে যদি পাঠকদের মনে আরও কিছু জানার থাকে তাহলে আপনাকে প্রশ্ন করবেন। আশা করি সময় করে উত্তর দিবেন।
নতুনঃ সময় করে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। সবাই ভাল থাকুক ।
আশা করি ব্লগার নতুন সম্পর্কে ব্লগাররা একটা ধারণা পেয়েছেন। এছাড়াও আপনাদের মনে যদি আলাদা কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে সেটাও আপনি ব্লগার নতুনকে করতে পারেন। আশা করি উনি সময় সুযোগ মত আপনার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাবেন।
আজকের মত এখানেই ইতি টানছি।
হ্যাপি ব্লগিং।
আগের পর্বগুলো
হাসান মাহবুব
মনিরা সুলতানা
শেরজা তপন
জুল ভার্ন
সাড়ে চুয়াত্তর
কাল্পনিক_ভালোবাসা
ভুয়া মফিজ
শায়মা
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:০৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



