somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এ যেন শুধু ই বেচে থাকা অথবা বাস্তবতার গল্প

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





(১)

নীলিমা তাদের ধানমন্ডির আলিসান বাসার ছাদে দাড়িয়ে আকাশ দেখছে । কেন যানি তার মুক্ত বিহঙ্গের মত উরে চলে যেতে ইচ্ছে করছে । এখনো দিনের শুরুতে সূর্য উঠে ,দিনের শেষ অস্ত নামে । রাত শুরু হয় আবার শেষ হয় । এভাবেই চলতে থাকে । জীবনের বাস্তবতাই শুধু ধরা পরে । বার বার কড়া নাড়ে । মাঝে মাঝে আত্মহত্যা করতে ইচ্ছে হয় । কিন্তু হয়ে উঠে না । দ্বায়িত্ব আর কর্তব্যের বেড়া জালে বন্দি ।

সব ই আছে শুধু নেই সুখ নামের সেই অদেখা পাখিটি । তাকে দেখলে কেউ বুঝতেই পারবে না যে সে সুখি নয় । কারন সে বাংলাদেশ একজন স্বনাম ধন্য ব্যবসায়ীর স্ত্রী । এত টাকা পয়সা , ধন সম্পদ কিছুই তাকে সুখি করতে পারেনি । সত্যি অদ্ভুত ।


(২)

অই কুদ্দুছ কই গেলি , হাক ছাড়েন রহিম মিয়া । অই কুদ্দুছ কইরে হারমজাদা ,নবাবের বাচ্চা । আবার ঢাকে রহিম মিয়া । কিন্তু কুদ্দুছের কোন খবর নাই । ওদিক থেকে তার বউ ফুলমতি বলে কুদ্দুছ তো বাড়িতে নাই । মনে হয় পোলাপানের লগে খেলতে গেছে । কি ?? কি কইলি !! খেলতে গেছে , ওর খেলা আমি বাইড় করতাছি । বলে ক্ষেপে উঠে রহিম মিয়া । আরে মর জ্বালা ,পোলাডা সব সময় ই তো কাম করে আজ নাইলে খেলতেই গেছে আপনে অমুন করেন ক্যান । ছুডু মানুষ শখ আহ্লাদ কি নাই নাকি । ফুলমতি বলে । হ হ , হইছে পোলার হইয়া আর উকালতি করতে হইব না সব জানি আমি । রহিম মিয়ার রাগত্ব স্বরে বলে । আইচ্ছা অহন যান তো , বাজার কইরা অনেন । হুনেন পোলাডা অনেক দিন ধইরা মাছ খাইতে চাইতাছে মাছ আইন্নেন । ফুলমতি বাজারের থলি হাতে ধরিয়ে দেয় । পারুম না । কাম শেষ হইতে দেরি হইব । বলে বেড়িয়ে যায় রহিম মিয়া । ফুলমতি কিছু বলে না শুধু মুচকি হাসে ।

রাতের খাবারে থাকে বড় মাছ সাথে আলু আর পাতলা ডাল ।
= বউ পোলাডারে ঢাক ভাত খাইব না ।
= কেন আপনে না খাওয়াইবেন না কইছেন ।
= তুই ও দেহি শুরু করসছ । যা পোলাডারে ঘুমথন ডাইকা আন ।
ফুলমতি ঘুম থেকে উঠিয়া আনে কুদ্দুছ কে । তারপর ফুলমতি আর রহিম মিয়া দুজনে মিলে কুদ্দুছ কে খাইয়ে দেয় । আর মুখে তাদের হাসি ।


(৩)


সাগর আর সন্ধ্যা ঢাকার এক প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়ে । একই সাথে একই ডিপার্টমেন্টে ।
= এই সাগর । সাগর ।
= কিরে কি হইছে ?? এত চেচাচ্ছি কেন ।
= তুই নাকি প্রেম করছিস ।
= কে বলল তোকে । মুটিটা নিশ্চই ।
= তুই বল সত্যি কিনা ।
= যদি সত্যি হয় ।
= না তুই প্রেম করতে পারবি না ।
= কেন ?? আমি কি তোর রেজিস্টার করা নাকি ।
= হ্যা । আমি তোকে ভালবাসি । তাও গত তিন বছর ধরে ।
= সত্যি । নাকি মিথ্যা । মজা করিস আমার সঙ্গে তাই না ।
= সত্যি , সত্যি এবং সত্যি । বললাম ।


এরপর দুজনের পথ চলা শুরু হয় । হয়ত ভবিষ্যতের স্বপ্নে বিভোর হবে দুজনেই । আবার দুজনের দুটি পথ হয়ে যেতে পারে । কেই বা বলতে পারে । সব কিছু তো আগে থেকে অনুমান করা যায় না । কিছু কিছু বিষয় নিয়তির উপর ছেড়ে দিতে হয় ।


(৪)


দাদু ভাই গল্প বলেন । এক বাচ্চা বলে উঠে । দাদু ভাই তাড়াতাড়ি বলেন । আরেক বাচ্চা বলে । স্যার শুরু করেন । এক যুবক বলে উঠে । প্রায় ত্রিশ জন এর মত লোক আছে রহমান সাহেবের সামনে । এদের বাচ্চা আর যুকব ই বেশি । রহমান সাহেব পার্কে আসেন আর সবাইকে গল্প শোনান । স্বাধীনতার গল্প মুক্তিযুদ্ধের গল্প । বাংলাদেশের ইতিহাস ,ঐতিহ্য ,সংস্কৃতি সব কিছু বলেন গল্প আকারে । তাই তিনি এই পার্কে গল্প দাদু নামে পরিচিত । সবাই তাকে চেনে । তাকে সবাই ভালও বাসে । অনেকেই আসে তার কাছে ।

কিন্তু হঠাত এক দিন তিনি এলেন না । তারপর আর কোন দিন ই পার্কে এলেন না । হয়ত আর গল্প নেই । হয়ত তার গল্পের ঝুলি ফাকা হয়ে গেছে । কেউ খোজনি তাকে । হয়তবা খুজেছে দু এক জন তাও প্রয়োজনে ।


আসলে যান্ত্রিকতার এই শহরে অনেক কিছুই ঘটে । কিছু আমাদের জানা কিছু অজানা । কিছু জিনিস থেকে যায় আড়ালেই । সবাই ব্যস্ত আর বাস্তবতার বেড়াজালে আবব্ধ । শহরটা আমাদের কেও যন্ত্র বানিয়ে ফেলেছে । সব কিছুই নিয়ম করা ।


এ যেন শুধু ই বেচে থাকা অথবা বাস্তবতা ।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৬
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×